সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ। ক্যাম্পেইন ফর আবদুল মোমেন । সিলেট-১ আসন। ২০১৮
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আবদুল মোমেন যখন বোস্টনে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন, তখন আপনি এবং আপনার সার্কেল প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে শক্তহাতে দাঁড়িয়ে ডঃ মোমেনকে জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এ ছিলো বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে দেশ ও জাতির স্বার্থে আপনার এক অনন্য ও অনবদ্য উপহার।
বাংলাদেশ যখন বহির্বিশ্বে স্রেফ এক দুর্নাম আর দুর্নীতি আর কুসংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে বিশ্ব দরবারে দুর্নামের সাথে মাথা নিচু করে হাটছিলো- তখনি আপনি যুগোপযোগি এক সিদ্ধান্ত নিলেন। আমন্ত্রণ জানালেন ডঃ মোমেনকে। স্থায়ী প্রতিনিধির অফিসের দায়ভার শুধু নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ মিশনের দুর্ণাম মুছে দিয়ে বিশ্ব দরবারে দেশ ও জাতির নাম উজ্জ্বল করার জন্য এক চ্যালেঞ্জিং দায়িত্ব দিয়ে মোমেনের কাধে সপে দিলে, ডঃ এ কে আবদুল মোমেনও অত্যন্ত সাহস ও দক্ষতার সাথে আপনার দেয়া সেই গুরু দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাব মুর্তি উজ্জ্বল করার এক অনবদ্য কারিগর আমাদের এই মোমেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
ব্যক্তিগতভাবে আপনি ও আপনার প্রশাসন এ বিষয়ে ব্যাপকভাবে অবগত। মোমেন যখন জাতিসংঘে দায়িত্ব নেন, তখন আপনার অধীনস্ত মাথাভারি প্রশাসনের কূটিল ষড়যন্ত্রকারিরা দুই দুইবার মোমেনকে জাতি সংঘ থেকে সরিয়ে দেয়ার পাকা বন্দোবস্ত করলে আপনি শেষ মুহুর্তে দৃঢ়হাতে হস্তক্ষেপ শুধু করেননি, প্রশাসনিক সিদ্ধান্তকে বিমানে উড্ডয়নের মুহুর্তে আপনার গোচরীভুত করা হলে, আপনি ষড়যন্ত্রকারিদের সেই সিদ্ধান্ত ও ব্যবস্থা পাল্টে দিয়ে তাদের ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছিলেন। বিনিময়ে মোমেন তার কাজের স্বীকৃতি ও দক্ষতার সেরা স্বাক্ষর আপনাকে এবং গোটা জাতিকে দিয়েছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন, মোমেন তার চাকুরী জীবনের শুরুতে প্রবাসীদের কল্যাণে ওয়েজ আর্ণার স্কীম( তার খালুর প্রস্তাব তার কাছে এতোই পছন্দ হয়েছিলো যে, সে তাৎক্ষণিক সেই প্রস্তাবটি বঙ্গবন্ধুর সরকারে গোচরীভূত করেন) বঙ্গবন্ধুর কাছে উত্থাপন করলে, বঙ্গবন্ধু সেটা সঙ্গে সঙ্গে গ্রহণ করে ওয়েজ আর্ণার্স স্কীম চালু করেন।
সম্প্রতি কতিপয় আমলা আপনাকে ভুল উপস্থাপনার মাধ্যমে প্রবাসীদের দ্বৈত নাগরিকত্বের সংশোধনীর মাধ্যমে প্রবাসীদের ভোটাধিকার হরণ, নির্বাচনী অধিকার হরণ সহ জটিল ব্যবস্থা নিলে চ্যানেল আইয়ের এক্সক্লূসিভের প্রেজেন্টারের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ডঃ মোমেনের মাধ্যমে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, আপনি নিজে মোমেনের কাছে এ বিষয়ে বিস্তারিত অবগত হয়ে উদ্যোগী হওয়ার ব্যবস্থা নিয়েছিলেন- যার ফলে আইনমন্ত্রী গণ-মাধ্যমে প্রবাসীদের আশ্বস্থ করেন সেই আইন সংশোধন হচ্ছে।
মান্যবর প্রধানমন্ত্রী,
জাতিসংঘে ডঃ মোমেন যখন তার দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করছিলেন, আপনি তখন নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রীয় সফরে গেলে আবদুল মোমেনকে দেশে ফিরে অধিকতর দায়িত্ব পালনের জন্য ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিলে, মোমেন আপনার নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্ব সমাপ্তির বেশ কিছু আগেই দেশে ফিরে আসেন। সেদিন আপনি এবং আপনার বোন শেখ রেহানা মোমেনকে যেভাবে বলেছিলেন, মোমেন এখনো সেভাবেই দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
মাননীয় দেশনেত্রী,
সিলেট-১ আসন অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ। এই আসনে বর্তমান এমপি আজকের সফল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মুহিতের যোগ্যতা ও দক্ষতা এবং সুনাম প্রশ্নাতীত। কিন্তু মুহিত বয়সের ভারে ন্যুব্জ। নিজেও অবসরের বেশ কয়েকবার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। আর ইতোমধ্যেই সিলেটের মা মাটি ও জনগনের সাথে ডঃ আবদুল মোমেন একেবারে মিশে গেছেন। সিলেটের ব্যাপক উন্নয়ন আর উন্নয়নমূলক কাজ আর সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার এক দুর্দান্ত মিশন নিয়ে ডঃ মোমেন সিলেটের ১ আসনের আনাচে কানাচে চষে বেড়াচ্ছেন দেশে ফেরার পর থেকেই।আওয়ামীলীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মীদের কাছেও ডঃ মোমেন একজন অতি আপনজন এবং শিক্ষিত সজ্জন ও জনগনের একেবারের কাছের মানুষ হিসেবে ব্যাপকভাবে সমাদৃত।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
বয়স এবং গুনীজন ও একই সাথে গণতান্ত্রিক প্রশাসনিক কাঠামোর বিবেচনায় আপনি সাংবিধানিক এক পদ ন্যায়পাল সৃষ্টি করে আজকের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে ন্যায়পাল করে যোগ্য মর্যাদায় অধিষ্টিত করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রণালয়ের মতো গুরুদায়িত্ব আপনি বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ ডঃ আবদুল মোমেনের উপর অবলিলায় দায়িত্ব দিতে পারেন। মোমেন শুধু কূটনীতিতে সফলতা দেখাননি। এর আগে তিনি বোস্টনের অর্থনীতির অধ্যাপক ছাড়াও প্রয়াত সৌদি বাদশাহ কিং ফাহদের অর্থনৈতিক উপদেষ্টারও দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করেছেন।বর্তমানে মোমেন আপনার প্রশাসনের অধীনের চট্রগ্রাম এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
কায়েমী স্বার্থবাদীরা সিলেট-১ আসন নিয়ে নানা খেলা শুরু করে দিয়েছে। আপনি আরো অবগত আছেন যে, সিলেটের জনগন ক্ষমতাসীনদের ভালোবাসা উজাড় করে দিতে কার্পন্য করেনি কখনো। দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ এই সিলেটে হযরত শাহজালাল শাহপরাণ সহ অসংখ্য ওলি আওলিয়া শায়িত। এই মাটির জন্য দরকার একজন যোগ্য সিলেটি- যিনি সিলেটের শিক্ষা, যোগাযোগ, উন্নয়ন, মসজিদ, মক্তব, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মন্দির, প্যাগোটা, চার্চ, পাঠশালা, ব্যবসা বাণিজ্য, খেলা ধুলা, সাহিত্য, সংস্কৃতির লালন উন্নয়নে সঠিক ভুমিকা নেয়ার জন্য দরকার একজন দক্ষ এবং সুযোগ্য মা, মাটি ও সিলেটের সন্তান। আর আবদুল মোমেনই হলেন আওয়ামীলীগের জন্য এমন এক অ্যাসেট, এমন এক সম্বল- যিনি হতে পারেন সিলেট-১ আসনের যোগ্য দাবীদার এবং আওয়ামীলীগকে সিলেট-১ আসন যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে তিনিই দিতে পারেন উপহার। শেখ হাসিনার হাতকেও সিলেটের মাটিতে শক্তিশালী এবং শক্ত ভিতের উপর স্থাপনে ডঃ আবদুল মোমেনের কোন বিকল্প নেই।যেমনভাবে নগর পিতা হিসেবে কামরান হতে পারেন আওয়ামীলীগের জন্য এক যোগ্যদাবীদার, তেমনি সিলেট-১ আসনে মোমেনের মনোনয়ন হবে- এই দুই- এর সমন্বয়ে অপ্রতিরোধ্য এক দুর্গ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ষড়যন্ত্রকারিদের ডালপালা বিস্তারের মাধ্যমে সমাজে বিষ ছড়ানোর আগেই সিলেট-১ আসনের যোগ্য প্রার্থী দাবীদার হিসেবে ডঃ আবদুল মোমেনকে ঘোষণা করুন এখনি । সেটাই হবে বঙ্গবন্ধু কন্যার সঠিক এবং সময়োপযোগি সিদ্ধান্ত ।
salim932@googlemail.com
১৮ ফেব্রুয়ারি। ২০১৮