প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে(ভিডিও)
ছবি ক্রেডিট স্কাই নিউজ

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে(ভিডিও)

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ। 

কোভিড নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগে পার্লামেন্ট ও জাতিকে বার বার মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য বরিস জনসনের উপর বিরোধীদল এবং কনজারভেটিভ দলের ভেতর থেকে ক্রমেইও চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনি অবস্থায় রুয়ান্ডা কমনওয়েলথ সম্মেলনে স্কাই নিউজের সাংবাদিকের সাথে সাক্ষাতে পদত্যাগের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে বরং ফের ক্ষমতায় থাকার পরিকল্পণার কথা জানিয়েছেন বরিস জনসন।

তিনি জানিয়েছেন, পদত্যাগ নয়, তৃতীয় মেয়াদের কথা এবং তখন কী হতে পারে সেটাই ভাবছেন। এমন হলে জনসন মার্গেরেট থ্যাচারের রেকর্ড ছুয়ে যাবেন।

কিন্তু ব্রিটেনের হাউজ অব পার্লামেন্টারি রাজনীতি এবং নিজ দলীয় কনজারভেটিভ  দলের বিগত দিনের রাজনীতির কুশলী খেলার ছক কিন্তু ভিন্ন কথাই বলে।

ওয়েস্ট মিনিস্টারের রাজনৈতিক সিনারীও যখন আমরা পর্যালোচনা করি, তখন দেখতে পাই,  মার্গারেট থ্যাচার, টনি ব্লেয়ার, ডেভিড ক্যামেরন, টেরেজা মে কেউই তাদের নির্ধারিত টার্ম পূরণ করতে পারেননি। তাদের নিজ দলের পার্লামেন্টারি সদস্যরা পদত্যাগে সরে যেতে বাধ্য করেছিলেন, কোন নির্বাচনে ভোটারদের মাধ্যমে নয়।

জন মেজর এবং গর্ডন ব্রাউনকেও দলীয় এমপিরা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন কিন্তু শেষ পর্যন্ত নির্বাচনের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার সুযোগ পেয়েছিলেন।

বর্তমানে বরিস জনসনের প্রধানমন্ত্রীত্বও নিজ দলের এমপিদের দ্বারা অনেকটাই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। সাম্প্রতিক নো কনফিডেন্স ভোটে তিনি ২১১ সদস্যের সমর্থনে উতরে গেলেও  পরিসংখ্যান কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা। মার্গারেট থ্যাচার, টেরেজা মে, জন মেজরের চাইতেও বেশী এমপি তার প্রতি অনাস্থা বা বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন।

মার্গারেট থ্যাচার আস্থাভোটের দুদিনের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন, টেরেজা মে অনাস্থা ভোটে জয়ী হয়েও ছয় মাসের মাথায় চলে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন। কেবল জন মেজর আস্থা ভোটের কয়েক বছরের মধ্যেই নির্বাচনের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জের সুযোগ পেয়েছিলেন ।

আরেকটি বিষয় তখনকার সময়ে “মার্গারেট থ্যাচার এবং জনমেজরের মধ্যকার প্রতিদ্বন্ধিতা ভিন্ন এক সিস্টেম-তারা সরাসরি একে অন্যের প্রতিদ্বন্ধিতা করতেন, এখনকার মতো কনফিডেন্স ভোটের দ্বারা নয়”(অ্যাডাম বল্টন,স্কাই নিউজ) ।

বরিস জনসনের বিরুদ্ধে টেরেজা মে চেয়ে অধিক এমপি ভোট দিয়েছেন।

সাম্প্রতিক বাই-ইলেকশনে কনজারভেটি দলের ভরাডুবিতে জনসনের লিডারশিপ দলের ভতরের ফের প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। দলের ভিতর এবং বাইরে থেকে এখন প্রচন্ড চাপ। তবে সিনিয়র কনজারভেটি নেতৃত্ব এখনি জনসনের প্রিমিয়ারশিপ থ্যাচার কিংবা টেরেজা মে ন্যায় যবনিকাপাত চাচ্ছেন না।

এদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ জ্বালানি পেট্রল খাদ্য মূল্যবৃদ্ধিতে ব্রিটিশ জনগন অতীষ্ট। এমনি অবস্থায় জনসনের প্রিমিয়ারশিপ তার পূর্বসূরীদের ন্যায় নির্বাচনের আগেই শেষ হয়ে যায় কিনা, নাকি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত টেনে নেয়ার সুযোগ দেন-সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।