সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ-লন্ডন থেকে
ব্রিটেনের বিচারের ইতিহাসে সব চাইতে বড় যে ট্র্যাজেডি, সেই হিলসবারা ট্র্যাজেডির ২৭ বছর পর অভিযুক্ত ও তাদের পরিবাররা আজ ন্যায় বিচার লাভ করলেন। জুরিরা তাদের ভার্ডিক্টে বলেছেন, সেদিন অন্যায়ভাবে ফুটবল সাপোর্টারদের হত্যা করা হয়েছিলো। এতে লিভারপুল সাপোর্টারদের কোন দুষ ছিলোনা।
১৯৮৯ থেকে ২০১৬ সাল- দীর্ঘ ২৭ বছর ধরে যে ট্র্যাজেডি, বলা যায় ব্রিটেনের বিচারের ইতিহাসে সব চাইতে ভয়াবহ ট্র্যাজেডি অধ্যায় রচিত হয়েছিলো, আজ ইনকুয়েস্ট রিপোর্টে ভার্ডিক্ট প্রকাশিত হয়েছে, ২৭ বছর পর অভিযুক্তরা ন্যায় বিচার পেলেন। জুরিরা বলছেন, ১৯৮৯ সালে শেফিল্ড ফুটবল স্টেডিয়ামে যে ৯৬ জন নিহত ও ৭০০ জন আহত হয়েছিলেন- সেদিনের এই নারকীয় ট্র্যাজেডিতে লিবারপুল ফুটবল ক্লাবের সাপোর্টারদের কোন দুষ ছিলোনা। ভিক্টিম পরিবারের সদস্যরা ২৭ বছর পরে এই ন্যায় বিচার পেয়ে খুবই স্বস্তি ও উৎফুল্ল প্রকাশ করেছেন। বলেছেন তারা আজ বুকের মধ্যে চেপে রাখা কষ্টের পাহাড় থেকে ভার মুক্ত হয়েছেন। এতো দিন ধরে তারা আশায় আশায় বুক বেধে ছিলেন, ন্যায় বিচার পাবেন। জুরিরা অবশ্য রায়ে শেফিল্ড স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষকে তাদের ভুলের জন্যে দায়ী করেছেন, একই সাথে ষ্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্ম ইষ্ট উড এন্ড পার্টনার্স – যারা স্টেডিয়াম কাজ করেছিলেন, তাদেরকেও পূর্ববর্তী দুর্ঘটনা থেকে ম্যাজারম্যান্টে শিক্ষা না নেয়ার জন্যেও দুষী সাব্যস্ত করেছেন।
ইনক্যুয়েস্টের সামনে কমান্ডার ডেইভিড ডাকেনফিল্ড প্রথম যখন এক মর্মস্পর্শী বর্ণনা দিতে মুখ খুলেন, তখনই কেবল হিলসবারা ট্র্যাজেডির সত্য ঘটনা উম্মোচিত হয়। সেদিনের রিপোর্টের জন্য সান ও টাইমস আনুষ্ঠানিক দুঃখও প্রকাশ করেছে।
ইনক্যুয়েষ্টের কাছে কমান্ডার ডেইভিড ডাকেনফিল্ড বলেন, ইতোমধ্যেই ষ্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ থাকা সত্যেও তিনি আদেশ করেছিলেন এক্সিট বা বের হওয়ার গেইট খুলে দিয়ে সাপোর্টার ও ফ্যানদের জন্য ষ্টেডিয়াম খুলে দিয়েছিলেন। যার ফলে এক সাথে হাজারো সমর্থক ঢুকতে গিয়ে ঘটনাস্থলেই ৯৬ জন মারা যান এবং ৭০০ জন আহত হয়েছিলেন।ইনক্যুয়েস্টে যে ১৪টি প্রশ্নের উত্তর খুজা হচ্ছিলো, জানা গেছে জুরিরা সেই ১৪টির পজিটিভ তথা ইয়েস পেয়েছেন ।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, হিলসবারা ট্র্যাজেডির ভার্ডিক্টে সত্য উম্মোচিত হওয়ায় জনগনের বিশ্বাস ও ট্র্যাস্ট অক্ষুন্ন ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থে তখনকার ঘটনায় পুলিশের দায় দায়িত্বের ব্যর্থতা স্বীকার করে সাউথ ইয়র্কশায়ার পুলিশের চীফ কনস্টেবল ডেভিড ক্রম্পটনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাউথ ইয়র্কশায়ারের পুলিশ এন্ড ক্রাইম কমিশনার ডঃ অ্যালান বিলিংস গণ-মাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২৭/০৪/২০১৬