খালেদা জিয়া এবার দুটো ঘোষণা দিনঃ বাংলাদেশের জনগণকে আপনার পাশে পাবেন

খালেদা জিয়া এবার দুটো ঘোষণা দিনঃ বাংলাদেশের জনগণকে আপনার পাশে পাবেন

Submitted by syed shah salim… on Thu, 11/07/2013 – 8:37pm

তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী মানা না মানা নিয়ে রাজনৈতিক অবস্থা এখন বেশ এক জায়গায় এসে থেমেছে। চলমান রাজনীতি যেন এখান থেকে মুভ আর হচ্ছেনা। ইতিমধ্যে নানা সন্দেহ, সংশয় দেখা দিয়েছে, আদৌ কি জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে কি হবেনা ? কখনো কখনো বাজারে এই গুজবও শুনা যায়, বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে এরশাদ এবং জাতীয় পার্টিকে সামনে রেখে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সরকারের নিজস্ব সেই ছকে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।

আবার বিপরীত দিকে, বলা হচ্ছে, সরকার সিটি নির্বাচনে বিএনপির জন্য ট্র্যাপ হিসেবে সব কটা আসনই ছেড়ে দিয়েছে, যাতে সরকারের ট্র্যাপে পড়ে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে আওয়ামীলীগ ঘোষিত বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে।

রাজনীতির এই তত্বের বাইরের বাস্তব চিত্র হলো, জনগণ আওয়ামীলীগ ও মহাজোটের জুলুম, নির্যাতন, দুঃশাসন, লুট-পাট, হেফাজতের সাথে অন্যায় আচরণ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে কানা-মাছি খেলা, আর ছাত্রলীগ-শ্রমিকলীগ-যুবলীগের বেপরোয়া ভাব আর মন্ত্রী, এমপি, দলীয় ক্যাডারদের সীমাহীন দম্ভ, অহমিকতা, অশ্লীলতা, আর লুট-পাটের বিপরীতে ব্যালটের মাধ্যমে নিজেদের আস্তা আওয়ামীলীগের উপর থেকে বিরোধী রাজনৈতিক জোটের উপর দিয়ে সরকারকে লাল কার্ড দেখিয়েছে। চার চারটি সিটিতেই শুধুই নয়, গাজীপুরের মতো আওয়ামীলীগের দুর্গেও জনগণ বিএনপির প্রতি আস্তা প্রদর্শন করেছে। বলা হয়ে থাকে গোপালগঞ্জের পরে গাজীপুর হলো আওয়ামীলীগের ঘাটি। স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশ তাই শুনে আসছে, দেখছেও। অথচ হেভি ওয়েট এবং অপেক্ষাকৃত ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব দেয়ার পরেও জাতীয়ভাবে আওয়ামীলীগের দুঃশাসন, নিপীড়ন, আলেম-উলামাদের প্রতি অবজ্ঞা আর নির্যাতন, মিথ্যা আর ধোঁকাবাজির রাজনীতির জন্য জনগণ আওয়ামীলীগের উপর আস্তা ও বিশ্বাস হারিয়েছে। আওয়ামীলীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে নানান ছলচাতুরী আর মিথ্যা স্টোরি সাজিয়ে আর প্রচার-প্রোপাগান্ডা করে রাজনীতিতে এক অসহনীয় অবস্থার সৃষ্টি করেছে। নতুবা তুলনামূলক ভাবে ভালো কাজ করার পরেও হলমার্ক, ডেস্টিনি, পদ্মা,সোনালী ক্যালেংকারী, আবুল-সুরঞ্জিত-কামরুল-হানিফ-মেসবাহ-ম খা আলমগীর-ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগ এর সীমাহীন অনৈতিক কার্যকলাপ আর সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুটপাট, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে মারামারি, কাটাকাটি, প্রভৃতির কারণে আওয়ামীলীগের দলীয় অহমিকা, দাম্ভিকতা, বেপরোয়া আচরণ জনগণ ভালোভাবে নেয়নি। কতিপয় অরাজনৈতিক উপদেষ্টা আর দলীয় লুটেরাদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে মাঠের রাজনীতির প্রকৃত চিত্র নেত্রীর কাছে পৌঁছায়নি বা পোছলেও লুটেরা আর লাফাঙ্গারদের বেহায়াপনা আর বেলেল্লাপনার কাছে নেত্রী বড় নিঃস্ব বা অসহায়ের মতো আত্ম-সমর্পণ জনগণ কোনভাবে পছন্দ করেনি। আর তার প্রমাণ সবকটা নির্বাচনে জনগণ আওয়ামীলীগকে লাল-কার্ড প্রদর্শন। তারপরেও আওয়ামীলীগের বোধোদয় খুব একটা হয়েছে বলে মনে হয়নি।

begum zia.jpgএই মুহূর্তে তাই বেগম জিয়া পরিষ্কারভাবে বলে দিন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে, and there is no other alternative choice. এটাই দেশ ও জাতির দাবি। এখানে আর কোন চুদর-বুদূর চলবেনা।

