সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ ।
তুরস্কের ইস্তানবুলে মুসলমানদের কাছে সবচাইতে প্রিয় এবং ভক্তি ও শ্রদ্ধার স্থান হলো তার্কিশ ভাষায় আইয়ূপ সুলতান বা মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহাবী আইয়ূব আল আনসারীর রওজা জেয়ারত। রওজার পাশেই রয়েছে প্রাচীন তার্কিশ কারুকার্যখচিত ঐতিহ্যবাহী সুলতান আইয়ূপ মস্ক বা মসজিদ।
মদীনায় মহানবীর হিযরতের পর তিনি ছিলেন মহানবীর সঙ্গী, সাহাবী। কথিত আছে, ইতিহাসে দুই বক্তব্য রয়েছে, কারও কারও মতে, ৬৭০ এ কনন্সটান্টিনোপল দখলের সময়ে প্রথম আরব সিজের সময়ে যুদ্ধে তিনি নিহত হন। আবার কারও কারও মতে তিনি ডায়রিয়া সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেন।
সাহাবী আইয়ূব আল আনসারীর রওজা মোবারকে পর্যটকেরা অত্যন্ত ভক্তি সহকারে ভ্রমণ করে থাকেন। তারা সেখানে জেয়ারত করেন দোয়া দুরুদ পড়েন। রওজার ভিতরে পর্যটকদের জন্য স্থান খুব ছোট। তবে একপাশে রয়েছে কোরআন তেলাওয়াতের জায়গা, আর রওজার ভিতরে ঠিক বিপরীত ওয়ালে গ্লাসের ভিতরে কাঠের কারুকার্যমন্ডিত অবয়বের ভিতরে রয়েছে মহানবীর পায়ের ছাপ, পর্যটকদের দেখার জন্য। ভিতরে মূল কবর কিছুটা উপরে, তবে দেয়াল দিয়ে পরিবেষ্ঠিত। লোহার গ্রিল দিয়ে ছোট জায়গা রয়েছে দেখার জন্য।
রওজাতে প্রবেশের আগে ডানদিকের ছোট জায়গায় ( যা বের হওয়ার সময় ) দানবাক্স রয়েছে। এখানে একজন দান সাদাকা গ্রহণ করে রশিদ প্রদান করেন।
রওজাতে প্রবেশের আগে মূল গেইট দিয়ে প্রবেশ করলে ডানদিকেই রয়েছে মসজিদ। এই মসজিদ সুলতান মেহমুদ টু নির্মাণ করেছিলেন বলে প্রসিদ্ধি রয়েছে। ১৭৬৬ ভুমিকম্পে মসজিদটি ধবসে পরে। তারপরে ১৮০০সালে সুলতান সেলিম এই মসজিদ ফের পূণোনির্মাণ করেন।
সাহাবীর রওজা ও মসজিদে যাওয়ার আগে বেশ সুন্দর ছিমছাম মনোরম জায়গাতে আমাদের দেশের দরগাহের মতো রাস্তার উভয়পার্শ্বে খাবারের ও নানা স্যূভেনিরের দোকান রয়েছে। তবে এখানে দেশের মতো কেউ কাউকে ডাকাডাকি করেনা। রওজার প্রবেশের সামনের খোলা জায়গায় একদিকে মনোরম ফাউন্টেন, অপরদিকে ঈদগাহের স্টাইলে বেশ খোলা জায়গা রয়েছে যা পর্যটকদের বেশ আকর্ষণ করে।