জাতিসংঘ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো বেশ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ঢাকায়। ইতিমধ্যে তিনি দফায় দফায় বৈঠক করেছেন শেখ হাসিনা ওয়াজেদ, খালেদা জিয়া, হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও মার্কিন কূটনীতিক সহ শীর্ষ ব্যক্তিত্বদের সাথে।তারানকোর ব্যস্ততার মধ্যে আওয়ামীলীগের সৈয়দ আশরাফ ও বিএনপির শমসের মুবিন যে ব্রিফিং করেছেন, তাতেও খুব একটা সংকট সমাধানের ওয়ে বা পথ রেখার কোন নির্দেশনা তারা প্রেসকে অবহিত করেননি।
জাতিসংঘ কিংবা মার্কিন দূতেরাও লক্ষ্যণীয়ভাবে প্রেসকে এখন আর কিছুই বলছেননা। ভারতীয় দূতাবাস কিংবা পঙ্কজ শরণও কিছুই এখন আর আগের মতো খোলাসা করছেননা। তারানকোর এই সফরের মধ্যখানেই শেখ হাসিনা তার রুটিন মাফিক রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাত করেছেন আজকে সন্ধ্যায়। গতানুগতিক ভাবে এই সাক্ষাত হলেও আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সহ রাষ্ট্রপতির সাথে সাক্ষাত অবশ্যই বেশ তাৎপর্য বহন করছে। এ বিষয়ে আসছি একটু পরে। তার আগে দেখা যাক এই তারানকো জাতিসংঘের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিযুক্তির আগে কোথায় মিশনে বা কর্মে নিযুক্ত ছিলেন।
কে এই তারানকোঃ-
উইকিপিডিয়া ও জাতিসংঘ মিডিয়া সেন্টারের বরাতে জানা গেছে, এই তারানকো জাতিসংঘে জয়েনের আগে ১৯৯৪ এবং ১৯৯৮ সালে আরব দেশ সমূহের সবচাইতে বিস্ফোরনম্মুখ প্যালেস্টাইনের গাজা উপত্যকার স্পেশাল এডমিনিষ্ট্রেটিভ রিপ্রেজেন্টিটিভ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি ঐ সময়ে পাঁচ বছরের মতো আরব দেশ সমূহে ইউনাইটেড ন্যাশনস ডেভেলপম্যান্ট প্রোগ্রামের-ইউএনডিপি আওতায় ডেপুটি এসিসস্ট্যান্ট এডমিনিস্ট্রেটর এবং রিজিওনাল ডিরেক্টর হিসেবে আরব দেশসমূহে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৪- ১৯৯৮ সালের গাজা উপত্যকার ভয়াবহ পরিণতি ও প্রতিনিয়ত যুদ্ধ বিধ্বস্ত এবং ততপরবর্তী ইউএন রেজুলেশনের আন্ডারে ও ইসরাইলের একতরফা চাপিয়ে দেয়া সমাধানের রুট ধরেই গাজা উপত্যকা ও প্যালেস্টাইনের বিপ্লবী নেতা ইয়াসির আরাফাতের ও ফাতাহ গ্রুপের সরকারে আত্মীয়করণ ও সীমিত স্বায়ত্তশাসনের ভিতর দিয়ে স্বাধীন প্যালেস্টাইন সরকার আত্মপ্রকাশের অধ্যায় বিশ্ব অবহিত এবং অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো সেই সময়ে এডমিনিষ্ট্রেটিভ রিফর্মে বেশ নেপথ্যের দরকষাকষির ভূমিকা নিয়েছিলেন, জাতি সংঘের পরবর্তীতে সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলের পদে আসীন তার সাফল্যের স্বীকৃতিরই প্রমাণ।
তারানকো ও মার্কিনীদের ততপরতাঃ-