দুই, মাননীয় দেশনেত্রী জনতার আস্তা পুরোপুরি কাঁধে নিয়ে আপনাকে পরিষ্কারভাবে বলতে হবে, বাংলাদেশে আগামীতে আর কোন জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, দলীয় আধিপত্য বাদ, লুটেরাদের রাজত্ব, কোন বিশেষ মহল বা গোষ্ঠী বা ভবনের উছিলা নিয়ে মিথ বা শক্তি বা কোন স্রোত তৈরি হতে দেবোনা। জাতির কাছে এই আমার ওয়াদা। বাংলাদেশ আর কারো সাথে কোন বৈরিভাব নয়, সমাজে, পরিবারে, দেশে ও জনগণের মধ্যে বিভাজন, বিশৃঙ্খলা আর ভাইয়ে-ভাইয়ে শত্রুতা তৈরি হয়, সমাজ সভ্যতা ধ্বংস করে দেয়-এমন নীতি কখনো গ্রহণ বা উৎসাহিত করা হবেনা। প্রশাসন, আমলা, কর্পোরেশন, শিক্ষাঙ্গন জনগণের সেবক ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রে পরিণত করা হবে।বাংলাদেশ আর কোন আবুল হোসেন, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, হানিফ, কামরুল ইসলাম, কিংবা ছাত্রলীগ-স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতো দলীয় সন্ত্রাসী, লুটেরা আর হলমার্ক, ডেস্টিনি, সোনালী ব্যাংক, পদ্মা কেলেঙ্কারি পুনরায় হতে দিবেনা। আপামর ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক, জনতার কল্যাণের জন্য আগামীর সরকার সকল কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড নিয়মিত আলাপ-আলোচনা ও কনসাল্টেশনের মাধ্যমে পরিচালিত করা হবে।ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস ও গ্রামীণ ব্যাংকে যথাযথ মর্যাদার আসনে নিয়ে যাওয়া হবে, সম্মানিত আলেম-উলামাদের মর্যাদা পূণঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। কারো সাথে বা কোন রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীর সাথে কোন বৈরি আচরণ করা হবেনা বা কোন সন্ত্রাসীদের মদদ দেয়া হবেনা। কঠোর হস্তে দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করা হবে।

বেগম জিয়া, ১৯৯০ সালের এরশাদের পতনের পর ঐ সময়কালীন অবস্থা ও ঘটনাবলীর দিকে থাকান। জনগণ ঐ সময়ের অতি দাম্ভিকতা, অতি আত্মবিশ্বাস, আর অতি মুনাফা লোভী দুষ্টুদের ম্যাসেজ কখনো গ্রহণ করেনি। জনগণ এখনো মন্দের ভালো হিসেবে আপনার নেতৃত্বে তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার স্বপ্ন বাস্তবায়নের আলোর পথের সন্ধান করে। সেজন্যেইতো আওয়ামীলীগের দুঃশাসন আর জুলুমের বিরুদ্ধে আপনার প্রার্থীদের বিপুল ভোটে নির্বাচিত করে। জনগণের এই চাওয়া, এই পাওয়ার প্রতি দয়া করে একবারের জন্য হলেও খাটি জনকল্যাণের নিমিত্তে এবং শেষ বয়সে এসে, অনেকতো পেয়েছেন, এই বাংলাদেশ আপনাকে অনেক দিয়েছে, জনগণের মুখে সত্যিকারের হাসি ফুটানোর জন্য, এবং সত্যিকারের গণতান্ত্রিক জবাবদিহিমূলক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে শেষবারের জন্য হলেও বাংলার দুখী মানুষের কল্যাণের লক্ষ্যে ও মেজর জিয়ার ন্যায় চিরঞ্জীব-জনতার খালেদা জিয়া হয়ে থাকার জন্য বাস্তবিক এক নির্মোহ ও কল্যাণমূলক সরকারের ধারণা সৃষ্টি ও প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ডাক দিবেন ও ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে এনে সেই কমিটম্যান্ট বাস্তবায়ন করে জনতার মাজে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার এক মুকুটহীন সম্রাজ্ঞী হয়ে শেষ নিশ্বাস নেয়ার উদগ্র বাসনা নিয়ে জাতিকে ডাক দিন, আমার বিশ্বাস বাংলার আপামর জনতা আপনার সেই ডাকে সাড়া দিবেই।জয় হউক বাংলার জনগণের।

৮ জুলাই ২০১৩।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *