হাজার রাত্রির উত্তম লাইলাতুল কদর এর সঠিক তারিখ নিয়ে ইমাম, উলামায়ে কেরাম এবং স্কলারদের মধ্যে যুগ যুগ ধরে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রচলিত রয়েছে। গবেষণায় কমপক্ষে ৪০টি মত পাওয়া যায়-যা এক হিসেবে বলা যায় ভিন্নমত সত্যেও লাইলাতুল কদরের রাত তালাশের জন্য ইমামদের এই ভিন্নমত বরং আল্লাহপাকের এক রহমত এবং নেয়ামত। সাধারণতঃ ভিন্ন মত বৈরিতা এবং শত্রুতা বাড়ায় অথচ লাইলাতুল কদরের তারিখ বা সময় নিয়ে অসংখ্য ভিন্ন মত, ব্যাখ্যা বৈরিতার বিপরীতে বরং লাইলাতুল কদর তালাশের জন্য মুসলমানদের আরও অনুপ্রাণীত এবং জানার আগ্রহ বাড়িয়ে দেয় এবং লাইলাতুল কদরের রাত্রির মর্যাদা, ভালবাসা মুসলিম বিশ্বের জনগনের মধ্যে আরও গুরুত্ব বাড়িয়ে দেয়। এটাই আল্লাহর রহমত এবং নেয়ামত।
বিখ্যাত খলিফা ওমর ইবনুল খাত্তাব একদা কোরআনের শ্রেষ্ঠ মোফাসসির, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে কোরআনের শেষ্ঠ মোফাসসিরের জন্য দোয়া করে গেছেন, সেই ইবনে আব্বাস (রাঃ)কে জিজ্ঞেস করলেন, হে ইবনে আব্বাস(রাঃ) তোমার মতে লাইলাতুল কদরের সময় কোনটি?
জবাবে ইবনে আব্বাস(রাঃ) তার কোরানিক জ্ঞান এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের আলোকে বললেন, .
০১) কোরআনের লাইলাতুল কদর শব্দে ৯টি লেটার সমৃদ্ধ এবং একই সাথে ৩(তিন) বার একই সূরাতে (কদরের) উল্লেখ করেছেন আল্লাহপাক।
০২) সুরা কদর ( ইন্না আনজালনাহু ফি লাইলাতুল কাদরী…) ৩০টি শব্দের সমন্বয়ে আল্লাহপ্রদত্ত নাজিল হয়েছে, এবং এই কদর সুরাতে (সালামুন ) “হিয়া”( মানে ইহা/স্পেসিফিক) শব্দ দিয়ে যা বুঝিয়েছেন, মানে কদরের অর্থে ২৭ শব্দের মধ্যেই এসেছে। মানে আল্লাহপাক ইঙ্গিত দিয়েছেন এই “হিয়া” ২৭ শব্দের মধ্যে দিয়ে।
০৩) শুধু কি তাই, ইবনে আব্বাস (রাঃ) ওমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে আরও বললেন, আল্লাহপাক, বেজোড় নাম্বারকে পছন্দ করেন, যা নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও বেজোড় রাত্রিতে লাইলাতুল কদর তালাশের কথা বলেছেন একাধিকবার(বোখারি শরীফ)। তিনি বলেন আল্লাহপাক ৭(সাত) লেটারকে /শব্দটিকে বড় পছন্দ করেন। সেজন্য ৭ দিনে তিনি আকাশমন্ডলী সৃষ্ঠি করেছেন, ৭দিনে সেভেন ওয়ার্ল্ড, ৭ দিনে সপ্তাহ, পবিত্র কাবা শরীফে ৭টি সার্কিট যা তাওয়াফকারীদের জন্য এক তাওয়াফ হয়(মাতাফ চক্করে)। আমরা আল্লাহর এসব সৃষ্টিতে ৭ এর আধিক্য দেখি।
এই সব কারণে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) ওমর(রাঃ) বলেন ২৭ তারিখকেই লাইলাতুল কদর নির্দেশ করে। তারপরেও এটাই চূড়ান্ত কথা নয়। কারণ আল্লাহপাকই সবচাইতে ভাল জানেন।
পাদটিকা-
::Allah says in the Qur’an, “The Night of Decree is better than a thousand months,” (Qur’an, 97:3). The Prophet (peace be upon him) said, “Whoever prays on Laylatul Qadr out of faith and sincerity, shall have all their past sins forgiven,” (Hadith, Bukhari and Muslim).
##::The exact date of Laylatul Qadr is unknown, although it is thought to occur on an odd night in the last ten days of Ramadan (e.g. the 21st, 23rd, 25th, 27 or 29th night). The Prophet Muhammad (peace be upon him) said, “Seek it in the last ten days, on the odd nights,” (Hadith, Bukhari and Muslim).
When Lady Aisha (may Allah be well pleased with her) asked the Prophet (peace be upon him) “O Messenger of Allah, if it is Laylatul Qadr, then what should I supplicate with?” he replied with the famous dua: “Allahumma, innaka Afuwwun Karimun, tuḥibbu al-afwa fa‘afu anna” – “O Allah, indeed You are Pardoning and Generous; You love to pardon, so pardon us.
##:: 2014 N0:: “حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، قَالَ حَفِظْنَاهُ وَإِنَّمَا حَفِظَ مِنَ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَبِي سَلَمَةَ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ، وَمَنْ قَامَ لَيْلَةَ الْقَدْرِ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ ”. تَابَعَهُ سُلَيْمَانُ بْنُ كَثِيرٍ عَنِ الزُّهْرِيِّ.
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে ও সওয়াব লাভের আশায় সাওম পালন করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে, সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বদ্রে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে, তার পূর্ববর্তী গুনাহসমূহ মাফ করে দেয়া হয়। সুলায়মান ইব্নু কাসীর (রহঃ) যুহরী (রহঃ) হতে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।
##::2015::حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، أَخْبَرَنَا مَالِكٌ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَنَّ رِجَالاً، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أُرُوا لَيْلَةَ الْقَدْرِ فِي الْمَنَامِ فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ أَرَى رُؤْيَاكُمْ قَدْ تَوَاطَأَتْ فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ، فَمَنْ كَانَ مُتَحَرِّيَهَا فَلْيَتَحَرَّهَا فِي السَّبْعِ الأَوَاخِرِ ”.
ইব্নু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) – এর কতিপয় সাহাবীকে স্বপ্নের মাধ্যমে রমযানের শেষের সাত রাত্রে লাইলাতুল কদর দেখানো হয়। (এ শুনে) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ আমাকেও তোমাদের স্বপ্নের অনুরূপ দেখানো হয়েছে। (তোমাদের দেখা ও আমার দেখা) শেষ সাত দিনের ক্ষেত্রে মিলে গেছে। অতএব যে ব্যক্তি এর সন্ধান প্রত্যাশী, সে যেন শেষ সাত রাতে সন্ধান করে।