এহেন তারানকো দুবারের মতো আমাদের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে জাতি সংঘের স্পেশাল এনভয় হয়ে আসাটা বিশেষ তাৎপর্য বহন করে।বিশ্বব্যাপী আজকের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সহযোগী ডিপ্লোম্যাসির দাপটে প্রভাবে এই অঞ্চলে ভারতের সাথে টাই আপ করে মার্কিন কূটনীতি বঙ্গোপসাগর ও সোনাদিয়া দ্বীপ, পার্বত্য চট্টগ্রাম আর সেন্টমার্টিন অঞ্চলকে ঘিরে ভারতের স্বার্থের অনুকূলে হলেও মূলত উদীয়মান টাইগার চীন নামক এই নয়া শক্তিধর রাষ্ট্রের এই অঞ্চলে আধিপত্য রুখে দিয়ে নিজেদের দাপট প্রতিষ্ঠা ও অক্ষুণ্ণ রাখার নীরব এক কূটনীতি মার্কিনীরা তলে তলে করে যাচ্ছে-তাতে কোন সন্দেহ নেই। আর সেই নীরব কূটনীতির অবিমিশ্র ও সুদূর প্রসারী ফসল ঘরে তুলতে কখনো ভারতীয় লবি, কখনো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার পক্ষ পাতিত্ব অবস্থান, আবার কখনো জঙ্গি, সন্ত্রাস দমনে সোচ্চারের নামে মৌলবাদ বিরোধী অবস্থান আবার সেই একই মৌলবাদী গোষ্ঠীকে আদর-সোহাগে নিজেদের কোলে ডেকে নিয়ে জামাই আদর-সবই সেই একই সূত্রে গাঁথা। এখানে তাই মার্কিনীদের কখনো সরকারের সাথে, কখনো বিরোধীদের সাথে, কখনো মোল্লা ও আলেম উলামাদের সাথে আবার কখনোবা ভারতের সাথে সমান অবস্থান ও বৈপরীত্য প্রকাশ্যে ঘোষণা- এই অঞ্চলের বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক নিজেদের বিশাল আঞ্জাম ও আগামীর স্বপ্নের বাস্তবায়নের কূটনৈতিক খেলার গিনিপিগ হিসেবে বাংলাদেশকে বেছে নেয়া- মার্কিনীদের চিরাচরিত হিসেবী ও বেঈমানি ভূমিকার কথাই জানান দিয়ে যায়। কারণ নিজেদের স্বার্থের অনুকূলে এরা পারেনা হেন কোন কাজ নেই। কখন কাকে ছুঁড়ে মারতে হবে, কাকে কুলে তুলে নিতে হবে-মার্কিনীরা মোক্ষম সময়ে সেটা ভালো করেই জানে। ইতিমধ্যে সারা বিশ্বে সেটা বহুভাবে প্রমাণিত। তারানকো মিশন মার্কিনীদের সেই অদেখা, অদৃশ্য খেলার মঞ্চায়নের এডভান্স টিম হিসেবেই এই বাংলাদেশ আগমন সেটা ভালোভাবেই অনুভূত হচ্ছে।
শেখ হাসিনার দৃঢ়তা নিয়ে দুই ব্রিটিশ এক্সপার্টদের বিশ্লেষণঃ-
শেখ হাসিনা তারানকোর সাথে প্রথমদিনের বৈঠকে যে দৃঢ়তার সাথে সংবিধানের প্রশ্নে এবং নির্বাচন পেছানোর ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারের কথা বলেছেন- তা নিয়ে কথা হয় সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং জাতিসংঘ পলিসি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও একই সাথে আরেকজন বডি ল্যাংগুয়েজের উপর অত্যন্ত অভিজ্ঞ- এই দুই ব্রিটিশ বিশেষজ্ঞের সাথে। কোভেন্ট গার্ডেনের খোলা আকাশের নিচে, ট্রাফালগার স্কয়ারের রাস্তা ধরে হেটে গিয়ে এই দুই বিশেষজ্ঞের সাথে হঠাৎ এক দৈব দুর্বিপাকে সাক্ষাত বলা যায়, না চাইতে লোভনীয় এক বিষয় হাতের মুঠোয় পাওয়া। মোবাইলে ধারণকৃত তারানকো ও হাসিনার বৈঠকের বিস্তারিত উপস্থাপন করতেই তাদের অভিমত সংক্ষেপে হলো, হাসিনা বোধগম্য কারণেই অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথেই তারানকোর দূতিয়ালির মাঝখানে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। তারানকোকে