সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ-লন্ডন থেকে: জীবন থেকে পালিয়ে নয়, যে জীবন প্রতিনিয়ত কষ্টকর- এতো কষ্ঠকর যে কোনভাবেই জীবনকে আর চালিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছেনা। এমন অসুস্থ্য, একেবারে অথবা টার্মিনালি ইল অসুস্থ্য লোকজন মৃত্যুবরন করার রাইট নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে বহু দিন থেকে। এ যুদ্ধ হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট হয়ে হাউস অব পার্লামেন্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। আইন এখনো পরিবর্তন না হওয়ায়, ব্রিটেনের ব্যবসায়ী যিনি টার্মিনালি ইল-লিঙ্ক এড ইন ষ্ট্যাটাস দিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছা মৃত্যুবরন করবেন স্যুইজারল্যান্ডের বাসেলে আগামী সোমবার ১৯ অক্টোবর। তার ফিউনারেলের ডেইটও তিনি এই ষ্ট্যাটাসে জানিয়েছেন আর তা হবে ১৩ নভেম্বর। তার বয়স ৫৭, তিনি কঠিণ এগ্রেসিভ মোটর নিউরন(এমএনডি) ডিসিজে ভুগছেন।তার ষ্ট্যাটাসটি হলো-
দেশে দেশে স্বেচ্ছা মৃত্যু-
যারা একেবারে ক্রনিক অসুস্থ্য, যে অসুস্থ্যতা আর ভালো হওয়ার মতো নয়, সম্ভবও নয়্ মোটর দ্বারা জীবন চলে বা একেবারে অচল নিথর দেহ নিয়ে শ্বাস প্রশ্বাস শুধু চলছে এমন লোকজন স্বেচ্ছা মৃত্যুবরন যাতে বেছে নিতে পারেন- পরিপূর্ণ আইনি প্রক্রিয়ায় সেজন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন আইন। সুইজারল্যান্ডে এভাবে স্বেচ্ছামৃত্যুর আইন রয়েছে। ব্রিটেন এখনো আইনি বাধা রয়ে গেছে। গত বছর সুপ্রিম কোর্ট এব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন এই বলে যে, বিচারপতি বলেছেন স্বেচ্ছা মৃত্যুর বিষয়টি যেহেতু পার্লামেন্টের বিষয় জড়িত- তাই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলো।
হাউস অব কমন্সে প্রাইভেট বিতর্ক হয়েছে কিন্তু এমপিরা আইন পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এখনো। গত ফেব্রুয়ারিতে কানাডা স্বেচ্ছা মৃত্যুর সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে নির্দেশনা সেট করেছে।আর গত সপ্তাহে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্ণর জেরি ব্রাউন স্বেচ্ছা মৃত্যুর লেজিসলেসনে সাইন করেছেন তবে সেটা হতে হবে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের দ্বারা ড্রাগের মাধ্যমে। আর এর মধ্য দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়া হলো পঞ্চম ষ্ট্যাট যে স্বেচ্ছা মৃত্যু বৈধতা দিলো। তার মানে ৫০ মিলিয়ন টার্মিনালি ইল আমেরিকান স্বেচ্ছা মৃত্যুর পথে আইনি বাধা দূর হলো।
ডিগন্যাটি ইন ডাইং এর বক্তব্য-
চীফ এক্সিকিউটিভ সারাহ উটন বলেন, তারা লিগ্যাল চ্যালেঞ্জে যাবেন যাতে টার্মিনালি ইল পেশেন্টরা স্বেচ্ছায় মৃত্যু বেছে নিতে পারেন। তার জীবনিপাতের জন্য যাতে তারা মেডিক্যাল সহায়তা পান সেজন্যে তারা আইনি পথে যাবেন।
সারাহর মতে, স্বেচ্ছা মৃত্যুর জন্য একজনকে ব্রিটেনের বাইরে সুইজারল্যান্ডে যেতে হবে নাকি ? ডাক্তারের সহায়তা নেয়ার জন্য সেখানে যেতে হবে- এটা কি করে হয় ? এটা কেন ব্রিটেনে হবে না ? এমন প্রশ্ন তিনি রাখেন।
এমএনডি কি-
মোটর নিউরন ডিসিজ এমন এক রোগ যাতে নার্ভাস সিস্টেমকে ডামেজ করে ফেলে দ্রুত গতিতে, মাসকল দুর্বল হয়ে যায়, ওয়াস্টিং দেখা যায়। যারা এই রোগে ভোগেন তাদের কথা বলতে, হাটা চলা ফেরা করতে, গিলতে, খেতে শ্বাস নিতে এমনকি মুভ করতেও অসম্ভব হয়।
এনএইচএস এর মতে, ব্রিটেনে ৫,০০০ লোক এই রোগে ভুগছেন। এখন পর্যন্ত এ রোগের ভালো হওয়ার কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়নি বা ভালো হওয়ার কারণ অজানাই রয়ে গেছে।
ভিডিও লিংক-
18th October 2015, London.