সাভারে বিধবস্ত বাংলাদেশঃ কি নামে ডাকবো মা তোমাকে
সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ
মাগো তুমি কোথায় ?
কি নাম দেব এই ছবিটির-
কোন ভাষায় প্রকাশ করবো এই শোক-
সারা বাংলাদেশ আজ লাশ,
সারা বাংলা হয়ে যাক আজ ব্লাড ব্যাংক
কোথায় খুজে ফিরবো সোনার টুকরো মা-বাবা-ভাই-বোন-
ডেকে এনে নির্বিচারে হত্যা,
এ যে মানবতার বিরুদ্ধে সবচাইতে বড় তাচ্ছিল্য-
জীবন নিয়ে এই মরণ খেলা,
সোনার বাংলায় আর কতো-
আর কতো খামখেয়ালি ?
উদাসীনতার একটা সীমা থাকা উচিৎ
মানুষরূপী ঐ জানোয়ারগুলো জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেয়
অথচ মানসম্মত ভবনের নিরাপত্তা দেখভাল না করেই টাকা আর স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে প্ল্যানিং পার্মিশন দিয়ে দেয়
দায়মুক্তির এই মৃত্যু-মানব হত্যার বিচার কে করবে?
রানা প্লাজা, তাজরীন, রেংকস-সবইতো ঐ দানবদের তৈরী
শাখারি বাজারে ভবন যখন ধবসে পড়ে,
কিংবা তাজরীনে যখন আগুনে পুড়ে মানুষ ছাই হয়ে যায়
তখন যদি সরকারের ঠনক নড়তো-
ভয়ঙ্কর উদাসীনতা আর আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের
বিচার হতো-
তাজরীনে অঙ্গার হওয়া শত মানুষ হত্যার যদি বিচার হতো-
রানা কি ঔদ্দ্যত্য দেখাতে পারতো-
একটু ফাটল- এমন কিছুনা,
কারণ রানাদের মতো শয়তান, নমরুদ আর খুনিরা জানে
তাদের পেছনে দল আছে,
সরকার আছে-
আরো আছে একদল পা-চাটা কুত্তা
পয়সার জন্য হেন কোন কাজ নেই ওরা করেনা-
কিন্ত এভাবে আর কতো ?
কতো মায়ের বুক খালি হবে
আর কতো বোন ভাই হারা হবে,
ভাই হারাবে তার বোন-মা-বাবাকে,
স্বামী হারা হবে প্রিয়তমা স্ত্রী
এবার বাংলাদেশ কথা বলো-
ঘুমিয়ে থেকোনা-
এবার জেগে উঠো বাংলা মা-
যেমন করে জেগেছ-
শাহবাগের বুকে, শাপলা চত্বরের বুকে,
চট্রলার হাটহাজারী থেকে-
এবার জানিয়ে দাও-
এমন করে যারা মানুষ খুন করবে
তাদের আর রক্ষা নেই-
রানা পালিয়েছে-
কিন্ত কতো আর পালাবে হায়েনার দলেরা
লাশের পর লাশের মিছিল জাগিয়ে তুলবে
এই বাঙালিকে
লাশের এই মৃত্যু উপত্যকা, এই বাংলাদেশ জেগে উঠবেই
সেদিন পালানোরও পথ খুঁজে পাবেনা…
কারণ, দুঃখের পর,
প্রতিটি ট্রমার পর,
প্রতিটি বিধবস্ত অবস্থার পর-
এই দুঃখী বাংলা জেগে উঠেছে,
এবার বাংলাদেশ জেগে উঠবেই
খুনী তুই যেই হউক-
এবার তোর রক্ষা নেই।
25th April 2013.UK