Westminster university Islamic students’ society dominated by ultra-conservative Muslims
ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টমিনিস্টার কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টুডেন্ট সোসাইটির বিরুদ্ধে কট্রর ইসলামিক উগ্রপন্থার রিপোর্ট প্রকাশের পরও সেটা জনসমক্ষে প্রকাশ না করে, এমনকি এক ধরনের ব্যালেন্স এনে, ওয়েবসাইটে কোনভাবে যাতে আড়াল করে রেখে দিয়েছে- এমন অভিযোগ আজ গার্ডিয়ানে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, জিহাদি জন তার কট্রর পন্থা এবং মুন্ড কর্তনের অভিযোগে পরিচিত- এই লন্ডন ইউনিভার্সিটিতে ইসলামিক স্টুডেন্ট সোসাইটিতে কট্রর ও উগ্রপন্থীরা তাদের উগ্র মতবাদে চাপিয়ে দিয়েছিলো, তাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়। এমনকি এই সোসাইটিতে কোন ছাত্রীদের সাথে কথা বলাও নিষেধ, পারতপক্ষে নারীদের সাথে কথাও তারা বলেননা, নারী স্টাফদের সাথেও- ইন্ডিপেন্ডেন্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা অনুসন্ধানী রিপোর্টে এমন তথ্যই নির্দেশিত হয়েছে।
এমনকি ওয়েস্ট মিনিস্টার ইউনিভার্সিটির স্টাফ, ছাত্র ইউনিয়ন, ইসলামিক সোসাইটি- সকলেই ভীত সন্ত্রস্থ এই তথ্য প্রকাশে, পাছে উনাদের গায়ে ইসলামোফোবিয়ার আঁচ লেগে যায়।সেজন্য তারা এই কট্রর পন্থার সাথে এক ধরনের ব্যালেন্স করছেন যেন অভিযোগ উঠেছে।
ঐতিহাসিক লর্ড ক্যানেথ মর্গান এবং নিক ক্লেগের সাবেক এডভাইজর ফাইয়াজ মোগল এর দ্বারা পরিচালিত চারটি ইনকোয়ারিতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সোসাইটির বিরুদ্ধে তারা নিজেদেরকে একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ ধর্মীয় গোড়ামি বিশ্বাসে পরিচালিত হিসেবে- এমন কট্রর উগ্র পন্থার অভিযোগ এসেছে, তারা ইনকোয়ারিতেও পেয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসিয়াল এই সব বিষয়কে কখনো কখনো প্রতিকূল মনে করেও সহ্য করা এবং নারীদের প্রতি ক্যাম্পাসে যাকে বলা যায় সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য আচরণও তারা ট্যাক্টিকেলি বরদাশ্ত করার অভিযোগ উঠেছে।ইসলামিক সোসাইটি মহিলাদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে প্রত্যাখ্যান করেছেন বরং তারা পুরুষ সহকর্মীদের বিনিময়ে সহযোগিতা নেয়া- এমন অভিযোগও রয়েছে। আইএস মিলিট্যান্ট মোহাম্মদ এমওয়াজে এই ইউনিভার্সিটি থেকেই গ্র্যাজুয়েট হয়েছিলেন বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই এম ওয়াজেই জিহাদি জন হিসেবে পরিচিত, যাকে আইএস ভিডিওতে বিশ্বব্যাপী সবাই দেখেছেন ব্রিটিশ ইউএস ও অন্যান্য জিম্মিদের গলাকাটতে।
এই জিহাদি জনের পরিচয় পাওয়ার পরেই ইউনিভার্সিটি শেখ হাতিম আল হাদ্দাদ এর লেকচার দেয়া বাতিল করে দেয়, যিনি গে-সেক্সের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন।
২০১৩ সালে এই হাদ্দাদ ইউনিভার্সিটিতে লেকচার দিয়েছেন, যেখানে সে বলেছে, আগামীতে ইসলামই পৃথিবী নিয়ন্ত্রণ করবে, নেতৃত্ব দেবে, একদিন ইসলাম বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে সুপারপাওয়ার হিসেবে- তখন সবাই ইসলামের বেনিফিট উপভোগ করবে।
গার্ডিয়ান বলছে, এই রিপোর্টটি মূলত এক সপ্তাহ আগে প্রকাশিত হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ইতোমধ্যেই সেই রিপোর্ট প্রকাশ না করে ওয়েব সাইটে এমনভাবে রাখা ছিলো সাধারনের পক্ষে বের করা ছিলো দুঃসাধ্য।
অবশ্য ফেইথ ম্যাটারের থিংকট্যাংক ফাইয়াজ মোগল বলেছেন, ইসলামিক সোসাইটিকে উগ্রমতবাদী বলাটা প্রয়োজনীয় হবেনা যেহেতু কোন এভিডেন্স উপস্থিতি নেই যেমন জুইশ কিংবা এদের কারো বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করেনি, তবে তারা একটি নির্দিষ্ট পোশাক আর নির্দিষ্ট মতবাদ দ্বারা পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশের মধ্যে পরিচালিত এমন এক রক্ষণশীল মতবাদ দ্বারা বেষ্টিত। তার মতে এটা উগ্র মতবাদ ছড়ানোর জন্য উর্বর গ্রাউন্ড ব্যবহার নয় বরং রক্ষণশীল মতবাদ ছড়ানোর উর্বর গ্রাউন্ড ব্যবহার করছে ।
জানাগেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০টি দেশের ২০,০০০ ছাত্র ছাত্রী পড়াশুনা করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় সবার মধ্যে সমান এক ব্যালেন্স তৈরিতে সব কিছু করছে- ফাইয়াজ মোগলের মতে।
রিপোর্টে আরো বলা হয়েছে, ইসলামিক সোসাইটি গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত নয়, নেতা নির্বাচিত হন কেবলমাত্র নিজেদের মধ্য থেকে একটি গ্রুপের দ্বারা আগে থেকে পছন্দ ও বাছাইকৃত।
সোমবার থেকে হোম অফিস নতুন রেগুলেশন করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে উগ্রমতবাদ প্রচার করা যাবেনা, ভিন্ন নয় এক সিঙ্গেল অডিয়েন্সে সব মতামত ব্যক্ত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-চ্যান্সেলর জিওফ পেটস বলেছেন, ওয়েস্ট মিনিস্টার ইউনিভার্সিটিতে বাইরের বক্তাদের জন্য কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে- যেকোন বক্তব্য বিশ্ববিদ্যালয় প্যানেলের অনুমোদন নিয়ে করতে হবে, এবং বিশ্ববিদ্যালয় সকল অংশের সমান সুযোগ ও সকলের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা ও পারস্পারিক আস্থা বিশ্বাস রাখে।
ইসলামিক সোসাইটি কিংবা স্টুডেন্ট ইউনিয়ন কেউই এই রিপোর্ট নিয়ে কোন মন্তব্য করেননি
(ওয়েস্ট মিনিস্টার ইউনিভার্সিটি ওয়েব সাইট এবং গার্ডিয়ান অবলম্বনে সেলিম আহমেদ)