সংবিধান ও নির্বাচনী তফসিল পেছানো বা পরিবর্তনের ব্যাপারে নিজের অবস্থানের ম্যাসেজ অত্যন্ত সোজা সাপ্টাভাবে অথচ গভীর ডিপ্লোম্যাটিক ভাষায় দিয়েছেন। বুঝাই যাচ্ছে, এরকম বিরুদ্ধ এক খাদের গভীরে অবস্থানের মধ্যে থেকেও শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তারানকোর দূতিয়ালির মাঝে হাসিনা ম্যাসেজ এমনভাবে দিয়েছেন, সংবিধানের মতো আইনি বিষয় তিনি প্রাধান্য দেয়ার সাথে সাথে বুঝিয়ে দিয়েছেন, শক্তিশালী বিশ্ব সভায় হাসিনার পাশে আরো এক শক্তিশালী প্রতিবেশী আছে, যারা বিশ্ব সভার কূটনীতিতে হাসিনার ম্যাসেজ মাস্টারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। তারানকো অভিজ্ঞ ডিপ্লোম্যাট- হাসিনার অত্যন্ত শক্ত এবং দৃঢ় অবস্থানের এই বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আচ করেই এখন ছক সাজাবেন নাকি নিজেদের ফর্মুলায় এগিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি আরো জটিল ও ভয়াবহ করে তুলতে ভূমিকা রাখবেন, সেই জন্য আরো কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হতে পারে।
তারানকোর সফর ও জাফর-এরশাদের খেলাঃ
এদিকে তারনকো মিশনকে সামনে রেখেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ এবং কাজী জাফর নিজেদের হীন স্বার্থ চরিতার্থ করতেই ষড়যন্ত্রের ছক আটে। তবে হাসিনার দৃঢ় মনোভাব আর এরশাদ ইস্যুতে ছাড় না দেয়ার প্রেক্ষিতে এরশাদ-জাফরের ষড়যন্ত্রে আওয়ামীলীগ পা দেয়নি। হাসিনা জানেন, তিনি এদের ষড়যন্ত্রে পা না দিলেও বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া এরশাদ-জাফরের ষড়যন্ত্রে আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলার অভিপ্রায়ে এই খেলায় পা দিবেনই। ফলে তাই হয়েছেও। এরশাদ-জাফরের ষড়যন্ত্রের কারণে তারেক রহমানের জন্য রাজনীতির অঙ্গনে পদচারণা (মার্কিনীদের ছকে) সহসাই পুনরায় অভিষেকের পথ ওরা বন্ধ করে দিতে সক্ষম হয়, যদিও আপাতত: মনে হচ্ছে বিএনপি নেত্রী এরশাদ ও জাফরের প্রশ্নে অনেক লাভবান হয়েছেন, হাসিনা এরশাদের সরে আসাতে বেকায়দায় পড়েছেন। কেননা বিএনপি ছাড়া এরশাদকে নিয়ে হাসিনার নির্বাচন করা না করা দুটোই প্রশ্নের সম্মুখীন। সুতরাং জাফর-এরশাদের বিএনপি ঘেঁষা বিএনপির রাজনীতির জন্য খুব একটা দূরদর্শী সিদ্ধান্ত নয়, সেটা সকলেই জানেন। কেননা এরশাদ সব সময় এক সন্দেহজনক রাজনৈতিক সোলজার। তার উপরেও হাসিনার সরকারের সাথে এরশাদের আচরণ আগা গোঁড়া থেকেই ছিলো সন্দেহের বাতিকে ঘেরা। যদিও সে শুরু থেকেই নিজেকে আবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার সকল চেষ্টাই অব্যাহত রাখেন এবং সেটা সে পরিষ্কার করেই বেশ কয়েকবার বলেছেনও। কাজী জাফর এরশাদের মতোই আরেক ডিগবাজী বিপ্লবী-সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য ওস্তাদ। কারণ এই ওস্তাদ-শাগরেদ মূলত কারো নয়, এরা নিজেদের স্বার্থ ছাড়া আর কারো কল্যাণ করতে পারেনি, পারবেনাও না। বাংলাদেশকে এখন জাতিসংঘের গিনিপিগ বানানোর কৌশলী খেলার শরিকের ভূমিকায় এরাও অবতীর্ণ।
