সারা বছর দেশের আম জনতা তিন রাজনৈতিক দলের গিনিপিগে পরিণত হয়ে নাস্তানাবুদ হয়ে আছেন। অনেক প্রাণহানি, অনেক রক্তপাত, জান মালের বিনষ্ট হয়েছে। শিশু, কিশোর, যুবক, যুবতী, বৃদ্ধা, বৃদ্ধা কেউ ই আর এই তিন রাজনৈতিক দলের নিপীড়ন, নির্যাতন আর তাদের ঠেঙ্গারু বাহিনীর হুংকার, গুলি, আর ধ্বংস যজ্ঞ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।
কেউ ভয়ে মুখ খুলতেও চাচ্ছেন না। ব্যবসা বাণিজ্য, নাগরিক জীবন, সুখ শান্তি বলতে গেলে সব লাঠে উঠেছে। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। দুই নেত্রীর ক্রমাগত ইগো আর ক্ষমতায় ঠিকে থাকা আর ক্ষমতায় ফিরে যাওয়া আর তাদের সহযোগী ইসলামী নামের দলের সীমাহীন তাণ্ডব সবই আজ একই সূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশের জনগণের জান মাল এদের কারো কাছে নিরাপদ ও গুরুত্বপূর্ণ নয়। এরা যেন তেন ভাবে করে হলেও তাদের দাবী তারা আদায় করে ছাড়বে। এতে জনগণের যা হবার হয়, হবে-তাতেও তাদের পরোয়া নেই। একটি বারের জন্য এদেশের নিরন্ন খেটে খাওয়া অসহায় মানুষগুলোর কথা ভুলেও চিন্তা করেনা। বিদেশীরা আছে সুযোগের সদ্ব্যবহারের অপেক্ষায়। আমাদের দুই নেত্রী আর তাদের দুই বৃহৎ দল আর তাদের সহযোগী সকলেই আজ মরিয়া কি করে দুই নেত্রীর কথায় জান বাজী রেখে ধ্বংস আর অরাজকতার মহোৎসবে মেতে উঠবে। এ যেন ইতিহাস খ্যাত চেঙ্গিস খানের ধ্বংসযজ্ঞকেও হার মানায়।
বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগণ এখন কি করবে ? কি ই বা করার আছে। কেউ এখন আর সত্য কথা বলতেও ভয় পায়। কারণ সত্য কথা বললেই হয় তাকে বলা হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক নয়তো রাজাকার নয়তো বিদেশের দালাল। আবার চুপ করে থাকলেও এবারে চোখের সামনে সারা বিশ্বের শান্তির জনপদ খ্যাত এই সুন্দর দেশটি একসময় এভাবে নিঃশেষ হয়ে যাবে, ধ্বংসে লীলায় পরিণত হবে, এমনটা সহ্যও করতে পারছেননা।
বাংলাদেশ যত গরীব, যত নিঃস্ব হউক, এখানকার জনগণ শান্তিপ্রিয় এবং বিশ্ব শান্তি রক্ষায় ও প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের রয়েছে আকাশছুয়ী এক সুনাম। কিন্তু শান্তির জনপদ এখন জ্বলছে প্রতিনিয়ত। জ্বলে-পুড়ে ছার-খার হয়ে যাচ্ছে।
যারা বাংলাদেশের এই শান্তির সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে চান, নাগরিক জীবন ঐ তিন দলের হিংস্রতা আর ভয়াবহতা থেকে মুক্ত করে দুই নেত্রীর হেদায়েত চান, দুই নেত্রী আর দুই দলের মারামারি কাটাকাটি আর আপদ থেকে রক্ষা করে সুন্দরের সহাবস্থান চান, যেমন করে বিগত ৪২ বছর ধরে চলে আসছিলো- আসুন তারা সকলে মিলে আমরা নতুন বছরের শুরুতে ঘুম থেকে উঠেই সর্বশক্তিমান, এই বিশ্ব জাহানের স্রষ্টা, সমস্ত কিছুর খালিক আর মালিক, ফাসাইয়াক ফী কা হুমুল্লাহু ওয়াহুয়াসসামিউল আলীমের দরবারে সেজদা রত হয়ে মহান আল্লাহর দরবারে খালিস নিয়তে তওবা করে , নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সদকা ও ওসিলা নিয়ে, বাংলাদেশের ১৬ কোটি জনগণের নিরাপত্তা, জান মালের হেফাজত আর সুরক্ষা ও উন্নতি এবং একই সাথে এর ড্রাইভারদের(রাষ্ট্রের) সকলের হেদায়েত ও সুমতির জন্য আল্লাহর সাহায্য বছরের শুরুতে চাই। আমরা তওবা আর ইস্তেগফার এবং সেজদাহর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য চেয়ে নতুন বছরটা সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে শুরু করি। এখানে অনেক ইসলামিক দল ও তাদের নেতারা আছে। কায়মনোবাক্যে ইমানের দাবি নিয়ে কেউ কখনো আপনাকে আল্লাহর সাহায্য চাওয়ার জন্য সেজদা রত হতে বলবেনা। কারণ এরা কেউ আল্লাহর সাহায্য চায়না। কারণ ওরা সবাই চায় ক্ষমতা, প্রতিপত্তি। আমরা যারা সাধারণ আর নিরীহ, আমরা সকলেই চাই আল্লাহর সাহায্য, যাতে এদেশে আবার শান্তির অমিয় ধারা প্রবাহিত হয়। স্রেফ ক্ষমতার জন্য আর যাতে রক্তারক্তি, বোমাবাজি, ধ্বংসযজ্ঞ সাধিত না হয়। সবাই মিলে মিশে ক্ষমতা ভোগ করুক, সাধারণ জনগণের কোন আফসোস থাকবেনা। তবুও আমরা চাই শান্তি, সুন্দরের সহাবস্থান।
আমরা কি সবাই মিলে শুরুতেই আল্লাহর সাহায্য চেয়ে সেজদায় অবনত মস্তকে এই দোয়া করতে পারিনা ?
বান্দা যখন আল্লাহর দরবারে এমন বিনয়ের সাথে আল্লাহর সাহায্য চাইবে, নিশ্চয়ই আল্লাহর তরফ থেকে বাংলাদেশের জনগণের জন্য শান্তির ফায়সালা আসবে। কেননা হেদায়েতের মালিক আল্লাহ। আসুন সবাই মিলে এই তিন দলের হেদায়েতের জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, যেন আল্লাহ পাক এদের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেন নয়তো মুক্তি দেন।
Salim932@googlemail.com
31st December 2013,London