নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে, নমিনেশনের দৌড়-ঝাপ ততো এগিয়ে চলছে। বাইরে যত না নির্বাচনী ফর্মুলা নিয়ে হাঁক-ডাক ভিতরে ভিতরে উভয় দল এখন সম্ভাব্য ও তৃণমূলের পছন্দের নিশ্চিত প্রার্থীদের নিয়ে আলোচনা জোরে শোরে এগিয়ে চলছে।বিগত পাঁচ বছরের এমপি, মন্ত্রীদের দলীয় ও কাজের পারফর্মেন্স, একই সাথে সম্প্রতি গোয়েন্দা ও নিরপেক্ষ জরিপের ভিত্তিতে, তৃণমূলের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী তনয় সজীব ওয়াজেদ জয় বিশেষ এসাইনম্যান্ট নিয়ে মাঠ পর্যায়ে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে কাজ করে চলেছেন।
আওয়ামীলীগের এবং স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় এই তিন বিশ্বস্ত সূত্রে এবং পার্লামেন্ট মেম্বার্স ক্লাবে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠ পর্যায়ের পারফরম্যান্স নিয়ে ব্যাপক আলাপ-আলোচনার পর নীতিগত সিদ্ধান্তের খবর সূত্রের মাধ্যমে হাতে এসেছে।
মহাজোট সরকারের নানান দুষ্কর্ম আর দল ও সরকারের জন্য বিব্রতকর অবস্থা যাদের জন্য হয়েছে, দল ও তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সাথে দূরত্ব তৈরি করে মহাজোটকে ব্যবহার করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে ও নানা কুকর্ম করে আওয়ামীলীগকে বিব্রতকর করে তুলেছেন, তাদের কেউই এবার মনোনয়ন পাবেননা। উপরন্তু, অতিরঞ্জিত বক্তব্য মিডিয়ায় প্রকাশ করে, দলীয় সভানেত্রীর নিষেধ উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করে যারা জনগণের সাথে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, তাদের ব্যাপারে শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেদের বিশ্বস্ত সোর্সের মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে নমিনেশন থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নীতিগত ভাবে গ্রহণ করে প্রত্যাশিত ও ক্লিন ইমেজের সম্ভাব্য প্রার্থীদের গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছেন, নির্বাচনের জন্য তৈরি হওয়ার জন্যে।
মর্যাদাপূর্ণ আসন সিলেট-১ নিয়ে সারা দেশের কৌতুহল এবং বলা হয়ে থাকে শাহজালাল (রঃ) আশীর্বাদে সিলেট-১ আসন থেকে যে বা যারা বা যে দল জয়লাভ করেন , সেই দল পরবর্তীতে সরকার গঠন করে থাকেন। আর সেই দিক বিবেচনা করে, আওয়ামীলীগের হাই কমান্ডের প্রথম পছন্দ সিলেট-১ আসন থেকে সবচাইতে ক্লিন এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমানভাবে সুপরিচিত দুই ব্যক্তি, যাদের একজন হলেন জাতি সংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ডঃ আব্দুল মোমেন, আর অন্যজন হলেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহূল হোসাইন। এই দুজনের একজন সিলেট-১ আসন থেকে আওয়ামীলীগের টিকেট পাবেন সন্দেহ নেই। শেখ হাসিনা, সজীব ওয়াজেদ জয়, এবং তৃণমূলের পছন্দ ডঃ মোমেন, জাতিসংঘে থেকেও যিনি বিগত পাঁচ বছর সিলেটের নেতা-কর্মীদের সাথে ব্যাপক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। এখানে বাধা হিসেবে শুধু রয়ে গেছে ডঃ মোমেনের বড় ভাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। মুহিত ইলেকশন না করলে ডঃ মোমেন এই আসনে মনোনয়ন পাবেন এটা নিশ্চিত হাই কমান্ডের সিদ্ধান্ত বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন। দলীয় কোন্দল চেপে রেখে এবং আগামী নির্বাচনে ডঃ আব্দুল মোমেনের নমিনেশন কনফার্ম রাখার জন্য হাইকমান্ড ভিন্ন এক নয়া টেকনিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে দিয়ে আগেই নির্বাচনের ঘোষণা মূলত ঐ ছকেরই অংশ বলে সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সফরের সময় এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত আলোচনা হবে ডঃ মোমেনের সাথে। ডঃ মোমেন একান্ত যদি অপারগ হন সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসেবে থাকছে সাবেক সিইসি ছহূল হোসাইন। অবশ্য ছহূল হোসাইনকে নিয়ে বিএনপিও চিন্তা-ভাবনা করছিলো বলে কিছুদিন আগে বিএনপির হাই কমান্ড সূত্রে জানা গিয়েছিলো। অদৃশ্য এক কারণে সে চিন্তা মাঝপথেই থেমে যায়।
সূত্র নিশ্চিত করেছেন, পররাষ্ট্রনীতিতে বিশেষকরে ভারতের সাথে কূটনীতিতে মারাত্মক ব্যর্থ এবং মিডিয়ায় নানা মুখরোচক দুর্নাম আর আমেরিকান লবির নাখোশের তালিকায় থাকা দীপু মনি হাসিনার গুড বুকে থাকা সত্বেও এবারকার নির্বাচনে নমিনেশন পাবেননা। একই অবস্থা তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর ক্ষেত্রেও।মন্ত্রী কামরুল, হানিফ, মিসবাহ এদের কেউই এবার নমিনেশন পাচ্ছেননা সূত্র নিশ্চিত করেছে।