ব্রিটেনের নেট মাইগ্রেশন ৩৩০,০০ সর্বকালের রেকর্ড ছাড়ালো
সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ- লন্ডন থেকে
ব্রিটেনের ইমিগ্রেশন মিনিস্টার জেমস ব্রোকেন শায়ার বলেছেন, এটা খুবই দুঃখজনক এবং কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না যে, ব্রিটেনে ৯৪,০০০ করে বার্ষিক মাইগ্রেশন বৃদ্ধি পেয়েছে। বৃহস্পতিবার অফিস অব ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক নেট মাইগ্রেশন নিয়ে যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গেছে, ব্রিটেনের নেট মাইগ্রেশন সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ বিগত ২০০৫ সালের তুলনায় এ বছর মার্চ পর্যন্ত মাইগ্রেশন বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩০,০০০ হয়েছে।
এই বৃদ্ধি ভাগ করে দেখানো হয়েছে ৫৬,০০০ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভিতর থেকে আর ৩৯,০০০ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলোতে এসে এই ৯৪,০০০ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই হিসেব ১২ মাসের মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত।
সর্বশেষ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, রুমানিয়া এবং বুলগেরিয়া থেকে বেশী ব্রিটেনে এসেছেন, যাদের সংখ্যা ২৮,০০০ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩,০০০ হয়েছে গত ১২ মাসে। আর ৬৫,০০০ এর মতো বৃদ্ধি পেয়ে ব্রিটেনে কাজের জন্য, যাদের দুই তৃতীয়াংশ ব্রিটেনে ইতোমধ্যেই কাজ করছেন।
বিগত ২০০৫ সালের পিক সময়ে নেট মাইগ্রেশন ছিলো ৩২০,০০০ সেখানে একই সময়ে নেট মাইগ্রেশন বৃদ্ধি পেয়েছে ১০,০০০ করে সর্বমোট ৩৩০,০০০ যা সর্বোচ্চ রেকর্ড। পোল্যান্ড সহ ইস্টার্ণ ইউরোপ ইইউতে যুক্ত হওয়ার পর থেকে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে অথচ গত জেনারেল ইলেকশনের সময় ও পর পরই ডেভিড ক্যামেরন ঘোষণা করেছিলেন নেট মাইগ্রেশন ১০০,০০০ করে কমিয়ে আনা হবে বা সীমাবদ্ধ রাখা হবে, যা হ্রাসের বদলে বৃদ্ধি আজকে রাজনৈতিক ভাবে বড় তাৎপর্যপূর্ণ ।
আজকের স্ট্যাটিস্টিকে জানানো হয়েছে,প্রথমবারের মতো বিদেশে জন্মনেয়া ৮মিলিয়নের মতো লোকজন ব্রিটেনে বসবাস করছেন এবং ৩ মিলিয়নের মতো ব্রিটিশ সিটিজেন হয়েছেন তাদের ব্রিটেনে আসার পর থেকে আর এই স্ট্যাটিস্টিক গত ১২ মাস সময়ের মধ্যে মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত ।
ইমিগ্রেশন মিনিস্টার জেমস ব্রোকেন শায়ার এই ফিগার প্রকাশের পর বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এবং নতুন ফিগার সরকারের নেট মাইগ্রেশন টার্গেট ১০০,০০০ বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়ে ২২০,০০০ এর উপরে হয়েছে যা আশাব্যঞ্জক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
তিন বলেন,আমরা ভূয়া ছাত্র ছাত্রীদের আটকানো, আসা বন্ধ, ওয়েলফেয়ার ও হাউজিং কঠোর করার পরেও ১০০,০০০ এর মতো ইউ-ছাত্র-ছাত্রীঙ্কর্স শেষে ব্রিটেনে রয়ে গেছেন এবং আমাদের অনেক সেক্টরে এখনো ফরেন ওয়ার্কার নেয়া হয়েছে বা হচ্ছে ও কাজ করছে- যেখানে আমাদের আরো কিছু করার আছে দেখছি।
সরকার ইইউর বাইর থেকে ইকোনোমিক মাইগ্রেশন কমিয়ে আনার এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে লেবার মার্কেট ও অয়েল ফেয়ার রিফর্ম করার জন্য নেগোসিয়েশন ও এডভাইস দেয়া হচ্ছে।
কিন্তু লন্ডন ফার্স্টের ইমিগ্রেশন পলিসি ডিরেক্টর মার্ক হিল্টন সরকারের নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী ট্যালেন্ট এবং বিজনেস লিডারদের ব্রিটেনের কোম্পানিতে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে আছে সরকারের কঠিণ ইমিগ্রেশন নীতি, কারণ সরকার এক্ষেত্রে স্কিল্ড ওয়ার্কারদের ক্ষেত্রে লিমিটেশন করেছেন। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে আমরা চাই ইমিগ্রেশন নিয়ে স্ট্র্যাটেজিক ডিসিশান।
এর আগে ইমিগ্রেশন মিনিস্টার জেমস ব্রোকেন শায়ার ঘোষণা করেছিলেন, নতুন ইমিগ্রেশন বিলে অবৈধ ওয়ার্কারদের জরিমানা এবং সাময়িকভাবে বিজনেস বন্ধ করে দেয়ার কথা জানিয়েছিলেন।
ইপসোস মরিস ক্যালাইসে ইমিগ্রেশন স্রোতের পর যে জরিপ চালিয়েছে, তাতে দেখা গেছে, ৫০% ভোটার এর কাছে ইমিগ্রেশন একটা মেজর ইস্যু যা এই দেশ এখন ফেস করছে।
অবশ্য ব্রিটিশ ফিউচারের মুখপাত্র সুন্দর কাটওয়ালা বলেছেন, সরকারের উচিৎ ইমিগ্রেশন নীতি রিভিউ করা যাতে ক্লিয়ারলি জানানো হবে কতোটুকু করা সম্ভব এবং কি পরিমাণ করা সম্ভব নয়। এতে জনগনের আরো অধিক সুযোগ থাকে কি হচ্ছে তা জানার ও বলার, যা বিভিন্ন নিতি পলিসি তথা অর্থনীতি, সমাজনীতি এবং পাবলিক সার্ভিসের ক্ষেত্রে ভুমিকা রাখার ও উন্নয়নে ভুমিকা জোরদার হবে।
27th August 2015, London