সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ-
০১)
বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক, তথ্য-প্রযুক্তি, শিক্ষা-সংস্কৃতির ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।এমনও অনেক আবিষ্কার আছে, যেখানে আমাদের ছেলে মেয়েরা এখন আকাশছুয়ী জনপ্রিয়তা শুধু নয়, স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা প্রমাণের স্বাক্ষর রাখছে। কিন্তু এতো কিছুর পরেও আমাদের দেশ, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা আর রাষ্ট্রের রেমিট্যান্সের প্রাণ প্রবাসীদের প্রতি উদাসীনতা সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এখনো ৪০-৫০ দশকের সেই পাকিস্তানী-ব্রিটিশ ভাবধারা ও মডেলের ন্যায় প্রবাসীদের সাথে আচরন ও কর্মকান্ড করা হচ্ছে। প্রবাসীদের সাথে আমলা ও রাষ্ট্রের এবং বিভিন্ন এজেন্সির আচরনের সংস্কৃতি এখনো মান্দাতার আমলের সেই প্রেতাত্মার উপর ভর করে করা হচ্ছে যদিও মাঝে মধ্যে সুন্দর সুন্দর বাক্যের আলোকে নানান স্বপনের বাণী শুনানো হয়, অথবা আন্দোলন সংগ্রামের ফলে টনক নড়তে দেখা যায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে অথবা কিছুটা মাত্র। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এমনকি বিশ্বের প্রভাবশালী ১২টি দেশ যেখানে রাষ্ট্রীয় এবং প্রশাসনিক স্বীকৃতির মাধ্যমে তার প্রবাসীদের অধিকার, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং তাদের অধিকার সমূহ সম্মুন্নত ও প্রতিষ্ঠায় ও ভোগ করার সুযোগ সুবিধা অবারিত করে তাদের এক্সপার্টিতাকে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর পথ সুগম করে দিচ্ছে, ঠিক সেখানে আমরা এখনো স্বাধীনতার ৪৪ বছর পরেও নানা দাবি দাওয়া এমনকি আমাদের মৌলিক মানবাধিকার সমূহ নিয়ে নানা ফোরাম ও সমিতিতে উত্থাপন করি, আন্দোলন করি, দাবী দাওয়া নিয়ে সেমিনার সিম্পোজিয়াম ও স্বারকলিপি দেই- আফসোস বিচিত্র আমাদের এই সেল্যুকাস।অথচ এই প্রবাসীরা বাংলাদেশের গোটা বাজেটের, আমদানী বাণিজ্যের, গার্মেন্টস শিল্পের, মেলামাইন ইন্ডাস্ট্রি, ব্যাংক, বীমা, হেন কোন সেক্টর নেই যে প্রাণ ও রক্ত সঞ্চার করে চলেছি- লক্ষ কোটি প্রবাসীর ঘামে ও হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফসল-আজকের এই সোনার বাংলাদেশ।
০২)বাঙালির নানা উত্থান-পতন এর পর্যায়ে বাংলায় ইংরেজ আগমনের পর উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে ইংরেজি শিক্ষার প্রচলন, ইউরোপীয় ভাবধারার প্রসার এবং বিজ্ঞান চর্চার ফলে উদ্ভব হলো এক নতুন বাঙালি শ্রেণীর। সংক্ষেপে এভাবেই শুরু হলো বাঙালি জীবনে পাশ্চাত্য প্রভাব।