চায়নায় বিআরআই সামিটঃচীন-বাংলাদেশ,ভারত,ব্রিটেন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন মাত্রা পাবে
epa05966068 Chinese President Xi Jinping (C) speaks at a news conference at the end of the Belt and Road Forum in Beijing, China, 15 May 2017. The Belt and Road Forum runs from 14 to 15 May, and it is expected to lay the groundwork for Beijing-led infrastructure initiatives aimed at connecting China with Europe, Africa and Asia. EPA/JASON LEE / POOL

চায়নায় বিআরআই সামিটঃচীন-বাংলাদেশ,ভারত,ব্রিটেন,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের নতুন মাত্রা পাবে

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ । লন্ডন থেকে ।

 

স্বাধীনতার পরে অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় বলা যায় অনেকটা নাটকীয়ভাবে এবং বাণিজ্যের ঝুলি নিয়ে  প্রতিবেশী এবং পরীক্ষিত বন্ধু ভারতকে টেক্কা দিয়ে ঢাকার সাথে চায়নার সম্পর্ক বেশ ঝাকিয়ে বসেছে। অর্থ, ব্যবসা, বাণিজ্য, রোড, ইনফাস্ট্রাকচার, সামরিক, সব ক্ষেত্রেই চীন, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্যের এখন শনৈ শনৈ ভাব এবং ক্রমেই বেড়েই চলছে। বিগত দশ বছর ভারত যেখানে অর্থনীতি, বাণিজ্য, সামরিক, কূটনীতি, রাজনীতিতে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তার করেছিলো ঢাকার ক্ষমতায়, হঠাত করে সেই সম্পর্কে ভাটার টান। আর সেক্ষেত্রে মূখ্য নিয়ামকের ভুমিকায় চীন। দিল্লির জন্য ঢাকায় বেইজিং এর প্রভাব মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে আছে। শ্রিংলার মতো ঝানু ডিপ্লোম্যাট ঢাকায় অবস্থান সত্যেও বিগত নির্বাচনে পর্দার অন্তরালে নাটকীয় রাজনৈতিক খেলায় ঘুনাক্ষরে টের পাননি, বেইজিং ঢাকার রাজনীতিতে, অর্থনীতিতে, কূটনীতিতে সর্বক্ষেত্রে দক্ষভাবে দাবার চাল দিয়ে সফল, বলা যায় এক ধরনে দিল্লির হাত থেকে হাইজ্যাক(এক রাতের খেলায়) হয়ে যায়।বেইজিং এর নাটকীয় প্রভাব বিস্তারে দিল্লির ঝানু আমলা, সামরিক কূটনৈতিক এবং বিশেষ করে `র` নয়াদিল্লিকে কোন আগাম আভাস দিতে ব্যর্থ হয়, যা নিয়ে নয়াদিল্লিতে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে হৈ চৈ বয়ে যায়।

Related image

বেইজিং ঢাকায় ঝাকিয়ে বসার আগে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী টেরেজা মে সাথে কূটনৈতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। একই সাথে বেইজিং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চরম বৈরিতা সত্যেও বাণিজ্যক সম্পর্ক যেমন গড়ে তোলে, সেই সাথে প্রতিবেশী ভারতের সাথেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক অব্যাহত এবং নতুন করে ঝালাই করে। বেইজিং ইউরোপিয় ইউনিয়ন সহ সৌদি আরব এবং বিশ্বের তাবদ দেশ সমূহের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এমনভাবে গড়ে তোলে, যা তাদেরকে অপরিহার্য এক শক্তিতে পরিণত করে। লন্ডন থেকে সরাসরি চায়নায় ব্রিটিশ সামগ্রি চায়নার বাজারে ৭,৫০০ মাইলের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে ট্রেন সার্ভিস(ফ্রেইট) চালু করে(২৭শে এপ্রিল ২০১৭) ইতোমধ্যেই। এক্ষেত্রে দুই হাজার বছর আগে তৈরি চীনের পশ্চিমের সাথে সংযোগের তাদের `ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড` প্রোগ্রামের আওতায় ব্রিটেন প্রায় ১.৬ বিলিয়ন পাউন্ড খরচ করে ডিপো ও টার্মিনাল তৈরি করে। সেজন্য লন্ডন এবং চীন উভয় দেশে ইনফাস্ট্রাকচার সার্ভিস কার্যক্রম বিশাল এক কর্মযজ্ঞ সেরে নেয় দুই দেশ। ইতোমধ্যেই বেইজিং থেকে চায়নার পলিটব্যুরোর, সরকারি, বেসরকারি আমলা, কর্তা সহ উচ্চ পদস্থ ৪০ সদস্যের টিম লন্ডন সফর এবং পরবর্তীতে চায়নিজ প্রাইম মিনিস্টার-টেরিজার একে অন্যের দেশ বিশাল বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল সহ সফর বিনিময় ও বাণিজ্যিক চুক্তি দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন এক মাত্রায় নিয়ে আসে। চীন-ব্রিটেনের এমন দহরম মহরম সম্পর্কের প্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও লন্ডন সফর করেন।

 

চীনের সেই পশ্চিমের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড  প্রোগ্রামের আওতায় নতুন করে দক্ষিণ এশিয়া হয়ে পশ্চিম পর্যন্ত বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বা বিআরআই সম্মেলন হতে যাচ্ছে এই মাসের শেষের দিকে বেইজিং এ। নানা কারণে এই সম্মেলন এখন ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে আছে। নয়াদিল্লি এই বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভে নাখোশের অন্যতম কারণ হলো, চীন মিয়ানমারকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানের কাস্মীর হয়ে আফগানিস্তান- পাকিস্তানকে সংযুক্ত করে  ইউরোপ হয়ে পশ্চিমে সংযোগ স্থাপন করতে চায়।

 

অপরদিকে বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার মাড়িয়ে বঙ্গোপসাগর-অস্ট্রেলিয়া হয়ে একেবারে পশ্চিমের ঐ প্রান্তে পৌছে যাওয়ার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পণা নিয়ে এগুচ্ছে।

Image result for Beijing BRI summit

এই দুই পরিকল্পণাতে নয়াদিল্লি এবং ওয়াশিংটনের স্বার্থের বিপরীত।

 

এই অবস্থায় এই মাসের শেষের দিকে বেইজিংয়ে হতে যাচ্ছে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ বিষয়ক সামিট। সেই সামিটে উচ্চ পর্যায়ের কোন কর্তকর্তাদের পাঠাবে না যুক্তরাষ্ট্র। এ কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছে ওয়াশিংটন।

 

বেল্ট অ্যান্ড রোড  বৈঠকে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত(ইকোনোমিক টাইমস)। তবে তার প্রতিবেশী বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও নেপাল এতে যোগ দেয়ার কথা নিশ্চিত করেছে। এই সম্মেলনে যোগ দিতে পারেন ৪০টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। তবে এতে যোগ দিচ্ছে না ভুটান। কূটনৈতিক সূত্রের দাবি , বিআরআই ফোরামে যোগ না দেয়ার সম্ভাবনা বেশি ভুটানের। গত ১২ মাসে থিম্পুর নতুন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়ে দিয়েছে চীন। উদ্দেশ্য, দেশটিকে ভারত প্রভাবিত বলয় থেকে তাদেরকে দূরে সরিয়ে দেয়া। কিন্তু চীনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই ভুটানের।তারপরেও চীন নানাভাবে থিম্পুর সাথে কাজ শুরু করে দিয়েছে। চীন সামিটে ইউরোপিয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, জার্মানি যোগ দিচ্ছে। বেইজিং এর সাথে এদের সম্পর্ক এখন ওপেন সিক্রেট। নানা কারণে ঢাকার অংশ গ্রহণ অবশ্যম্ভাবী হলেও নয়াদিল্লির সাথে এর ফলে ঢাকার সম্পর্কে টানা পোড়েন হবে। ঢাকা বেইজিং যত ঘনিষ্ট হবে, নয়াদিল্লি-ঢাকা ততো অম্ল মধুর সম্পর্ক হতে থাকবে।

Related image

০২)২০১৩ সালে চীনের অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি, উচ্চাভিলাসি সব পরিকল্পণার আলোকে হার্ভার্ডে ব্লমবার্গ, আমেরিকান ষ্টক মার্কেট, জাপান, চীন, ভারত সহ সারা পৃথিবীর ষ্টক মার্কেট যার নখ দর্পণে,সেই লরেন্স স্যোমার(চীন-ভারতের ৪২ ট্রিলিয়ন ডলারের ব্যবসা, ইনভেষ্টম্যান্টের বিপরীতে যে ইকোনোমিক গ্রোউথ- সেই ইনকোয়ারী রিপোর্ট প্রকাশ)যখন তার আর্থিক এই অসম্ভব শঙ্কার রিপোর্ট প্রকাশ করছিলেন, তখন বিশ্বের নামকরা তাবৎ অর্থনীতির বিশ্লেষক, নির্দেশক, হার্ভার্ডের তাত্ত্বিকেরা উপস্থিত ছিলেন এবং একের পর এক তার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং এম্বিশিয়াস এই ধারণার প্রশ্নের পর প্রশ্ন উত্থাপন বিভিন্ন ডাটা তথ্য বিশ্লেষণ করে উচ্চারিত হচ্ছিলো। অথচ স্যোমার তখনো সেই সব ডাটা এনালাইসিস করে তার বক্তব্যে থাকেন অটল।