তারানকোর সাথে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনী প্রধানের সাক্ষাতে সরকারের না এবং –
মন্দের ভালো একটা কাজ হাসিনার সরকার করেছেন। আর তা হলো তারানকো কে রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীর প্রধানের সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দেননি। যত নিন্দাই করা হউক না কেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে জাতি সংঘ দূতকে কার কার সাথে সাক্ষাতের অনুমতি দেয়া দরকার এবং যখন একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, সেই সময়ে সাক্ষাতের বিষয়টা সরকার নিয়ন্ত্রণ কিংবা সকল দরজা ডিপ্লোম্যাটদের জন্য অবারিত না ও রাখতে পারে- সেটা যে সরকারই থাকবে সে তাই করতেই পারে । সরকারের পলিসি এবং অস্থিতিশীল অবস্থানের অজুহাতে আর যাতে অস্থিতিশীলতার সুযোগ সৃষ্টি না হয়, সেজন্য হাসিনার সরকারের এই কাজটি বেশ ভালো হয়েছে। আর এই অবস্থায় আলামত স্পষ্ট তারানকোর উদ্যোগ ব্যর্থ হতে চলেছে। যার প্রমাণ এরশাদ আবারো মত পাল্টানোর সুযোগ খুঁজছেন। যদি তাই হয়, হাসিনার সরকারের একচোখা নীতিতে তারানকোর দূতিয়ালি সরকারের জন্য খুব একটা জরুরী মনে হচ্ছেনা, অন্তত সরকারের দিক থেকে।
জাতিসংঘের অবস্থানঃ-
জাতিসংঘ শেষ পর্যন্ত চাইবে নিজের ভূমিকা এখানে দৃশ্যমান রাখতে। কেননা তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের রাজনৈতিক সমাধানে জাতিসংঘ কিছুতেই ব্যর্থতার দায় নিয়ে পিছু হটবেনা। হাসিনা এখন নিজের অস্তিত্বের প্রশ্নে নির্বাচন করতে বদ্ধ পরিকর। এবং তিনি তা করেই ফেলবেন হয়তো। ইতিমধ্যে ৩০ জনের মতো বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হওয়া ঘোষিত তফসিলের অপরিহার্যতার কথাই বলে। তবে হাসিনার দৃঢ়তার সাথে তারানকোর সামনে রকিব কমিশন তেমন দৃঢ় অবস্থান নিতে পারেনি। আর পারেনি বলেই এখানেই তারানকো তার মিশনের স্পেসকে কাজে লাগাবেন-এটা এখন অনেকটাই পরিষ্কার।
শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালিন সরকারঃ-
তবে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে শেখ হাসিনা হয়তো তারানকোর দূতিয়ালির মর্যাদায় রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচনকালিন সরকারের প্রধান হিসেবে করে নির্বাচন সম্পন্ন করে ফেলবেন। যদি তাই হয়, তবে শেখ হাসিনা অবশ্যই এখানে রাজনৈতিক গেইম খেলবেন, যাতে এরশাদ-জাফর সেই গেইমের গিনিপিগ হতে পারেন, যেমন করে এরশাদ খেলেছেন, হাসিনাও তেমন করে খেলতে পারেন। রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালিন সরকারে তারানকোর উদ্যোগে বিএনপি নির্বাচনে চলে আসবে। মাজখানে বাদ রয়ে যেতে পারেন এরশাদ, যদিও তিনিও নির্বাচনে আসবেন। তবে তার আগেই আইনি অনেক জটিলতা তৈরি হয়ে যেতে পারে। যা তার জন্য উভয় সংকট তৈরি করবে। আর আত্মহত্যার মতো হুমকি দিয়ে তিনি যে রাজনৈতিক বালখিল্য আচরণ করেছেন, তাতে তার মানসিক বৈকল্য নিয়ে যে কেউ প্রশ্ন তুলতেই পারেন। এমনকি তার অজুহাতে এরশাদ মানসিক হাসপাতালেও স্থানান্তরিত হতে পারেন। কেননা ফাঁদ তিনিই তৈরি করেছেন।
