সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ- লন্ডন থেকেঃ সন্তান সম্ভবা যখন হন, তখন একজন নারীর কোমড়ের পেছনের দিকে বেদনা অনুভূত হয় এবং ধীরে ধীরে সেই বেদনা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সন্তান ডেলিভারি হওয়ার পরেও সেই বেদনা অব্যাহত থাকে। সেজন্য চিকিৎসা নিতে হয়। অনেকে ইনজেকশন, মেডিসিন উপশম অনুযাইয়ী ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ে থাকেন। কিন্তু ফায়দা খুব একটা হয়না। কারো কারো প্র্যাগন্যাসি থেকে শুরু করে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার পরেও এই বেদনা বেশী পরিমাণে থাকে। নানান থ্যারাপিও দেয়া হয়ে থাকে।
সন্তান যখন পেটে থাকে তখন পেছনের দিকে সন্তানের অবস্থান এবং মাথা নীচের দিকে থাকে ও ডেলিভারির জন্য নিয়ম অনুযায়ী ধীরে ধীরে নীচের দিকে নামতে থাকে, এই অবস্থানহেতু কোমড়ের বেদনা অনুভূত হতেও থাকে। আবার প্র্যাগন্যান্সির কারণে কোমড়, হরমোন, লিগ্যাম্যান্ট লুস হওয়ার কারণে বেদনা শুরু হয়ে থাকে।
অ্যামি ওয়েস্টবেল্টার একজন ফ্রি ল্যান্সার সাংবাদিক। তিনি তার অভিজ্ঞততার আলোকে জানিয়েছেন, প্র্যাগন্যান্সির সময়ে এই কোমড়ের পেছনের দিকের বেদনাই আসল বেদনা- যেমন সন্তান ভুমিষ্ট হওয়ার জন্য যতোই সময় ঘনিয়ে আসে, তখনি আসল বেদনা শুরু হয় বলে তার অভিমত। তিনি আরো বললেন, এই ব্যাক পেইন রিলিফের জন্য কতো ব্যবস্থা, কতো পথ্য, কতো উপদেশই গ্রহণ করেছি। কোন কাজেই আসেনি। যিনি মা হয়েছেন বা হচ্ছেন তিনি জানেন এই বেদনা কেন হয় ও কেমন হয় । সেজন্যে তিনি নারীদের জন্য, মায়েদের জন্য বিভিন্ন রিসার্চের মাধ্যমে এই ব্যাক পেইন থেকে উপশমের কিছু পদ্ধতি পেয়েছেন, যা তার মতে কার্যকর।সেগুলোই এখানেই তুলে ধরা হলো-
হিটিং প্যাড-
তার মতে, কেউ কেউ বলে থাকেন প্র্যাগন্যান্সির সময়ে কোন অবস্থাতেই ইলেক্ট্রিক হিডিং প্যাড দিয়ে ব্যাকে হিট নেয়া ঠিক নয়, এতে বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেন একিউট পেইনের সময়ে এই হিড প্যাড নেয়া যেতে পারে স্বাভাবিক নিয়মে। তবে তার ব্যক্তিগত মতামত হলো, একান্তই হাটা চলায় অসুবিধা না হলে কিংবা রাতে ঘুমাতে কষ্ট না হলে হিটিং প্যাড সাধারণতঃ না নেয়াই ভালো। তবে স্বাভাবিক ভাবে ৫ মিনিটের মতো সময়ের জন্য হিসেব করে কঠিণ কোমড়ের পেছনের দিকে যন্ত্রণার জন্য নিলে আরাম পাওয়া যাবে- চলা ফেরা ও ঘুমানো যাবে।
বালিশ-
প্র্যাগন্যান্সির সময়ে ব্যাক পেইন থেকে আরামের জন্য আমাজনে পিলাও এবং লম্বা পিলাও পাওয়া যায় যা শুয়ে ব্যবহার করা যায়, তাতে অনেক উপশম হয়। তবে ঘরের মধ্যে যে বালিশ আছে, তা দিয়েও থ্যারাপি করা যেতে পারে, তাতেও ফায়দা লাভের কথা তিনি জানিয়েছেন।
প্রিন্যাটাল ইয়োগা-
এতে খুব আরামের কথা তিনি জানিয়েছেন, তবে ইয়োগা ক্লাসের মাধ্যমে রিলাক্সেশন খুবই এক্সপেন্সিভ। সেক্ষেত্রে তিনি জানিয়েছেন, জিপিতে মিডওয়াইফের মাধ্যনে ইনস্ট্রাক্টার দ্বারাও কোন কোন হাসপাতাল ও সেন্টারে করানো হয়। আবার বুক কিনে ভালোভাবে পড়াশুনা করে ঘরে স্বাভাবিক অর্থাৎ খুব সহজ এবং নিজের কাছে আরামদায়ক ও ইজি মনে হয় এমন ইয়োগা করা যেতে পারে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী।
সুইমিং-
সাতার কাটলে ভালো ফল পাওয়া যায়। আবার কমিউনিটি সুইমিং পুলে বা ডাক্তারের রেফারের মাধ্যমে হাসপাতালে সুইমিং সেশনে বিভিন্ন প্রকারের জল থ্যারাপি দেয়া হয়, যা খুবই উপকারে আসে। এবং এই ব্যবস্থাই সব চাইতে উত্তম ও রিস্ক ফ্রি মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য। কেননা এই জল থ্যারাপি বিভিন্ন রকমের এবং এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স থাকেন, মিড ওয়াইফ থাকেন, ইন্সট্রাক্টার থাকেন– সব কিছু ম্যাজারম্যান্ট করেই বিভিন্ন সাতার ও সুইমিং পুলের বিভিন্ন থ্যারাপি প্রদান করা হয়। এনএইচএসের মাধ্যমে এলে ফ্রি আর প্রাইভেট এলে সেশন অনুযায়ী মূল্য নির্ভর করে যা তিন পাউন্ড থেকে শুরু ।
কিরোপ্র্যাকটার( কেউ কেউ চিরোপ্র্যাকটার বলেন)-
আজকাল প্র্যাগন্যান্সির ক্ষেত্রে এই পেইনের সময়ে প্রিপ্র্যাগন্যান্সি, এন্টিন্যাটাল ও পোষ্টন্যাটাল প্র্যাগন্যান্সিতে এই চিরোপ্র্যাকটার বেশ ভালো টিপস ও সহযোগিতা প্রদানের সেবা দানের ব্যবস্থা প্রচলিত। তবে এই সেবা বিনিময়ে মূল্য দিতে হয়। প্রতি সেশন ১৫-২০ পাউন্ডের মধ্যে হয়ে থাকে।