বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে যাচ্ছে ? এক্সিট রুট নাকি সংঘাতের নাটক, নাকি জামায়াত পুনর্বাসনের মঞ্চায়ন ?
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যা বললেন-
সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ
হঠাৎ করে বাংলাদেশের চলমান রাজনীতি সংঘাতময় হয়ে উঠেছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও তার দোসর নেতা-নেত্রীরা, বিশেষকরে মধ্যম সারির নেতা-কর্মী এবং ছাত্রলীগ অধিক মাত্রায় বেপরোয়া ও উদ্যত, নেতা-কর্মীরা এতো অসহিঞ্চূ এবং মারমুখী হয়ে উঠেছে, খোদ ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকেও বিব্রত ও উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে। পত্র-পত্রিকায় নানান কলামে ছাত্রলীগের লাগাম ধরে ঠানার নানান উপদেশ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কে শুনে কার বাণী।
অপরদিকে যুদ্ধাপরাধ বিচারকে সামনে রেখে জামায়াতে ইসলামী বড় নিষ্ঠুর ও বেপরোয়া আচরণ এবং জ্বালাও-পোড়াও ও ধ্বংসের রাজনীতি শুরু করেছে। বোমা-ককটেল, বেধড়ক পুলিশের উপর গুপ্ত হামলায় ইতিমধ্যে বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অন্যদিকে পুলিশ ও জামায়াতের ও শিবিরের মিছিল-শ্লোগানের উপর এতো মারমুখী যে, তাদেরকে বলা যায় শেষ মরণ-কামড় দিয়ে রাস্তায় হিংসাত্মক রাজনীতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর এই অবস্থার প্রেক্ষিতে ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমদেরশিবির দেখা মাত্র গুলি করার নির্দেশ পরিস্থিতির আরো ভয়াবহতা ও জংলী শাসনের ইঙ্গিত বহন করে।আইনের রক্ষক হয়ে এবং দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা হয়ে এমন বেপরোয়া ও উদ্যত আদেশ প্রদান- আমাদের জংলী ও ভয়াবহ অপ-রাজনীতির তথা ৭২-৭৩-৭৪ এর সেই কালো রাজনীতির কথাই মনে করিয়ে দেয়।
স্ব-রাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীরতো সব লোক-লজ্জা ভুলে গিয়ে একেবারে আদিম বর্বর যুগের মতো পুলিশের সেই অফিসারের রাষ্ট্রপতির মেডেল প্রাপ্তিতে বিরোধীদলীয় হুইপ জয়নুল আবদীনকে নির্যাতনের পুরস্কারের কথা ফলাও করে যখন প্রকাশ করেন, তখন বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। ভাবতে অবাক লাগে, এই লোকটি স্ব-রাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো এতো গুরুত্বপূর্ণ এক দায়িত্বে কী করে আছে? এই লোকেরতো থাকার কথা প্রিজন সেলের কোন জল্লাদের পোষ্টে, কারণ জল্লাদ হতে হলে বড় নিষ্ঠুর, বড় নির্মম এবং একরোখা হতে হয়-যার সব কটা গুণই এই লোকটির মধ্যে আছে। বেশী বয়সের লোকদের মধ্যে ডিমেনশিয়া নামক এক ধরনের স্মৃতি বিলোপ রোগ হয়ে থাকে, যার কোন চিকিৎসা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি।খুব নিকট ভবিষ্যতে যে আবিষ্কৃত হবে সে সম্ভাবনাও বিজ্ঞানীরা দেখাতে পারছেননা। ম খা আলমগীর হয়তো ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত, নতুবা এমন বেলেল্লাপনা বক্তব্য কিছুতেই কোন সভ্য-সচেতন লোক করতে পারেননা।