চীন-ভারত-আমেরিকার কূটনীতি ও বাংলাদেশঃ-
বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক চীন-ভারত-আমেরিকার কূটনীতি এখন এমন পর্যায়ে, যেখান থেকে মার্কিন ছকে তারানকো মিশনের ব্যর্থতায় এখানে জাতিসংঘের উদ্যোগে ক্রমবর্ধমান সহিংস রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষিতে শান্তি মিশনে চ্যাপ্টার এইট যদি বাস্তবায়নের পথে যায়, তাহলেও যারা হাসিনার বিরোধী কিংবা ভারত বিরোধী, সেক্ষেত্রেওতো ভারতীয় নেতৃত্বে জাতিসংঘ পিস কিপিং অত্র অঞ্চল থেকে এখানে ডিপ্লোয়েট করা হতে পারে।পাকিস্তান জানে, পিস কিপিং এ ভারতীয় নেতৃত্বে অত্র অঞ্চলের তাদেরও অংশগ্রহণ থাকবে। যেমন থাকবে শ্রীলংকা সহ অন্যান্য দেশ।
কাদের মোল্লার ফাসির রায়ঃ-
কেননা, জাতিসংঘ ও মার্কিনীরা জানে, যেভাবে সংঘাত, বোমাবাজি বাংলাদেশ হচ্ছে, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রেক্ষিতে জামায়াতের আরো মরণ কামড় সেই সহিংসতা আরো ব্যাপক আকার ধারণ করবে, তাতে সন্দেহ নাই।ইতিমধ্যে মৃত্যু পরোয়ানা জেলে পৌছে যাওয়াতে বাংলাদেশ এখন আরো নড়ে চড়ে উঠেছে, পাকিস্তান, সৌদি, কুয়েত আর পাকিস্তানের কূটনীতির খেলার টেবিলে। মার্কিনীরা এবং পাকিস্তান, রাবেতা, সৌদি এরা সকলের কাছেই এখন সেই অবস্থা হবে অনেকটা চাইতেই না পাওয়ার মতো। চীন আগে থেকে তা আচ করতে পেরেই বার বার সকল পক্ষের সাথে সংলাপ ও সমঝোতার তাগিদ দিচ্ছে, যা পাকিস্তান ও তাদের প্রভুদের জন্য আতে ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে চীন যদিও পাকিস্তানের বিদ্যুৎ জেনারেটর উৎপাদনের চাহিদা মিঠিয়ে উদ্ধৃত বিদ্যুৎ উৎপাদন, বিতরণের বিনিয়োগের বৃহত্তম অফার পাকিস্তানকে দিয়ে রেখেছে। তারপরেও পাকিস্তান সরকার জাতিগত সহিংস ও অন্ধ গলির সেই পঙ্কিল রাজনৈতিক কালচার থেকে এখনো বেরিয়ে আসতে পারেনি।তাই পাকিস্তানও এখানে চীনের ভূমিকাকে তাদের প্রভুদের মতোই বিষফোঁড়া হিসেবেই দেখছে, অন্তত: ভারতীয়দের সাথে তাদের বিনিয়োগের প্রশ্নে।
উপসংহারঃ-
তারানকো মিশনের অবশ্যম্ভাবী ফল হিসেবে রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচন কালীন সরকার ও নির্বাচন অথবা রাষ্ট্রপতির জাতীয় সংলাপের আহবান কিংবা জরুরী আইনের আদলে এই সরকার দীর্ঘ মেয়াদী হবে নাকি যেন তেন নির্বাচন ও সহিংস অবস্থা মোকাবেলায় চ্যাপ্টার এইট ফর্মুলার পথে বাংলাদেশ হাঁটবে-দুচার দিনের মধ্যেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।
Salim932@googlemail.com
6th December 2013, London.