ব্রিটেনের জেলে সমলিঙ্গের সাথে সেক্স আবশ্যিক বিষয়- নতুন সার্ভে প্রকাশ

ব্রিটেনের জেলে সমলিঙ্গের সাথে সেক্স আবশ্যিক বিষয়- নতুন সার্ভে প্রকাশ

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ- লন্ডন থেকে

 

 

ব্রিটেনের জেলে বন্দী কয়েদীদের মধ্যে যৌনলিলা স্বাভাবিক এক আবশ্যিক ক্রিয়া এবং এর ফলে কয়েদীদের মধ্যে নানা যৌনবাহী রোগ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে, যা তাদের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে সম্প্রতি এক গবেষণা রিপোর্টে তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

 

হাওয়ার্ড লিগ ফর প্যানেল রিফর্ম নামের গবেষণা সংস্থা তাদের রিসার্চে জানতে পেরেছেন, কয়েদীরা নিজেদের সঙ্গীদের সাথে সেক্স করছেন, সম-লিঙ্গের সঙ্গী-সঙ্গিনী একে অন্যকে  ধর্ষন করছেন, আবার তারাই তাদের সেক্সুয়ালি ডিজেজ এর ব্যাপারে নিজেদের মতামতও তুলে ধরছেন।

 

একজন সাবেক বন্দীর সাথে কথা বলে গবেষকরা জানতে পেরেছেন অনেক ক্ষেত্রে কারারক্ষীরাও তাদের পর্নোগ্রাফিতে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন। এ ব্যাপারে এই সাবেক বন্দী জানিয়েছেন, তিনি কারারক্ষীর কাছে যখন বাইবেল চাইছিলেন, তখন তাকে নিরাপদে শোয়ার জন্য পর্নো ম্যাগাজিন সরবরাহ করা হয়েছিলো।

 

সাউথাম্পটন ইউনিভার্সিটির ক্রিমিনোলজির লেকচারার ডঃ আলিসা ষ্টিভেন্স যিনি এই কয়েদী এবং সাবেক যে সব কারাবন্দী ছিলেন তাদের সাথে যোগাযোগ করে ইন্টারভিউ নিয়েছেন, তিনি তার রিপোর্টে সার্ভে করতে গিয়ে উপরোক্ত তথ্যাবলী অবহিত হয়েছেন, যাতে এই বর্তমান এবং সাবেক বন্দীরা তাদের সেক্স পার্টনারদের সাথে  যৌনবাহিত রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত থাকাটা জরুরী।

 

ডঃ আলিসা গত সামারে ২৬ জন সাবেক কয়েদী- যাদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ এবং দুজন মহিলা কয়েদী, তারা বিভিন্ন  ধরনের অপরাধে দীর্ঘমেয়াদে কারাবন্দী ছিলেন, জেল খেটেছেন, তাদের মধ্য থেকে ৮ জন ইন্টারভিউতে স্বীকার করেছেন সম-লিঙ্গের সাথে তারা সেক্স করেছেন, গ্রুপ সেক্স করেছেন আর চারজন বলেছেন বাই-সেক্স করেছেন জেলে থাকাকালীন সময়ে।

 

ডঃ আলিসা তার রিপোর্টে সুপারিশ করেছেন, জরুরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য জেলের ভিতরে এই বাই-সেক্স, সম-লিঙ্গের সেক্স, ধর্ষন এর জন্যে। হেট্রোসেক্সুয়াল পুরুষেরা গে-সেক্স করেছেন বা বাই-সেক্সুয়াল তাদের মতে প্রিজনের মধ্যে আউট অব নেসেসিটি  যখন তারা প্রিজনের মধ্যে ছিলেন।

 

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রিজনের মধ্যে নিজেদের সেলের মধ্যে থাকা সঙ্গির সাথে অথবা যখন গোসল করার জন্য শাওয়ার খানায় ঢুকতেন , তখন এবং তাদের মধ্যে ১ থেকে ৩৫ পর্যন্ত তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে।

এর মধ্যে এমনও বন্দী আছেন যারা এক সাথে ছয়টি কনডম সরবরাহ পেয়ে যেতেন এবং লুব্রিকেন্ট জেলি- কন্ট্রাসেপশনের জন্যে এবং জানিয়েছেন ব্যবহারের পর হেলথ অফিসারের কাছে সেগুলো আবার একটি ব্যাগে ভর্তি করে ফেরতও দিতেন।

 

এর মধ্যে নারী বন্দীরা আবার জানিয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে দুজন জানিয়েছেন, নিজদের ক্লোজ রিলেশনশিপের আড়ালে একে অন্যের সাথে যৌন ক্রিয়া করেছেন কিন্তু তাদের ইন্টার ভিউ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।

 

একজন সরাসরি জানিয়েছেন জেলের মধ্যে এভাবে যৌন ক্রিয়া করা ছাড়া কোন উপায় ছিলোনা এবং এতে তিনি সম্পূর্ণ সেটিসফাইড তার এই সম্পর্কের জন্য।

 

অবশ্য এক নারী বন্দী বলেছেন, এটা ছিলো বড় ধরনের একটা শক, বড় ধরনের কালচারাল শক। কারণ একই গোত্রের একজন আপনাকে কিস করছে, তারপর যৌন ক্রিয়া করছে কিন্তু আমার ধারণা ছিলোনা কি হতে যাচ্ছে এর পরে অথচ উপায়ও নেই।

 

রিপোর্টে আরো জানা গেছে, এধরনের সেক্স কার্যক্রম জেলের ভিতরে খুবই উচু ধরনের সহ্যগুনের মধ্যেই সম্পন্ন হতো । এতে একজন কয়েদীর ভাষায় জেল কর্তৃপক্ষ জানতেন কয়েদীর দীর্ঘমেয়াদী সাজাভোগ করতে হবে, ক্লোজডোরে তাই  যা কিছু করুক নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বা তুলে ধরার জন্য।

কিন্তু আরো ভয়াবহ যে তথ্য আর তাহলো প্রিজনের ভিতরে ড্রাগস এর পেমেন্ট, গেম্বলিং লসের বা ড্রাগস এডিকশনের বিপরীতে পেমেন্ট হিসেবে সেক্সুয়াল ফেভার অবধারিত ছিলো।

 

তিনজন পুরুষ বন্দী জানিয়েছেন তাদের কিভাবে রেপ করা হয়েছিলো এবং প্রাণের ভয় দেখিয়ে রেপ করা হয়েছিলো। রেপ হওয়ার পরেও এমনও একজন রয়েছেন, জেল কর্তপক্ষকে জানাতে পারেননি, কারণ তাতে আরো বার বার রেপ হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। পাঁচজন মিলে একজনের সাথে এতো বেশীমাত্রায় রেপ করা হয়েছিলো, ফলে তাকে হাসপাতালে পাঠিয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিলো।

 

এই প্যানেলের চীফ এক্সিকিউটিভ ফ্রান্সিস কুক জেলের ভিতরে এই বিষয়টিকে তাই আর্জেন্ট হেলথ ইস্যু অভিহিত করে এ ব্যাপারে এডুকেশনের সুপারিশ করেছেন। কমিশন বর্তমান কয়েদীদের ইন্টারভিউ নিতে চাইলে মিনিস্ট্রি অব জাস্টিস এদের ইন্টারভিউ ব্লক করে দিয়েছেন বলে তারা জানিয়েছেন।

 

salim932@googlemail.com

17th March 2015,London

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *