ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিশ্চিত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব-

ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিশ্চিত করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব-

ঈদ আসন্নঃ বাজার সহনশীল ও ঘর মুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করা সরকারের দায়িত্ব

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ

এখন চলছে পবিত্র রমজান মাস।মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য আল্লাহর তরফ থেকে অফুরন্ত রহমত-বরকত-নেয়ামত নিয়ে আসে, আল্লাহ পাক তার রহমতের বিশেষ তজল্লী মেলে ধরে বান্দার একেবারে নিকটবর্তী হয়ে বান্দাহর গোনাহ মাফ করে দেন।কোরআন এবং হাদীসে এই রমজান মাসের অসংখ্য ফজিলতের বর্ণনা রয়েছে।এই রমজান মাসেই পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছিলো, এই রমজান মাসেই এক রাত রয়েছে, যা হাজার রাতের এবাদতের চাইতেও উত্তম, আর তা হলো লাইলাতুল ক্কদরের রাত।

0১)

স্বাভাবিকভাবেই আশা করা যায়, এই মাসের এতো নেয়ামত ও ফজিলতের কারণে মানুষের মন-মানষিকতা ও ব্যাবসা-বাণিজ্যে কিছুটাও হলেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় সম্পূর্ণ উল্টো।এক শ্রেণীর অতি মুনাফালোভী ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেট যেন অধীর আগ্রহে এই রমজান মাসের অপেক্ষায় থাকে, রমজান আসার শুরুতেই তারা জিনিষ-পত্রের কৃত্রিম সরবরাহ সংকট দেখিয়ে কিংবা অতি দুষ্টু মতলব ও খোড়া যুক্তি দেখিয়ে বাজারে জিনিষ-পত্রের চড়া দাম হাকিয়ে সাধারণ মানুষ ও ভোক্তাদের পকেট কাটতে ব্যতিব্যাস্ত থাকেন।সাধারণ ভোগ্য-পণ্য যেমন চাল,ডাল,তেল, পেয়াজ,চিনি, ছোলা,বাদাম,মাছ,মাংসের দাম আজ আকাশ চুম্বি, ফলের ও সব্জির বাজার আকাশ ছোয়া, মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের ক্রয়-ক্ষমতা একেবারে তলানীতে এসে ঠেকেছে।রমজানের শুরুতে জিনিষ পত্রের দাম একদফা বাড়িয়ে তারা ক্ষান্ত নন, ঈদের আগাম খরচ-পাতির দিকে লক্ষ্য রেখে তারা জিনিষ-পত্রের আরেক দফা বৃদ্ধ্বি করে থাকেন, যার প্রভাব বাজারে পড়তে শুরু করেছে।বাজারে যে ভাবে জিনিষ-পত্রের দাম বৃদ্ধ্বি হয়ে চলেছে, সেই ভাবে কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত, প্রান্তিক চাষী,আর মধ্যবিত্তদের আয় সেইভাবে বৃদ্ধ্বি পায়নাই, এই খানেই আমাদের বাজার অর্থনীতির সবচাইতে মাত্রাতিরিক্ত উল্লম্ফন দৃশ্যমান।

০২)

