সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ, লন্ডন থেকে
বেশ কয়েক মাস আগে আল জাজিরা থেকে ইমেইল পাই, বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ডঃ গওহর রিজভী আল জাজিরার হেড টু হেড অনুষ্ঠানে আসবেন। প্রশ্ন করলে আল জাজিরাকে জানাতে। সাধারণতঃ এধরনের অনুষ্ঠানে কিছু প্রি-সেট কোয়েশ্চান থাকে। যেমন স্কাই এবং বিবিসি এধরনের অনুষ্ঠানে, এমনকি প্রাইম মিনিস্টারের কোয়েশ্চানে এক ধরনের প্রি-সেট কোয়েশ্চান আগেই উভয় পক্ষকে অবহিত করা হয়ে থাকে, যেমন ডেভিড ক্যামেরন, এড মিলিব্যান্ড,নিক ক্লেগের ডিবেটের অনুষ্ঠানে এবং ডেভিড ক্যামেরুনের ব্রেক্সিট গণভোটের অনুষ্ঠানে(লাইভ) স্কাই কিছু প্রি-কোয়েশ্চান চেয়েছিলো।তাছাড়া এধরনের অনুষ্ঠান লাইভ বলা হলেও রেকর্ডকৃত অনুষ্ঠান লাইভ ব্রডকাস্টিং হিসেবেই প্রচারের এক ধরনের ব্যবস্থা পশ্চিমা ও ইউরোপের মিডিয়ায় চালু রয়েছে।এরপর থেকে একটু খোজ খবর নিয়ে বেশ কিছু তথ্য জোগাড় করতে সক্ষম হলাম, যদিও সেই তথ্যগুলো তখনো যাচাই বাছাই করার কোন সুযোগ ছিলোনা। আলজাজিরার সাথে আগেই বলে রাখি, খুব একটা নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়নি বা সুযোগ হয়নি। তারপরেও আগ্রহের কমতি ছিলোনা, সদ্য নির্বাচন নিয়ে দেশে বিদেশে এমনকি ক্ষমতাসীন সরকারের অনেক নেতার ভিতরে যখন প্রশ্ন রয়েছে, খোদ নির্বাচন কমিশনের ভিতরেও মতভেদ রয়েছে, যা পত্র পত্রিকায় সেগুলো প্রকাশিতও হয়েছে।আল জাজিরা বিগত স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের আন্দোলনের কাভার বিশ্ব মিডিয়ায় অন্যদের চাইতে বলা যায় তুলনামূলকভাবে বেশী কভার করেছিলো।আলোকচিত্রী সাংবাদিক ডঃ শহীদুলের গ্রেপ্তার নিয়ে আল জাজিরাও ছিলো সব চাইতে সোচ্চার।এদিক থেকে আল জাজিরা বেশ প্রশংসার দাবি রাখে।যদিও যে মধ্যপ্রাচ্য থেকে আল জাজিরার উৎপত্তি, সেই মধ্যপ্রাচ্যের সরকার সমূহের এবং সামাজিক রাজনৈতিক এবং মানবাধিকার, সেই সাথে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সরকার দ্বারা বাংলাদেশি শ্রমিক(নারী শ্রমিকদের)দের অমানবিক জীবন যাপন, তাদের মানবাধিকার লংঘন এবং সুরক্ষা নিয়ে আল জাজিরা খুব একটা দৃশ্যমান কোন ভুমিকা রেখেছে(দায়ছাড়া সংবাদ ছাড়া) বলে মনে হয়নি।আমি হয়তো খেয়াল করিনি, কেউ লক্ষ্য করে থাকলে ভুল শোধরে নেবো।এমনি অবস্থায়, আগ্রহের মাত্রা আরো বেড়ে গেলো, যেহেতু নির্বাচন অব্যাহতির পর থেকে ডঃ গওহর রিজভী বেশ নিরবে অনেকদিন ধরে লন্ডনে নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। তাছাড়াও বিগত নির্বাচনের আগে ডঃ গওহর রিজভীর মতো ঝানু কূটনৈতিক বিশ্লেষক, অক্সফোর্ড আর ট্রিনিটির খ্যাতিমান অ্যাকাডেমিক ফেলোকে মার্কিন মুল্লুক থেকে কংগ্রেসম্যানদের কাছ থেকে একেবারে শূন্যহাতে ফিরে আসার তথ্য বাজারে খুব চাউর হয়ে আছে। যে ভারতের দক্ষিণ ব্লকের অত্যন্ত বিশ্বস্থ বিশ্ববরেন্য এই বিশেষজ্ঞকে ভারতও নিরাশ করেছে ২০১৮ সালের শেষের দিকে। এরকম তথ্যের যদিও কোন বাছ বিচারের খুব একটা সুযোগ নানাবিধ কারণে সম্ভব না থাকায়, অনেকটা আগ্রহ ও আকর্ষনের মাত্রার পরিমাণ ছিলো বেশ তীব্র।সব মিলিয়ে অক্সফোর্ডের এই হেড টু হেড অনুষ্ঠানে নিজের উপস্থিতির নিশ্চিত করলাম আল জাজিরাকে।
ইতোমধ্যেই মাস খানেক সময় তখনও হাতে। নিজের ভিতরে কৌতুহল বাড়তেই লাগলো।কৌতুহল এই কারণে, বিশ্ব কূটনীতির স্রোত এখন খুব একটা গওহর রিজভীর অনুকুলে নেই। বাংলাদেশের কূটনৈতিক ম্যাকানিজমের যেটুকু এখন ক্যারিশম্যাটিক কারিগর হিসেবে বিশ্ব কূটনীতিতে ডঃ এ কে আব্দুল মোমেন আবির্ভুত, ঠিক ততখানি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ঠা হয়েও ডঃ গওহর রিজভী ম্রিয়মান। তাছাড়া, হেড টু হেড এর আলজাজিরার ভারতীয় ব্রিটিশ মুসলিম সাংবাদিক মেহেদি হাসান অত্যন্ত তীক্ষ্ণ, প্রখর এবং অসম্ভব স্ট্রেইট কাট এক সাংবাদিক। যে সাধারণতঃ নিজের প্রশ্নের উত্তর আদায় করে নেয়ার জন্য হেন কোন পথ নেই যে, সে ব্যবহার করেনা। ট্রাম্প থেকে বিশ্বের বড় বড় ব্যক্তিত্বের হেড টু হেড, ছাড়াও হাফিংটনের লন্ডনের হেড, ইন্টারসেপ্টের ঝানু সাংবাদিক হিসেবে যার রয়েছে বিশাল এল অ্যাসেটের অধিকারি। ইতোমধ্যেই অনেক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বরা মেহেদি হাসানকে অভিযুক্ত করার চেষ্টা করেও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। অক্সফোর্ডের ডিগ্রিধারি ১৯৭৯ সালে জন্ম নেয়া মেহেদি হাসান ডঃ গওহর রিজভীর বয়সের ব্যবধান প্রায় দ্বিগুণের কাছাকাছি। ডঃ গওহর রিজভীও তার যৌবনের উত্তাল সময়ে সারা বিশ্বে দাপটের সাথে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, কূটনীতি, ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে তাবদ বড় বড় খ্যাতিমানদের বড় বড় প্রতিষ্ঠানে পড়িয়েছেন, সন্দেহ নাই। কিন্তু সেগুলো কেবল ডঃ গওহর রিজভীর সুনালি অতীত। যা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। আজকের ৭০ বছরের বয়স্ক ডঃ গওহর রিজভীর জন্য মেহেদি হাসানের মুখোমুখি হওয়ার আগে বিস্তর রিসার্চ এবং ব্যাপক হোম ওয়ার্ক করা জরুরী ছিলো, যাতে গোছালো এবং কূটনীতির শ্রেষ্ট শব্দগুলো চয়ন করে ডঃ গওহর রিজভী তার সরকারের পক্ষে যুক্তিগুলো তুলে ধরে মেহেদি হাসানের বক্তব্যকে খন্ডন করে নিতে পারতেন। মেহেদি রিজভীকে মুখে তুলে দিয়েছেন, অনেকগুলো ইস্যু এবং শব্দ, যাতে একজন দক্ষ ফেলো একাডেমিশিয়ান দম দাড়াক্কা করে জবাব দিয়ে কাবু করে ফেলেন প্রতিপক্ষকে। আমি এই কথাগুলো বলছি এই কারণে যে, সে যেই হউন, একজন বাঙালি ( সে রিজভী হউন, ইউনুছ হউন, মুহিত হউন, হোসেন জিল্লুর হউন, আতিউর হউন-যিনি হউন) বিশ্ব দরবারে যখন মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে যান, আমার তখন বুকটা অনেক উচুতে উঠে যায়, খুব গর্ব হয়।বুক ভরে তখন বলতে পারি এই আমার বাঙালি-বিশ্ব দরবারে মাথা উচু করে আছে।
হেড টু হেডে রিজভী যখন শুরু করেন, তখনি খটকা লাগে, হোম ওয়ার্ক এবং অনেক তথ্যবিহীন অবস্থায় শুধু মাত্র নিজের অতীতের একাডেমিক আর ফেলোর উপর ভর করে হাজির হয়েছেন অতি আত্মবিশ্বাস থেকে। ডঃ রিজভীর বডি ল্যাঙ্গুয়েজ অন্তত সেকথাটাই মনে করিয়ে দেয়।অথচ আল জাজিরায় তাদের নিজেদের প্যানেল তিন জনের দুইজন(হাই কমিশন বাদ দিলে, বাকী দুইজনই ডঃ গওহর রিজভীর সরকারের প্রচন্ড বিরোধী হিসেবে সমধিক পরিচিত) সরকারের বিরোধী পক্ষ থেকে বেছে নিয়েছে অত্যন্ত সূক্ষনভাবে, গওহর রিজভী আদৌ সেব্যাপারে কতোটুকু অবহিত ছিলেন, সন্দেহ হয়। প্যানেলের বাইরে অথচ প্রশ্নকর্তা বাছাই করা ছিলো আগে থেকেই(ইভেন্ট ব্রাইটে সে সুযোগ ছিলো)। তাদের দুজনের একজন জামায়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলার প্রধান কৌশলি হিসেবে দেশে বিদেশে আইসিটি নিয়ে বক্তব্য দিয়ে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিলেন সেই কৌশলি টবি ক্যাডম্যান, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান। হাই কমিশনার মুনার পেছনে আওয়ামীলীগের দুই নেতা থাকলেও তারা সেদিন ছিলেন ম্রিয়মান, হোম ওয়ার্কের অভাব হেতু তাদেরও কোন সুযোগ ছিলোনা, তাতক্ষণিক হাত তুলে নিজেদের বক্তব্য অথবা রিজভীকে ডিফেন্স করার মতো অবস্থানে তারা ছিলেননা। তবে হাই কমিশনার মুনা বেশ দক্ষতার সাথে সরকারের পক্ষে যুক্তি এবং বক্তব্য তুলে ধরেছেন এমনকি দুএকবার পাশে থাকা সুইডিশ বাঙালি সাংবাদিক এবং মেহেদি হাসানকে কাউন্টারও দিয়েছেন অত্যন্ত দক্ষতার সাথে, জোরালোভাবে। সেজন্য হাইকমিশনার মুনা বেশ প্রশংসার দাবি রাখেন সন্দেহ নাই।
গওহর রিজভী-মেহদী হাসান
|
হাই কমিশনার মুনা |
হোম ওয়ার্কবিহীন, নিষ্প্রভ
|
দারুন পারফর্ম্যান্স দেখিয়েছেন |
তথ্যের অভাব, সরকারের কারেন্ট ইস্যু একেবারেই রিজভীর হাতে ছিলোনা
|
ডিফেন্স চমৎকার
হোমওয়ার্ক যেন হাতের মধ্যেই ছিলো |
মেহেদি হাসানকে কাউন্টার দেয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য রিজভীর হাতে অনুপস্থিত, ডিপ্লোম্যাটিক কায়দায় এড়িয়ে যেতেও পারতেন, | কাউন্টারও দিয়েছেন ভালোভাবেই |
অক্সফোর্ডের হেড টু হেডে আমি যাইনি শেষ পর্যন্ত। যাইনি এই কারণে, অবধারিত ছিলো একজন দাপুটে বাঙালির এমন হাত পা বেধে অসহায় অবস্থায় বিশ্ব মিডিয়ার সামনে পরাজয় বরণ সামনে থেকে দেখতে চাইনা, সে আমার রাজনীতি অথবা মতামতের যতো বিপরীতে থাকুক না কেন। আচ করছিলাম, এক মাসের মতো সময় হাতে পেলেন ডঃ গওহর রিজভী। হেড টু হেড আগের এপিসোডগুলো দেখার যথেষ্ট সময় সুযোগ পেলেন। তাছাড়া লন্ডনে অবস্থানের কারণে, সমস্ত তথ্যের ভান্ডার, হাই কমিশনের প্রেস মিনিস্টারের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটা উইং রিজভীর সাহেবের পাশে আছে। এখনকার হাইকমিশনার মুনাও যথেষ্ট পারঙ্গম এবং জটপট জবাব দেয়ার এক অসম্ভব ক্ষমতার অধিকারি। প্রধামন্ত্রীর একজন জাদরেল উপদেষ্টা হেড টু হেডে অত্যন্ত স্পর্শকাতর এক সময়ে মুখোমুখি হচ্ছেন হাইকমিশন সহ প্রেস উইং নিশ্চয় উপদেষ্টার জন্য অনেক তথ্য এবং রিসার্চ করে যাবতীয় লজিস্টিক সাপোর্ট দিবে-সেজন্য মাসখানেক সময়, অনেক সময়। যেখানে এই হাইকমিশন এবং প্রেস উইং দলীয় লোকদের সাথে সাক্ষাত মিষ্টি মুখ আর সমিতির সাথে বৈঠক ছাড়া খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছে সেটা এখনো দৃশ্যমান হয়নি।কিন্তু আমার ভুল ভাংলো শিগ্রই। প্রেস উইং কোন সহযোগিতা দূরে থাকুক, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ঠার কোন সংবাদই অবগত ছিলোনা বলে বিশ্বস্থ সূত্রে অবগত হলাম।নাদিম কাদির যখন প্রেস মিনিস্টার হয়ে লন্ডনে আসেন, তখন দুই সপ্তাহের মধ্যে কূটনৈতিকদের প্রেস ক্লাব(তাদের) নিজেকে সক্রিয় করেন, লিয়াজো বৃদ্ধি করেন।প্রাইম মিনিস্টারের উন্নয়ন দর্শন আর কৌশল ব্রিটেনের সব জায়গায় যথাযথ ভাবে যাতে পৌছে যায়, সেজন্য এএফপি, রয়টার্সের লবি ছাড়াও ব্রিটেনের দক্ষিণ এশিয়া ডেস্কের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেন।আর এখনকার প্রেস মিনিস্টার সরকারের লজিস্টিক সহযোগি যারা তাদেরকে হাইকমিশনের কাছেও ভিড়তে দেননা।বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙ্গার জন্য দায়িত্বে অবহেলার দায় নিয়ে বাঙালি কমিউনিটির সাথে সবচাইতে কাছাকাছি এসেছিলেন যে দুজন জেন্টলম্যানখ্যাত খন্দকার তালহা এবং নাজমুল কাওনাইনকে লন্ডন থেকে বিদায় নিতে হলো, অথচ এখনকার পদস্থরা এসে এব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারে নিজেদের কোন কনসার্ন পৌছে দিয়েছেন কিনা, সেরকম কোন সংবাদ সব মাধ্যম তন্ন তন্ন করে খুজেও পাওয়া যায়নি। অথচ প্রেস উইং এর উচিত ছিলো প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্ঠা গওহর রিজভীকে সরকারের সকল কৌশলী তথ্যের সরবরাহের মাধ্যমে হেড টু হেডে অপমানজনক অবস্থার মুখোমুখি অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা করা যেতো।
প্রেস মিনিস্টার-বর্তমান
|
প্রেস মিনিস্টার-সাবেক |
শুধু দলীয় নির্দিষ্ট গন্ডীর ভিতরেই ঘোর পাক খাচ্ছেন
|
দলীয় এবং বুদ্ধিবৃত্তিক সার্কেলের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি |
সভা সমিতি দলীয় নির্দিষ্ট ছক প্রাধান্য, দলীয় সুনির্দিষ্ট সাংবাদিক নির্ভর
|
দলীয়, পেশাজীবী,সাংবাদিক, রয়টার্স, এএফপি, বিবিসি, ফরেন অফিসের সাথে লিয়াজো |
সরকারের লজিস্টিক সাপোর্ট, অক্সিলিয়ারি সংস্থাকে সন্দেহের তালিকায় রেখে ঢাকায় অহেতুক সন্দেহমূলক তথ্য পাঠানোতে ব্যস্ত | ফরেন অফিস, বাংলাদেশি কমিউনিটিতে যোগাযোগ বৃদ্ধি, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের তথ্য উপাত্ত ইতিহাস গণমাধ্যমে তুলে ধরার প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সঠিক প্রচারণা কৌশল |
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙ্গনের ব্যাপারে ফরেন অফিস সহ প্রেস উইং এর পক্ষে এখন পর্যন্ত দৃষ্ঠিগোচর কোন বক্তব্য অনুপস্থিত
|
বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের ইমেজ তুলে ধরতে প্রতিটি ক্ষেত্রে ছিলেন সজাগ |
(কারও প্রতি অনুরাগ কিংবা বিরাগভাজন নয়, বরং পত্র পত্রিকা,গণমাধ্যম, কাজ কর্ম তথ্য বিশ্লেষণ করে যা মনে হয়েছে, সেই প্রয়াস মাত্র)।
মেহেদি হাসান কেন এমন করলেন এমন কথা আমি বলতে চাইনা। হেড টু হেড, ওয়ান টু ওয়ান এবং বিবিসির হার্ড টক আর স্কাইয়ের প্লেজের মধ্যে বিস্তর ব্যবধান যদিও ক্যাটাগরির দিক থেকে, মানের দিক থেকে প্রত্যেকটিই তার নিজস্ব স্বাতন্ত্র্যতা ও স্বকীয়তায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করছে। কিন্তু হার্ড টক বা প্লেজ কিংবা আল জাজিরার ওয়ান টু ওয়ান যেরকম প্রশ্ন ও সওয়াল জবাব হয়ে থাকে, হেড টু হেড তার চেয়ে ব্যতিক্রম। হেড টু হেড স্ট্রেইট এবং বেশ কাট খুট্রা ভাবে উপস্থাপিত হয়ে থাকে,যা বিবিসির হার্ড টককেও পেছনে ফেলে দিয়েছে কোন কোন ক্ষেত্রে। মেহেদি হাসান এবং জেরেমি হান্ট যদিও একই মাপের প্রেজেন্টার নন, তথাপি ইয়ং ট্যালেন্ট হিসেবে মেহেদি হাসান হেড টু হেডে সপ্রতিভ। গওহর রিজভীর জন্য ওয়ান টু ওয়ান অথবা হার্ড টক কিংবা প্লেজে উপস্থিতি ভালো হতো। তিনিও বাংলাদেশকে এবং সরকারের কর্ম কৌশলকে তুলে ধরতে পারতেন বেশ ভালোভাবে। সেই অনুষ্ঠানগুলোতে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ থাকে। ব্যক্তিগত কৌশলী তীব্র আক্রমণ থাকলেও এরকম নয়, যেহেতু ঐ অনুষ্ঠানগুলোর প্রেজেন্টারগণ ব্রিটেনের সব মিডিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে দাপুটের সাথে করে আসছেন এবং বয়স ও অভিজ্ঞতা এবং সময়ের স্রোতের সাথে অনেক পরিপক্ষ। তারুণ্যের তীব্র আক্রমণ সেগুলোতে জাঝালো নয়। যা হেড টু হেডে তারুণ্যের তীব্রতা অতিমাত্রায়, যা গওহর রিজভীকে যারা সেখানে পাঠিয়েছিলেন, তারাই বিগত কমনওয়েলথ সম্মেলনে চ্যানেল ফোরের সাংবাদিক অ্যালেক্স থম্পসনের সামনে অপ্রস্তুত অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীকেও ফেলে দিয়েছিলেন। আবার হেড টু হেডের অন্যান্য সকল অনুষ্ঠানের চেয়ে গওহর রিজভীর অনুষ্ঠান সর্বাধিক লোকজন দেখেছেন, যা আলজাজিরার বিভিন্ন মাধ্যমে সেটাই প্রচারিত হচ্ছে। অর্থাৎ মেহেদিও জানতেন গওহর রিজভীকে এভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে তার হেড টু হেডকে অন্যান্যদের চাইতে আরো একধাপ সামনে এগিয়ে নেয়া যাবে, যা সে ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে।খেলার মাঠে যা হওয়ার সেটাই হয়। সবাইতো ম্যারাডোনা, পেলে, বেকহ্যাম হতে পারেনা।
সরকারে যারা থাকেন, সরকারের যেসব উইং থাকে, তাদের কাজতো হলো নিজ নিজ দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করা, এসব দিক ভালোকরে দেখভাল বা যাচাই বাছাই করা। হোমওয়ার্ক সহ যাবতীয় গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করে প্রস্তুত রাখা। কিন্তু সেই সব নানাবিধ উইং নিজ নিজ কাজ না করে শুধু সমিতি, দাওয়াত আর তুই রাজাকারের জুজুর ভয় দেখিয়ে মিথ্যে আজগুবি গুয়েবলসীয় তথ্য ঢাকায় পাঠিয়ে তারানা হালিমের ভাষায় যদি তুমি তেল মারো তবেই তুমি বেশ-এমনভাবেই নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছে । সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল এসব বিষয়গুলো নিয়ে একটু ভাববেন এই আশাই করি।
London, 02 March 2019.