ইংরেজী শিক্ষা ও সাহিত্য, ইউরোপীয় জ্ঞান-বিজ্ঞান, যুক্তি, দর্শন, রাজনৈতিক ব্যবস্থা- বাঙালি সমাজ ব্যবস্থায় এক নতুন স্তর ও ধারার এবং পরিবর্তনের সূচনা এবং একই সাথে উৎপাদন ব্যবস্থায় নতুন এক পরিবর্তনের ফলে সমাজে ভাবপত এবং মনোজগতেও নতুন এক পরিবর্তন এনে দেয়-যা আমাদের সমাজে দীর্ঘ স্থায়ী। ঐ সময়ে বৈঞ্চব ধর্ম সমাজের ছোট অংশে আবির্ভাব হলেও ইসলাম ধর্ম পরিপূর্ণ এবং স্থায়ী করে নেয়। আবার বাঙালির নানা পর্যায়ে এসে ইসলাম ধর্ম মুসলমান সমাজে শুধু ধর্মীয় আচরনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও বর্তমান পর্যায়ে রাজনৈতিক ব্যবহারের মাত্রা তীব্রভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাঙালির ঘাত-প্রতিঘাতের ইতিহাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ও ল্যাটিন আমেরিকার জাতিগত পার্থক্যের মধ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের একটা মিলও লক্ষ্যণীয়।
আবার বাংলা, বঙ্গ, বঙ্গাল এইসব নামের উৎপত্তির ইতিহাসও ব্যাপক এবং আজও বিদ্যমান।হিন্দু প্রাচীন গ্রন্থসমূহেও এই শব্দসমূহের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।আইনি আকবরি যে গ্রন্থ রয়েছে সেখানে আল শব্দ দিয়ে জমিজামা বিভক্তির প্রাচীন নাম বঙ্গ এই শব্দের সাথে আল(+) যুক্ত করে বঙ্গাব্দ নাম ধারণের তথ্য বিবৃত রয়েছে। শামসুদ্দিন ইলিয়াস শাহের আমলেই সর্বপ্রথম পৃথক পৃথক নৃপতি শাসিত একরাজ্য গঠণের পর তাকে “বাংগেল” নামে অভিহিত করা হতো। পরবর্তীকালে পর্তুগীজ এবং ওলন্দাজের পঞ্চদশ, ষোড়শ, সপ্তদশ শতকে বাণিজ্যের জন্য যারা আসেন, তাদের কল্যাণে নানা কারণে এই বাংগেলা বেঙ্গল উচ্চারন যা আজো অভিহিত হয়ে আসছে।
০৩) পরবর্তীকালে এতদ অঞ্চলে মুসলমান সুলতানী আমল আর তাদের ৫০০ বছরের উল্লেখযোগ্য ঘটনা সমূহ আমাদের স্বাধীন বাংলার ইতিহাসের চেতনায় ব্যাপক ভুমিকা লক্ষ্যণীয়। বাঙ্গালির স্বাতন্ত্র্য ও স্বয়ংসম্পূর্ণতার অস্তিত্বে নিহিত রয়েছে বাঙালির ঐতিহাসিক বিবর্তনের শেকড়ে।এই স্বাতন্ত্র্য বাঙালি স্বত্বা থেকে কোনভাবে পৃথক করা যায়না বা সঙ্গত নয়।
০৪) আজকের যুগে এই বিবর্তনের ধারায় বাঙালি জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে শুধু ছড়িয়ে ছিটিয়ে নয়, সেখানে বা সব জায়গা থেকে ভুমিকা রাখার পাশাপাশি সেতার নিজের দেশের প্রতি অসম্ভব এক মায়া মমতা আর ভালোবাসার সাথে একাত্ম এবং ভুমিকা রাখার নিরন্তর প্রয়াস অব্যাহত রেখেছে। শ্রীচৈতন্য, রাজা রামমোহন রায়, স্বামী বিবেকানন্দ, স্যার জগদীস চন্দ্র বসু, সত্যেন বসু, লালন ফকির, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, শাহ আব্দুল করিম, হাসন রাজা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়া সার্বিকভাবে পৃথিবীর সর্বত্র আলোচিত না হলেও বাঙালি এবং অর্থাৎ একজন বাঙালি কিন্তু পৃথিবীর সর্বত্র আজ আলোচিত এবং পরিচিত। সারা পৃথিবী আজ জ্ঞান ভিত্তিক তথ্য-প্রযুক্তি, কম্পিউটার, প্রকৌশল, পারমানবিক জ্ঞান, মহাকাশ বিজ্ঞান, পরিবেশ বিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা ইত্যাদি আজ মানুষের জনজীবনকে প্রভাবিত করছে এবং নাগালের মধ্যে।
কানেক্ট বাংলাদেশ কি –
বিশ্বব্যাপী এই প্রবাসী বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট, অধিকার, কর্তৃত্ব দাবীতে এক সম্মিলিত প্ল্যাট ফর্ম- এটাই এখন পর্যন্ত সকল মাধ্যমেই কানেক্ট বাংলাদেশের সংক্ষেপিত ঘোষণা- যা আগামী ১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বরে জার্মানির ফ্রাংফোর্টে যে সেমিনার হবে, বলা হয়েছে, উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে, সেখানে আলাপ-আলোচনা করে সকলের সম্মতিতে আরো নতুন কলেবরে ও ব্যাপকভিত্তিতে সার্বজনীন ঘোষণা পত্র করা হবে বা প্রকাশ করা হবে।
সুনির্দিষ্ট দাবিতে কানেক্ট কেন-
কানেক্ট বাংলাদেশ বলছে, প্রবাসীদের অনেক দাবী- বিভিন্ন ফোরাম ও এসোসিয়েশন প্রবাসীদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট সেইসব দাবীর কলেনরের মাত্রা ক্রমান্বয়ে সাজিয়ে আন্দোলন করছেন। সন্দেহ নাই। কিন্তু কানেক্ট বাংলাদেশ সেই দাবীগুলোর সাথে সহমর্মীতা প্রকাশ করে সুনির্দিষ্ট দাবী ফোকাস করে এগিয়ে যেতে চায়, যাতে কমন আশু প্রয়োজনীয় দাবীতে সারা পৃথিবিতে ছড়িয়ে থাকা সকল বাংলাদেশী প্রবাসী একত্রিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ এক প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক অথচ কার্যকর এক আন্দোলন করে বাস্তবায়নের প্রেসার গ্রুপ করা।
কানেক্ট বাংলাদেশের ইস্যু-
ভোটাধিকার ও আইডি কার্ড এবং হাই কমিশন ও এম্ব্যাসী থেকে পাসপোর্টের ন্যায় ইস্যু ও নবায়ন
দ্বৈত নাগরিকত্ব আইনের প্রবাসীদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিরোধী ধারা বাতিল
প্রবাসীদের প্রতিনিধি এবং প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের প্রবাসীদের স্বার্থ সংশিলষ্ট বিষয়াদি নিরসনে কার্যকর রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহণ
কানেক্ট বাংলাদেশের পেছনে যারা-
প্রবাসীদের কতিপয় কমিউনিটির ব্যক্তিত্ব- যাদের বক্তব্য পরিষ্কার, এই সংগঠন কোন ধরনের রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম বা রাজনৈতিক সংগঠণের সহযোগি বা সংগঠণ নয়, হবেও না। প্রচলিত কোন এসোসিয়েশন ও সংগঠণের মতো কানেক্ট বাংলাদেশের কোন কমিটিও থাকছেনা।বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় কে আসলো, কে বসবে- কানেক্ট বাংলাদেশের তাতে কিছু আসে যায়না। কানেক্ট বাংলাদেশ কেবল মাত্র বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের দাবী দাওয়া নিয়ে প্রেসার গ্রুপ এমনভাবে ঐক্যবদ্ধ করতে চায়- যা সত্যিকার অর্থে প্রবাসীদের জন্য কার্যকর হয়।যেমন লন্ডনের বা নিউইয়র্কের প্রবাসীদের সমস্যা কেবল তাদের প্রতিনিধি থাকলে, তার মাধ্যমে সরকারের সাথে যোগাযোগ করে বাস্তবায়ন(জমিজামা থেকে এয়ারপোর্ট সকল কিছুই)। বিশ্বের বিভিন দেশ থেকে হাই কমিশন বা এম্ব্যাসী যেখানে আছে যখন প্রবাসীদের নিজস্ব প্রতিনিধি রাষ্ট্রীয় ভাবে থাকবে, তার মাধ্যমে সরকারের সাথে বৈঠক তারা করে সরকারি উদ্যোগে বাস্তবায়নে এবং আইনি বাস্তবায়ন ও সহায়তা, আবার প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রবাসীদের সাথে ব্রিফিং- এই ব্যবস্থা সারা বিশ্বের ১২টি দেশে এখন প্রচলিত এবং এফেক্টিভ প্রমাণিত( বিস্তারিত গ্র্যাফিক্স ও ডেমো সেমিনারে থাকছে)।
কানেক্ট বাংলাদেশ চায়- ভোটাধিকারের সাথে সাথে ভোটার বা ন্যশনাল আইডি কার্ড পাসপোর্ট যেভাবে হাইকমিশন ও এম্বাসী থেকে দেয়া হয়, সেভাবে সংশ্লিষ্ট দেশের হাই কমিশন ও এম্বাসী থেকে ইস্যুর ও নবায়নের ব্যবস্থা, তাতে প্রচলিত ফি ও চেকিং ব্যবস্থা সরকারিভাবে করা যেতে পারে।
উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ এক অহিংস আন্দোলনের নায়ক মহাত্মা গান্ধীকে চেনেননা বা তার কাজ ও কর্মের সাথে পরিচিত নন-এমন লোক পাওয়া মুস্কিল হবে। মহাত্মা গান্ধী সাতটি সামাজিক পাপ পরিহার করার জন্য তার জনগণকে বলেছিলেন। আর তাহলো:
- নীতিহীন রাজনীতি পরিহার
- নৈতিকতাহীন বাণিজ্য পরিহার
- শ্রমহীন সম্পদ পরিহার
- চরিত্রহীন শিক্ষা পরিহার
- মানবতাহীন বিজ্ঞান পরিহার
- বিবেকবর্জিত আনন্দ পরিহার
- ত্যাগহীন অর্চনা পরিহার
বলা বাহুল্য, এই সাতটি সামাজিক পাপ বা অপরাধ আজকের আমাদের এই বাংলাদেশে এতো বেশী লালিত ও পালিত, রাষ্ট্রীয় এবং সামাজিকভাবে হয়ে আসছে যে, এর বাইরে আমরা কেউই মুক্ত নই।
আমাদের এখনকার রাজনীতি, অর্থনীতি, বাণিজ্য নীতি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি বলতে গেলে সর্বক্ষেত্রেই এক অসম্ভব নীতিহীন কর্মকাণ্ড দ্বারা পরিবেষ্টিত যে, যে যত বেশী নীতিহীন, বিবেকবর্জিত কাজ করতে পারঙ্গম, সে ততোবেশী নামী-দামী। আর এ কথাটি সমাজের একেবারে উপর তলা থেকে প্রশাসনের সর্বস্তরে সমানভাবে বিদ্যমান। একজন ভুক্তভোগী প্রবাসী জানেন, তার সাথে বা তার অবর্তমানে সহায় সম্পত্তি এবং এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ি বানানো, জমি ক্রয় বিক্রয়ে, ব্যাংক একাউন্টে- কী পরিমাণ হয়রানি করা হয়। কানেক্ট বাংলাদেশ এই প্রবাসীদের সাথে নীতিহীন কর্মকান্ডকে চিরতরে বন্ধ করার জন্যে বিশ্বব্যাপী এক প্ল্যাট ফর্ম গড়তে চায়।প্রবাসীদের উদ্যোগে আসন্ন জার্মানির সেমিনার তাই সর্ব দিক থেকেই বিশেষ তাতপর্যপূর্ণ।
০৫) সমাজ বিকাশের নতুন নতুন সম্ভাবনাকে বিকশিত করে তোলার জন্য পুরনো বিজাতীয় শক্তির বিরুদ্ধে আপোষহীন সংগ্রামের ঐতিহ্য নিয়েই বাঙালি জাতির জন্ম। স্বাধীনতা যুদ্ধে উপনিবেশিক স্বৈরাচারী শক্তিকে পরাভূত করে বাঙালি জাতি বীরত্বের পরিচয় দিয়েছে।
