লকডাউনের সুবাধে দেশে দেশে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টের তথ্য বিশ্লেষণে জানা গেছে। ঢাকা, লন্ডন, নিউ ইয়র্ক, ভারত, মধ্যপ্রাচ্য সব জায়গায়ই নারী পুরুষ একে অন্যকে নিগৃহীত করছেন। বিশেষ করে নারীরা পারিবারিক সহিংসতার শিকার বেশী হচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। লকডাউনে কোন কোন দেশে নারী পুরুষ একত্রে বেশীসময় থাকার কারণে নিজেরা একে অন্যের থেকে আরও দূরে সরে যাচ্ছেন বলেও রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে।
অন্যদিকে,কোভিড-১৯ মহামারীতে বিশ্বজুড়ে চলমান লকডাউনের সুযোগকে চরমপন্থিরা কাজে লাগাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন খোদ জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি জানান, চরমপন্থিরা যুবকদের ক্ষোভ ও হতাশাকে কাজে লাগিয়ে তাদের সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত হয়ে নিজেদের দলে নেয়ার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যুবকদের বুঝানো হচ্ছে যে, স্বাস্থ্য সংকটের কারণে বিশ্ব কোনো হারিয়ে যাওয়া প্রজন্মকে বহন করার সামর্থ্য রাখে না। গত সোমবার একটি ভিডিও কনফারেন্সে এসব কথা বলেন তিনি। গত পাঁচ বছর ধরে যুব সমাজ, শান্তি এবং সুরক্ষা উপর একটি যুগান্তকারী সমাধানের জন্য কাজ করছেন বলে কনফারেন্সে জানান তিনি।
এদিকে ঢাকা, লন্ডন, ভারত, নিউইয়র্কের বিভিন্ন সূত্রের বরাতে নারীদের মধ্যে পারিবারিকভাবে খুনটুসিম ঝগড়া এবং কোথাও কোথাও হিংস্রতায়ও রূপ নিয়েছে। ব্রিটেনের মেট্রোপলিটন পুলিশ এব্যাপারে ডোমেস্টিক ভায়োল্যান্সের ব্যাপারে পুলিশের কাছে রিপোর্ট বৃদ্ধির খবরও জানিয়েছে। আর ঢাকার আইন ও সালিশ কেন্দ্রে কলের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গেছে। বিবিসি বাংলাতে একজন ঢাকার নারী সহিংসতাও খুনটুসিতে সন্তান থাকা সত্যেও স্বামীর কাছে ডিভোর্সের সিদ্ধান্তও জানান বিবিসি বাংলাকে। আইন সালিশ কেন্দ্রের নিনা জানিয়েছেন তাদের হেলপ লাইনে এব্যাপারে ফোনের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতের মানবাধিকার সংস্থাগুলো, ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও নিউইয়র্কের পুলিশ বলছে পারিবারিক সহিংসতার কারণে পুলিশের কাছে রিপোর্ট দ্বিগুণ পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
অপরদিকে, জাতিসংঘ মহাসচিব বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যে দেখতে পেয়েছি যে, এক শ্রেণির লোকেরা লকডাউনের সুযোগ নিয়েছে। এ সময় তাদের লক্ষ্য একটাই, আর তা হলো যুবকরা যেনো বেশি বেশি সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে এবং অনলাইনে তারা তাদের ঘৃণার মনোভাব যুবকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারে।
https://soundcloud.com/user-122591096/lockdow-in-domestic-violence-increased-study-report
আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, চলমান এই সংকটের আগেও তরুণরা প্রচুর চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো।
তিনি বলেছেন, প্রতি পাঁচজন তরুণের মধ্যে একজনের বর্তমানে পড়াশুনা, প্রশিক্ষণ কিংবা কোন কর্মসংস্থানে নেই। আর প্রতি চারজনের একজন দ্বন্দ্ব বা সহিংসতার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। আর প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ে বিয়ের বয়স হওয়ার আগেই মা হয়ে যাচ্ছেন।
লকডাউনে পজিটিভ ব্যবহার, মেনে নেয়ার মানসিকতা, উত্তেজিত অবস্থায় একজনের চুপসে যাওয়া, নেতিবাচকতা পরিহার করে খুব বেশী প্রাপ্তি না পাওয়ার মানসিকতা থেকে সরে আসার উপর এই নেতিবাচক অবস্থা তথা সহিংসতা পরিহার করা যায় বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।
2nd May 2020