গত চব্বিশ ঘণ্টায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপট অনেকটাই পাল্টে গেছে। অতি দাম্ভিকতা ও জেদি, একরোখা মনোভাব থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ যেমন সরে এসেছে, ঠিক তেমনি রাজনৈতিক ময়দানে ও আগামীর নির্বাচনের মাঠে অনেক নতুন নতুন শক্তি ও নয়া নেতৃত্বের উদয় অনেকটাই জানান দিয়েছেন। এতে আশার আলো যেমন একদিকে দেখা যাচ্ছে, অন্যদিকে এতে দৃশ্যনীয়ভাবে পরিলক্ষিত হয়ে সকল সংশয়, সকল সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা এক নয়া স্থিতিশীল অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে।
রমজান মাস থেকে শুরু হওয়া টান টান যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো, তার কিছুটা হলেও এখন প্রশমিত হতে চলেছে। রাজনীতিতে এই পজিটিভ পরিবর্তনের সূচনা বা ইঙ্গিত অবশ্যই এক নয়া আশার সঞ্চার করেছে। যদি এই অবস্থা শেষ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে, তবে দেশ অবশ্যই এক আশু ভয়াবহ সংঘাত ও সংকট থেকে মুক্তি পাবে, আমাদের গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাও অব্যাহত থাকবে।
চব্বিশ ঘণ্টা আগে আমি যে বড় মাপের রাজনীতিবিদের সাথে ব্যক্তিগত আলাপে অসম্ভব এক হতাশার কালো ছায়ার কথা শুনেছিলাম, চব্বিশ ঘণ্টা পরে আমি সেই বড় মাপের রাজনীতিবিদের কাছ থেকে এই পরিবর্তনের ইঙ্গিত পেয়ে এবং এর কয়েক ঘন্টার মধ্যে সারা দেশের মিডিয়ায় ও বিশ্ব পরিমণ্ডলে সেই পজিটিভ সংবাদের আলো যখন ছড়িয়ে পড়ে তখন নিজেকে খুব সৌভাগ্যবানের সাথে সাথে প্রিয় মাতৃভূমির আগামীর সংঘাত আর ভয়ানক সংকটময় অবস্থাকে উত্তরণে নয়া মেরুকরনের দিকে ধাবিত হতে দেখে অভিভূত হয়েছি। আমার বিশ্বাস আমার সাথে সারা দেশের জনগণ এখন সুস্থ, সুন্দর, উৎসবমুখর অবস্থায় আগামী নির্বাচন করার লক্ষ্যে উদগ্রীব।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক এই পরিবর্তনের সূচনা, যেমন আমরা এখন নতুন ইতিবাচক দৃশ্যে এখন দেখছি-
*নির্বাচন কমিশন কর্তৃক আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের ঘোষণা
গণ-প্রতিনিধিত্ব ধারার ৯১/ই ধারা বিলুপ্ত না করার ঘোষণা
*চট্টগ্রামের জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভোট জাতির কাছে প্রার্থনা
*ডঃ মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে নয়া রাজনৈতিক দল-গ্রামীণ পার্টি অব বাংলাদেশের ঘোষণা আসার ইতিবাচক চূড়ান্ত সংবাদ সম্বলিত তথ্য ডঃ ইউনুস এবং ডঃ কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রব, ডাঃ বি চৌধুরী, অধ্যাপক আবু সাইদ, মাহমুদুর রহমান মান্না, সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের নেতৃত্বে নয়া এক তৃতীয় রাজনৈতিক জোট প্রকাশের গণফোরামের সভায় প্রকাশ্য উপস্থিতির মাধ্যমে ইতিবাচক রাজনীতির সূচনা
*লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দলীয় ও জোটের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের ঐক্যমতে ও সমানভাবে মূল্যায়নের নির্দেশনা সম্বলিত সংবাদের ইতিবাচক সূচনা
*বিদেশী বন্ধু, বিশেষ করে আমাদের দূতাবাস সমূহের কূটনীতিকদের উদ্যোগে এবং ভারত-মার্কিন লবির যৌথ সমন্বয়ে(ও এক হয়ে) বড় উভয় রাজনৈতিক দলের নেত্রী ও উপরের লেভেলের নেতাদের সাথে যোগাযোগ সমন্বয়ের মাধ্যমে সমঝোতার রাজনীতির টেবিলে এনে আগামী নির্বাচন সকল দলের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে এক ইতিবাচক ধারার সূচনা
*প্রধান দুই বড় দল ও জোট তলে তলে সমঝোতার টেবিলে এসে এখন নির্বাচনের রাজনীতির ধারায় নিজেদেরকে শরীক করে চলেছেন, এটাও অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক
তবে প্রশ্ন থেকে যায়, ক্ষমতাসীন দল যদি অহেতুক, অযাচিতভাবে আর কোন চক্রান্ত না করে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে অযাচিত মামলার ফাঁদে না ফেলে নির্বাচনকে অনিশ্চিত করে না তুলে আমাদের বিদেশী দূতিয়ালির ঐ বন্ধুদের এই দিকেও সতর্ক দৃষ্টি এবং অব্যাহত চাপ, যেমন করে নির্বাচন কমিশন ও খোদ সভানেত্রীকে ক্লিয়ার ম্যাসেজের মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনারদিকে রাজনীতিকে নিয়ে গেছেন, তেমনি এক্ষেত্রেও অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি যাতে উদ্ভব না হয়।
এর ফলে এই নাটকীয় ইতিবাচক রাজনীতির মোড়ের দিকে বাংলাদেশের রাজনীতি ধাবিত হওয়ায় দেশবাসী বেশ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফলবেন তাতে কোন সন্দেহ নাই।
এতোদিন ধরে যে অনিশ্চিত এক অবস্থা ছিলো আদৌ দেশে কি নির্বাচন হবে অথবা দেশের ভবিষ্যৎ কোন দিকে বা কোন অন্ধকার সুড়ঙ্গের দিকে দাবিত হচ্ছে, সেখান থেকে বাংলাদেশের রাজনীতি বলা যায় এখন যোজন যোজন দূরত্বে সরে এসেছে। জানুয়ারির প্রথম দুই সপ্তাহের একেবারে শেষের কিংবা তৃতীয় সপ্তাহের ভিতরে নির্বাচন হবে, এটা এখন নিশ্চিত। ক্ষমতাসীন দল এখন নির্বাচন নিয়ে সেই অনিশ্চিত ড্রামার অবস্থা থেকে সরে এসেছে, বিরোধীদল সহ রাজনৈতিক দলগুলো এখন নিজেদের ঘর ও জোট গুছানোর কাজে মনোনিবেশ করায় জনগণও বলা যায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
সাধারণ জনগণ চায় শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নয়ন আর জীবন-মালের নিরাপত্তা। অনিশ্চিত, সংঘাত, হরতাল, মারামারি, কাটাকাটি পছন্দ করেনা। সত্যিকারের নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে যে বা যেই জোট ক্ষমতায় আসুক সাধারণ জনগণ তাতে কোন আপত্তি বা বাধ সাধবেনা। জনগণ যায় সমাজ, সংসার, রাষ্ট্রের শান্তি ও স্থিতিশীলতা। সকল দলের অংশগ্রহণে সমঝোতার মাধ্যমে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদের নির্বাচন ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ- এই আমাদের প্রত্যাশা।
২৯ আগস্ট ২০১৩ .