০২) প্রতিথযশা সাংবাদিক এ বি এম মুসা ভাই একজন স্ব-নাম খ্যাত সাংবাদিক ব্যক্তিত্ব, সন্দেহ নাই। বলা যায় এই বয়সে তিনি আমাদের জাতির বিবেক। কিন্তু মাঝে-মধ্যে এই বিবেক যেন কোথায় খেই হারিয়ে ফেলেন। বঙ্গবন্ধু মুজিবকে নিয়ে উদাহরণ হিসেবে তৎকালীন সময়ের ব্যাখ্যায়ও তৃতীয় স্থান কিংবা তৃতীয় সারি বলাটা কতোটুকু সঙ্গত, পাঠক মাত্রই তা ভালোভাবে বিবেচনা করেছেন।কিন্তু তাই বলে মোহাম্মদ হানিফ কিংবা মোহাম্মদ নাসিমের মতো রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকে মুসা ভাইকে নিয়ে অশালীন, উন্মাদমূলক বক্তব্য কিছুতেই শোভা পায়নি। একজনকে কুকুর কামড় দিয়েছে বলে, আরেকজনকেও কুকুরে কেন কামড়ালোনা সেই ধরনের বিতর্ক বা কর্মকাণ্ডকে উৎসাহিত করা কোন ভালো লোকের কাজ নয়। আর দেশ যারা চালাবে, তাদের দায়-দায়িত্ব আরো বেশী, এবং কথা-বার্তায় সংযত ও রুচিশীল দৃষ্টান্ত দেশ ও জাতির কাছে রাখা উচিৎ। ক্ষমতার প্রাদ-প্রদীপে থেকে প্রতিনিয়ত যদি অশালীন আর নীতিহীন বাক্য আওড়ানো হয়, তাহলে জাতি এইসব রাজনীতিবিদদের কাছ থেকে নেতিবাচক সিগন্যালই পেয়ে থাকে, যা সুন্দর সমাজ নির্মাণের সহায়ক নয়।
০৩) রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় আরোহণের জন্যই রাজনীতি করে থাকে, কৌশল নির্ধারণ করে, আন্দোলন-সংগ্রাম পরিচালনা করে থাকে, জোট বদ্ধ হয়ে থাকে-এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে ক্ষমতায় আরোহণের জন্য বিদেশীদের কাছে নির্লজ্জভাবে নিজের জাত-মান-কুল সব বিসর্জন দিয়ে নালিশ ও সাহায্যের আবেদন, কিছুতেই কাম্য নয়, জাতির জন্য মঙ্গলজনকও নয়। দুঃখের সাথে লক্ষণীয় যে ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতার বাইরে বাংলাদেশের সব কটা রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা এই প্রতিযোগীতাই এমনভাবে লিপ্ত, যেন কে কাকে পাল্লা মেরে পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবে, নালিশ আর ধর্নার ক্ষেত্রে-সেই প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। ফলে এখানে যেমন সৎ, জনদরদী, সাচ্ছা-দেশ-প্রেমিক রাজনৈতিক নেতার জন্ম হচ্ছেনা, একইভাবে জনকল্যাণমুখী প্রশাসন ও এর গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে উঠছেনা। আমাদের রাষ্ট্রদূত আর ডোনার এজেন্সির রতি-মহারতিরা রাজনৈতিক ময়দানে এমন শোর-গোল পাকিয়ে উপদেশ দিয়ে প্রতিনিয়ত চলেছেন, যা দেখে মনে হয়, নির্ধারিত কূটনৈতিক দায়িত্ব ও কূটনৈতিক দূতিয়ালির বাইরে সরকার পরিবর্তন কিভাবে হবে, আগামীতে কে কখন কিভাবে ক্ষমতায় আসবে-সেটাই তাদের প্রধান দায়িত্ব ও এজেন্ডা। আর আমাদের জাতীয় নামক নেতা-নেতৃত্বও সেই সব নসিহত আর ফটো-সেশনে এতো ধন্য যে, পরজনমে হইও রাধা…গানের সার্থক রুপায়নের বাস্তব প্রতিফলনে সদাব্যস্ত। এমনও নেতা রয়েছেন, কংগ্রেস ম্যান ঢাকায় সময় দিতে পারেননি, মার্কিন মুল্লুকে গিয়ে তার সাথে সাক্ষাত করে সেই না দেখার কথা এমন করে বলেন, খোদ মার্কিনীরাও তাতে ভীমড়ী খেয়ে যায়। আর দুই দুই বারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বেগম জিয়া সম্প্রতি মার্কিন পত্রিকায় সে লেখা লিখে মার্কিনীদের সহানুভূতি কামনায় নয়, হস্তক্ষেপের আহবান জানালেন, তা কি একজন দেশপ্রেমিক রাজনীতিকের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দায়িত্বশীল নেতৃত্বের লক্ষণ। জানিনা, বেগম জিয়ার কাঁধে কোন ষড়যন্ত্রকারী ভর করে বেগম জিয়াকে বিভ্রান্ত করে চলেছে। কারণ বাঙালি জাতীয়তাবাদের আন্দোলনের জনতার অজস্র প্রাণের শত সহস্র-অযুত আশার আলো যে বেগম জিয়া বাঙালি জনগণকে ইতিপূর্বে দেখিয়েছিলেন, তা মূলত তার ঐ নিবন্ধের মার্কিনীদের প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ আহবানের মধ্য দিয়ে ম্লান ও বড় আকারের প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে, যা আগামী দিনের রাজনীতি বিজ্ঞানের অজস্র ছাত্র-ছাত্রীদের এবং একইসাথে জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বের একচ্ছত্র আসন থেকে তাকে অনেক দূরে ঠেলে দিয়েছে।বাংলাদেশকে এবং বাঙালি জাতির উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা যারা চায়না, তারাই বেগম জিয়াকে বে-পথে নিয়ে গিয়ে ষোল-কলা পূর্ণ করেছে।
বাংলাদেশের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে ষড়যন্ত্রকারীরা এমন মোক্ষম অস্র ক্ষমতাসীনদের মুখের উপর ছুড়ে দিয়েছে, যা মূলত আগামী দিনের গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের অব্যাহত গতি ধারাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করবে-তাতে কোন সন্দেহ নাই। বিএনপি এমনিতেই জামায়াত ও বিগত চার-দলীয় জোট সরকারের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে দিশেহারা ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিকদের কাছে চাপের মধ্যে ছিলো, তাদের এই চাপকে ঝড়ের মাত্রায় বাড়িয়ে দিলো বেগম জিয়ার এই বিদেশীদের প্রতি আহবান,যা বেগম জিয়ার সততাকেও করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। আর সরকারের জন্য হয়েছে মোক্ষম সময়ের মোক্ষম অস্র। আওয়ামীলীগ যেন-তেন ভাবে মোক্ষম একটা অস্র খুজতেছিলো। আওয়ামীলীগ নিজেও জানে, তাদের এতো ব্যর্থতা আর সীমাহীন লুট-পাট আর অশ্লীলতার কারণে দ্বিতীয় টার্মে জিতে আশা শুধু কঠিনই নয়, বলা যায় অসম্ভব। অনেক আসনে আওয়ামীলীগ সাংসদেরা জামানতও হারাবেন-সন্দেহ নেই।
০৪) একের পর এক কেলেঙ্কারির তালিকায় সবচাইতে বড় ও দীর্ঘ যে তালিকা তার নাম পদ্মা সেতু প্রকল্পে থেকে বিশ্বব্যাংকের মুখ ফিরিয়ে নেয়া।বিরোধীদলও তাদের নীতি হীনতার কারণে না পারছে এতো সব ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুলতে। আর যুদ্ধাপরাধী বিচার ইস্যুতে জামায়াতের সন্ত্রাসী ও জঙ্গী রূপ ধারণ জনগণকে জামায়াতের একাত্তর কালীন সময়ের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সরকার জামায়াতকে নিয়ে দ্বি-মুখী নীতি খেলে চলছে। কখনো হার্ড লাইন, কখনো নরম, কখনো একটু নরম, একটু গরম এমন জামাই-শ্বশুর-বউ-ভাসুর খেলা কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়।সরকারের কর্মকাণ্ডে মনে হয় সব কিছুতে সরকারের কন্ট্রোল ও সমন্বয়ের বড় অভাব রয়েছে। সরকারের ভিতরকার এজেন্ট যেন সরকারের জন্য এক্সিট রুট খোজার তালে ব্যস্ত-অবস্থার প্রেক্ষিতে তাই মনে হয়। সাধারণত: জনবিরোধী কোন সরকার যখন টাল-মাটাল হয়ে পড়ে তখন নিজেরাই অবস্থার সওয়ার হয়ে এক্সিট রুট খোজতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে, তার পূর্বাভাস সরকার অত্যন্ত অশালীন ও অশ্লীল ভাষায় বিরোধীদের সমালোচনা করে চলে, দমন-পীড়নের মাত্রায় নরম-গরম সিগন্যাল দিয়ে ভারসাম্যের পারদে আগুন-ঘি সমান তালে এপ্লাই করে চলে। নতুবা দেশের ৮০% জনগণের সমর্থন যখন যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষে, তখন জামায়াতের কট্টর ভূমিকায় সরকার ভয় পায় কেন? আসলে সরকার এটাকে নিজেদের এক্সিট রুটের খেলায় মেতে আছে।জাতির জন্য যা অত্যন্ত ভয়াবহ।
০৫) জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কিনা কিংবা জেনারেল বেগ যুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানকে কি লিখেছিলো-হঠাৎ করে কোন প্রকারের রেফারেন্স ছাড়া চিরকুটের কপি প্রকাশ করে এর পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক তৈরি করা জাতির জন্য কিছুতেই শুভ লক্ষণ নয়।আজকে কেউ এই রকম রেফারেন্স বিহীন বার্তা প্রকাশ করে বাহবা নিতে পারেন, কাল যখন আরেকজন এই রকম রেফারেন্স বিহীন ক্ষুদে বার্তা প্রকাশ করে আরেক মহানায়ককে প্রশ্নবিদ্ধ করবে, হতে পারে তা কোন বড় মনীষীর নাম দিয়ে লেখা-যেমন, ডঃ এমাজ উদ্দিন কিংবা ডঃ মনীরুজ্জামান মিয়ার লেখা, এই রকম যদি করেন, তখন জাতি হিসেবে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো-কেউ কি ভেবে দেখেছেন ? মাত্র কিছুদিন আগে একজন স্কাইপ হ্যাকিং করে সংবাদ পত্রে প্রকাশ করার রেশ যেতে না যেতেই আরেকজন বিচারাধীন আসামীর টেইপ হ্যাকিং প্রকাশ করে হৈ চৈ বাধিয়ে দিয়েছিলেন। আর্কিমিডিসের গতির সূত্র সকল ক্ষেত্রেই সমানভাবে কাজ করে, ডিলটি মারলে পাটকেল খেতে হয়- একথাটা আমরা বেমালুম ভুলে যাই।
আমাদের এখানে যত অসঙ্গতি ও যত নোংরা খেলা হয়, বিশ্বের আর কোথাও তার জাতীয় নেতৃত্ব নিয়ে কেউ এমন করে নোংরামি করেনা বা করার হীন চেষ্টা করেনা। ব্যতিক্রম আমাদের এখানেই কেবল- সকল ক্ষেত্রেই মৃতদের মাটির নীচ থেকে ধরিত্রীর উপরে টেনে নিয়ে আসি, নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য। পৃথিবীর আর কোথাও লাশের রাজনীতি হয়না, হয় আমাদের এখানে। অথচ, আমরা প্রত্যেকেই জানি এই সব লাশ-পচা, দূর্ঘন্ধযুক্ত, বস্তা-পচা মরা লাশ কেবল দূর্ঘন্ধই ছড়ায়।কোন ক্রিয়া করেনা, জন্ম দেয় কেবল হানাহানি, সংঘাত, আর দুর্নীতি আর দূর্বৃত্তায়নের।
বাংলাদেশের চলমান এই রাজনীতির সংঘাতময় অবস্থা নিয়ে কথা বলেছেন দৈনিক আমাদের সময়ের সম্পাদক, সাবেক ছাত্রনেতা নাইমুল ইসলাম খান এবং প্রথিত যশা সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, বুদ্ধিজীবী মাহফুজ উল্লাহ। এছাড়াও তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সাবেক কেবিনেট সচিব ডঃ আকবর আলী ও ব্রিটেনের গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডঃ শফিক আহমেদ।
নাইমুল ইসলাম খান আমাদের সময় ছাড়াও দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক। এক সময় ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের পুরোভাগে। এখন পুরোদস্তর একজন সম্পাদক-সাংবাদিক।বাংলাদেশের রাজনীতি-অর্থনীতিকে অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন নাইমুল ইসলাম। গতানুগতিক সমালোচনার বিপরীতে অত্যন্ত যুক্তি ও প্রাঞ্জল ভাবে, একইসাথে অত্যন্ত পজিটিভ ভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডকে তিনি এমন সুন্দরভাবে উপস্থাপন করে থাকেন, যা তার সমালোচনাকে আত্মস্থ করতে অনেকেই ভুল বুঝে থাকেন, তারপরেও তিনি তার যুক্তিতে অটুট থেকে বক্তব্যের গভীরে পাঠককে নিয়ে গিয়ে বলা যায় বাস্তব অবস্থাকে আগামীর সাথে মিলিয়ে বাস্তবতার নিরিখে সুন্দর আলোকপাত করার ক্ষেত্রে নাইমুল ইসলামের ঝুড়ি মেলা ভার। চ্যানেল এস-এর সাথে এক আলোচনায় নাইমুল ইসলাম বলেন, ১৮ দলীয় জোটে জামায়াত হলেও বিএনপি এখন আর মনে প্রাণে জামায়াতকে চাচ্ছেনা, একইভাবে জামায়াতও বিএনপির উপর আর আগের মতো তাদের ভরসা রাখতে পারছেনা। যুদ্ধাপরাধ বিচারে নিজেদের শীর্ষ নেতৃত্বের জড়িত থাকার কারণে দলটি নিজেদের অবস্থান টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে বিরাট অগ্নি-পরীক্ষায়। এই অবস্থায় তারা কঠোর অবস্থানে চলে যেতে হয়েছে। তবে এই কঠোর অবস্থা তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে খুব একটা ইতিবাচক ফল বয়ে আনবেনা, বরং দলটি তাদের কঠোর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে জনতার কাছ থেকে দূরে চলে যাবে। নাইমুল ইসলাম আরো বলেন, জাতীয় পার্টিকে ঠেকায় পড়ে আওয়ামীলীগ যেমন কাছে টেনে নিচ্ছে, বিএনপিও তাই করতে প্রস্তুত। অথচ জাতীয় পার্টি নিজেও কিন্তু তাদেরকে টানার এই ঠেকার দায় সম্পর্কে অবহিত।সে কিন্তু আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির কাউকে পছন্দ করেনা। তারপরেও এদের সাথে জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচন করে বা আছে। আর জামায়াত এখন ভালোভাবে জেনে গেছে তার দায়ভার বিএনপি নিবেনা। অথচ বিএনপি জামায়াতের সাথে গাটবাধার কারণে নতুন প্রজন্ম বিএনপির উপর থেকে আস্থার অভাব ফিল করে-দেরীতেও হলেও বিএনপি নেতৃত্ব এ কথাটি বুঝতে পেরেছে, কিন্তু তাদের অবস্থা এখন এমন হয়েছে শ্যাম রাখি না কুল রাখি। নাইমুল ইসলাম আরো বলেন ক্ষমতাসীন সরকারের কোন কোন নেতা ও মন্ত্রীর আচরণ অগণতান্ত্রিক এবং এতো ঔদ্ধত্য আচরণও গণতান্ত্রিক সরকারের রীতিনীতির সাথে কিছুতেই সামঞ্জস্য পূর্ণ নয়, অবিলম্বে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
প্রখ্যাত সাংবাদিক, লেখক,গবেষক মাহফুজ উল্লাহ বলেন, জামায়াতের প্রতি আওয়ামীলীগের কঠোর থেকে হঠাৎ কোমল মনোভাবের দুটো কারণ থাকতে পারে। প্রথমত: আওয়ামীলীগ তাদের কাছে একটা সিগন্যাল পাঠালো তোমরা যদি নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় মিছিল মিটিং করো, তাতে সহযোগিতা করা হবে। দ্বিতীয়ত: বাজারে গুজব আছে, যুদ্ধাপরাধের বিচারের পাশাপাশি আওয়ামীলীগ জামায়াতের সাথে সমঝোতায় আসতে চাচ্ছে-আগামী নির্বাচনের প্রাক্কালে।জামায়াতের প্রতি নরম মনোভাব আগামীর সমঝোতার পথ খোলে দেয়ার সিগন্যাল মাত্র।
সাবেক কেবিনেট সচিব ডঃ আকবর আলী খান ক্রমবর্ধমান সংঘাত বৃদ্ধিতে খুব একটা আশার আলো দেখতে পান না। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকে আরো সমঝোতার মনোভাব নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের পরামর্শ দেন। ডঃ আকবর আলী বলেন, বাইরের প্রেসক্রিপশনে এই সমস্যা সমাধান হবেনা। পদ্মা সেতু বিশ্বব্যাংকের বদলে নিজেদের উদ্যোগে করার ক্ষেত্রে অন্যান্য উৎসের অর্থ কাট-ছাট না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, নিজেদের উদ্যোগে পদ্মা সেতু এর কারিগরি মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে, নিরাপত্তা ঝুঁকিও রয়ে যাবে। তাছাড়া এর টেন্ডার প্রক্রিয়ায়ও স্বচ্ছতা বজায় থাকবেনা।
রাষ্ট্র ও রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন, এমন অধ্যাপক ডঃ শফিক বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর উচিৎ নিজেদের মধ্যে ব্যাপক মতামত, আলাপ-আলোচনা ও ইন্টার একশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমস্যা সমূহের সমাধানের পথে ঐকমত্যে পৌঁছানো।কোন বিদেশী সাহায্যে নয়, বরং বিদেশীদের লজিস্টিক এক্সপার্ট সাহায্য নেয়া যেতে পারে, কিন্তু মূল পার্ট নিতে হবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল এবং জনগণকেই।
সর্বশেষ, অবশেষে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল আব্দুল কাদের মোল্লার রায় ঘোষণা করেছেন। মোল্লার বিরুদ্ধে আনীত ৬টি অভিযোগের মধ্যে ৫টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়াতে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেছেন।
আদালতের রায় নিয়ে কিছু বলতে চাইনা।
তবে রায় ঘোষণার পর থেকে সারা বাংলাদেশ ফুসে উঠেছে।মোল্লার রায় জাতির আশা-আকাংখাকে ধূলিসাৎ করেছে। নতুন প্রজন্ম বিস্ময়ে হতবাক। বাংলাদেশ গর্জে উঠেছে, ভাষার মাসে দেশ ও জাতি আরেকবার গর্জে উঠে জানান দিলো, বাংলাদেশ কোন যুদ্ধাপরাধীদের স্থান নেই। তারপরেও কথা থেকে যায়, ডঃ মাহফুজ উল্লাহ যেমন বলেছেন সরকার জামায়াতের সাথে আপোষের সিগন্যাল দিয়ে দিয়েছে। সিলেটের শিবির-জামায়াতের মিছিলে শিবির-পুলিশের ফুল বিনিময়ে সারা জাতি দেখেছে সেই সিগন্যালের বাস্তব প্রমাণ-যা মোল্লার রায়ের মাধ্যমে সরকার জামায়াতকে জানান দিয়ে দিয়েছে।
৮৬-র নাটক আবারো রাজনীতির মঞ্চে-
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যাই বলুন না কেন, রাজনীতিতে হঠাৎ হঠাৎ এমন নাটকীয় ঘটনা, পট-পরিবর্তন হয়, যা সব সময় সমীকরণ ও ছক বেধে আগায়না। এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে ইস্পাত কঠিণ ছাত্র-জনতার ঐক্যের পীঠে এবং বিএনপির নেতৃত্বাধীন ৭ দলীয় জোটকে ঘুমের মধ্যে রেখে এরশাদের সাথে গোপণ আঁতাতের মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে ছুরিকাঘাত করে কাড়ি-কাড়ি ক্যাশ টাকার বস্তা ব্যাংকে জমা নিয়ে আজকের আওয়ামীলীগ, জামায়াতে ইসলামীকে সাথে নিয়ে নির্বাচন করেছিলো। বিএনপির খালেদা জিয়ার প্রধানমন্ত্রীত্বের সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ সেদিন বিচারপতি বদরুল হায়দারের অনুকূলে সমর্থন লাভে গোলাম আযম-এর সাথে সমঝোতা করেছিলো, এমনকি আজকের তথ্য মন্ত্রী সময়ে সময়ের সরকারের ইশারায় নানা মুখ-রোচক বক্তব্য দিয়ে সরব এই হাসানুল হক ইনু গোলাম আযমের সাথে নত-জানু হয়ে সাক্ষাতের দৃষ্ঠান্ত রয়েছে। শুধু কি তাই, শহীদ জননী জাহানারা ইমাম যখন গণ-আদালতের মাধ্যমে গোলাম আযমের ফাসীর যুগান্তকারি গণ-রায় ঘোষণা করেন, সেই সময়, এই দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দল অজানা এক সম-ঝোতার প্রেক্ষিতে এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর চাপে( যে একই চাপে কাদের মোল্লার রায় যাবজ্জীবন করা হয়, জামায়াতের সাথে পর্দার আড়ালে সমঝোতা সম্পন্ন হয়)আদালতের মাধ্যমে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব দিয়ে আইনী বৈধতা দেয়ার সকল কাজ এরাই সম্পন্ন করেছিলো।
আজকের এই বাংলাদেশে পর্দার আড়ালে সেই একই লবীর সহায়তায়, একই কাড়ি-কাড়ি টাকা, আর নির্বাচনী লাভ-লোকসানের হিসেব-নিকেশ থেকেই হাজারো-লাখো-কোটি বাঙালির প্রাণের দাবীর সাথে বিশ্বাস-ঘাতকতা আর হটকারিতার আরো এক নাটক মঞ্চস্থ করার সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়ে গেছে, যা এখন শুধু নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর আলো দেখার বাকী। ক্ষমতাসীনদের দ্বিতীয় ও মধ্যম সারি আর জোটের নেতাদের অন্ধকারে রেখে শুধুমাত্র হাত- কমান্ডের প্রত্যক্ষ মদদেই বাংলার মাটিতে আরেকবার ঘষেটি বেগম আরমীর্জাফরদের নাটক মঞ্চস্থ করার সার্থক এক মহড়া হতে চলেছে, যার কিছুটা হলে বাঙালি দেখেছে গতকালের মোল্লার রায়ে, আর পুলিশের ফুলেল শুভেচ্ছায় জামায়াত-শিবিরের মিছিলের দৃশ্য।
মামলা-ঝট-আর নিজেদের অন্তর্কোলহ আর জোটের মধ্যে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের চিড় ধরিয়ে ক্ষমতাসীনদের হাই-কমান্ড বিরোধী দল বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে জামায়াত-শিবির জোট এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক লবী ( সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী লবী, এখনো রাস্তায় যে জোটের ঐক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা নির্বাচন ঘনিয়ে আসার প্রেক্ষিতে আপনা-আপনি চিড় ধরে যাবে) থেকে অনেকটা দূরত্বে নিয়ে এসে বেশ ভালো অবস্থানেই আছে মনে হচ্ছে।
কাদের মোল্লার রায়ে বাঙালি যতটা না হতাশ, ততোটাই খুশী ব্রিটেন সহ ইউরোপের জামায়াত লবী ও তাদের দোসর ও নানা নামের সংগঠণগুলো। আযাদের রায়ের পর থেকে তারা যেমন বিক্ষুব্ধ এবং সরকারের বিরুদ্ধে মার-মুখী ছিলো, মোল্লার রায়ে তারা যেন আবার সরকারের সেই সমঝোতার সিগন্যালে আশার আলো খুজে পেলো।
সরকারের হঠাৎ এই সমঝোতায় জামায়াতের অন্ধর মহলে বেশ বাধানুবাধ হয়ে যায়। যার ইঙ্গিত মেলে ব্রিটেনের জামায়াতের পেট্রন ও প্রধান প্রধান ফান্ড রেইজার ও ডোনারদের মধ্য থেকেও। আওয়ামীলীগের সমঝোতায় তারা আস্তা রাখতে না পারলেও ৮৬-৯১-র সেই সমঝোতার ফলের দিকে জামায়াত ও তাদের ডোনাররা এবং মুরুব্বীরা যখন চোখ ফিরিয়ে দেখে, তখন আওয়ামীলীগ হাই-কমান্ডকে তাদের খুব একটা অবিশ্বাসের মনে হয়না, যতটা না তাদের অতি নিকটবর্তী ও ফায়দা লাভ-কারী দল বিএনপিকে মনে হওয়ার কথা, অথচ জামায়াতের কাছে বাস্তবে পরিস্কার তাদের স্বাধীনতা পরবর্তী এই কঠিণ দুঃসময়ে বিএনপিকে যেমন করে কাছে পাওয়ার আশা করেছিলো, ভোটের রাজনীতির বাইরের হিসেব ছাড়া বিএনপিকে তারা তেমন করে তাদের সঙ্গী হিসেবে পায়নি। আর প্রভাবশালী দেশ হিসেবে ভারতের সাম্প্রদায়িক বিষ-বাস্পের রাজনীতির নিয়ামক শক্তি(কংগ্রেস ছাড়া এবং কংগ্রেসের বাইরের অংশ সহ)সমূহ, মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ সমূহ, খোদ মার্কিন মুল্লুক, এমনিক গণ-তন্ত্রের সূতিকাগার হিসেবে খ্যাত ব্রিটেনের নীতি-নির্ধারনী মহলের কাছে জামায়াতের বৈদেশিক লিয়াজো আর পৃষ্টপোষকেরা আর একই সাথে মার্কিন মুল্লুকের প্রফেশনাল শত-কোটি ডলারের লবীষ্টরা লবীং করে আশ্বস্থতায় নিয়ে এসে মুরুব্বীদের কাছে জামায়াতকে অনেকটাই বাংলাদেশের বিরাজমান বাস্তবতায় গণ-তন্ত্রের সহায়ক শক্তি হিসেবে দাড় করানো এবং তা মেনে নিতে ক্রমাগত লবী সরকারের উপর চাপ প্রয়োগে যে অনেকটাই সফলতার সাথে সক্ষম হয়ে গেছে, তাতো আজ অনেকটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। দিগন্ত টেলিভিশনের কর্ণধার কাশেমের আন্তর্জাতিক পাচার করা মুদ্রা আর পেট্রো-ডলার অনেকের পকেটে নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌছে গেছে-তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। আযাদের রায় সময়কালিন সময়ে মার্কিন এম্বাসাডার মজীনার জামায়াত নেতাদের সাথেঘরোয়া সাক্ষাত ও অফিসিয়ালি সাক্ষাতের পর প্রকাশ্য বিবৃতি বাংলাদেশের রাজনীতির গতি-পথ আজকের কেন্দ্রে নিয়ে এসে নতুন এক মাত্রায় পর্যবসিত করেছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই। সন্দেহ কেবল একটাই মুরুব্বী আর পৃষ্ট-পোষকদের সহায়তা নিয়ে তথাকথিত সমঝোতা বাংলাদেশের হাজারো-লাখো-কোটি তরুণ ভোটার কিভাবে নেয় –সেটাই এখন দেখার বিষয়। আর সেটা দেখতে হলে আমাদেরকে ভোট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
তারপরেও কথা থেকে যায়। বাংলাদেশ এখন নাটকের পর নাটক আর আপোষের পর আপোষ চলছে– প্রখ্যাত লেখক, গবেষক, রাজনীতি বিশ্লেষক, অধ্যাপক ডঃ আলী রিয়াজের ফেইস বুক ষ্ট্যাটাস থেকে ধার করা এই উক্তি। আসলে একের পর এক নাটক চলছে, জামায়াতের মারমুখী আচরণ, পুলিশের উপর আক্রমণ আর পুলিশের নীরবতা এবং প্রতি-আক্রমণ, তরীকুলের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াতের দায়-ভার বিএনপি-র নিতে অস্বীকৃতি এবং যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল ভাঙ্গার বিপক্ষে অবস্থান, ফখরুলের একের পর এক জামিন না-মঞ্জুর, আবার হঠাৎ করে জামিন মঞ্জুর, তথ্যমন্ত্রীর আন্দোলনে শরীক, এরশাদের অস্বস্থি প্রকাশ আবার একক নির্বাচনের ঘোষণা, নারীদের উপর আক্রমণের মহোৎসব, একের পর এক লুট-পাটের পর এখন আবার নাটকের পর নাটক- সবই যেন একই সূত্রে গাঁথা । আরো যে কতো নাটক বাংলাদেশের রাজনীতির রঙ্গ-মঞ্চে মঞ্চস্থ হবে- সময়ই তা বলে দেবে।
5th February 2013,UK.