সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ: হোম সেক্রেটারি থেরেসা মে তার ড্রাফট ইনভেস্টগেরি পাওয়ার বিল সংসদে উত্থাপন করেছেন- যাতে পুলিশ ও ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস এই সকল বিষয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা, তদন্ত করতে পারবে। ইন্টারনেট ব্রাউজ হিস্ট্রি এক বছর পর্যন্ত রাখার বিধান রেখে নতুন পাওয়ার বিল উত্থাপন করেছেন।
কি আছে এই পাওয়ার বিলে–
১) ইন্টারনেট কোম্পানী এবং সোশ্যাল মিডিয়া ডাটা, ব্রাউজিং হিস্ট্রি এক বছর পর্যন্ত রাখতে হবে- তবে এতে ফুল বাউজিং হিস্ট্রি নয় বলে বিলে উল্লেখিত রয়েছে।
২) কম্যুনিকেশনস কোম্পানীদের সরকারি নিরাপত্তা এজেন্সিসমূহকে এই সব ডাটা, তথ্য, ব্রাউজিং হিস্ট্রি, কম্পিউটর, স্মার্ট ফোন ডিভাইস হিস্ট্রি, যোগাযোগের বিস্তারিত বিষয় সমূহ প্রদানে সহায়তা করতে হবে।
৩) গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা এজেন্সি সমূহকে সন্দেহভাজনদের ডিভাইসে ইলেক্ট্রনিকভাবে ইন্টারফেয়ার করার সুযোগ ও সহায়তা করতে হবে।
৪) জুডিশিয়াল কমিশনার হিসেবে সাত জন বিচারপতিকে নিয়োগ দেয়া হবে- কোম্পানিদের কাছ থেকে কালেক্টকৃত তথ্য এজেন্সিসমূহ করার পর দেখভাল ও বিবেচনা এবং সিনিয়র মিনিস্টার কর্তৃক সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারের সাইন করার পর ভেটো দেয়ার ক্ষমতা থাকবে জাজদের।
৫) সিকিউরিটি সার্ভিস ও পুলিশকে তদারকির জন্য নিউ ইনভেস্টিগেটরি পাওয়ার কমিশনার নিয়োগ দেয়া হবে
এবং থেরেসা মে-
থেরেসা মে তার এই নয়া উদ্যোগ বিগত ২০১৩ সালে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির বাধার মুখে ভেস্তে গিয়েছিল।
বর্তমানে এই সংক্রান্ত যে আইন রয়েছে সেটা অনেক কমপ্লিকেটেড এবং বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন আইন থাকায় থেরেসা মে চাচ্ছেন সবগুলো আইনকে যোগোপযোগির মাধ্যমে একটি মাত্র ছাতার নীচে নিয়ে আসার।
থেরেসা মে চাচ্ছেন বর্তমান মুহুর্তে বিশ্বের সব চাইতে শক্তিশালী এবং টাফ কম্যুনিকেশন্স আইন প্রণয়ন করতে, তার মতে এর আগে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীদের এতো ডাটা সংগ্রহের সুযোগ বা অধিকার ছিলোনা, যা অভারসি করা হতো, সরকার চাচ্ছে সেগুলোকে আইনি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে এসে পুংখানুপুংখভাবে দেখভাল, বিশ্লেষণ এবং অথরাইজেশন করার।
লেবারের মতামত-
শ্যাডো হোম সেক্রেটারি অ্যান্ডি বার্ণহ্যাম বলেছেন, বর্তমানে বিশ্ব সিকিউরিটি আন্তর্জাতিক এবং ডমেস্টিকভাবে অনেক ঝুকিপূর্ণ যা আমরা সেক্ষেত্রে পার্লামেন্টে শুধু মাত্র দেখে শুনে হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারিনা, যা অথরিটি না দেখলেও। তিনি আরো বলেছেন, থেরেসা মে ব্রডলি ইউকের বিদ্যমান আইন এবং আউটডেটেড আইনকে একত্রিত করে নতুন পাওয়ার বিল করতে যাচ্ছেন- ব্যালেন্স স্থাপনের জন্য।
সমালোচকরা যা বলেন-
কনজারভেটিভের ডেভিড ডেভিস এমপি বলেছেন, হোমসেক্রেটারি সাইন করার পরে বিচারকেরা খুব কমই সেটা প্রত্যাখ্যান বা ভেটো দিয়ে থাকেন।
এডওয়ার্ড স্নোডেন টুইট করেছেন, ইন্টারনেট এক্টিভিটি ব্যক্তির পার্সোনাল এক্টিভিটি- এটা ব্যক্তিগত এক্টিভিটি, ব্যক্তিগত লাইফ- সরকার তাতে হস্তক্ষেপ করতে চাচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস গ্রুপ লিবার্টির শামী চক্রবর্তী বলেছেন, এমপিদের উচিত মন্ত্রীদের ফোর্স করা এই আইন পরিবর্তন করা থেকে বিরত রাখা। তার মতে সরকার সাংবিধানিক আইন ভঙ্গ করে নারী, পুরুষ, শিশু সবার ইন্টারনেট হিস্ট্রি দেখতে চাচ্ছে- এটা অনধিকার চর্চা।
এমপি, মন্ত্রীদের জন্য নতুন আইনে কি হবে-
সরকার বলছে, নতুন আইনে এমপি, মন্ত্রী, এমইপিদের, পিআরদের কম্যুনিকেশন্সের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সেইফ গার্ড করা হবে।
আইন চূড়ান্তকরনের আগে প্রাইম মিনিস্টার কনসাল্টেশন করবেন বলে জানা গেছে।
সাংবাদিকদের ডাটা নিয়ে কি হবে-
সাংবাদিকেরাও বাদ যাবেননা, তাদেরকেও সব ডাটা অ্যাক্সেস দিতে হবে সিকিউরিটি সার্ভিসের লোকদের।
তবে হোম সেক্রেটারি থেরেসা মে বলেছেন, সাংবাদিকদের জার্নালিস্টিক ডাটা চাওয়া হবেনা, যতোক্ষণ না সেক্রেটারি সাইন করেন- ওয়ারেন্ট ইস্যু করেন, যদি না সেটা খুব জরুরী বলে প্রতীয়মান হয়।
আর সে ক্ষেত্রেই কেবল সেক্রেটারি অব ষ্ট্যাট ওয়ারেন্টের জন্য সাইন করবেন।
5th November 2015, London