সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ। ০৮ মে ২০২২, লন্ডন।
শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল-এক সময়ের সিলেটের রাজপথের আওয়ামীলীগ ছাত্রলীগের একনিষ্ঠ কর্মী, যিনি আজ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠণিক সম্পাদক। তৃণমূল থেকে উঠে আসা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল-অন্য ৮/১০ জনের মতো রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নয়। তৃণমূলের ছাত্ররাজনীতির একেবারের ঘাত-প্রতিঘাত, অনেক উত্থান পতন আর কষ্টকর ও দুর্গম রাজনৈতিক বর্ণাঢ্যময় ক্যারিয়ারের দুর্লভ অধিকারি, যে জীবনে কখনও অন্যায়, অবিচার, অত্যাচার ও গড্ডালিকা প্রবাহের তথাকথিত ছাত্ররাজনীতি কিংবা রাজনীতির অন্ধগলির সাথে কখনও হাত মেলায়নি, আপোষও করেনি। সব সময় সাধারণ ছাত্র ছাত্রী আর সকল স্তরের রাজনৈতিক নেতা কর্মী পরিবেষ্ঠিত ও সমন্বয়ের মাধ্যমে মুখে সদা হাস্যোজ্জ্বল এক দ্যুতি ছড়িয়ে ক্লিন পরিচ্ছন্ন এক রাজনীতির সুন্দরের যাত্রা শুরু করে, যা আজও সেই ধারাটি যত্নের সাথে চলমান রেখেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মতো সবার সাথে বন্ধুত্ব কিন্তু বঙ্গবন্ধু ও মুজিবকন্যা এবং মুজিব পরিবারের প্রশ্নে জিরো টলারেন্স- যা শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে করে তুলেছে নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরো বিশ্বস্ত ও আস্থার এক তরুণ প্রজন্মের প্রতিভু হিসেবে।
আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সূর্যসেন হলের ৫২৭ নম্বর রুম আমার তখনকার সময়ের আবাসস্থল। সিলেটের সকল রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মী যেমন সেসময় এই ৫২৭ তাদের আশ্রয় ও ভরসার স্থল মনে করতেন, তেমনি তরুণ ক্রিকেটার ও ফুটবলার থেকে শুরু করে সংস্কৃতির অঙ্গনের সবাই কোন না কোনভাবে এই ৫২৭ তাদের আপন হিসেবে ভাবতেন।আমি নাদেলকে দেখেছি, যখনই সে ঢাকা আসতো-আমার এই ৫২৭(পরবর্তীতে ৪০৮ নম্বরের) অতিথি যেমন হতো, ঠিক তেমনি সারাক্ষন লেগে থাকতো কেমন করে বঙ্গবন্ধুর কর্ম, কাজ, রাজনীতি, শেখ হাসিনার চিন্তা ধারা ছাত্র সমাজ, খেলাধুলা ও যুব সমাজের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া যায়। জেনারেল এরশাদের দুঃসময়ের সেই সামরিক শাসনের যাতাকলে সবাই যখন মাঠ ছাড়া, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল নিতান্ত একজন ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে ৩২ নম্বর থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, সিলেটের অলিগলি সর্বত্র চষে বেড়াতো বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলার দর্শন বাস্তবায়নের স্বপ্ন নিয়ে।
সেই ছাত্রলীগের কর্মী থেকে একেবারে পুরোদস্তর ছাত্রনেতা, তারপর ধীরে ধীরে নিজের যোগ্যতা, কাজ, কর্ম ও প্রতিভা দিয়ে আজ আওয়ামীলীগের সাংগঠণিক সম্পাদক। সিলেটে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির বিশেষ করে সিটিতে বিএনপির একচ্ছত্র কর্তৃত্ব দাপটের সাথে চলছে। তার মানে আজকের মেয়র আরিফের বিকল্প আওয়ামীলীগের তখনো যেমন ছিলোনা ( যদিও প্রয়াত বদর উদ্দিন কামরান খুব ঝানু মেয়র ও নেতা ছিলেন কিন্তু কালের বিবর্তনে তিনি সেটা ধরে রাখতে সক্ষম হননি), এখনও খুব একটা যে আছে সেটা খুব জোর দিয়ে বলা যায়না। আর এই বিকল্প না থাকার কারণে কাজ পাগল, বয়োজ্যেষ্ট মুরুব্বী, আলোকিত সিলেটের স্বপ্নদষ্ট্রা সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এই বিকল্পের অনুপস্থিতিতে সিলেটের উন্নয়নে নিরলসভাবে আরিফ চৌধুরীকে সমর্থন ও সহযোগীতা দিয়ে গেছেন। কারও প্রতি বিদ্বেষ কিংবা অনুরাগ বা বিরোধীতা করে নয় বরং বাস্তবতার নিরেট কষ্ঠি পাথরে রুঢ় হলেও কঠিণ সত্য যে, এই মুহুর্ত পর্যন্ত বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ক্ষমতাসীনদের ঘরে জয় ছিনিয়ে নেয়ার মতো সিলেটের আওয়ামীলীগে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের বিকল্প কোন নেতৃত্ব দল মত নির্বিশেষে সর্ব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য তৈরি হয়নি। বিগত ছয় মাস সমগ্র সিলেটের আনাচে কানাচে, অলি গলি, বাসা বাড়ি, প্রশাসন, রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যবসা বাণিজ্য, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অঙ্গন, আলেম উলামা, দিন মজুর, রিক্সা শ্রমিকদের প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের কাছে প্রশ্ন ছিল- কাকে তারা আরিফের বিকল্প হিসেবে মনে করেন এবং কেন- তাদের মধ্যে ৯৮.৯ শতাংশই এক বাক্যে বলেছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নাম।
এটা সত্য, নাদেল তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার আর ব্যক্তি ইমেজ এর সমন্বয়ে সিলেটের সমগ্র সিটি কর্পোরেশনে নিজের এক ক্লিন ইমেজ তৈরি করেছেন-যা সর্ব সাধারণের কাছে তাকে করে তুলেছে প্রিয় ও গ্রহণযোগ্য এক নেতা হিসেবে।
সিলেটের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরকার দলীয় প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতা কর্মীদের কাছেও রয়েছে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের অসম্ভব জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা।
প্রশাসনের সর্বস্তরে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের গ্রহণযোগ্যতা অপ্রতিদ্বন্ধি-সন্দেহ নাই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন ২০৩০ সফল বাস্তবায়ন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডঃ আব্দুল মোমেনের সিলেটের উন্নয়নের রূপকল্প বাস্তবায়ন ও এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে, সরকার প্রধান(নেত্রী) ও মন্ত্রী মহোদয়ের ক্লিন ইমেজ যুগপৎভাবে অক্ষুন্ন এবং নিরলস উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সাধারণের জন্য অবারিত ও বেগবান রাখার স্বার্থে, আওয়ামীলীগের ঐক্য,সংহতি এবং শক্তিশালী অবস্থান তরুণ ছাত্র সমাজ যুব সমাজ ও শ্রমজীবীদের মধ্যে শক্তভিতের উপর মজবুত করে ধরে রাখার জন্যও শফিউল আলম চৌধুরীর রাজনৈতিক ক্লিন ইমেজ আবশ্যক।
আমার বিশ্বাস এবং দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আওয়ামীলীগ নির্বাচনী বোর্ড, হাইকমান্ড এবং সিলেট আওয়ামীলীগ যদি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে নিয়ে সিলেটের আগামী মেয়র নির্বাচন প্রতিদ্বন্ধিতা করে, তবে ইনশাআল্লাহ,এবার আওয়ামীলীগ সিলেটের মেয়র নিজেদের ঘরে আনতে পারবে। সিলেটের হাজার হাজার তরুন এবং নতুন প্রজন্মের ভোটার থেকে শুরু করে যুবক, বৃদ্ধ, ব্যবসায়ী, শ্রমিক, দিনমজুর সবাই মনে করেন- “আওয়ামীলীগ যদি মেয়র নিজেদের করে পেতে চায় তবে নাদেল ভাইকে নিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকতে হবে।“
বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামীলীগ দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা সিলেটের মেয়র পদে শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলকে নিয়ে এখন থেকে পরিকল্পনা করতে পারেন। কারণ প্রধানমন্ত্রী তার চিন্তা ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য দীর্ঘদিন আগ থেকে কাজ(হোম ওয়ার্ক) শুরু করে দেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেও চান, দলের নেতৃত্বে তরুন এবং ক্লিন ইমেজের প্রতিভাবান নেতৃত্ব এগিয়ে আসুক। সিলেটের আগামীর মেয়র নির্বাচনে নাদেলের মতো ক্লিন-প্রতিভাবান নেতৃত্বেরও আর কোন বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।