Home » লন্ডন নিউজ » ব্রিটেনে পড়ালেখা করতে এসে বাংলাদেশী ফেরদৌস হাসান ইংলিশ গার্লকে রেইপ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন

ব্রিটেনে পড়ালেখা করতে এসে বাংলাদেশী ফেরদৌস হাসান ইংলিশ গার্লকে রেইপ মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদঃনিউ ক্যাসল থেকে

টানা তিনদিন ব্যাপী নিউক্যাসল ক্রাউন কোর্টে ১৪ বছরের এক মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে হিয়ারিং চলছে, বাংলাদেশী ছাত্র ফেরদৌস হাসান ও তার অপর তিন সহযোগীর  বিরুদ্ধে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা গত ফেব্রুয়ারি মাসে ইংল্যান্ডের নর্থ ইষ্টের সাউথ শীল্ডস এর বিউফন্ট রোডের বাড়ীতে পাশের রুমের এক শ্বেতাঙ্গ মেয়েকে উচ্চ মাত্রায় ভদকা মিশিয়ে অপ্রকৃতস্থ করে জোর পূর্বক ধর্ষণ করেছেন।মেয়েটি পরে প্র্যাগন্যান্টের অভিযোগ এনে পুলিশে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করে।

 

জানা যায়, ২২ বছর বয়স্ক হাসান ফেরদৌস গত জানুয়ারি মাসে নর্থ টাইনসাইড কলেজে নটিক্যাল সাইন্সে এইচএন্ডডি করার জন্য ব্রিটেনে স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে প্রবেশ করেন। ব্রিটেনে প্রবেশের একমাসের মাথায় তিনি তার সঙ্গী আবু সুফিয়ান (২১) ও রাফসান খান (১৯)মিলেমিশে ১৪ বছরের শ্বেতাঙ্গ মেয়েকে  ফুসলিয়ে জোর করে ধর্ষণ করেন।

 

হাসান ফেরদৌস বিউফন্টের যে বাড়ীতে ভাড়া থাকেন, সেখানে ও এর আশে-পাশে আরো শতাধিক ছাত্র অবস্থান করেন।

 

দীর্ঘ তিন ঘন্টা নিউক্যাসল ক্রাউন কোর্টে হিয়ারিং শেষে জুরি তাদের ভারডিক্ট শুনান। ঐ সময় হাসানের আইনজীবী টম মোরান হাসানের অতীত রেকর্ড এ রকম কোন খারাপ কাজের সাথে যুক্ত না থাকার বিষয়ে জাজের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সেন্টেন্স প্রদানের যুক্তি তুলে ধরেন। জাজ সায়মন হাইকী তখন টম মোরানকে বলেন, হাসান অবশ্যই সাজা প্রাপ্ত হবেন প্রবেশন অফিসারের রিপোর্ট তৈরির পর থেকেই।

 

ক্রাউন কোর্টে জুরি হাসান ফেরদৌস কে দুষী সাব্যস্ত করেন, তবে তার সঙ্গী অপর দুজনকে নট গিল্টি হিসেবে আদেশ প্রদান করেন অন্য এক শ্বেতাঙ্গকে ধর্ষণের অভিযোগ থেকেও, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ার কারণে ।

 

বাংলাদেশী এই যুবকের ১৪ বছরের শ্বেতাঙ্গ ধর্ষণের এই মামলার হিয়ারিং এর সময় কট্রর পন্থী দল ইডিএলএফ ক্রাউন কোর্টের বাইরে সারাক্ষণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তাদের বিভিন্ন উস্কানিমূলক শ্লোগানের মধ্যে ছিলো রেপিষ্ট হাসান সহ ওদেরকে এখনি ডিপোর্ট করে ফেরত পাঠাতে হবে।ভিকটিমের মা এই সময় প্রবেশন অফিসারকে অবহিত করেন, এই রেইপের ফলে তার ছোট্র মেয়েটি জীবনের গতিপথ থেকে ছিটকে পড়েছে, সে যেন তার চলার পথের খৈ হারিয়ে ফেলেছে।

 

কোর্টে হাসান স্বীকার করে, সে পুলিশের কাছে প্রথমে স্বীকার করেনি ধর্ষণের ব্যাপারে, কারণ সে ভয় পেয়ে গিয়েছিলো, এবং কি করা উচিৎ বুঝতে পারছিলোনা।যে কারণে সে শুরুতে পুলিশের কাছে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলো।

 

বাংলাদেশ থেকে পড়তে আসা হাসান ফেরদৌস ও সঙ্গীয়দের অল্প বয়সী শ্বেতাঙ্গ ধর্ষণের এই মামলা ও কাহিনী এখন সাউথ শীল্ডস, ওসেন রোড ( হাসান সহ অন্যরা যেখানে থাকেন)ও নিউক্যাসল সিটিতে এখন আলোচনা খুব সরগরম। কমিউনিটিতে এখন এনিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন। ইতিমধ্যে এই ঘটনা ব্রিটেনের মেইনষ্ট্রীম মিডিয়ায় ফ্রন্ট পেজে বাংলাদেশী ছাত্রের রেইপ তুলকালাম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, ডেইলী মেইল তাদের ছবি সহ দীর্ঘ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে । অনেক শ্বেতাঙ্গ ও ইডিএলএফ বিষয়টিকে বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে প্রচারণা হিসেবে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত দেখে স্থানীয় বাংলাদেশী বাসিন্দাদের মধ্যে অনেক শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেননা ইডিএলএফ এই ঘটনা নিয়ে শপিং সেন্টার ও রাস্তা-ঘাটে, ট্রেন ষ্টেশনে একা কোন কালো বাঙালি পেলেই আক্রমণ ও হেনস্থা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। অনেক নারীদের হিজাব টেনে টান দেয়ার অভিযোগও ইতিমধ্যে পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।

 

নিউক্যাসল ক্রাউন কোর্ট পরবর্তী হিয়ারিং এ হাসানের সেন্টেন্স প্রদান করবেন।হাসান ব্যতিরেকে সুফিয়ান ও রাবসান খান পুলিশী এসকর্টের মধ্যদিয়ে কোর্ট বিল্ডিং ত্যাগ করেন। কেননা ঐ সময় ইডিএলএফ কোর্ট বিল্ডিং এ ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করছিলো।

 

১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ .

Created : 19 September 2013 Thursday, 03:43 pm & Last Modified: 19 September 2013 Thursday, 03:43 pm

Please follow and like us:
Pin Share

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Follow by Email
YouTube
Pinterest
LinkedIn
Share
Instagram
error: Content is protected !!