তত্বাবধায়ক সরকার-জনগণের চাওয়া পাওয়া

তত্বাবধায়ক সরকার-জনগণের চাওয়া পাওয়া

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ

“চতুষ্কুন” মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক অনবদ্য রচনা।রাজ কুমারের মাথা ব্যাথার কারণ খুজতে গিয়ে যুক্তি-তর্কের অবতারনা প্রসঙ্গে বলেছেন, তার চোখ ঠিক আছে,দাত ঠিক আছে,ব্লাড প্রেসার ঠিক আছে,হজম শক্তি ঠিক আছে,শরীরের সমস্থ কল-কব্জাগুলোই মোটামুটি এতোখানি ঠিক আছে যে মাঝে মাঝে মাথা ব্যাথার জন্য তাদের কোনভাবেই দায়ী করা যায়না,তবু মাঝে মাঝে মাথা ধরে (পৃ-২৩৫)।মানব শিশু কেবল উদোরপিন্ডি নিয়েই জন্ম নেয়না,সে যখন জন্ম নেয় তখন দুটি পা,দুটি হাত,চক্ষু,কর্ণ,নাশিকা,লৌহকণিকা ইত্যাদি উপসর্গ নিয়েই জন্ম গ্রহণ করে,অবশ্য ব্যাতিক্রম বিকলাঙ্গ শিশু,তা কেবল ব্যাতিক্রমই,আর ব্যাতিক্রম কখনো উদাহরণ হয় না।

মানব দেহকে বুঝতে হলে যেমন তার শিরা-উপশিরা,রক্ত-লৌহকণিকা, নাক, কান, গলা,নখ,চুল,সবই জানতে হয়,বুঝতে হয়।ডাক্তার যে ভাবে ডায়াগনোসিস করে নাড়ি,নক্ষত্র সব কিছু পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করে ব্যাবস্থাপত্র দিয়ে থাকেন,ঠিক সেই ভাবে সমাজকে বিশ্লেষণ করতে হলে, জানতে হলে,বুঝতে হলে,একইভাবে সমাজের গভীরে গিয়ে এর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া,অবস্থান,একেবারে মূল থেকে উপর পর্‍্যন্ত জানতে হয়,বুঝতে হয়।নতুবা তা কখনোই যথার্থ হয়না,হলেও তা সমাজের বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়না।

বাঙ্গালী,বাংলা ভাষা,বাংলা-বাংলাদেশ-নৃতত্ত্বের দিক থেকে হাজার বতসরের গৌরবময় ধারাবাহিক ঐতিহ্যমন্ডিত ইতিহাস,সংগ্রামের,বিবর্তনের ফসল।শত সহস্র পুরনো অথচ অধুনিক নান্দনিক আমার এই সুন্দর বাংলা মা,এর উপর বয়ে গেছে অনেক ঝড়,ঝাপটা,অনেক চড়াই উতড়াই পেরিয়ে আজকের আমার এই দুখিনি বাংলা মা হত স্রী রূপ আজও সারা বিশ্বের বাংলা প্রেমিককে গভীর মমতায় আকৃষ্ঠ করে।

প্রিয় জন্মভূমি এই সুন্দর বাংলাদেশ এবং এর লক্ষ-কোটি জনগণকে প্রতিনিয়ত অনেক সংগ্রাম আর ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হচ্ছে, জীবনের মানে খুজতে হচ্ছে,প্রতিনিয়ত খুন-খারাবী,রাজনৈতিক হানাহানি,প্রতিহিংসা নিয়েই এর জনগনকে জীবন চালাতে হচ্ছে।রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ নামক এই রাষ্ঠ্রটি জন্মের পর থেকে আজ পর্যন্ত জাতীয় কোন ইস্যূতে সব কটা রাজনৈতিক দল দূরে থাকুক,প্রধান-প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোই কখনো এক হতে পারে নাই।১৯৮৩ সালের ১৪ ই ফেব্রুয়ারীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীদের রক্তক্ষয়ী ছাত্র আন্দোলনের ঐক্যবদ্ধ ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ গঠণের প্রেক্ষাপটে সশরীরে অংশ গ্রহণের সুযোগে যে ঐতিহাসিক গণআন্দোলনের ভিত রচিত হয়েছিলো,যার ফলশ্রুতিতে পরবর্তিতে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ত্বাধীন ১৫ দলীয় ঐক্যজোট,বি,এন,পির নেতৃত্ত্বাধীন ৭ দলীয় ঐক্যজোটের জন্ম নিয়ে জনতার আন্দোলনকে কাংখিত অভিষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে নিয়ে গিয়ে এক প্লাট ফর্মে নিয়ে এসেছিলো।যেখান থেকে রচিত হয়েছিলো স্বৈরাচারের পতনের পর দেশ গণতান্ত্রিক পথে পরিচালনার লক্ষ্যমুখী যেতে, যে পথ, যে পন্থা অবলম্বন করা হয়,সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সেদিন সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্দ্বভাবে সংবিধানে অন্তর্ভূক্ত করেছিলো-বহু রক্ত আর ত্যাগের ঐক্যবদ্দ্ব আন্দোলনের একমাত্র ইউনিক এক ফসলের নাম তত্ত্বাবধায়ক সরকার।আগেই বলেছি আমাদের বাঙ্গালীদের সশস্র মুক্তিসংগ্রামের পরে আরেকবার,এই একটিবার,একটিক্ষেত্রে আমরা সব কটা রাজনৈতিক দলগুলো,সকল শ্রেণীর জনগণকে সাথে নিয়ে এক প্লাট ফর্মে নিয়ে এসেছিলাম বা রাজনৈতিক দলগুলো আসতে পেরেছিলো,আর সে টা ছিলো নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন সম্পন্ন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্থান্তর।এখন পর্যন্ত এই একটি ক্ষেত্রেই (স্বাধীনতার পরে) আমরা এক হতে পেরেছিলাম।অতি সাম্প্রতিক কালের দুটি জনপ্রিয় বাংলা দৈনিকের জনমত জরিপেও তা বেরিয়ে এসেছে।গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত সকল শ্রেণীর জনগনের মধ্যে এই একটি ক্ষেত্রেই এক অসম্ভব রকমের ঐক্য এবং মিল পরিলক্ষিত হয়।

এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থার নানা দূর্বলতা থাকা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত যে কয়টা নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়েছে, মোটামুটি ভাবে ছোট খাটো ত্রুটি বিচ্যুতি বাদ দিলে দেশে-বিদেশে সর্ব মহলেই বরং একবাক্যে প্রসংশিত হয়েছে।নির্বাচনে পরাজিত রাজনৈতিক দল গুলো ট্যাক্টিক্যাল ও টেকনিক্যালী যত কথাই বলুক না কেন নিজেরাও এর অধীনে নির্বাচন যে স্বতঃস্ফুর্ত এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে তা নিজেদের অজান্তে হলেও স্বীকার করে থাকে।তা ছাড়া বাংলাদেশের মানুষ,সুশীল সমাজ,রাজনৈতিক বিশ্লেষক,গবেষক,ছাত্র সমাজ সকলেই জানেন যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন কালীন সময়ে সমগ্র প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ করা প্রায় অসম্ভব,আমাদের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং অভিজ্ঞতাই তাই বলে।

২)বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ এবং এর সংস্কৃতি এখনো আথুর ঘরে থেকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত নিয়ে একটু একটু করে বেড়ে উঠার আলোর দিকে ধাবিত হচ্ছে, এই বেড়ে উঠা এখনো অনেক শংকা এবং ঝড়ের মধ্যে হাবু-ডুবু খাচ্ছে।এখন পর্যন্ত গণতান্ত্রিক কোন ইনষ্ঠিটিউশন তেমন ভাবে তথা প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তির উপর গড়ে উঠেনি।জনগণের মাইন্ডসেট বিশেষ করে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিতর থেকে যে ভাবে গণতান্ত্রিক রীতি নীতি চর্চা হওয়ার কথা ছিলো,নেতৃত্ব যে ভাবে গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমে গড়ে উঠার কথা ছিলো,সে রকম কোন লক্ষণ এখন পর্যন্ত কোন দলের মধ্যে দেখা যায় নাই,জবাব দিহিতাতো সুদূর পরাহত।দলীয় সন্ত্রাস,রাজনৈতিক সহিংসতা,পেশীশক্তির যথেচ্ছ ব্যাবহার, টেন্ডার, চাদাবাজী,দলীয় নেতা-নাত্রীদের স্থানীয় পর্যায়ে মারামারি,আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তার এর অহরহ চেষ্ঠা,প্রতিপক্ষের রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীদের অহেতুক হয়রানী,প্রশাসনকে দলীয়ভাবে ব্যাবহারের নগ্ন চেষ্ঠা,গোন্ডা-পান্ডা আর পুলিশ দিয়ে পেঠানো-এই হলো আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি,দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে এই ধারা আরো জোরে শোরে দিনের পর দিন,মাসের পর মাস চলেই আসতেছে,যে দলই ক্ষমতায় যায়, সেই তার নিজের মতো করে দলীয় লোক দিয়ে স্বজন প্রীতির মাধ্যমে প্রশাসনকে ব্যবহার করে থাকেন,গণতান্ত্রিক রাজণীতি চর্চার সামান্যতম কোন উদ্যোগ কখনো কোন রাজনৈতিক দলের মধ্যে পরিলক্ষিত হয়েছে বলে কখনো ভুলেও মনে পড়েনা।তাছাড়া দল গুলোর মধ্যে একে অন্যের প্রতি পারস্পারিক শ্রদ্ধ্বা,ভালোবাসা একেবারেই শুন্যের কোঠায়-এই যখন অবস্থা, সে খানে দলীয় সরকারের অধীনে বাংলাদেশের সাধারন নির্বাচন কতটা নিরপেক্ষ এবং আশানুরুপ হবে,সে বিষয়েতো সংশয় থেকেই যায়।