বিগত ৪৪ বছরে প্রবাসীরা বাঙালি জাতিকে দিয়ে যাচ্ছে বিনিময়ে কিছু দাবী করেনি। কারণ এই বাঙালি দেশ সেবাকেই ব্রত হিসেবে নিয়েছে। কিন্তু দেশে তাদের পরিবার পরিজন এবং তাদের সহায় সম্পত্তির হেফাজত আর তাদের মৌলিক নাগরিক ও জাতীয় অধিকার যাতে খর্ব করা নাহয়- এটাই তারা চায়।
এখানে বিশেষ করে উল্লেখ না করলেই নয়, “ ষোড়শ খ্রিষ্টাব্দে শ্রী চৈতন্যদেবের আবির্ভাব ও বৈষ্ণব ধর্ম, অপরদিকে মুসলিম সুলতানদের রাজত্বকাল ইসলামী সংস্কৃতির প্রসার উভয়ই বাঙালি জীবনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলো। প্রথম জাগরণের এ সময়কালের মুসলিম সুলতান ছিলেন আলাউদ্দিন হোসেন শাহ ( ১৪৯৩–১৫১৯)।“
“পরবর্তী উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ইংরেজি শিক্ষার প্রসার এবং ইউরোপীয় দর্শন ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রভাবে বাংলা দ্বিতীয় বারের মতো নব জাগরণ-এর আলো দেখতে পেলো। একেই বলা হয় উন–বিংশ শতাব্দীর বেঙ্গল রেনেসাঁ– যা দ্বিতীয় জাগরণ হিসেবে পরিচিত।“
এই দুই জাগরণ ছিলো ক্ষণস্থায়ী। তা হওয়াটাই স্বাভাবিক । কেননা এই জাগরণের উন্মেষ ঘটেছিলো কেবলমাত্র নাগরিক সমাজের উঁচু শ্রেণীর মধ্যে এবং সেখানেই সীমাবদ্ধ ছিলও। আমরা জানি, যে কোন সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন স্থায়িত্ব পায় তখনই, যখন তা সমাজের প্রতিটি শ্রেণী এবং পর্যায়কে ছুঁয়ে যায়।
“পাশ্চাত্য দেশের পণ্ডিতদের ধারণা ছিলও ষোড়শ এবং উনবিংশ শতাব্দীর সেই দুই জাগরণের পর বাঙালি আর কখনো একক সত্ত্বা ফিরে পাবেনা। তারা হয়তো পাকিস্তানী বাঙালি কিংবা ভারতীয় বাঙালি হয়ে পরিচিত থাকবে। তাই বাংলাদেশের জন্মক্ষণ পর্যন্ত বাংলা এবং বাঙালি ছিলও তাদের কাছে এক বিস্মৃতির পর্যায়ে চলে যাওয়া জাতির পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন স্বরূপ।“
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালির জাতি–রাষ্ট্র বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা সেই ধারণা ভেঙ্গে দিলো। বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাসে এ এক বিশাল অর্জন। আর সেই অর্জনের নিত্য সঙ্গী প্রবাসীরাও যাদের হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমও মিশে আছে বাংলাদেশ ও বাঙালির অস্তিত্বে-মজ্জায়। তাহলে তাদের মৌলিক অধিকার থেকে কেন বঞ্চিত করা হবে ? আর মৌলিক অধিকার আদায়ের প্রেসার গ্রুপই হলো কানেক্ট বাংলাদেশ।
আপনিও জয়েন করেন এবং মতামত দিন, আপনার অধিকারে সোচ্চার হউন-https://www.facebook.com/groups/477262475811816/
২১শে আগস্ট ২০১৬-লন্ডন ।
Face Book Comments —