খালেদ আলমাইনি- এক জীবন্ত ভেটেরান আরব সাংবাদিক, ব্যবসায়ী প্রফেশনাল

খালেদ আলমাইনি- এক জীবন্ত ভেটেরান আরব সাংবাদিক, ব্যবসায়ী প্রফেশনাল

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ। আরব বিশ্বের যে সব খ্যাতিমান সাংবাদিক, রেডিও টিভির কমেন্টেটর, ব্যবসায়ী প্রফেশনাল বিশ্বব্যাপী লিবারেল, মডারেট দিক নির্দেশক ও মিডিয়া আইকন হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন, তাদের মধ্যে ১৯৫৪ সালের দিকে জন্ম নেয়া ভেটেরান সাংবাদিক, লেখক, গবেষক, মানবাধিকার কর্মী খালেদ আলমাইনি অন্যতম। খালেদ আল মাইনি একদিকে যেমন রেডিও, টেলিভিশনের অ্যাংকর, আরব টাইমস ও সৌদি গেজেটের মতো বিশ্বখ্যাত পত্রিকার এডিটর ইন চীফ হিসেবে কাজের দুর্লভ গৌরবের অধিকারি, তেমনি অন্যদিকে তিনি একজন খ্যাতিমান আরব ব্যবসায়ী, আবীর গ্রুপের ডিরেক্টর ছাড়াও প্রয়াত বাদশা ফাহদ ও আবদুল্লাহর খুব কাছের ব্যক্তিত্ব ছিলেন, একইসাথে রিয়াদের সাবেক প্রয়াত গভর্ণর প্রিন্স সালমান ছাড়াও আজকের যুবক প্রিন্স সালমান ও বাদশা সালমানের অত্যন্ত ঘনিষ্টজন হিসেবে সমাদৃত। ১৯৯০ সালে সৌদি আরবের সাথে রাশিয়ার ডিপ্লোম্যাটিক সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম এক কারিগর এই খালেদ আলমাইনি।

খালেদ আলমাইনি কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পাকিস্তান সরকার তাকে ২০০৮ সালে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব সীতার-ই-পাকিস্তানে ভুষিত করে।

খালেদ আল মাইনি মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র সহ ব্রিটেন এবং পাকিস্তানে লেখা পড়া করেছেন।

সম্প্রতি খালেদ আলমাইনিকে এনটিভির টকিং পয়েন্টের অ্যাংকর সৈয়দ নিয়াজ আহমদ প্যানডেমিকের এই সময়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সুবিধার সুবাধে ইউরোপ অবস্থানের সময়ে খালেদ আলমাইনিকে তার অনুষ্ঠানে নিয়ে এসেছিলেন। সেখানে খালেদ আল মাইনি অত্যন্ত খোলামেলাভাবে আরব ইউরোপ পশ্চিমাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক কূটনৈতিক সামাজিক এবং মুসলিম দর্শন, আরব উইমেনের অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে বেশ চমৎকার কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন, যা সচরাচর অন্য কোন আলোচনা অনুষ্ঠানে খুব একটা আলোকপাত করা হয়না। খালেদ আলমাইনি ভারতীয়দের দ্বারা মুসলিম নির্যাতনের ও হত্যার সমালোচনা করেন।

প্যানডেমিক করোনা ভাইরাসের সময়ে সৌদি আরবে তেলের বাজার দরের পতন নিয়ে কথা বলার সময়ে খালেদ আল মাইনি বলেন, শুধু তেলের বাজারের কথা নয়, এখানে দেখতে হবে এই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের ন্যায় সৌদি আরবেও সার্ভিস ইন্ডাস্ট্রিতেও প্রভাব পরেছে ব্যাপকভাবে।

 

হজ্ব এবং উমরাহ নিয়ে খালেদ আল মাইনি বলেন, এখন পর্যন্ত আমি সরকারি কোন তথ্য জানিনা, তবে এবারের হজ্ব করোনা ভাইরাসের প্যানডেমিকের প্রভাব পরবে এবং মনে হচ্ছে খুব কম সংখ্যক মানুষ হজ্বের সুযোগ পাবেন হয়তো- হজ্ব হয়তো বাতিল হবেনা, সীমিত আকারে হয়তো হবে। তবে তিনি বলেন আমি জানিনা, সৌদি সরকার, আলেম উলামারা এটা বলবেন, কি হবে না হবে। প্যানডেমিকের প্রভাবে সব ম্যাজারম্যান্ট ইভাল্যুয়েট না করে হজ্ব মিনিস্ট্রি হয়তো এখনি বা কালই কোন সিদ্ধান্ত দিবেনা।

খালেদ আল মাইনি অবশ্য বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল সহ মুসলিম বিশ্বের অন্যান্য এলাকার মতো নিজ দেশেও এর প্রভাবে ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রিতেও প্রভাব পরেছে বলে মনে করেন। একই সাথে খালেদ আল মাইনি তরুণ আরবদের শিক্ষা দীক্ষার এবং এগিয়ে চলার প্রশংসা করেন। তিনি মুসলিম বিশ্বের তরুণদের আশাবাদী এবং শক্তভাবে মুসলিম বিশ্বাস ধারণ করে সম্প্রীতি ও সহমর্মিতার মাধ্যমে সবার জন্য বিশ্ব এবং সকলের জন্য সমানভাবে কাজ করার আহবান জানান। মিডিয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, আজকের যুগে মিডিয়ায় বেতন বৈষম্য যেমন তেমনি অনেক ভুয়া সংবাদের ছড়াছড়ি। তবে তিনি আশাবাদী মিডিয়া, অনলাইন, ব্লগ আরও উন্নতি করার এবং ক্রেডিবল এর মাধ্যমে উন্নতি করার আশাবাদী।

 

ভারতের তাবলীগ জামায়াতকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর অভিযোগকে তিনি ইসলামের ইমেজকে নষ্ট করার জন্য অপ্রয়োজনীয়ভাবে তাবলীগ জামায়াতের ছোট একটি ইস্যুকে প্রচারের মাধ্যমে প্যানডেমিকের জন্য মুসলিমদের দোষারোপ করার এক কৌশল হিসেবে দেখছেন।

উল্লেখ্য খালেদ আলমাইনি তার সাম্প্রতিক আর্টিকলে আরব বিশ্বে অবৈধ ইমিগ্র্যান্টদের পক্ষে মতামত লিখে ডিপোর্টেশনের বিপরীতে রেজিস্ট্রার সিস্টেম( ফিঙ্গারপ্রিন্ট সহ) ও রেগুলারাইজড করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন যাতে ২০০-৩০০ হাজার ওয়ার্কারদের দেশে ফেরত বা ফের ভিসা ইস্যু করে প্যানডেমিক পরবর্তীতে বা অবস্থার প্রেক্ষিতে যাদেরকে এজেন্সি আবার কাজে নিতে চায়, তাদের নেয়ার সুযোগ সৃষ্টির আহবান জানিয়েছেন।