৩) বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এসেই যে সীমিত স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠণ করেছিলো,আশা করা হয়ে ছিলো শেখ হাসিনার নেতৃত্ত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে বর্তমান নির্বাচন কমিশন কে  পূর্ণাঙ্ঘ এবং স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠনে ভূমিকা রাখবে।এখন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে কোন ধরনের আর্থিক কোন ক্ষমতাই প্রধান করা হয় নাই, যা স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের জন্য বড্ড আবশ্যিক।নির্বাচন কমিশনার কি ভাবে নির্বাচন করা হবে,এখন পর্যন্ত তারই কোন দিক নির্দেশনা নেই।বর্তমান নির্বাচন কমিশনারদের বিদায়ের পর কি ভাবে পরবর্তি নির্বাচন কমিশনার সকলের কাছে গ্রহণ যোগ্য করে গঠিত হবে তা নিয়ে বর্তমানে মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্যোগে সংলাপ যদিও যথেষ্ঠ প্রসংসার দাবী রাখে,তথাপি বাংলাদেশ সংবিধানের ১১৮ এবং ৪৮ অনুচ্ছেদ পড়লে এই বিষয়ে খুব একটা আশার সঞ্চার করেনা।কেননা সব কিছুইতো দলীয়ভাবে দলীয় সরকারের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে,জাতীয় আশা-আকাংক্ষা খুব একটা পরিলক্ষিত হচ্ছেনা।বিশেষ করে আদালতের রায় প্রকাশের আগে অত্যন্ত তড়ি-ঘড়ি করে যে ভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থা সংবিধান থেকে বাতিল করা হয়েছে,তা দেখে সচেতন কোন নাগরিক মাত্রই আগামী সাধারণ নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে করার ব্যাপারে সংসয় এবং সন্দেহ পোষণ অমূলক নয়।তাছাড়া দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশনের হাত পা যে অনেকটা বাধা থাকে,তাতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাহেব নিজেই স্বীকার করেছেন,যদিও স্থানীয় বেশ কিছু নির্বাচন দলীয় সরকারের মাধ্যমে করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন কষ্ঠাতীতভাবে নিরপেক্ষতার প্রমাণ রেখেছে।এ ক্ষেত্রে জনতার স্বতঃস্ফুর্ততা,ইলেক্ট্রনিক এবং প্রিন্ট মিডিয়ার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।আওয়ামীলীগের নেতৃত্ত্বাধীন অন্তর্বর্তিসরকারের অধীনে নিবার্চন কমিশন সাধারণ নির্বাচনে কতটুকু নিরপেক্ষ থাকতে পারবে,সেটা একটা বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন।কেননা আওয়ামীলীগ এখন পর্যন্ত এমন কোন দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করতে পারেনন নাই যে সাধারণ নির্বাচন নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার ব্যাপারে বিশ্বাস স্থাপন করা যায়,একই কথা বি,এন,পির বেলায় ও প্রযোয্য।

৪)প্রথম আলোর জনমত জরিপে দেখা যায় অধিকাংশ জনগণ তত্ত্বাবধায়ক সকারের পক্ষে,চলমান সংলাপ,বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর মিটিং,সেমিনার,বক্তব্য,বিবৃতি,পথ সভা ইত্যাদি কার্যক্রমে দেখা যায় ত্তত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে সকল জনমত পরিলক্ষিত হচ্ছে।ড, এমাজ উদ্দীন,ড,মনিরুজ্জামান মিয়া,ড,আসিফ নজরুল সহ অধিকাংশ শিক্ষাবিদ, ড,কামাল হোসেন সহ প্রায় সকল প্রথিতযশা আইনবিদ,সাংবাদিক, সুশীল সমাজ,বি,এন,পি সহ রাজনীতিবিদ,ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ প্রায় সকলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে।বি,এন,পির নেতৃত্ত্বাধীন চার দলীয় জোট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন ছাড়া আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার পক্ষে তাদের সুস্পস্ট অভিমত প্রকাশ করেছে,সাথে সাথে জনমত গঠনের লক্ষ্যে অন্দোলন করার প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।অথচ আওয়ামীলীগ বলা যায় এককভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্দ্বে অবস্থান নিয়ে প্রচার- প্রপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন।প্রধানমন্ত্রী নিজেও এর বিরুদ্দ্বে জোড়েসোড়ে প্রচার শুরু করেছেন।