 

লরেন্স স্যোমার ২০০৭ সালের মে মাসেও জাপানে এডিবির বার্ষিক বৈঠকে চীনের ও ভারতের এই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান ধারা অব্যাহত থাকার বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করেছিলেন,যখন এডিবি তাকে এই বিষয়ে তার বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদান করেছিলো।অপরদিকে ২০১৬ সালে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট কিম সেন গুপ্তার স্পেশাল রিপোর্ট সারা বিশ্বের সামরিক বিশেষজ্ঞ, এনালিস্ট, গোয়েন্দাদের মধ্যে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলো-কতিপয় আমলা ছাড়া। যে রিপোর্ট এর মূলমন্ত্র ছিলো-বিশ্বের নয়া আর্মির নয়া মন্ত্র-নিউ মাসকুলার সফট পাওয়ার, যা দেশে দেশে রাষ্ট্র ইন সার্জন এর সাথে ডিফেন্স করবে, সেই সাথে দেশে দেশে ইনফাষ্ট্রাকচার গঠনেও ভূমিকা রাখবে।

 

মাত্র অল্প সময়ের ব্যবধানে দুই রিপোর্টের সত্যতা সারা বিশ্ব আজ প্রত্যক্ষ করছে অবশ্যম্ভাবিভাবে।

Image result for Beijing BRI summit

আরেকটি মজার তথ্য হলো, আফগানিস্তানে পশ্চিমাদের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করতে চাইলেও আফ্রিকার মিনারেল, গ্যাস, তেল আর বিশাল খনিজ সম্পদ পশ্চিমাদের কাছে এখন প্রতিযোগিতার দরজা এই নয়া সফট পাওয়ারের ওয়ারে পরিণত করেছে। কেননা পশ্চিমাদের আগেই চীন এখানে এসে আফ্রিকার খনিজ সম্পদের দখল নিতে অবকাঠামো উন্নয়নের নামে এন্ডলেস টহল এসে দিতে শুরু করেছে(ইকোনমিক টাইমস-ওয়েল মার্কেট আফ্রিকা টু অস্ট্রেলিয়া)। চায়নিজ সৈন্যদের এখানে জিম্বাবুয়িয়ান সৈন্যদের সাথে মিলে মিসৌরিতে এসে টহল দিতে দেখা গিয়েছিলো, যেখানে ডুরবান ডকে ইয়ে জিয়াং ফ্রেইটার পরিপূর্ণ, অথচ তার ডুরবান তখনকার রবার্ট মুগাবের জন্য অস্র-সস্রে পরিপূর্ণ। এমতাবস্থায় ডক শ্রমিকেরা শিপ থেকে অস্র খালাসে অনীহা প্রকাশ করলে সাউথ আফ্রিকার সৈন্যরা তা খালাসে এগিয়ে আসে, যেহেতু বেইজিং এর সাথে সাউথ আফ্রিকার ক্লোজ সম্পর্ক হয়ে গেছে। বেইজিং ইতিমধ্যে নাইজেরিয়াকে কাউন্টার টেরোরিজম এক্সপার্ট এর উপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সেজন্য বেইজিং ক্যামেরুন সহ আফ্রিকার বিভিন্ন ষ্টেটে তাদের ডিফেন্স এটাচীকে ইতোমধ্যেই প্রেরণ করেছে।

 

চায়না আরেকটি রেকর্ড হলো বিশ্বের লার্জেস্ট ওয়েল আমদানির দেশে পরিণত হয়ে গেছে বলা যায়। চীনের নেতৃত্বে বা চীনের এই এম্বিশিয়াস প্রকল্পে তেল সম্পদের অধিক রুট খোলা মানেই হলো চায়না বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির শিফট এর গিয়ারে পা রাখা, যার মানে হলো প্রয়োজনের সময় বার্গেনিং পয়েন্টে কতিপয় ট্রান্সপোর্ট আর জেট ফুয়েলের কম যোগানের , যা অধিকতর সেনসিটিভ এক ওয়েল মার্কেটের উর্ধ্বগতির চাহিদার যোগান চায়না সরবরাহ করে তার অর্থনীতির একচ্ছত্র এক ইমার্জিং টাইগারের স্বপ্নের বাস্তবায়ন।

Related image

চায়না তার উচ্চাভিলাষী প্রকল্পের আওতায় (বাণিজ্যের অংশী দারিত্বে অথবা বাণিজ্যের অংশ হিসেবে) , ক্ষেত্র বিশেষে যৌথ ব্যবসায়িক অংশীদারিত্বে বাংলাদেশের বঙ্গোপসাগর ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্য কেন্দ্রিক তার তেল ও ফুয়েল বাণিজ্যের গতি অব্যাহত ও নিরাপদ রেখে, সুদূর আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত সেই বাণিজ্যের দরজা অবারিত রাখতে চায়। ভারত এবং পশ্চিমের জন্য যা এক অশনী সংকেত। যদিও ওয়াশিংটন এবং নয়াদিল্লি চায়নার সাথে ফুয়েল বাণিজের অংশীদারিত্বের আলোচনা ক্রমেই অব্যাহত আছে-সন্দেহ আর নানা স্বার্থের বেড়াজালে এক পা এগুলে দুই পা থেমে থাকে নীতিতে চলছে। ওয়াশিংটন তাই সুযোগ বুঝে জাপানকে ব্যবসায় দিয়েছে বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক কন্টেইনার ও রিফুয়েলিং আর বন্দর নির্মাণে। ঢাকা যদি দিল্লির বেল্টে না থেকে বেইজিং বেল্টে থাকে, সেক্ষতে বঙ্গোপ্সাগর কেন্দ্রিক ডিপ্লোম্যাসিতে অয়াশিংটনকে দিল্লির আশায় বসে না থেকে জাপানকে সামনে নিয়ে আসা ছাড়া উপায় থাকছেনা। সেই খেলায় যাওয়ার আগেই দিল্লি অ ওয়াশিংটন ঢাকার সাথে বুঝা পড়া ঝালাই করে নিতে মরিয়া।

 

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ এ কে আব্দুল মোমেন দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় এবং বিচক্ষণতায় চৌকস এক ম্যানেজমাস্টার হিসেবে বিশ্বে ট্রাক রেকর্ডের অধিকারি। এছাড়া নানা প্রতিষ্ঠানে পেশাদার ভাষণের মাধ্যমে নিজের মতামত তুলে ধরার এক দক্ষ কারিগর। চীনের এই বিআরআই প্রজেক্ট ও সামিট নিয়ে যেমন অবগত, তেমনি ঢাকার সাথে নয়াদিল্লির সম্পর্কের ভিত্তি নিয়েও ওয়াকিবহাল। আবার ওয়াশিংটনের সাথে ঢাকার সম্পর্কের উন্নয়নের অপরিহার্যতা নিয়েও বদ্ধ পরিকর। মধ্যপ্রাচ্যের আরব আমিরাত, ব্রুনাই, কুয়েত, কাতার, সৌদির শেখদের সাথে ওয়াশিংটনের টাইকুনদের ঢাকায় বিনিয়োগে নিয়ে আসার সাথে বিআরআই সামিটে সফলতার সাথে যোগদান, চীন, ব্রিটেন ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের সাথে সম্পর্কের মাত্রা বৃদ্ধিকরণ, সেই সাথে নয়াদিল্লির সাথে সমঝোতা ও ভ্রাতৃত্বের নয়া দিগন্তের উম্মোচন -এই চতুমাত্রিক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিতেই অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কাজের শুরুতে অর্থনৈতিক কূটনীতিকে নিজের কর্মের প্রাধান্য দিয়ে ঢাকার পররাষ্ট্রনীতির আগামীর টার্গেট ঘোষণার মাধ্যমে চীন, ভারত, ব্রিটেন, ইইউ, ওয়াশিংটনের কাছে সূক্ষ্ণ সিগন্যাল পৌছে দেয়ার মধ্য দিয়ে ঢাকার অবস্থান বেশ মুন্সিয়ানাভাবে জানান দিয়েছেন। এখন দেখার বিষয় ঢাকার ফরেন বিভাগের এই কর্তা ব্যক্তিরা মোমেন ডিপ্লোম্যাসির এই নয়া টার্মস এন্ড ম্যাথকে কীভাবে সামনে কতো দক্ষতার সাথে এগিয়ে নিয়ে যায় তার উপর নির্ভর করছে এতদঞ্চলে ঢাকার কূটনীতির সফলতা।

Image result for dr momen

সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির বেশ সুন্দরভাবেই বলেছেন,  চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড উদ্যোগের জন্য প্রয়োজনীয় গতিবেগ অর্জনের নিমিত্তে মৌলিক গবেষণা ও প্রয়োগিক মৌলিক গবেষণা কার্যক্রমে সহায়তা বাড়ানো হচ্ছে, যা কিনা উদ্ভাবনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সক্ষম হবে। এ লক্ষ্যে চীনের কর্মকর্তারা একমত হয়েছেন, জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগারগুলোয় সংশোধন কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। ত্রুটিপূর্ণ গবেষণাগার চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও সংস্কার করা হবে। এর মাধ্যমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রামগুলোর ব্যবস্থাপনা উন্নত করা সম্ভব হবে। আমাদের নীতিনির্ধারকরা যত দ্রুত এ ধরনের কার্যক্রমগুলোর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবেন ততই তা দেশের জন্য মঙ্গলকর।

 

 

18 April 2019, London .