মিলিটারাইজেশন-ইসিএ, এফটিএএপি হয়েই আজকের টিকফা-পেছন থেকে দেখা

মিলিটারাইজেশন-ইসিএ, এফটিএএপি হয়েই আজকের টিকফা-পেছন থেকে দেখা

১১ বছর ধরে বহুল আলোচিত, সমালোচিত টিকফা চুক্তি অবশেষে বাংলাদেশ ও আমেরিকার মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ৯টারও কিছু পরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের সময় থেকে শুরু করে, তারও বহু আগ থেকে ডঃ আনু মোহাম্মদ সহ বাম ঘরানার ছোট ছোট কিছু দল, তেল বন্দর রক্ষা কমিটি, অধ্যাপক আকাশ এবং অনলাইন এক্টিভিষ্ট ছাড়া আর কারো কাছ থেকে এখন পর্যন্ত তেমন কোন আপত্তি আসেনি।

ইতিমধ্যে বাসদ তাদের প্রতিক্রিয়া আনুষ্টানিকভাবে জানিয়েছে, যেমন জানিয়েছেন আনু মোহাম্মদ, তার লেখনীর মাধ্যমে বিস্তারিত ভাবে। সরকার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই টিকফা স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশে আমেরিকার ইনভেষ্টম্যান্ট বৃদ্ধি সহ দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে সমূহ উন্নতি ও লাভবান হবে। বাংলাদেশের চেম্বার অব কমার্স এর দুজন ব্যক্তিত্ব ডেইলি স্টার এ টিকফা নিয়ে তাদের আশাবাদ ও ব্যবসায়িক লাভালাভ নিয়ে একসাথে দুটি নিবন্ধাকারে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। এফবিসিসিআই এখন পর্যন্ত টিকফা নিয়ে তাদের অবস্থান কেমন বা এ সম্পর্কে তাদের রিসার্চ কোন পর্যায়ে আদৌ হয়েছে কিনা জাতির সামনে তেমন কোন বক্তব্য চোখে না পড়ায় অনেকটাই হতাশ হয়েছি। একই অবস্থা লন্ডনের ব্রিটিশ বাংলাদেশী চেম্বার অব কমার্স- রাজনৈতিক প্রচারে এই দুই শীর্ষ সংগঠন যতটা না সক্রিয়, ততোটা জাতির এই বৃহত্তর সেনসিটিভ ইস্যু নিয়ে তাদের কোন বক্তব্য নেই- এটা অনভিপ্রেত বলা যায়। জাতি সংঘের বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি হুমায়ূন কবির অবশ্য একধরনের মধ্যপন্থা অবলম্বন করে বক্তব্য সংবাদ পত্রে উপস্থাপিত হয়েছে। এর বাইরে সব কটা দৈনিক অনলাইন ও প্রিন্টিং মিডিয়ায় টিকফা চুক্তি হচ্ছে, বা স্বাক্ষরিত এমন সংবাদই প্রকাশিত হয়েছে। এর সাথে কোন তথ্য সন্নিবেশিত হয়নি, কোন পত্রিকাই প্রকাশ করেনি, যা জনগণের প্রত্যাশার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়নি।

বাংলাদেশ সরকার কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা স্থানীয় মার্কিন দূতাবাস টিকফা সংক্রান্ত অধিক কোন তথ্য এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেনি, যা করেছে কেবলমাত্র এর উপকারিতা নিয়েই, অহরহ তারা সকলেই বিগত ১১ বছর ধরেই একই স্টাইলে করে আসছিলেন।

এতে সাধারণভাবে সরলীকীকরণ করা যায়, আজকের পৃথিবীর গ্লোবাল ইকোনোমিক পার্টনারশিপ ষ্ট্র্যাটেজীর কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টিকফা চুক্তি সহজেই ডিজ-এসোসিয়েটস করার মতো একক ঝুঁকি নেয়া বা দুঃসাহস দেখানোর মতো পর্যায়ে এখনকার কোন দেশই তেমন একটা অবশিষ্ট নেই- একথা তৃতীয় বিশ্বের যেকোন দেশের সরকার প্রধানের বেলায় সত্য।