বাজারে পণ্যের অবাধ প্রবাহ,যোগান ও সরবরাহ তথা বাজারের কর্মকান্ড নির্বিঘ্ন করে দেখ-ভালের দায়িত্ত্বে যারা, তারা প্রতিবছর রমজান এলেই দায় ছাড়া কিংবা সমন্বয়হীন, মিডিয়া ফলাও সর্বস্ব কিছু পদক্ষেপ নিয়ে যেন দায়িত্ব সম্পন্ন হয়ে গেছে বলে নাকে তেল দিয়ে ঘুমান, নয়তো এমন সব অযাচিত পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন,যা বাস্তবতা বিবর্জিত ও অতিরঞ্জিত এবং কোন কোন ক্ষেত্রে পালন অস্বাভাবিক, ফলে সরকারের কোন পদক্ষেপ আলোর মুখ বা খুব একটা ফল বয়ে আনেনা।আবার কখনোবা নিজেদের সিন্ডিকেটকে সুবিধা করে দিয়ে কৃত্রিম সরবরাহ ও যোগানের মধ্যে অসম অবস্থার সৃষ্টি করে কিংবা তৈরীতে সহযোগীতা করে যে বাজার মূল্য তথা নিয়ন্ত্রণের মাত্রা বেধে দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়, তা জনগণের কোন কাজে না এসে বরং হীতে বিপরীত ফল নিয়ে আসে।আবার সংঘবদ্ধ লূটেরা গোষ্টী ও খুচরা ও পাইকারী বিক্রেতারা নিজেদের কায়েমী স্বার্থ রক্ষার তাগিদে একই গোষ্টির ক্রীড়নকের ফলে বাজারে অস্বাভাবিক মুনাফার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।তার উপর রয়েছে, একশ্রেণীর দালাল,মধ্যস্বত্বভোগী,ফড়িয়া আর তথাকথিত রাজনৈতিক চাদার বিহিসেবি অরাজক অবস্থা, ফলে বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য ক্রমেই বেড়ে চলেছে, এ যেন এক লাগামহীন ঘোড়া, যেন সামনে লাফিয়ে লাফিয়ে চলাই তার লক্ষ্য, পেছনের দিকে ফিরে তাকানোর কোন লেশ নেই।

ঈদকে সামনে রেখে মাছ,মাংশ,ডাল,ছোলা,ভোজ্য তেল, সেমাই, ডালচিনি, সব কিছুর দাম আজ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।আর স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিসম্মত খাবার কেবলমাত্র যেন উচ্চবিত্তদের জন্য।নিম্ন মধ্যবিত্ত ও অতি প্রান্তিক জনগণ পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের কথা চিন্তাই করতে পারেনা, কারণ দাম যেন আকাশের চেয়েও উচুতে চলে গেছে।

০৩)

এই যখন অবস্থা, গণতান্ত্রিক সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রক ও নীতি-নির্ধারনী সংস্থার কি কিছুই করার নেই?ভোটের সময় সবচাইতে যাদের বেশী ভোটে আপনাদের ক্ষমতার নিয়ামক শক্তি এদিক ওদিক হয়ে থাকে, তাদের জন্য অন্তত গণতান্ত্রীক সরকারের বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মূল্য কিছুটা হলে সহনশীল পর্যায়ে রাখার কার্যকর ব্যাবস্থা নেওয়া উচিত।হাজারো চেষ্টা করেও নিজেদের কায়েমী স্বার্থের কারণে এই বাজার অর্থনীতিতে সিন্ডিকেট নামক পাগলা ঘোড়ার অতি মুনাফালোভীদের খপ্পর থেকে বাজারকে কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে নেওয়া সম্ভব নয়,যতদিন না কল্যাণমূলক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থার সাথে কল্যাণমূলক স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক প্রশাসনিক কাঠামো বিন্যাস গড়ে তোলা না যায়।তাই বলে সিন্ডিকেট নামক এই সব দুষ্টুদের দৈরাত্ম্য সাধারণ জনগণকে নিজের পকেট খালি করে ফতুর করার এই নষ্ট বাণিজ্যের যাতা কলে আর কতো নিষ্পেষিত হতে হবে? প্রায় অকার্যকর স্থানীয় সরকার ব্যাবস্থা দিয়ে বাজার কি করে মনিটরিং করা হবে?সবকিছুই সচিবালয় ও মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীক, এই রকম অবস্থায় স্বচ্ছ বাজার এবং বাজার নিয়ন্ত্রণ এবং সুসম প্রতিযোগীতামূলক বাজার আশা করা দূরহ ব্যাপার।তারপরেও গণতন্ত্রের তকমা লাগানো সরকারের উচিৎ এই বাজার ব্যাবস্থার অসম লুটেরানীতি ও অসৎ অতি মুনাফালোভীদের কিঞ্চিৎ টুঠি চেপে ধরে বাজারের অন্তত কিছুটা স্বস্তির ভাব চালু রাখা।সরকার কি এই বিষয়টা গুরুত্ত্বের সাথে বিবেচনা করবেন?

০৪)

ঈদ ও লম্বা ছুটিকে সামনে লোকজন নিজ নিজ গন্তব্যে যাওয়ার জন্য যে যার সাধ্যমতো বাহনের মাধ্যমে বাড়ী যাওয়ার ব্যাকুলতা নিয়ে বাস,ট্রেন,লঞ্চের টিকেটের জন্য অগ্রিম বুকিং কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন দিয়ে টিকেট কেনার নিত্য এই দৃশ্য প্রতি বছর দেখা যায়।কেউ কেউ টিকেটের জন্য সেহরী লাইনের মধ্যে থেকে খেয়ে কিংবা লাইনে ভাড়ায় লোক রেখে সেহরী শেষ করে টিকেট কাউন্টারে লাইন দিয়ে অনেক ঝক্কি-ঝামেলা ও দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর যখন কাউন্টারের সামনে যান, তখন নির্দিষ্ট গন্তব্যের টিকেট না পেয়ে হতাশ হয়ে কালোবাজার থেকে একই টিকিট চড়া দামে কিনে বাড়ীমূখো রওয়ানা দেন।টিকিট বিক্রী ও লাইনে দাড়িয়ে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও টিকেট না পাওয়ার এই যন্ত্রণা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ইচ্ছে করলে সহজেই এই অযাচিত আদিম সেকেলে মান্দাতার আমলের সিষ্টেমের যাতাকলে জনগণের কষ্টকে অতি সহজেই আধুনিক প্রযুক্তি সেবার মাধ্যমে এবং ছোট-ছোট বিশেষ স্কীমের আওতায় নিয়ে সহজে জনগণের সেবায় অবাধ ও সহজমূলকভাবে করে দিতে পারে।এতে সরকারের তেমন কোন টাকা খরচের দরকার পড়বেনা,বরং অতিরিক্ত ব্যয় সাশ্রয় হবে,জনগণ সহজে টিকেট বুকিং, সীট কনফার্ম করে গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারবেন, এবং কালোবাজারীর দৌরাত্ম্য থেকে রেহাই পাবেন।প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন ব্যাংকের বুথ,কাউন্টার, পোষ্ট অফিস,বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর ও কোম্পানীর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে, আস্তে-আস্তে যখন প্রতিটি সংস্থা তাদের নেটওয়ার্ক একই নেটের আওতায় চলে আসবে তখন কেন্দ্রীয় রিজার্ভেশন ব্যুরোর আওতায় সবকটা সংস্থাকে নিয়ে এসে ঘরে বসে জনগণ তার গন্তব্যের টিকেট খরিদ করে সহজেই সেবা নিতে পারবেন।এই রকম ব্যাবস্থা চালু করা খুব একটা ঝামেলার কাজ নয়।খালি ডিজিটাল ডিজিটাল করে চিৎকার না করে বরং এই সব কাজের প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত।এখনতো আমাদের দেশে এই সব এক্সপার্টরা সহজেই হাতের কাছে রয়েছেন,দরকার শুধু স্বচ্ছ নীতিমালা ও দক্ষ প্রশাসনিক সক্ষমতার।

০৫)

আমার এক বন্ধু আফরীন মেহবুব সম্প্রতি আমেরিকা থেকে দেশে বাবা-মায়ের সাথে মিলিত হবার জন্য সন্তান সহ দেশে গিয়েছেন।দেশে যাওয়ার জন্য তার যে উদগ্র বাসনা সত্যি তা প্রশংসনীয়।সম্প্রতি সে আমাকে জানিয়েছে, দ্রব্য মূল্যের উর্ধবগতি চিন্তারও বাইরে।আর রাস্তা-ঘাটের বেহাল অবস্থা, স্থানে স্থানে এতো গর্ত,খানা-খন্দক, যে প্রতিনিয়ত জীবন ঝুকি নিয়ে চলতে হয়,গাড়ীতে বা রিক্সায় চলাচলে রাস্তার ভাঙ্গা অবস্থার কারণে যে কেউ সহজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়বেন।যোগাযোগ মন্ত্রণালয়তো এখন একজন দক্ষ ঝানু প্রাক্তন ছাত্র নেতা ও আজকের ডাকসাইটে আওয়ামীলীগ নেতার নের্তৃত্ত্বে চলছে।জনগণ আশা করে রাস্তার এই বেহাল অবস্থার আশু করণীয় ব্যাবস্থা,শুধু কথার ফুল ঝুরি দিয়ে জনগণকে ভুলিয়ে রাখা যাবেনা, জনগণ রাস্তা-ঘাটে একটূ স্বস্তিতে চলাচল করতে চায়।যোগাযোগ মন্ত্রী এবং তার মন্ত্রণালয় কী একটু তড়িৎ ব্যাবস্থা গ্রহণ করবেন?

০৬)

ঈদের সময় ট্রেন,বাসে যথেচ্ছ ভাবে জীবনের ঝুকি নিয়ে লোকজন যাতে যাতায়াত করতে না হয়, দয়া করে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ আশু প্রয়োজনীয় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।অধিক যাত্রী বহন রোধ, সময়মতো ট্রেন,বাস চালু, যাত্রীদের এবং বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা প্রদানের দিকে সরকারের বিশেষ নজরদারী রাখা দরকার।মার্কেট,বিপনীগুলোতে চাদাবাজ আর একশ্রেণীর তরুণ,বখাটেদের উৎপাত বন্ধে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ যেমন নিবেন, জনগণ ও ব্যাবসায়ীসম্প্রদায়কেও এই সব বিষয়ে নজরদারীর পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

০৭)

প্রতি বৎসর ঈদের সময় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই ও ফিটনেসবিহীন লঞ্চের কারণে লঞ্চডুবির ঘটনা ঘটে থাকে, এতে অকালে অসংখ্য প্রাণ ঝড়ে পড়ে।লঞ্চ দূর্ঘটনায় পতিত হয়ে মানুষের প্রাণহানির পর সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঠনক নড়ে।এই যখন অবস্থা, তখন ঈদের আগে থেকে যথাযথ পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যাবস্থা নিলে অহেতুক মৃত্যুর হাত থেকে অসংখ্য মানুষকে বাচানো যায়।আমাদের নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় কী এদিকটা একটু ভেবে দেখবেন?আমাদের মাননীয় নৌমন্ত্রী একজন শ্রমিক নেতা,একজন সংসদ সদস্যও।সরকারের প্রভাবশালী সদস্য হিসেবে এই দিকটা সদয়তার সাথে বিবেচনা করবেন বলে আশা করি।কিন্তু নৌপরিবহন মন্ত্রীর ইতিপূর্বেকার কর্মকান্ড এবং বিখ্যাত কতিপয় মন্তব্য খুব একটা আশার সঞ্চার করেনা।আমাদের দেশে মন্ত্রী মহোদয়দেরও মন্ত্রী হওয়ার আগে প্রফেশনালী তেমন কোন অভিজ্ঞতাও থাকেনা,যেমন করে থাকেন একজন টেকনোক্রেট আমলা বা সচিবের।মন্ত্রী হওয়ার আগে তার সিভি কিংবা পোর্টফলিওতে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার বাস্তব সম্মত জ্ঞানের বদলে নেতা-নেত্রীর প্রতি কতো বিশ্বস্ত ও বক্তৃতাবাজীতে ওস্তাদ, তা দেখা হয়।যে কারণে, একেতো দলের মধ্যে থাকে গণতান্ত্রিক চর্চার বড় অভাব,তার উপর থাকে অগণতান্ত্রিক ভাবে পদ,পদবীর নির্বাচন, ফলে সারা বছর একজন দলীয় পদের অধিকারী নিজ পদ ও তার কাজ ও দায়িত্ত্ব নিয়ে তেমন কোন সৃজন শীল কাজ-কর্ম যেমন করেননা, তেমনি তার উপর অর্পিত দলীয় দায়িত্ত্বের কাজের হিসাব ও জবাবদিহিতার কোন ফোরাম না থাকায় তিনি কেবল দলের নেতা-নেত্রীর আজ্ঞাবহ ও দলবাজীতে ব্যাতিব্যাস্ত থাকেন, ফলে দল যখন ক্ষমতাসীণ হয়, তখন দলীয় সেই পদ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ত্ব পালনে তেমন কোন কাজে লাগেনা বা করতে হয় অক্ষম,তাই নেতা-নেত্রী তখন হন্যে হয়ে ভাড়াটে আমলানির্ভর প্রশাসনিক কাঠামো সাঝিয়ে কিংবা তার উপর ভর করে চলেন, ফলে জনপ্রশাসনের অভিষ্ট লক্ষ্য ও সেবা থেকে বৃহত্তর জনগণ হয় বঞ্চিত।নৌদূর্ঘটনা রোধ কিভাবে করা যায়, নৌপথকে কিভাবে আরো গতিশীল ও সাবলীল করা যায়, তা হয়ে পড়ে গৌণ।ফলে যা হবার তা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলে।আশা করবো সরকারের সর্বোচ্চ মহল এই বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এই বারের ঈদে ঘরমুখো নানান পেশার সর্বস্তরের যাত্রীদের নিরাপদ যাতায়াতের সকল ব্যাবস্থা যথাসম্ভব গ্রহণ করবেন।অগ্রীম সতর্কতা ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যাবস্থাই কেবল পারে এই অনাকাংখিত দূর্ঘটনার হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করতে।

০৮)

যোগাযোগ মন্ত্রণালয় ও নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের মধ্যে কার্যকর যৌথ সমন্বয় সেলের মাধ্যমে অবাধ তথ্যের আদান-প্রাদান করে সরকারের সবচাইতে দক্ষ ও নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের নিয়ে একটি টিম ওয়ার্কের আওতায় আগে থেকে যথাযথ সতর্কতা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যাবস্থার মাধ্যমে, একই সাথে সেই সব বাস্তবায়ন ও সাথে সাথে জনগণকে অগ্রীমভাবে তাদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন ও নিরাপত্তামূলক করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও নিয়মাবলী জানানোর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।সরকারের সকল নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনী এবং বিশেষ সেবাদানে সক্ষম সকল ইমার্জেন্সী টিম ও সেবাদানকারী প্রতিষ্টানের কর্মীবাহিনীদের সকল পয়েন্টে সতর্কতামূলক ব্যাবস্থা হিসেবে নিয়োজিত করা উচিৎ, সবচাইতে বড় কথা হলো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্পোরেশনের প্রতিটি সদস্যদের তাদের নিজ নিজ দায়িত্ত্বের আওতায় নিয়ে এসে অন দ্য স্পট সসস্যা সমাধানে নিয়োজিত রাখা উচিত।কোন অবস্থাতেই যাতে রেল,বাস,লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো না হয়, কিংবা মাঝপথে থামিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানোর যে আদিম সংস্কৃতি তা কঠিণভাবে সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে সমন্বিত নীতির আওতায় নিয়ে এসে বাস্তবায়নে সকল পক্ষের সৎ,দক্ষ, ও নিবেদিত প্রাণদের নিয়োজিত করার ব্যাবস্থা নেওয়া যেতে পারে।আশা করা যায় অগ্রীম সতর্কতা মূলক পদক্ষেপ এই বিষয়ে একটা সুফল বয়ে নিয়ে আসতে পারে।কোন অবস্থাতেই ফিটনেসবিহীন লঞ্চ ও বাস ঈদের সময় চলতে দেওয়া উচিৎ নয়, মানুষের জীবন-প্রাণ নিয়ে ছিনিমিনি খেলার জন্য জনগণ আপনাদের ম্যান্ডেট দিয়ে ক্ষমতায় বসায়নি।সিদ্ধান্ত যা নিবেন, জনগনকে ও সকল পক্ষকে পর্যাপ্তভাবে জানান, সেই মোতাবেক বাস্তবায়নের সকল ব্যাবস্থা নিন।

আসন ঈদে সকলের জন্য সকল প্রকারের যানবাহন ও সকল রুটই হউক নিরাপদ আরামদায়ক ও স্বস্তিদায়ক যাতায়াত ব্যাবস্থা, ঈদ হউক সকলের জন্য অনাবিল আনন্দদায়ক ও খুশীর-নিয়ত এই কামনাই করি।

Salim932@googlemail.com

2nd August 2012.UK

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *