Home » Featured » মোমেন ক্যারিশমায় ভেস্তেগেলো সংস্কারপন্থীদের পরিকল্পণা

মোমেন ক্যারিশমায় ভেস্তেগেলো সংস্কারপন্থীদের পরিকল্পণা

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ। লন্ডন থেকে।

 

১/১১ ফখরুদ্দীন-মঈনুদ্দিনের সরকারের প্রেতাত্মা এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা ছকে, নানা রূপে ঘুর পাক খাচ্ছে। পশ্চিমা দূতরা নানা ছলে বলে, পুরনো বোতলে নতুন পানি ঢেলে ১/১১ সেই কথিত ছক বার বার সামনে নিয়ে আসার চেষ্টা কম করছে না। সুশীলদের অংশকে নানাভাবে প্রলুব্ধ করেও বাঙালিকে সেই পুরনো ট্যাবলেট আর হজম করানো যাচ্ছেনা। কিন্তু ১/১১ কুশীলব এবং সংস্কারপন্থীরা এখনো হাল ছাড়েননি। সময় সুযোগ পেলেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠে।প্রশাসন, রাজনীতি, এনজিও, অর্থনীতি সহ বিভিন্ন সেক্টরে এই সুযোগ সন্ধানী কথিত সংস্কারবাদিরা ঘাপটি মেরে বসে আছে নানা রূপে ও নানা ছলে। সবচেয়ে দুর্বোধ্য এবং অজেয় সংস্কারবাদিরা ক্ষমতাসীন দলের ভিতরে বঙ্গবন্ধু ও মুজিবকোট লাগিয়ে ঝাকিয়ে বসে আছে আর দুর্দন্ড প্রতাপে সময় সুযোগে আঘাত করার চেষ্টা করে। তারা এতোই শক্রিশালী যে, সাধারণ বা খালি চোখ ও মাইক্রোস্কোপ যন্ত্রকেও হাড় মানিয়ে দেয়। কারণ যে পাত্রেই তারা থাকা সেই পাত্রের রঙ আকার ধারণ করে। শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার জন্য ১/১১ সরকারের ও সংস্কারবাদিদের সাথে যারা আঁতাত করেছিলো, পরবর্তীতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকারের সভানেত্রীর কৃপা নিয়ে কেউ কেউ দলে ফিরে নীতি নির্ধারণী পরিষদে স্থান পেয়ে কিছুদিন দলের প্রতি চরম আনুগত্য দেখালেও সময় সুযোগে তাদের পরিকল্পপণা বাস্তবায়নে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পরে। একই দৃশ্য আমরা বিএনপিতেও দেখতে পাই। সংস্কারবাদি পশ্চিমাদূত আর বিদেশী অর্থ পুষ্ট এনজিও এবং সুশীলদের সাথে শলাপরামর্শে এরা দিন দিন হ্নষ্ট পুষ্ট হয়ে ক্ষমতাসীনদের হ্নদযন্ত্রে আঘাত করার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে ঝাপিয়ে পরার দৃশ্য এবং তাদের সার্কাস খেলা দেশবাসি বেশ ভালোভাবেই উপভোগ করেছেন।

মজার ব্যাপার হলো ১/১১র সংস্কারবাদীর তকমা যাদের মাথায়, যারা বঙ্গবন্ধু কন্যাকে রাজনীতি থেকে মাইনাসের ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে হাত মিলিয়েছিল-তাদের অধিকাংশই প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এবং বঙ্গবন্ধু কন্যার বিশ্বস্থ এবং শত হাজারো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ, সারাজীবন জীবন বাজী রেখে যে আবদুল মোমেন এবং মোমেন পরিবার আওয়ামীলীগের রাজনীতি করে যাচ্ছেন, তাকে এবার মাইনাসের জন্য উঠে পড়ে লেগে যায়। সংস্কারপন্থীরা জানে, আব্দুল মোমেনকে যদি বঙ্গবন্ধুর কন্যার কাছ থেকে আলাদা করা যায়, তাহলে সরকার প্রধানকে চলমান বিশ্বের সংকটময় পরিস্থিতিতে অত্যন্ত কঠিণ চ্যালেঞ্জের মুখে শুধু পতিত করা হবেনা, ঢাকা ইস্যুতে ভারত-চীনের কৌশলী খেলার ছকে ত্রাহি অবস্থা পরে বিদায় নিতে হবে।

সারা বিশ্বের নানা ক্ষেত্রে সংস্কারবাদীরা হয় উদার, গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক,স্বচ্ছ এবং সকলের সাথে অংশগ্রহণমূলক। বিপরীতে আমরা দেখি বাংলাদেশের কথিত সংস্কারবাদীরা অত্যন্ত কঠোর, নিষ্টুর, ষড়যন্ত্রকারী, কিংসপার্টি, অস্বচ্ছ, মেধাহীন,জনগনের থেকে দূরে।

বিশ্ব রাজনীতি অর্থনীতির পরিবর্তনের নয়া ছকে ঢাকা ইস্যুতে ভারত-চীনের কৌশলী খেলায় শেখ হাসিনা এবং আব্দুল মোমেন কান্ডারির ভুমিকায়। কথিত সংস্কারবাদীদের সাম্প্রতিক ইস্যুগুলোতে সিনারীওর পেছনে ভারত-চীন কৌশলী খেলা বুঝতে এরা শুধু অক্ষমই নয়, বরং ইস্যু থেকে যোজন যোজন দূরে। যে কারণে আমরা দেখি মিডিয়ায় তাদের অতি বাগাড়ম্বর এবং লাফালাফি। নেহায়েত এক ভদ্র, মার্জিত, উন্নত রুচি ও চিন্তা চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর অনুসৃত আদর্শ এবং নীতিতে সমুজ্জ্বল অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপককে নিষ্টুর ও অশালীনভাবে অমর্যাদা ও অপদস্থ করার জন্য দিনের রাত ঘুম হারাম করে উঠে পরে লেগে যায়। অথচ এরাই আবার সারাজীবন রাজনীতির পেছনে জীবন যৌবন বিলীন করে দিয়ে আসছে। স্বার্থ, ভোগ, লালসা যখন প্রাধান্য পেয়ে যায় তখন নীতি নৈতিকতা এবং রাজনীতির কুশলী খেলা থেকে ওরা ছিটকে কখন যে পরে যায় তা টের পায়না। বাংলাদেশ নিয়ে পশ্চিমাদের শুধু নয়, প্রতিবেশী ভারত-চীন কী ছকে খেলছে, সরকার প্রধান এবং তার চোখ কী ছকে বাংলাদেশের যতটুকু স্বার্থ সম্ভব আদায় করা যায়-সেটা বুঝতে যে রাজনৈতিক কুশলতা দরকার-সেটাও তারা হারিয়ে ফেলে।

পশ্চিমা বিশ্ব, চীন, ভারতের এই ত্রি সাথে নতুন উপদ্রব সীমান্তে ইসরায়েলের উপস্থিতি এই চতুর্মুখী খেলায় শেখ হাসিনা এবং আব্দুল মোমেনের সরকারের দরকার আরও ব্যালেন্স কূটনৈতিক কুশলী খেলা। সেজন্য দরকার সাথে আরও কিছু লজিস্টিক সাপোর্ট, দক্ষ এবং কুশলী খেলোয়াড়ের-যারা এই নয়া রাজনীতির ভেতরকার খেলা বুঝে। বাংলাদেশের শৃঙ্খলাপূর্ণ শক্তির প্রধান উৎস চীন কেন্দ্রিক-যা আগে ছিলো ভারত কেন্দ্রিক। সরকার প্রধান এবং আব্দুল মোমেনকে এখন ব্যালেন্স পাওয়ার কূটনীতিতে আগের ভারত কেন্দ্রিক সাবেক শক্তি প্রধানকে গুরুত্বপূর্ণ কোন এক স্থানে নিয়ে এসে চীন-ভারতের মধ্যকার ব্যালেন্স কূটনীতির খেলা দরকার, তাতে আরও বেশী ফায়দা হাসিল করা যাবে-উভয় শক্তির কাছ থেকে।

২২ আগস্ট ২০২২।

(বানান রীতি সাবেক পড়ে, বর্তমান পরে)

Please follow and like us:
Pin Share

Follow by Email
YouTube
Pinterest
LinkedIn
Share
Instagram
error: Content is protected !!