ফ্ল্যাশ বাক: এফটিএএপি, ইসিএ হয়ে টিকফা-

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০০৯ সাল থেকে ফ্রি ট্রেড এগ্রিম্যান্ট করার কাজ মূলত: ট্রান্স প্যাসিফিক ষ্ট্র্যাটেজিক ইকোনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিম্যান্ট বা টিপিপির কাজ অনেক আগে থেকে করে আসছে তার ৬০০শত বৃহৎ কোম্পানী, যাদের একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করে পরিবেশ, অর্থনীতি, ফাইন্যান্স ও রেগুলেটরি ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তারে সক্ষম। এই ফ্রি ট্রেড ইকোনোমিক পার্টনারশীপের অগ্রবর্তী যে পলিসি মেকার বা প্ল্যান তার নাম হলো দ্য প্যাসিফিক পাইভোট- যা প্যাসিফিক দেশ সমূহে মিলিটারি শিফটিং এর কাজ লজিস্টিক সাপোর্ট সহ সব ধরনের কাজেরই অংশ, যার অফিসিয়াল নাম ফ্রি ইকোনোমিক ট্রেড এন্ড সো এন্ড সো।

এই টিপিপি অরিজিন্যালি ডেভেলপ করেছিলো এপেকভূক্ত দেশ সমূহের মাধ্যমে এশিয়া প্যাসিফিক দেশসমূহের পাথ ফাইন্ডার হিসেবে ঐ ফ্রি ট্রেড এরিয়া অব দ্য এশিয়া প্যাসিফিক(এফটিএএপি)নামেই কাজ শুরু করেছিলো মারকিন যুক্তরাষ্ট্র , যেখানে ২০০৫ সালে সাইন করেছিলো সিঙ্গাপুর, নিউজিল্যান্ড, চিলি এবং ব্রুনেই। ইউ এস অফিসিয়ালি এই টিপিপি অঞ্চল এবং ফ্রি ট্রেড এবং ইকোনোমিক সোর্স নিয়ে আলোচনা শুরু করেছিলো ২০০৮ সালে, পরবর্তীতে ঐ বছর সেপ্টেম্বর মাসে ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টিটিভ সোসান স্যাব ইউএস এই অঞ্চলের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ইকোনোমিক কোঅপারেশনের আলোচনা শুরুর উদ্যোগের ঘোষণা করেন। তারই ধারাবাহিকতায়২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে এসে ওবামা এই ফ্রি ট্রেড ইকোনোমিক পার্টনারশিপ ষ্ট্র্যাটেজীকে আরো অধিকতর অঞ্চলে বিস্তৃত এবং একুশ শতকের উপযোগী ব্যবসা বান্ধব চুক্তির ক্ষেত্র বৃদ্ধির উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেন। একই বছর টোকিওতে ওবামা এই পলিসির আরো ব্যাপক আকারের ব্যাখ্যা তার টোকিও ভাষণে উপস্থাপন করেছিলেন।

ঐ সময়কালীন মার্কিন তথ্য, নথি, পত্রিকা, জার্নাল ঘেঁটে জানা গেছে, এই টিপিপি ২০০৮ সালে আমেরিকান লি ম্যান ব্রাদার্স এর ব্যংক্রাপসী দেয়ার আগে থেকেই আলোচনার দরজা আমেরিকা খুলেছিলো, তাদের অর্থনীতিতে ইনজেকশন বা বোষ্ট দিয়ে সঞ্জীবনী শক্তি ফিরিয়ে এনে আমেরিকান অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার জন্যে। তারই ফলশ্রুতিতে ঐ সময়ে ১লা অক্টোবরে বুশ সরকারের দেয়া ৭০০ বিলিয়ন ডলারের ট্র্যাবলস এসেট রিলিফ প্রোগ্রাম(টিএআরপি)দিয়ে তাদের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখেছিলো, যা ২০০৯ সাল পর্যন্ত এমন রেসকিউ ইঞ্জেক্ট চালু ছিলো। ওবামা প্রশাসনের প্রেসিডেন্সী শুরু এক মাসের মাথায় এই রেসকিউ প্যাকেজ বাড়িয়ে ৭.৭৭ ট্রিলিয়ন ডলারস করা হয়।

 