অথচ জনমত তপ্তত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে,এই যখন বাস্তব অবস্থা, তখন স্বাভাবিক ভাবেই আগামী নির্বাচনের নিরপেক্ষতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা  নিয়ে অগ্রীম প্রশ্ন থেকেই যায়।

৫)গণতান্ত্রিক শাসনতো জনমতেরই প্রতিফলন হয়ে থাকে,আর সেই জনমত যদি হয় জনগনের কল্যান সাধন, তা হলেতো আওয়ামীলীগের নেতৃত্ত্বাধীন মহাজোট সরকারের উচিত জনমতের প্রতি শ্রাদ্দ্বা প্রদর্শন।তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যাবস্থার জন্যতো মহাজোটের নেতৃত্ত্বাধীন রাজনৈতিক দল সমূহ(এরশাদ এবং তার জাতীয় পার্টি ছাড়া)অনেক আন্দোলন সংগ্রাম করেছিলেন,অনেক রক্ত,অনেক ত্যাগ,আর সংগ্রামের ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো।হতে পারে এর কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি,তাই বলে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার আগ পর্যন্ত এটাকে বিলুপ্ত করে নয় বরং একে আরো অধুনিক এবং যুগপোযোগী করে গড়ে তোলা উচিত।এই মুহুর্তে কোন অবস্থাতেই বিলুপ্ত করে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।তাই আশা করবো মহাজোট সরকার গণতান্ত্রিক রীতি নীতি অব্যাহত রাখার স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পূণরায় চালু করে সুষ্ঠু নির্বাচন এর পরিবেশ সৃষ্ঠি করবেন।বিশিষ্ঠ রাষ্টবিজ্ঞানী রবার্ট ডাল যেমন সুন্দর করেই এক্ষেত্রে বলেছেন,”politics is one of the unavoidable facts of human existence. Everyone is involved in some fashion at some time in some kind of political system.”মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজনীতি রাজনীতি খেলা খেলতে গিয়ে সর্বস্থরের জনগণকে এক ভায়াবহ স্পর্শকাতর বিষয়ে রাজনৈতিক ভাবে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ফেলেছেন,যে খানে কথা ছিলো সত্যিকারের কল্যাণমূলক সরকার জনগণের সমস্যা সমাধানে জনগণকে এমনভাবে উদবুদ্দ্ব করবে,বিদ্যুত,পানি,নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের সহনশীল রাখা,আইন-শৃংখলার উন্নতি বিধান, রাস্থা-ঘাট,যোগাযোগ,সাস্থ্য খাতের উন্নতি-এই সব কাজে ব্যাপৃত থাকবে।তা না করে নিজেদের আখের গোছানোতে উঠে পড়ে লাগার কোন কারণই ছিলোনা,সন্ত্রাস, দূর্ণীতি, আইন-শৃংখলা,দ্রব্য মূল্য সহনশীল রাখার চেষ্ঠা করলে ক্ষমতায় আবার কিভাবে ফিরে আসতে হবে,অহেতুক সে চিন্তা করতে হতোনা।রাজনীতির ময়দানকে অহেতুক উত্তপ্ত করে দিয়ে বাংলাদেশের নিরন্তর সংগ্রাম করে বেচে থাকার লড়াইরত জনতাকে হেনরী ডব্লিউ নেভিনসনের মতো মনে করিয়ে দিলেন, “ভালোবাসার মতো স্বাধীনতার ( এখানে অধীকার আধায়ের) জন্যও আমাদের নিরন্তর সংগ্রাম করতে হয়ঃ ভালোবাসার মতো স্বাধীনতাকেও প্রতিদিন নতুন করে জয় করে নিতে হয়।আমরা সর্বদা ভালোবাসার মতো স্বাধীনতাকেও হারাচ্ছি,কারণ প্রত্যেক বিজয়ের পর আমরা ভাবি আর কোন সংগ্রাম ছাড়াই বিজয়ের ফল স্থিরচিত্তে উপভোগ করা যাবে…., ,স্বাধীনতার যুদ্দ্ব কখনো শেষ হয়না, কেননা এ হলো এক নিরন্তর সংগ্রাম।“ নীতিনির্ধারকদের যত তাড়াতড়ি এর বোধোদয় হবে দেশ এবং জনগণের তত তাড়াতাড়িই মঙ্গল সাধিত হবে,আশা করব সরকার সদয়তার সাথে এই বিষয়টি যথাযথ গুরুত্ত্বের সাথে বিবেচনা করবেন।

Salim932@googlemail.com

January 07,2012

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *