প্রিয় সাংবাদিক সাগর এবং রুণির অকালে নৃশংস খুন হওয়া থেকে বেচে যাওয়া তাদের একমাত্র সন্তান,বাবা-মায়ের নাড়িছেড়া ধন,রুণি ও সাগরের একমাত্র উত্তরসূরী ছোট্র সোনামণি মেঘ।কতইবা আর বয়স,মাত্র পাচ কি ছয়,এই বয়সেই বাবা-মায়ের নৃশংস খুনের জীবন্ত স্বাক্ষী।কি ভয়ানক এক অবস্থা,ভাবতেই কষ্ট লাগে,মাথা ঝিম-ঝিম করে ধরে,চোখ বেয়ে জল বয়ে আসে।সাগর আর রুণির ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ যতই না স্তম্ভিত করেছে হ্রদয়,মনকে,যতই না ব্যাতিত হয়েছি,নিজের অজান্তেই চোখের পানি ঝরে পড়েছে,তার চেয়ে ভয়ানকভাবে মন-প্রাণ বড় ব্যাকুল হয়ে আছে সোনামণি মেঘের জন্য।মেঘেরতো আর কেউ রইলোনা,কি নিয়ে ও বেচে থাকবে,কি ভাবেই বা ও বেড়ে উঠবে,কি মানষিক এবং ভয়ানক এক কষ্ট নিয়েইনা ওকে বেড়ে উঠতে হবে।ভাবতেই অবাক লাকে,মেঘের জন্য মন-প্রাণ বড় কেধে ঊঠে বার বার।জানিনা ওর মন-প্রাণ ও বেড়ে উঠা দেহের উপরই না মা-বার মৃত্যুর ঘটনা কি প্রভাব বিস্তার করে,সেটাই এখন বড় চিন্তার বিষয়।
যে বয়সে কখনো বাবা, কখনো মায়ের হাত ধরে যে মেঘকে স্কুলে কিংবা খেলার মাঠে বা পার্কে বেড়াতে যেতে হতো,সেই বয়সে বড় অসহায় অবস্থায় ফেল-ফেল করে চেয়ে থাকা,পত্রিকা কিংবা টিভি মিডিয়ায় বাবা-মায়ের ছবি দেখে নানু,খালা,মামাকে জিজ্ঞেস করে,ওরাতো মরে গেছে,ছবি দেখিয়ে কি বলে টিভি-পত্রিকা।হায়রে,এটা যে কতো কষ্টের,কতো যন্ত্রণার,কেবল মাত্র ভূক্তভোগীরাই কেবল কিছুটা হলেও অনুধাবন করতে পারবেন।
চলমান তদন্ত প্রক্রিয়া এবং বিচারের জন্য সর্বস্তরের জনতার দাবীর সোচ্চারের প্রেক্ষিতে প্রিয় ছোট্র মণি মেঘের ব্যাক্তিগত নিরাপত্ত্বার কথা বেমালুম ভুলে গেলে চলবেনা।বরং মেঘের নিরাপত্ত্বার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের সাথে বিবেচনা করা রাষ্ট্রের এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অত্যন্ত যত্নের সাথে ভেবে দেখা উচিত।পাশাপাশি মেঘের সুন্দর ভবিষ্যৎ যাতে কোন অবস্থাতেই বিগ্ন না হয়,সেই সাথে সাগর আর রুণির খুনের ঘটনা যাতে মেঘের জীবনে কি প্রভাব ফেলে,তা দক্ষ সাইকোলজিষ্ট,অভিজ্ঞ শিশু বিশেষজ্ঞ এবং একদল পেশাদার মেডিক্যাল নার্সিং টিম-যা স্কুল,বিভিন্ন এজেন্সী এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সুসামঞ্জস্য বজায় রেখে সমন্বিত পরিকল্পণার মাধ্যমে মেঘের জীবন ধারাকে পরিচালনা করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।
প্রতিটি শিশুর সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে পরিকল্পিত ব্যাবস্থা এবং কলাণমুলক আইন এবং ক্ষেত্রতো রাষ্ট্রই ব্যাবস্থা গ্রহণ করে থাকে।সোনামণি মেঘের জীবনে বর্বর হায়েনাদের আচমকা আঘাতে তছনছ করে দিয়েছে তার সুন্দর জীবনটাকে।অকালে করেছে তাকে পিতৃহারা,মাতা হারা,করেছে এতিম।কলিজার সবটুকু দরদ ঢেলে দিয়েও মেঘের জীবনে ওর বাবা-মায়ের শুন্যস্থান কোন অবস্থাতেই পূরণ করা যাবেনা।
আমরা যারা সত্যিকার মানবতাবাদী,দেশপ্রেমিক,আমরা অন্তত মেঘের জন্য আমাদের হ্রদয়ের সবটুকু দরদ,ভালোবাসা ঢেলে দিয়ে মেঘের জীবনকে একটুক্ষণের জন্য হলেও করে তুলতে পারি আনন্দময়,সুন্দর ও কল্যাণময়।
আশা করবো বাংলাদেশের সকল হ্রদয়বান মানুষ,রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ সহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনযন্ত্র মেঘের সুন্দর কাংখিত,নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য এগিয়ে আসবেন,পাশাপাশি প্রিয় সাংবাদিক,শিক্ষক,ছাত্র,ব্যাবসায়ী,যুবসমাজ,ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া,ফটো সাংবাদিক সহ সকলেই ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলবেন,যাতে সাগর-রুণির হত্যাকারী যেই হউক,যত বড় শক্তিশালী হউক,যে দল ও মতেরই হউক,তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে যথাযথ স্বচ্ছ আইনের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনতে হবেই।মনে রাখবেন,সুযোগ যারা হারায় ইতিহাসে মুছে যায় তাদের নাম।এই হউক আপনার,আমার,সকলের দৃঢ় অঙ্গীকার।
11th February 2012,UK.