২০১১ সালের ভিতরে আমেরিকা তার ট্রান্স প্যাসিফিক ইকোনোমিক ষ্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ আরো নয়টি কান্ট্রির মধ্যে বিস্তৃত করে।হাওয়াইতে এপেকের মিটিং এ কানাডা ও মেক্সিকো এই ট্রিটিতে জয়েন করে এবং ঐ সময়কালীন মোস্ট সাসপেক্টেড কান্ট্রি জাপান এই ট্রিটিতে বা পার্টনারশিপে অংশ নেয়ার আলোচনা জোরদার হয়।

বর্তমানে আমেরিকার এই ষ্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের সদস্য সংখ্যা ১২ যার টিটিপ ভুক্ত দেশের কম্বাইন্ড জিডিপি মোট ২৬ ট্রিলিয়ন ডলারস যা গ্লোবাল ইকোনোমিক পার্টনারশিপের রিপ্রেজেন্টিটিভ করে থাকে।

২০১১ সালের দিকে ওবামা তার ঐ প্যাসিফিক পাইভোট ফ্রম ইরাক টু আফগানিস্তান, অর্থাৎ আটলান্টিক থেকে প্যাসিফিক পর্যন্ত মিলিটারি ৬০% করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। ঐ পলিসি প্রেসিডেন্ট ওবামার হয়ে মাত্র একমাস আগে তার সেক্রেটারি অব ষ্টেট হিলারি ক্লিনটন উপস্থাপন করেছিলেন। ওবামা প্রশাসনের সেই বিখ্যাত সিক্স পয়েন্ট, যেখানে বলা হয়েছিলো-

০১) দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরো শক্তিশালী করা
০২)এমার্জিং পাওয়ারদের সাথে আমাদের রিলেশনশিপ আরো গভীর করা
০৩) রিজিওনের মাল্টিলেটারেল ইন্সটিটিউশনকে আরো অধিকতর এনগেজ করা
০৪) ট্রেড এন্ড ইনভেষ্টম্যান্ট আরো বৃদ্ধি করা
০৫)মিলিটারি প্রেজেন্স আরো লজিস্টিক বহুমাত্রিকতায় উপস্থাপনের কৌশল
০৬)হিউম্যান রাইটস ও ডেমোক্রেসির উন্নয়ন, অগ্রগতি আননয়ন

ঐ সময় মিসেস ক্লিনটন বলেছিলেন,এই টিপিপিকে ইউএস রেগুলেটরির মাধ্যম হিসেবে নিয়ে ট্রেড এন্ড ইনভেষ্টম্যান্ট কোঅপারেশনের আদলে পরিবর্তিত হয়ে উপরোক্ত এফটিএএপি রূপ পরিগ্রহ লাভ করবে।

ঐ সময় সিকিউরিটি এডভাইজার টম ডনিলন বলেছিলেন ঠিক এভাবে,“the shift in focus toward the Asia-Pacific region isn’t just a matter of military presence. Rather, he added, it’s an effort to harness all elements of U.S. power: military, political, trade and investment, development and values.”

ন্যাটো এখানে মানে প্যাসিফিক অঞ্চলে নতুন করে তখন ফোকাস করে তাদের ষ্ট্র্যাটেজী রিভিউ করে। কেননা ন্যাটো মুলত এক পা তার প্যাসিফিক অঞ্চলে রেখেই আছে। ইউএস ষ্ট্র্যাটেজী অবজার্ভ করে ন্যাটো ২০১৩ আগস্টে আটলান্টিক ভয়েসে সাংবাদিক রিবের্নিক পাথ এহেড ফর ন্যাটো পার্টনার্স অফ দ্য এশিয়া প্যাসিফিক শিরোনামে তুলে ধরে বলেন, নর্থ কোরিয়া ইস্যুতে জাপান-সিনো আলোচনায় জাপানের সিনকাকো আইল্যান্ডস ন্যাটো ডাইরেক্টলী ইন্টারভেন করতে সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে ইউ এস অধিকতর ইনভলম্যান্ট এবং তারা মনে করছে আমেরিকা নর্থ আটলান্টিক ট্রিটির অজুহাতে অন্য ২৭ দেশের সমন্বয়ে আর্টিক্যাল ৪, আর্টিক্যাল ৫ প্রয়োগ করবে, যাতে ন্যাটোর উপস্থিতি প্যাসিফিক অঞ্চলে থাকাটা আরো জরুরী যেকোন মুহূর্তে।

টিকফা এবং আমেরিকার নতুন নাম-

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে ১৯৫১ সালে প্রণীত ইকোনোমিক কোঅপারেশন এগ্রিম্যান্ট এর নতুন নামকরণ ইউএস মিউচুয়াল সিকিউরিটি এগ্রিম্যান্ট, যা গত ২০১০ সালে ক্লিনটন প্যাসিফিক প্ল্যান নামে নতুন করে উপস্থাপন করেছিলেন, তারই আদলে নয়া নয়া নামে মিলিটারি ইন্টারভেনশন সহ অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িক, ইনভেষ্টম্যান্ট, সামরিক সামগ্রিক সহযোগিতার এক বাস্তব নাম এই ইকোনোমিক কোঅপারেশন তথা আজকের ফ্রি ট্রেড কিংবা ট্রেড এন্ড ইনিভেষ্টম্যান্ট চুক্তি *( নয়া নাম টিকফা হয়েই এই অঞ্চলে আভির্ভুত), যাতে জাতি সংঘ সহ বিশ্বের অক্সিলারী সংস্থা সমানভাবে জড়িত আমেরিকা তার বিশ্ব অর্থনীতির ষ্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ করে চলেছে।

আমেরিকা তার এই ফ্রি ট্রেড এন্ড ইনভেষ্টম্যান্ট কোঅপারেশন তথা টিকফা কিংবা এফটিএএপি তে চায়না কিংবা রাশিয়াকে অন্তর্ভুক্তি করতে আগ্রহী নয়, বলা যায় চায়না, রাশিয়াকে এর বাইরের জোনে রাখতে বদ্ধপরিকর। চায়না ইতিমধ্যে আটলান্টিক, প্যাসিফিক অঞ্চলে তার ফুয়েল বাণিজ্য দখলে নিতে জাতীয় পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। আমেরিকার আগেই চায়না আফ্রিকা অঞ্চলের ফুয়েল, তেল, গ্যাস পেট্রলিয়াম, খনিজ প্রভৃতি নিজেদের করায়ত্ত করে ব্যবসা শুরু করে দেয়াতে আমেরিকা মরিয়া চায়নার খবরদারিত্ব বন্ধ করে দিতে, যতটা না ভয় ব্যবসা ও ইনভেষ্টম্যান্ট, তার চাইতে অধিক চাইনিজ মিলিটারি ইন্টারভেনশন ঐ সব অঞ্চলে। চায়না আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ক্যারিবিয়ান, সেন্ট্রাল ও সাউথ আমেরিকান রিজিয়নে তার ব্যবসা, ইনভেষ্টম্যান্ট এর অধীনে নিয়ে এসে করায়ত্ত বজায় রেখে চলেছে, যার লক্ষ্য এখন বঙ্গোপসাগর হয়ে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত।

বর্তমানের আমেরিকা-ইউরোপীয় ইউনিয়নের ট্রিটি মূলত চায়নিজ ইকোনোমিক ও মিলিটারি খবরদারিত্ব রুখে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছে।

২০১২ সালের জুলাই মাসে বিশ্ব ব্যাংক যে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের গ্লোবাল ট্যাক্স রিফর্ম সহযোগিতা ঘোষণা করে তারও ধারাবাহিকতা এই টিকফাতেই অন্তর্ভুক্ত সুপ্ত অথচ ডিপ্লোম্যাটিক ভাষায় নিহিত, যা প্রয়োজন ও সুযোগের সময় গ্লোবাল সহযোগিতা ও ষ্ট্র্যাটেজিক দ্বিপাক্ষিক পার্টনারশিপের সময় কাজে লাগানোর ব্যবস্থা থাকছে।

২০১৫ সালের মধ্যে ইউএন মিলিনিয়াম ডেভেলপম্যান্ট গোলস যা পরিবেশের উন্নয়ন, দারিদ্র দূরীকরণ, ডেভেলপম্যান্ট গোলস ইত্যাদি এই আমেরিকান ইকোনোমিক সহযোগিতার হাত ধরেই এগিয়ে এসেছে।

এই টিকফা, এটিএফ, টিফা- আমেরিকান সরকারের বহুমুখী ষ্ট্র্যাটেজিক ভিন্ন ভিন্ন নামের একই সহযোগিতার গোলস মার্কিন নেভীর নিরাপত্তা ও উপস্থিতি যা সদস্য দেশসমূহের নিরাপত্তা ও সিকিউরিটির সময়ে কাজে লাগানোর কৌশলে একেবারে মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ওপেকভুক্ত দেশসমূহ, আশিয়ান হয়ে ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ব্রুনেই, বাংলাদেশ, ভারত সীমান্ত সমুদ্র উপকূলবর্তী, মায়ানমার, স্পার্টলী আইল্যান্ডসের ৪২টি, কোরিয়ার পিস আইল্যান্ডস, জাপানের সেনকাকো আইল্যান্ডস সহ প্রভৃতিতে চীন রাশিয়ার আধিপত্য খর্ব ও নিজেদের মুঠোয় নেয়ার সেই এক দুর্দমনীয় বিশ্ব রাজার মহা সহযোগিতার পরিকল্পনার নয়া নয়া নাম। কূটনীতির বার্গেনিং পয়েন্টে ও টেবিলে যে দেশ বা দেশ সমূহ এগিয়ে থাকবে বা কাজে লাগাতে পারবে সহযোগিতার নয়া নয়া ক্ষেত্র তাদের জন্য নতুন নতুন দরজা খুলে যাবে, আর অপারগতায় কিংবা জাতীয়তাবাদের চেতনা জাগ্রত হলেই সন্ত্রাস, আর আন্তর্জাতিক টেরোরিজমের তকমা গায়ে লেপন করে ইতিহাসের করুন পরিণতির দায় নিয়ে আমেরিকান সহযোগিতার মানচিত্র থেকে বিদায় নিতে হবে (হয়তো)।

বাংলাদেশী বিশেষজ্ঞ টিকফা সমর্থন করছেন না-

সেদিক বিবেচনা কিংবা অর্থনীতির অন্যান্য সূচক বিবেচনায় নিয়েই হয়তো উন্নয়ন গবেষক রাশেদ আহমেদ এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলছেন বাংলাদেশ টিকফা থেকে খুব একটা লাভবান হবেনা। যেমন করে সতর্ক করেছিলেন ডঃ আজিজুল হক তার সময়ে। অধ্যাপক আকাশও টিকফাকে খুব একটা ভালো চোখে দেখছেননা। মন্ত্রী জি এম কাদের ও ওবায়দুল কাদের টিকফাকে বাংলাদেশের ব্যবসা, বাণিজ্যের সুবিধার দিকে বিবেচনা করে ভালো হিসেবেই স্বাগত জানিয়েছেন।

প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের সময় টিকফা নিয়ে আলোচনা অনীহার কারণে বেশীদূর এগুয়নি, আজকে ক্ষমতাকেন্দ্রিক বিএনপির রাজনৈতিক কারণে এই চুক্তিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে।

বিগত ১/১১ তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও আজিজুল হকের অনীহার কারণে টিকফা আলোচনা আরো পর্যালচনার অজুহাতে ফাইলবন্দী হয়ে যায়।

কেবল রাজনৈতিক বিবেচনায় টিকফা-

এর বাইরে অধিকাংশ জনগণের টিকফা নিয়ে খুব একটা স্বচ্ছ ধারণা নেই। বহুল আলোচিত এই টিকফা হাসিনার সরকার একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে সই করায় জনমনে এখন অনেক প্রশ্ন এবং সংশয় দেখা দিয়েছে। হাসিনার সরকার শুধু মাত্র বিরোধীদলের আন্দোলনের সাথে থেকে আমেরিকান কূটনৈতিক তৎপরতা ফিরিয়ে আনতে, ক্ষমতায় মরিয়া হয়ে থাকার জন্যে, আমেরিকার সমর্থনের সুবাধে মার্কিনীদের সাথে এই টিকফা চুক্তি সম্পন্ন করেছে- এটা এখন জলের মতো পরিষ্কার।

তারপরেও কথা থেকে যায়, খোদ মার্কিনীরা তথা এই সহযোগিতা চুক্তির কো-অর্ডিনেটর নিজেই বলেছেন, যা এখানে হুবহু তুলে দিলাম পাঠকদের জন্য তুলে দিলাম, আর তাহলো-We cannot, should not separate the TPP from its military component. It’s disingenuous to call for an end to these free-trade agreements without simultaneously calling for an end to militarization.

আগামী পর্বে থাকছে আরো বিস্তারিত তথ্য উপাত্ত…।

Salim932@googlemail.com
25th November 2013.

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *