Home » কলাম » বেগম জিয়া, শেখ হাসিনা, তারেক রহমান, সজীব ওয়াজেদ জয় আগামীর বাংলাদেশের স্বার্থে ন্যূনতম যা করতে পারেন-

বেগম জিয়া, শেখ হাসিনা, তারেক রহমান, সজীব ওয়াজেদ জয় আগামীর বাংলাদেশের স্বার্থে ন্যূনতম যা করতে পারেন-

বাংলাদেশে বছরের পর বছর যে রাজনৈতিক সংকট, বিশৃঙ্খলা, হানাহানি, লুট-পাট, হরতাল,ঘেরাও, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি , দলীয় আধিপত্য, কালোটাকার দাপট, ছাত্রলীগ সকল লীগের যে বেপরোয়া ও উদ্যতভাব, মন্ত্রী ও এমপি আর দলীয় প্রধানদের একচ্ছত্র সীমাহীন ক্ষমতা ও স্বেচ্ছাচার, আমলা, পুলিশ ও সরকারি কর্মকর্তাদের তোষামোদি ও বেপরোয়া ভাব, তা থেকে মন্দের ভালো কিছুটা চেক এন্ড ব্যালেন্স, একই সাথে সামান্য জবাবদিহিমূলক দক্ষ, এফিশিয়েন্ট, এবং প্রশাসন ও সরকারে কিছুটা যুগান্তকারী আওয়ামীলীগের পরিবর্তন ও বিএনপির নতুন ধারার রাজনৈতিক পরিবেশ ও ভারসাম্য আনতে হলে, এই মুহূর্তে আওয়ামীলীগ, বিএনপি এবং এই দুই দলের দলনেত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, বেগম খালেদা জিয়া, তাদের নতুন নেতৃত্বের ডঙ্কা বাজিয়ে আগমনী জানানোর অগ্রভাগে যারা, সেই তারেক রহমান এবং সজীব ওয়াজেদ জয় নিজেদের রাজনৈতিক নতুনত্ব ও জনকল্যাণের শুভ কামনার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে প্রাথমিকভাবেই, যেহেতু নির্বাচনের ডঙ্কা বাংলাদেশের বাতাসে বেজেই চলছে, তাই জরুরী ও আশু কর্তব্য হিসেবে জনগণের কাছে বলতে পারেন-

০১) বাংলাদেশের সুশীল সমাজের জনপ্রিয়, অভিজ্ঞ, শিক্ষিত ও উন্নত, চিন্তা-চেতনা, ও নৈতিক আদর্শের ঝাণ্ডায় অনেকটা এগিয়ে, একই সাথে সরকার ও প্রশাসনে পরিবর্তন ও নতুন ধারার রাজনীতির স্বার্থে প্রফেসর রেহমান সোবহান, ডঃ হোসেন জিল্লুর রহমান, ডঃ আবুল বারাকাত, ডঃ আকবর আলী খান, ডঃ জামিলুর রেজা, সি এম শফি সামী, সাবেক সচিব হাফিজ উদ্দিন, বিচারপতি হাবিবুর রহমান, ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস, সিরাজুল আলম খান, ডঃ আজিজুল হক, খুশী কবির, সুলতানা কামাল, আ স ম আবদুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্না, ডঃ দেবপ্রিয় ভূট্রাচার্য্য, ডঃ কামাল হোসেন, তালুকদার মনিরুজ্জামান, ডঃ এমাজ উদ্দিন, নূরুল কবির, নাঈমুল ইসলাম খান, ডঃ আসিফ নজরুল, ব্যারিস্টার রফিকুল হক, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, ডঃ এ কে এম মোমেন, ডঃ জিল্লুর রহমান খান, ডঃ আবুল কাশেম, ডঃ মাহফুজ উল্লাহ, ডঃ এ কে এ আবদুল মুবিন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডাঃ বি চৌধুরী, মাওলানা নূরুল ইসলাম মাখজানুল উলুম মাদ্রাসা, – সহ এই রকম বাছাই করা খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বদের সরকার ও রাষ্ট্রে অংশ গ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করে নিয়ে এসে তাদের সেবা ও বিশেষায়িত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে এই দুই দল আগামীর বাংলাদেশ মিলে- মিশে অন্তত জাতীয় স্বার্থে এক হয়ে কাজ করে যাবে। সেজন্য-

ক) এই দুই দলকে এই সব ১০০ ব্যক্তির কাছে দলীয় আবদার নিয়ে যেতে হবে, বা জাতির কাছে ক্লিয়ার ম্যাসেজ দিতে পারেন, এই ১০০ বিশিষ্ট নাগরিকের বিপরীতে আমরা দলীয় কিংবা বিদ্রোহী কোন প্রার্থী দেবোনা। তাদের সাথে এরশাদের জাতীয় পার্টিও বলতে পারে যে আমরা দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এই ১০০ বিশিষ্ট নাগরিকের বিপরীতে কোন ক্যান্ডিডেট দেবোনা। এই কারণে বলতে হবে-

** এই সব বিশিষ্ট ব্যক্তি ( রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়া ) কখনো স্বেচ্ছায় রাজনীতিতে আসবেননা, এবং দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী যে কালচার, এই রকম অবস্থায় এরা কখনোই নিজেদেরকে জড়াবেননা, এবং নির্বাচনের সময় কালো টাকা ও দলীয় পেশী শক্তির কাছে তারা পেরে উঠবেননা। তাছাড়া প্রচলিত নির্বাচনী ব্যবস্থায় জয়ী হয়ে আসার মতো অনেকের সেই মানসিকতা ও বয়সের মতো ফ্যাক্টরও বিরাট এক বাঁধা । সুতরাং আওয়ামীলীগ ও বিএনপি যেহেতু নতুনের কথা নির্বাচনী আবহাওয়া বলে বেড়ায় এবং তাদের ইশতেহারে অনেক ভালো ভালো স্বপ্নের কথা বলা হয়, সেই সাথে নতুন দুই তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিকে রাজনীতিতে স্বাগত জানানোর ও সহযোগিতার লক্ষ্যে জাতির আগামীর স্বপ্নের সুন্দর বাস্তবায়ন ও উন্নতির লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞ ও বিশেষায়িত ব্যক্তিদের সরকারে ও প্রশাসনে আনয়ন প্রয়োজন। যেহেতু প্রচলিত ব্যবস্থায় আনা সম্ভব নয়, আবার সংবিধানের পরিবর্তন ও অন্য কিছু করে আনতে হলে সময় সাপেক্ষ ব্যাপার, তাই এই মুহূর্তে পরিবর্তন ও নতুন ধারার সরকার ও রাজনীতির লক্ষ্যে এই রকম একটা আশু ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে।

** এতে এই ১০০ বিশিষ্ট নাগরিকদের কাছেও প্রতীয়মান হবে, বিগত ৪০ বছর ধরেতো বাংলাদেশে কেউ এরকম ম্যাসেজ নিয়ে তাদের কাছে আসেনি। আর দেশ ও জাতির ভাগ্য উন্নয়ন ও সুশাসনের কিঞ্চিত ব্যবস্থা শুরু করে দেয়ার লক্ষ্যে তাদেরও কিছুনা কিছু ভূমিকা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে রাখার একটা সুযোগ যখন হচ্ছে, তখন তাদেরও এগিয়ে আসা উচিৎ ।

খ) বাংলাদেশের সংবিধানে ৩০০ আসনের যে ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে আমরা ৩০ জন নারী সাংসদের এমনিতে নিয়ে আসার( সংরক্ষিত) যে ব্যবস্থা রয়েছে, তার বিপরীতে বা সমান তালে জাতির রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে সুশাসনের ও জবাবদিহি জনপ্রশাসন গড়ার লক্ষ্যে প্রচলিত এই ৩০০ আসনের মধ্যে বিশিষ্ট ১০০ নাগরিকদের জন্য এই ১০০ আসন সকল বিরোধীদল মিলে ছেড়ে দিতে পারে। এটা স্থায়ী কোন ব্যবস্থা নয়। এই মুহূর্তের দাবী।

কারণ যে দলই ক্ষমতায় যায় একচ্ছত্র ক্ষমতা ও সীমাহীন স্বেচ্ছাচারমূলক প্রশাসন ও আধিপত্য বিস্তার করে থাকে।

তা থেকে কিছুটা মুক্তি ও প্রশাসন, সরকার, সংসদ সব ক্ষেত্রে একটা সুন্দর প্রতিযোগিতা ও নিবিড় উন্নয়ন পরিকল্পনা ও প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ক্ষমতার ও সরকারের মধ্যে চেক এন্ড ব্যালেন্স কিছুটা হলেও সৃষ্টি করার জন্য এই রকম একটা ব্যবস্থা এখনি নেয়া দরকার।

কেননা যত আইন ও সুন্দর সুন্দর কথা কথা বলা হউক না কেন যে দলই ক্ষমতায় যাবে, কিছুদিন পরেই আবার সেই একই অবস্থা শুরু হয়ে যাবে।আর একজন বা দুজন ভালো লোক ব্যাপক দুর্নীতিগ্রস্থদের সাথে পেরে উঠবেননা, সেজন্য দরকার কিছু সামষ্টিক ভালো কলমের শক্তি।

আজকে আওয়ামীলীগ করছে খুনোখুনি, গুম, লুটপাট, সন্ত্রাস, কাল বিএনপি করবে, পরশু জামাত, জাতীয় পার্টি করবে। কিন্তু এভাবেতো একটা দেশে হরিলুট করে এগিয়ে যেতে পারেনা। সারা পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে, আমরা পেছনে পড়ে থাকবো কেন ?

গ) জনমনে বিশ্বাস ও ধারণা আছে, রেহমান সোবহান, সি এম শফি সামী, ডঃ আজিজুল হক, ডঃ বদিউল আলম মজুমদার, ডঃ আকবর আলী খান এরা কেউই জীবন গেলেও জীবনের এই পর্যায়ে এসে দেশের জনগণকে ধোঁকা দিবেননা, দুর্নীতি করবেননা, লুটপাটের সহযোগী হবেননা। বরং দেশ ও জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে সরকার ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করে একুশ শতকের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। আর এদের উপস্থিতিতে ও তদারকিতে আরো যে ২০০ সাংসদ থাকবেন, প্রকাশ্যে এরকম হরিলুট করতে পারবেননা, প্রকল্পের বাড়তি ভাউচার, কিংবা টেন্ডারের কারসাজি করতে পারবেননা, অন্তত প্রকাশ্যে। গোপনে হবে, তবে দুর্নীতির মাত্রা কমে আসবে। এভাবে আস্তে আস্তে পরশ পাথরের সংস্পর্শে বাকী ২০০ সাংসদ কিছুটা করে হলেও শোধরানোর সুযোগ পেয়ে যাবেন। আর এর ফলে দাতা ও বিশ্ব বাণিজ্যে ও পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের সরকার ও প্রশাসনের একটা ভাবমূর্তি গড়ে উঠবে।

ঘ) রাজনীতিতে তরুণ নেতৃত্বের আগমনী বার্তায় এবং শুরুতেই যদি আমরা দেশের বিশিষ্ট নাগরিক ও বিশেষায়িত এই ১০০ ব্যক্তিদের সংস্পর্শে রাখতে পারি, তাহলে ঐ দুষ্ট ২০০ সাংসদ সংস্পর্শে দুই তরুণ ও সরকার প্রধান ঢালাওভাবে দুর্নীতির লেবাস বা খোলসে আবর্তিত হবার সুযোগ যেমন কমে আসবে, একই সাথে এই সব তরুণ নেতৃত্ব আমাদের দেশের জন্য এসেট হয়ে যাবে, সুন্দরের সাহচর্যে। নতুবা এখনকার যে রাজনৈতিক কালচার ও নির্বাচনী যে সংস্কৃতি তা থেকে তাদের দুর্নীতির রাহু গ্রাস থেকে মুক্ত থাকার কোন ধরনের বিন্দুমাত্রও সুযোগ নেই। রাতারাতিতো আর পুরো সিস্টেম চেঞ্জ করা যাবেনা, তবে কিছুটা হলেওতো সুন্দরের পথে এগুনো যায়, যদি থাকে সৎ ও মহৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য, দেশ ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা ও আজ হউক কাল হউক মৃত্যুর স্বাদ নিতে হবে, আজ যদি জবাবদিহি না করি, তবে কাল পরকালে গিয়ে কি জবাব দেবো ?- এই যদি হয় চিন্তা-চেতনা তবে দুই দল ও তাদের নেত্রী এবং আগামীর দুই নায়ক তারেক এবং জয় এরকম একটা কিছু ভেবে দেখতে পারেন।

এই বিষয়ে আলোচনা শেষ নয় শুরু মাত্র (০২)……

৩১শে জুলাই ২০১৩।

Please follow and like us:
Pin Share

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Follow by Email
YouTube
Pinterest
LinkedIn
Share
Instagram
error: Content is protected !!