গ্রেটার লন্ডন থেকেঃ জাতি সংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধির দায়িত্ব পালন সফলভাবে সম্পন্ন করে দেশে যাওয়ার পথে লন্ডনে যাত্রা বিরতিতে ডঃ এ কে আবদুল মোমেনকে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলে “শান্তির সফল এক কূটনীতিকের আন্তর্জাতিক” স্বীকৃতি হিসেবে সম্বর্ধনা প্রদান করা হয়। টাওয়ার হ্যামলেটস বারার স্পীকার পার্লারে স্পীকার আবদুল মুকিত চুনু এমবিই এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্বর্ধনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস বারার নতুনের জয়গানের আরো এক নায়ক আজমল হোসেন ও লেবার দলীয় কাউন্সিলর খালিস উদ্দিন।
সম্বর্ধনার জবাবে ডঃ মোমেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সকল সদস্য, কাউন্সিলর বৃন্দ, উপস্থিত নেতৃবৃন্দ, এবং স্পীকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তাকে এভাবে সম্মানিত করার জন্য।
ডঃ মোমেন বিগত সাত বছরের বর্তমান সরকারের নানা সফলতা, সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা ও অবতৈনিক শিক্ষার উন্নয়ন, কৃষি ও খাদ্যে বাংলাদেশের অভাবনীয় সফলতার নানা চিত্র তুলে ধরে বলেন,আমাদের এতো সব অর্জন সব ভেস্তে যাবে, যদি না ব্রিটেন সহ উন্নত বিশ্ব বাংলাদেশ সহ ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলো যারা জলবায়ূর বিরূপ প্রভাবের মধ্যে আছে, সেই ক্ষেত্রে সজাগ ও সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করা না হয়। তিনি এব্যাপারে নানা তথ্য ও জাতি সংঘের বিভিন্ন ফোরামের আলোচনার সারনই তুলে ধরে বলেন, জলবায়ূর প্রভাবে আমরা যদি অল্প পরিমানেও এফেক্টেডের মধ্যে পড়ি তাহলে কি হবে- সেই বিষোয়গুলো তুলে বলেন, এক্ষেত্রে ব্রিটেন এবং কমিউনিটি, শিক্ষক, সাংবাদিক, মিডিয়া, এনজিও, সচেতন সকলেরই সমানভাবে এগিয়ে আসতে হবে, নানা সেমিনার, ওয়ার্কসপ, প্রদর্শনী, ডিকুম্যান্টারী, লিয়াজো মেইন্টেইন ইত্যাদির মাধ্যমে এওয়ারনেস জাগ্রত করতে হবে। উন্নত বিশ্বকে বুঝতে ও বুঝাতে হবে- তোমাদের কারনে আমরা কি পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি। সুতরাং জেগে ঘুমালে চলবেনা।আজকে আমরা এফেক্টেড হচ্ছি, কাল তোমরা হবে। সেকারনেও তিনি স্পীকার সহ কাউন্সিলরদের দৃষ্ঠি আকর্ষন করেন।
অর্থনীতির খ্যাতিমান সাবেক অধ্যাপক, ঝানু সফল ডিপ্লোম্যাট ডঃ মোমেন আরো বলেন, সন্ত্রাস আজ একার সমস্যা নয়। আজকে প্যারিসে হয়েছে- সবাই সোচ্চার হচ্ছ। বাংলাদেশেও কম বেশী সন্ত্রাস করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তা প্রশমনে না গিয়ে, যেমন প্যারিসে গিয়েছ, বরং বাংলাদেশে তোমরা এলার্ট জারি করলে- সেটা যুক্তি সঙ্গত হয়নি। তিনি প্রশ্ন রাখেন ব্রিটেনের কাছে- কৈ তোমরা ব্রিটেন প্যারিসের ব্যাপারে এলার্ট জারি করনি।আমেরিকাতে প্রতিদিন ৩৩ জন বিনা বিচারে নিহত হয়- কৈ আমেরিকার জন্য এলার্ট জারি করোনি। আমরা যেখানে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি- এবং তোমরা আমাদের পদক্ষেপও দেখছ, বিশ্ব অভজার্ভও করছে।আমাদের আইন শৃংখলা বাহিনী যেখানে জঙ্গি সন্ত্রাসীর ছিটে ফোটা পাচ্ছে সেখানে হানা দিচ্ছে।ব্রিটেনের বুকে থেকে আমারদেশে সন্ত্রাস ও ফাইন্যান্স করা হচ্ছে- আমরা আহবান জানিয়েছি, তোমরা তাদেরকেও ধরো- অনুসন্ধান করো, আমাদেরকেও এ ব্যাপারে সহযোগিতা করো, যাতে ব্রিটেন থেকে আমার দেশে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও ফাইন্যান্স করতে না পারে। তোমরা এসব একটু দেখ।আমরা চাই জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে একযোগে কাজ করতে স্বচ্ছতার সাথে।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, যুবলীগ নেতা জামাল আহমদ খান সহ আরো অনেকে।তারা সিলেটের উন্নয়নে ডঃ মোমেনের মতো অভিজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান ব্যক্তিত্বের অগ্রনি ভুমিকা পালনের আহবান জানান।অনুষ্ঠানে বিশেষ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মিসেস সেলিনা মোমেন।এ সময় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বেতার বাংলার বার্তা সম্পাদক সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামীলীগ সহ প্রবাসী নেতৃবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তব্যে স্পীকার আব্দুল মুকিত চুনু এমবিই বলেন, আমাদের সৌভাগ্য, খ্যাতিমান একজন বাংলাদেশী, যিনি বিগত সাত বছরে বাংলাদেশের জন্য তার দক্ষতা প সফল কূটনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য অনেক অর্জন এনেছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পীকার হিসেবে আমি এই খ্যাতিমান এবং বিশ্বব্যাপী আলোচিত এই ডিপ্লোম্যাটকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি।
সব শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে টাওয়ার হ্যামলেটস কমিটি হলে স্পীকার ডঃ মোমেনের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন।