Home » কলাম » নারীর সাথে ইয়োগার্টের সম্পর্ক

নারীর সাথে ইয়োগার্টের সম্পর্ক

পশ্চিমা বিশ্বের এডভার্টাইজিং জগতে এক দারুণ থিম রয়েছে, চিন্তা-ভাবনা প্রভাবিত হয়, এই ভেবে যে, দুগ্ধজাত পণ্য ইয়োগার্ট এর সাথে কেবল মাত্র নারীদের এক অসাধারণ যোগসূত্র রয়েছে। আসলেই কি তাই ? যদি তাই হয়ে থাকে তবে এর বৈজ্ঞানিক কারণ বা সূত্রই-বা কি ?

 

ইয়োগার্ট এমন এক খাবারের পণ্য, যা কেবলমাত্র দুধ ও চীজের মধ্যবর্তী এমন এক সফট খাবারের সমাহার, যা মূলত: দুধের সর থেকে তৈরি, যা মুখে দেয়ার পরে অন্ধভাবে এমন এক আবহ ও মাধুর্য তৈরি করে শরীর মন ও দেহে, যা থেকেই বলা হয়ে থাকে এটা কেবলমাত্র নারীদের জন্যই তৈরি। বর্তমানে ইংল্যান্ডে অধিক পরিমাণে ইয়োগার্ট প্রস্তুত সরবরাহ করা হয়ে থাকে, অথচ এর ১০% ইয়োগার্ট ডাস্টবিনে ফেলে দেয়া হয়ে, কোন প্রকারের ব্যবহার ছাড়াই।শিশুদের জন্য ইয়োগার্ট মূলত প্রিয় এক খাদ্য, যা সহজেই শিশুর দেহ এবজর্বড করতে পারে। সেদিক থেকে পুরুষের জন্য ইয়োগার্ট শুধুই বোরিং, তারপরেই ইয়োগার্ট এক সেক্সিজম পণ্য হিসেবে নারীদের জন্যই উৎপাদন করা হয়ে থেকে। চলুন দেখি নারীদের জন্য এই ইয়োগার্ট কি সাইন্টিফিক কারণ এতে অন্তর্নিহিত রয়েছে।

ওয়েস্টার্ন সোসাইটিতে ইয়োগার্টকে এডভার্টাইজিং এর ক্ষেত্রে এমন করে উপস্থাপন করা হয়, যাতে ধারণাই দেয়া হয়, এটা পুরুষদের নয়। পুরুষ এটা পছন্দও করেনা। যদিও কমেডিয়ান রিচার্ড হ্যারিং তার বিখ্যাত হুল শোতে ইয়োগার্ট এক উপকারী পণ্য হিসেবে উপস্থাপন করে বলেছেন, এটা খুব ভালো, সকলেরই খরিদ করা উচিৎ।তারপরেও একটি মাত্র দৃষ্টান্ত পুরো সোসাইটির দৃষ্টান্ত হতে পারেনা। বৈজ্ঞানিক কারণ-

কালচার ইনফ্লুয়েন্সঃ

প্রায় ৮,০০০ বছরের পুরনো এই খাদ্য ইয়োগার্ট ও ইয়োগার্টজাত পণ্য, সেদিক থেকে অতি পুরনো এই ফুডষ্টাফস।ঐতিহাসিক দিক থেকে চেঙ্গিস খান এবং তার আর্মির ফেমিনিন সমাহার হিসেবে এই ইয়োগার্ট বস্তুত এক হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।যদিও ভারতের কারি ইন্ডাস্ট্রি বা ভারতীয় খাবারে এই ইয়োগার্ট অতি পরিচিত ও পুরনো এক সংস্কৃতি। পশ্চিমা বিশ্ব মূলত ভারতীয় কালচারের সাথেই এই ইয়োগার্ট নামক খাদ্য পণ্য আমদানি হয়েছে, পরিচিতি লাভ করেছে। পাঞ্জাব এই ইয়োগার্ট ফিমেইল নাউন হিসেবেই সমাদৃত।যদিও ইন্ডিয়ান অধিক ঝাল সমৃদ্ধ কারিতে সহনীয় পরিমাণের মাত্রায় নিয়ে আসার জন্য এই ইয়োগার্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে। পুরুষেরা যা ব্যবহার ব্যতিরেকেই স্পাইসী কারি ভূরিভোজন সহজেই করতে পারলে নারীরা সাধারণত: মাত্রাতিরিক্ত স্পাইস সমৃদ্ধ কারি ইন্ডিয়ান সাব-কন্টিন্যান্টের বাইরে পশ্চিমা বিশ্বে সমাদৃত নয় বিধায় ইউরোপ ও পশ্চিমের নারীদের জন্য ইন্ডিয়ান স্পাইসী কারিতে ইয়োগার্ট পরিমানমতো মিশিয়ে মজাদার কারি পরিবেশন করা হয়।

বায়োলজিক্যাল ইনফ্লুয়েন্সঃ

সাধারণত: পরীক্ষাকাগারে দেখা গেছে, ইয়োগার্ট অয়েল এক্সেপ্টেড বাই দ্য ওমেন। কেননা নারীদের গ্যাস, গ্যাস্ট্রোনমি প্রোবলেম, ল্যাকটোস ইন-টলারেন্স সমস্যায় ইয়োগার্ট অনেক উপকারী। এ ছাড়াও বৈজ্ঞানিকভাবে ও চিকিতসাশাস্রে প্রমাণিত, ভ্যাজিনাল ইনফেকশন রোধে ইয়োগার্ট অনেক কার্যকরী। চিকিৎসকগণ দেখতে পেয়েছেন, পুরুষের চাইতে নারীর অনেক ক্ষেত্রেই কম ডাইজেস্টিভ প্রসেস, নারীদের এনিকডোটাল এভিডেন্সও এক্ষেত্রেও তাই সাজেস্ট করে। অবশ্যই এতোসব নেগেটিভ বায়োলজিক্যাল কনসিকোয়েনস, তারপরেও আপনি যদি সরাসরি নারীদের বায়োলজিক্যাল প্রশ্নের উত্তর চান তবে তার এফেক্ট কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এই এভিডেন্স সহায়ক হিসেবেই পাবেন বলে গবেষকগণ দেখতে পেয়েছেন।আধুনিক বিজ্ঞানাগারে গবেষকগণ আরো পেয়েছেন, ইয়োগার্ট সেবনকারী নারীগণ সাধারণ দীর্ঘজীবী হয়ে থাকেন, পক্ষান্তরে পুরুষ আর্লি স্টেজে মারা যান।

ব্যাকটেরিয়া:

মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইয়োগার্টে ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ, তবে সেটা গুড ব্যাকটেরিয়া যা বিশেষ পদ্ধতিতে এবং মাত্রাতিরিক্ত ঠাণ্ডায় রাখার ফলে ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে বা একেবারেই লুপ্ত হয়ে যায়।ব্যাকটেরিয়া সাধারণত: হাইজিন সঠিকভাবে না হলেই সংস্পর্শে চলে আসে, যা ইয়োগার্টের হাইজিন অতি উন্নতমানের হয়ে থাকে। তারপরেও বিজ্ঞান ও গবেষণাকারীরা পুরুষদের কাছ থেকে যে উত্তর পেয়েছেন, তাহলো, পুরুষ সাধারণত: অসুস্থ হতে অপছন্দ করে, যা ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শে এক রিস্ক ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করে।

ইভোলশ্যানঃ

ইয়োগার্টের ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বে অনেক থিয়োরিই ডেভেলপ করেছে, তবে সচরাচর যে থিয়োরি অধিক জনপ্রিয় হিসেবে দেখা হয়, তাহলো- সুগার এন্ড স্পাইস সমৃদ্ধ খাবার নারী পছন্দ করে, যা পুরুষ তার একেবারেই উল্টো।

এর বিপরীতে আরেকটি থিয়োরি এখানে বলবত, আর তাহলো, পুরুষ মার্স থেকে আর নারী ভেনাস নামক গ্রহ থেকে আবির্ভূত। ভেনাস অত্যধিক গরম হওয়ার ফলে ইয়োগার্ট এর মতো টেম্পারেচার কন্ট্রোল কোলার দিয়ে পরিপাটি থাকে, পক্ষান্তরে মার্স তারা অত্যধিক কোলার এমনিতেই, যার আর ইয়োগার্টের প্রয়োজন ফিল করেনা।

হোমোএরোটিসিজমঃ

ওয়েস্টার্ন সোসাইটি এখনো ডমিনেইট করে হেট্রোসেক্সোয়াল মেইল দ্বারা। অধিক রাগান্বিত বা ক্রোধ থেকে অধিক ফ্লুইড নেবার প্রয়োজনে পুরুষ সম্ভবত: আর অধিক কুল হওয়ার প্রয়োজনবোধ করেনা অন্য কোন উপাদানের- বিজ্ঞানীরা এরকম এক ধারণা থেকেও নারীদের সাথে ইয়োগার্টের এক সুন্দর গভীর সহাবস্থানের সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন।

এডভার্টাইজিং –

আধুনিক বিশ্বের এবং বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্যের বাজারজাতে এডভার্টাইজিং এক বিরাট ভূমিকা পালন করে। ইয়োগার্ট মূলত সুইট এক পণ্য, আর পশ্চিমা নারীরা সাধারণ সুইটজাত পণ্য বেশী পছন্দ করে, ভালোবাসে ডায়েটিং, খেতে পছন্দ করে ডিজার্ট, শরীরের প্রতি অধিক যত্নশীল, ফিগার ও যৌবন ধরে রাখার জন্য নারী খুব সচেতন- সেদিক থেকে ইয়োগার্ট নারীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে।পক্ষান্তরে পুরুষের পছন্দ বিয়ার,স্পোর্টস আর মিট।যে কারণে নারীদের সাথে ইয়োগার্টের এই সাযুজ্য।

এতোসব কিছুর পরেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, এসব কিছুই এখনো স্পেকুলেশনের পর্যায়ে, প্রকৃত তথ্য উদগাটনের জন্য আরো গবেষণার প্রয়োজন, যা অব্যাহত রয়েছে।

তথ্যঃ বিজ্ঞান জার্নাল
ডেইলি গার্ডিয়ান
ভোগ ম্যাগাজিন

৩০ আগস্ট ২০১৩ .

Please follow and like us:
Pin Share

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Follow by Email
YouTube
Pinterest
LinkedIn
Share
Instagram
error: Content is protected !!