Home » Featured » ইস্তানবুল টুপকাপি প্যালেস মিউজিয়ামে নবীজীর চুল, জুতা মোবারক ও নবী পরিবারের স্মৃতি সংরক্ষণাগার পরিদর্শন

ইস্তানবুল টুপকাপি প্যালেস মিউজিয়ামে নবীজীর চুল, জুতা মোবারক ও নবী পরিবারের স্মৃতি সংরক্ষণাগার পরিদর্শন

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ, ইস্তানবুল থেকে

তুরস্কের ইস্তানবুল সিটির ফাতিহ জেলার পূর্বে টুপকাপি প্যালেসে এক বিশাল মিউজিয়াম অবস্থিত। যেখানে রয়েছে অটোমান সাম্রাজের নানা ঐতিহ্য কীর্তি, একই সাথে এই টুপক্যাপি প্যালেসের এক ভবনেই রয়েছে বিশ্বনবী মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র দাড়ি মোবারকের চুল, পায়ের স্যান্ডেল, জুতা-যা অত্যন্ত যত্নের সাথে মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। সর্বসাধারণের জন্য বিশেষ কাচের ভিতর বাক্সের মধ্যে প্রদর্শনের জন্য রাখা হয়েছে। এই মিউজিয়ামেই আছে আম্মাজান হযরত ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহা এবং হযরত আলী রাদিআল্লাহু আনহুর বিবাহের কাপড়, ইমামা শরীফ এবং বিয়েতে রসূলের দেয়া চেস্ট উপহার।

মহানবীর পবিত্র দাড়ি মোবারকের চুল

এ ছাড়া হযরত শিশ আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেই বিশেষ স্বর্ণ খচিত হাতের বর্ম, হযরত দাউদ আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বারা লোহার তৈরি তলোয়ার এবং এর কারু কার্যখচিত বিশেষায়িত লৌহ প্রদর্শনের জন্যো রয়েছে। এখানেই রয়েছে অটোমান সাম্রাজ্যের নানা কীর্তি সংগ্রহশালা। সম্রাটের মেহমান খানা এবং রয়েছে হেরেমখানা।

মহানবীর পায়ের স্যান্ডেল ও জুতা মোবারক

প্রায় ১৫শ এবং ১৯ শতাব্দিতে এই টুপক্যাপি প্যালেস মূলত ছিলো অটোমান সাম্রাজ্যের প্রশাসনিক ভবন এবং সুলতানের প্রাসাদ ভবন হিসেবেও ইতিহাসে প্রসিদ্ধ রয়েছে। সমগ্র ইস্তানবুলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে  আছে ৩০০টির মতো মিউজিয়াম, যার মধ্যে এই টুপক্যাপি প্যালেস মিউজিয়াম হলো ইস্তানবুলের মধ্যে সব চাইতে বেশি পর্যটক প্রতিদিন ভিজিট করেন। এখানে প্রবেশ এবং বের হওয়ার সময় আপনাকে অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে যেতে হবে-দীর্ঘ লাইন অপেক্ষা করা লাগবে।

বিভিন্ন রাজ্যে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে লেখা মহানবীর চিঠি

১৪৫৩ সাল থেকে সুলতান মেহমুদ এই প্যালেস দখলে নেয়ার পর পরই বসবাস করতে থাকেন এবং ১৪৮১ সালে এখানেই তিনি মৃত্যু বরন করেন।

টুপক্যাপি প্যালেস মিউজিয়ামের মূল প্রবেশ মুখ

বিশাল কম্পাউন্ডে যেদিকে চোখ যায় খুব সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো রয়েছে বিশাল এই মিউজিয়াম অঙ্গন। এর গেইটের একদিকে রয়েছে আয়া সোফিয়ার পেছনের অংশ ও ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড বাজার এবং ব্লু মস্ক। অপর অংশে রয়েছে আয়া সোফিয়ার দিকে যাওয়ার রাস্তা, যেখান থেকে উঠলে আপনাকে অনেক উচু রাস্তা বেয়ে উঠতে হবে এবং হাটতে হবে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট।

হযরত ফাতেমা রাদিআল্লাহু আনহার বিয়ের পোশাক এবং বিয়েতে নবীজীর দেয়া চেস্ট

মূল মিউজিয়ামের প্রবেশ পথের এক পাশে রয়েছে মিউজিয়ামের প্রবেশের পাস, হেরেমে প্রবেশের জন্য আপনাকে পৃথক চার্জ বা ফি দিতে হবে। বিশাল এই নিউজিয়াম ঘুরে দেখতে হলে আপনাকে কমপক্ষে সারা দিনের জন্য যেতে হবে। একদিনে পুরো মিউজিয়াম দেখে শেষ করা অনেকটাই অসম্ভব। সেজন্য সময় এবং সুযোগ নেয়ার জন্য আপনাকে শুরুতে মহানবীর স্মৃতিবিজড়িত এবং ইসলামের ইতিহাস ঐতিহ্যের কৃষ্টি সংস্কৃতি দেখার জন্য প্রথমেই মিউজিয়ামের ভিতরে ঢুকেই গার্ড বা পুলিশ কাউকে জিজ্ঞেস করে সোজা ভিতরের প্রথম দুটো মহল বা ভবন ডিঙ্গিয়ে বাম দিকের কোনার ভবনের দিকে হেটে নবীজীর স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক চুল ও জুতা মোবারক দেখার জন্য ঢুকে যাবেন। তাতে আপনার মিউজিয়ামে আসার প্রকৃত উদ্দেশ্য সফল হবে।

নবীজীর চুল মোবারক

কারণ এই মিউজিয়াম নানা গেইট এবং নানা পর্ষদে বিভক্ত, বিভিন্ন গেইটের রয়েছে নানা নামও।  ভিতরের তৃতীয় কোর্ট ইমপেরিয়াল ট্রেজারিতে রয়েছে সুলতানের নানা অবিস্মরণীয় কীর্তির সংগ্রহ শালা, সুলেমানি সোর্ড সহ আরও অনেক ঐতিহাসিক সংগ্রহ। সুলতানের হেরেম রয়েছে ওয়েস্টার্ন সাইডের সেকেন্ড কোর্টে।

দাউদ আলাইহি ওয়াসাল্লামের লোহার তরবারি

টুপক্যাপি প্যালেস সামারে সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকলেও উইন্টারে ৫.৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে। আর প্রবেশ খরচ পরবে সর্বসাকুল্যে ৭৫০ থেকে ৮৫০ তার্কিশ লিরার মধ্যে।

Salim932@googlemail.com

Please follow and like us:
Pin Share

Follow by Email
YouTube
Pinterest
LinkedIn
Share
Instagram
error: Content is protected !!