সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ- হাইকোর্ট থেকে
ব্রিটেনের টাওয়ার হ্যামলেটস বারার প্রথম নির্বাচিত বাঙালি নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমানকে হাইকোর্টের রায়ে দুষী সাব্যস্থ করে রায় দিয়েছেন। আজ সকালে হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়েছে লুতফুর রহমান নির্বাচনী আইন লংঘন করেছেন এবং দুর্নীতি ও অবৈধ প্র্যাকটিসের জন্য দুষী সাব্যস্থ হয়েছেন।
হাইকোর্টে জাজ ইলেকশন কমিশনার রিচার্ড মাওরী নির্বাচনকে বাতিল করেছেন এবং লুতফুর রহমানকে ২৫০,০০০ পাউন্ড কোর্ট কস্ট দেয়ার আদেশও দিয়েছেন।
চারজন ভোটার নির্বাহী মেয়র লুতফুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্বাচনী এক্টের অধীনে হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছিলেন।
একটি ল`ইয়ার গ্রুপ লুতফুর রহমানের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে নির্বাচনকালীন সময়ে পুলিং স্টেশনে ও নির্বাচনী সময়ে প্রভাব খাটানো, ভয় ভীতি প্রদর্শন, ব্যালট পেপার ফ্রড, পোস্টাল ভোটার ফ্রড অভিযোগ প্রমাণের এভিডেন্স দায়ের করেন, উপস্থাপন করেন।
আদেশ দেয়ার সময়ে মিঃ মাওরী মন্তব্য করেন লুতফুর রহমান বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত মেয়র যিনি নির্বাচনের সময় রেস এবং রিলিজিয়াস- ট্র্যাম্প কার্ড ব্যবহার করেন (http://www.telegraph.co.uk/news/uknews/crime/11557662/Tower-Hamlets-mayor-Lutfur-Rahman-guilty.html )।
মিঃ মাওরী আদেশে আরো বলেন, আনীত অভিযোগ সমূহ নিয়ে লন্ডনে ইলেকশন কোর্ট ট্র্যায়ালে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে শুনানী চলেছিলো।
মাওরী একই সাথে আদেশে লুতফুর রহমানকে ঐ সব অভিযোগের সময়ে একজন ইভেসিভ উইটনেস হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
লন্ডন মেয়র বরিস জনসন ঐ সময় ভার্ডিক্টে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, আমি রায়ে খুশী হয়েছি এই কারণে যে শেষ পর্যন্ত টাওয়ার হ্যামলেটসের আকাশ থেকে মেঘাচ্ছন্ন দুরীভূত হয়েছে।
বরিস আরো বলেন, আমরা এখন নির্বাচনের দিকে যাবো- এবং জনগণকে আশ্বস্থ করছি যে আর এ ধরনের কাজের পুণরাবৃত্তি হবেনা।
আইনী ব্যবস্থা চলাকালীন সময় থেকে বরাবরের মতোই লুতফুর রহমান পরিস্কারভাবে বলে আসছিলেন তিনি কোন অন্যায় বা অবৈধ কাজ করেননি। এর আগেও তিনি বলেছিলেন যদিও সামান্যই, কিন্তু তিনি কোন অন্যায়ের সাথে জড়িত নন। এক সমাবেশে তিনি সকল অন্যায় কাজের সাথে তার জড়িত না থাকার দ্ব্যার্থ ঘোষণাও দিয়েছিলেন।
আজকের ভার্ডিক্ট নিয়ে লুতফুর রহমানের হয়ে ডেপুটি মেয়র অলিয়ার রহমান বলেন, আদালতে রায় আমরা মেনে নিয়েছি, কারণ আইনের প্রতি আমরা শ্রদ্ধাশীল, তবে রায়ে আমরা সন্তুষ্ট নই।
অপরদিকে জন বিগ সহ লেবার, কনজারভেটিভ, গ্রিন পার্টি হাইকোর্টের রায়ে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন।
লুতফুর রহমানের আইনজীবীরাও এই চারজনের আনীত অভিযোগসমূহকে ইচ্ছাকৃতভাবে এবং সম্পূর্ণ ফলস হিসেবে অভিহিত করেছিলেন।
উল্লেখ্য দ্বিতীয়বারের মতো লুতফুর রহমান গত ইলেকশনে ৩,০০০ ভোট বেশী পেয়ে ফার্স্ট পার্টি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
23rd April 2015, London.