ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে সেক্স কালচার ভয়াবহঃসাজিদ জাভিদের ক্র্যাক ডাউন
সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ- লন্ডন থেকে: ব্রিটেনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেভাবে ছাত্রীদের অপদস্থ, হেনস্তা আর সেক্সুয়ালি এসল্ট করা হচ্ছে, তা এখন সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। প্রতি ৭ জনের ১ জন ছাত্রী কোন না কোনভাবে ছাত্রদের দ্বারা, বিশেষতঃ যখন নতুন সেশনে (সেপ্টেম্বরে) ছাত্রীরা ডিগ্রির জন্য ভর্তি হন, তখন বেশী পরিমাণে সেক্সুয়ালি এসল্টের শিকার হন সহপাঠী বা সিনিয়র ছাত্রদের দ্বারা। অনেক সময় ছাত্ররা অতিরিক্ত মদ্যপান করে ছাত্রীদের উত্যক্ত এবং শারিরীকভাবে নিগৃহীত করেন। কিছুদিন আগে একজন ছাত্রী ধর্ষিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করলে বিষয়টি সকলের নজরে আসে, যখন সেই ছাত্রীটি প্রায় আত্মহত্যা করতে যাচ্ছিলো অপমান থেকে বাচার জন্যে, সে জুনিয়র ছাত্রের দ্বারা ধর্ষিত হয়েছিলো। আজ এক তথ্য বিবিরনীতে জানা যায় অলমোস্ট দুই-তৃতীয়াংশ ছাত্রীরা ছাত্রদের দ্বারা ধর্ষন, সেক্সুয়ালি এসল্ট, সরাসরি কিংবা ভারবালি এসল্টের শিকার হন।বিশ্ববিদ্যালয় সমূহ এই সব ঘটনা যে অবগত নন, এমন নয়, বরং ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের রেপুটেশনের কথা চিন্তা করে ছাত্রীদের নিগৃহীতের বা সেক্সুয়ালি এসল্টের ঘটনাগুলো চেপে যান বা প্রকাশ হতে দেননা, কখনো কখনো পুলিশকেও নিদেন পক্ষে তারা অবগত করতে চাননা।
বিজনেস সেক্রেটারি সাজিদ জাভিদ এহেন অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভাইস-চ্যান্সেলরদের এক চিঠিতে এ ব্যাপারে তড়িৎ পদক্ষেপ নিতে এবং কোড-অব প্র্যাক্টিস প্রণয়ন, বাস্তবায়নের সাথে এর দ্বারা এই ঘটনাগুলোর তদন্ত ও ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
(বিজনেস সেক্রেটারি সাজিদ জাভিদ)
সানডে টাইমসের ইন্টারভিউতে সাজিদ জাভিদ এ ব্যাপারে ইনকোয়ারির নির্দেশের কথা সেই সাথে এই ল্যাড-কালচারের বিরুদ্ধে ক্র্যাক ডাউনের কথা বলেছেন। সাজিদ জাভিদের এই বক্তব্য গার্ডিয়ান, টেলিগ্রাফ, মেইল, ইন্ডিপেন্ডেন্ট সহ মূলধারার সন কটা মিডিয়ায় গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করেছে।
সানডে টাইমস শিরোনাম করেছে- সেক্সিস্ট লাড কালচার এত ইউনিভার্সিটি, প্রায় একই শিরোনাম একটু ঘুরিয়ে অন্যান্য মিডিয়া করলেও টেলিগ্রাফ সরাসরি ইনকোয়ারি নির্দেশের কথা হাইলাইট করে নিউজ করেছে।
সাজিদ জাভিদ বলেছেন, আমার নিজেরও তিন মেয়ে। এক মেয়ে এ বছর এ- লেভেল করছে। আমি এমন পরিস্থিতি চাইনা, আমার মেয়েরা ভয় পাক ইউনিভার্সিটিতে যেতে এই সেক্সিস্ট ল্যাড কালচারের ভয়ে।পাশ করার পর আমার মেয়ে বাসায় বসে শুধু টিভি দেখবে আর নতুন জীবনের জন্য জ্ঞান আহরনের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে হেনস্থা হওয়ার ভয়ে যাবেনা- এমন হতে পারেনা। কোন বাবা মা তার মেয়েকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়ে ছেলেদের দ্বারা অপদস্থ হতে দিতে পারেননা।
(এলিজাবেথ রেমি-২০১১ সালে ধুর্ষনের শিকার হয়েছিলেন বলে রিপোর্ট করেছেন)
সাজিদ জাভিদের এমন বক্তব্য ঠিক তখনি আসলো, যখন হানা স্টোব গত মার্চে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এক ছাত্রের দ্বারা ধর্ষিত হওয়ার কথা তার পরিবার পুলিশে রিপোর্ট করেন। হানা সে সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলো।
এ ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের নতুন প্রেসিডেন্ট এবং কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ডেম জুলিয়া গডফেলোর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইতোমধ্যেই এই ছেলেদের যৌন সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহনে ততপর হয়েছে। কি ধরনের পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে, স্পেশিয়ালি হানার আত্মহত্যার উদ্যোগের কথা জানালে তিনি বলেন, উদাহরণ হিসেবে আমি কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা বলতে পারি। আমরা ইতোমধ্যে স্বস্তা ড্রিংক্স সহ হ্যাপী আওয়ার ড্রিংক্স নিষিদ্ধ করেছি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন টিমের পক্ষে ড্রিংক্স নিয়ে এসে কোন ধরনের গেম আমরা নিষিদ্ধ করেছি।
গডফেলো আরো বলেন, এধরনের কালচার(ল্যাড) কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে দ্য কমপ্লিট ইউনিভার্সিটি গাইড ওয়েব সাইট- যা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং করে থাকে এবং পুলিশ ও নেইবারহুড দ্বারা অপরাধ, সেক্সুয়াল ক্রাইম সহ যাবতীয় অপরাধের রেকর্ড সন্নিবেশিত করে থাকে, সেখানে লন্ডন, ওয়েলস এবং নর্থওয়েস্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটিগুলোতে সেক্সুয়াল ক্রাইম রেকর্ড সবচাইতে বেশী।
06th Sept 2015, London.