মাহে রমজানের অফুরন্ত ফজিলত -(০৩)

মাহে রমজানের অফুরন্ত ফজিলত -(০৩)

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ

মাহে রমজান মাসের ফজিলত নিয়ে কিছু কথা-(তৃতীয় পর্ব)

রমজান মাসে সেহরি খাওয়া ও সুন্নত।তাবরানীর সোর আল সূহর কিতাবে সাহাবী ইবনে উমর রাজি আল্লাহু তাআলা আনহু হতে জানা যায়, তিনি বলেছেন, অবশ্যই আল্লাহ পাক এবং তার মালাইকা তথা ফেরেশতারা প্রতিনিয়ত মাফি প্রেরণ করেন যারা রমজান মাসে রাসূলুল্লাহর সুন্নত সেহরি খেয়ে থাকেন।

 

সেহরি খাওয়া যেমন সুন্নত একই সাথে এবাদত-বন্দেগীর ব্যাপারে এতে বিশেষ সহায়ক, ফলে যেমন আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লামের সুন্নত তাহাজ্জুদ পড়ার সুযোগ হয়, একই সাথে ফজরের নামায পড়ার ও সুযোগ লাভ করা যায়।এবং হাদিস শরীফে বলা হয়েছে সেহরি তাহাজ্জুদ ও ইফতারের সময় বান্দার দোয়া আল্লাহ পাক কবুল করে থাকেন।

 

 

ইফতারের সময় অযথা সময় নষ্ট না করে বরং এই সময় একাগ্র চিত্তে আল্লাহর কাছে নিজের গোনাহ মাফির জন্য ও কল্যাণ লাভের জন্য দোয়া করা উচিৎ, কারণ এই সময় দোয়া ক্কবুলের কথা বহু কিতাব-গ্রন্থের অনেক রেফারেন্স বুকে বিশেষ জোর দিয়ে বলা হয়েছে।ইফতারের খেজুর খাওয়া পর্যন্ত দোয়া ক্কবুল হয়ে থাকে।শেষ রাতে সেহরির সময়ও দোয়া ক্কবুলের কথা হাদিসে উল্লেখিত আছে।

 

 

রমজানের প্রথম দশ দিন এই দোয়া পড়তে পারেন, যা আল-হাকিম,ইমাম ইবনে হাব্বান আর আবু দাউদ শরীফে বলা হয়েছে,আর তা হলো- লা ইলাহা ইল্লা আনতা,আল্লাহুম্মা আস্তাগফিরুকা লী জানবি ওয়া আসআলুকা রাহমাতিকা, আল্লাহুম্মা যিদনি ঈলমা ওয়ালা তূযিগ ক্কালবী বাআয়দা ঈজ হাদাইতানী ওয়া হাবলী মিন লাদুনকা রাহমাতান ইন্নাকা আনতাল ওয়ায়াহাব,-যার মানে হলো আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই,ও আল্লাহ আমি তোমার কাছে আমার গুনাহ মাফি চাইতেছি,আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি,ও আল্লাহ আমাকে জ্ঞান দান করো,আমার হ্রদয়-মন-অন্তঃকরণ কে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষা করে সঠিক পথে পরিচালিত করো,এবং তোমার দয়া থেকে আমার জন্য ক্ষমা মঞ্জুর করো,অবশ্যই তুমি ক্ষমা প্রার্থনাকারী দয়ালু দাতা।

 

 

আরো সহজ এবং সংক্ষিপ্ত ভাবে তিরমিয শরীফে বলা হয়েছে, আল্লাহুম্মাগ ফিরলী ওয়ারহামনী ওয়াজবুরনী ওয়াহদীনী ওয়ারযুক্কনী।প্রথম দশ দিনে বেশী বেশী করে এমন দোয়া করা উচিৎ।

 

 

অবশ্যই বেশী বেশী করে কোরআন তেলাওয়াত করা জরুরী,কারণ এই রমজানেই কোরান নাযিল হয়েছে।

 
রমজানের দ্বিতীয় দশ দিন কোরআন তেলাওয়াতের সাথে সাথে বেশী বেশী করে এই দোয়া করা যেতে পারে,যা সহীহ বোখারী শরীফে ভলিউয়ূম ৮ এর পৃষ্ঠা ২১২-৩ এর নাম্বার ৩১৮ তে বলা হয়েছে, আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আব্দুকা,ওয়া আনা আলা আহদীকা, ওয়াহদীকা মা-স ত্বাথায়তা আঊয়্যূযুবিকা মীন শাররী মা-স থাথায়তা আবু-উ-লাকা বিনিঈমাতিকা আলাঈয়া,ওয়া আবু-উ-বিযানবী ফাগফিরলী ফাইন্নিহু লা ইয়াগফিরু জুনুবা ইল্লা আনতা।

 

 

আল তাবারীনিতে এক বিশেষ দোয়ার কথা বলা হয়েছে, যেমন- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা বিনিঈমাতিকা সা-বিআগাতিল লাতি আনয়ামতা বিহা আলায়ু ওয়াবালায়িকাল লাজি ইবতিলাইতানি ওয়াবিফাজলিকাল লাজি আফজালতা আলায়ু আন তুদখিলানিল জান্নাতা আল্লাহুম্মা আদখিলনিল জান্নাতা বিফাজলিকা ওয়াআমান্নিকা ওয়ারাহমাতিকা।

 

 

রমজানের তৃতীয় বা শেষ দশ দিনে বেশী বেশী করে এই দোয়া করা যেতে পারে,যা আবু-দাউদ, আহমদ শরীফে বর্ণিত হয়েছে,আর তা হলো- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল জান্নাতা ওয়ানাঈমাহা ওয়া বাহজাতাহা ওয়া আউয়ূযুবিকা মিনান নারি ওয়া সালা সিলিহা ওয়া আগলালিহা।

 

 

অথবা পড়তে পারেন,যা আহমদ ইবনে মাজাহ তে উল্লেখিত আছে,আর তা হলো- আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকাল জান্নাতা ওয়ামা ক্কাররাবা ইলাইহা মিন ক্কাঊলী আঊ আমালী ওয়া আয়ূযূবিকা মিনান নারি ওয়া ক্কাররাবা ইলাইহা মিন ক্কায়লী আও আআমালী ওয়া আস আলূকা আন তাজয়াআলা কুল্লা ক্কাজাঈ ক্কাজাইতাহু লী খাইরা।

 

 

আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে পবিত্র রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা আর তা থেকে পরিপূর্ণ সকল নেয়ামত আহরণ করার তৌফিক দান করুন,আমিন।

 

আল্লাহ পাক সকলের সহায় ও মঙ্গল করুন-এই হউক আমাদের প্রার্থনা।

 

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ
Salim932@googlemail.com
9th July 2013.United Kingdom.

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *