আমেরিকার নেতৃত্বে ভারতের তত্বাবধানে ইউএন চ্যাপ্টার এইট ! প্রিয় বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে

আমেরিকার নেতৃত্বে ভারতের তত্বাবধানে ইউএন চ্যাপ্টার এইট ! প্রিয় বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে

একজন সাবেক জেনারেল, যিনি জাতি সংঘের পিস কিপিং মিশনে সরাসরি জড়িত ছিলেন, তার সাথে একান্তে আলাপের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট এবং আফটার ম্যাথ নিয়ে ভারত, আমেরিকা, চীনের ভূমিকা সংক্রান্ত বিষয়ে যা জানা গেলো, তাই মূলতঃ এখানে প্রিয় পাঠকদের সাথে শেয়ার করছি।

জাতি সংঘের পিস কিপিং নামে একধরনের রাজনৈতিক উইং রয়েছে। যাদের কাজ হলো বিশ্বের যে প্রান্তে বা যে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, সহিংসতা, প্রাণহানি ঘটে থাকে, সেখানে জাতি সংঘ তার সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সৈন্যবাহিনী তলব করে থাকে শান্তি রক্ষা করার জন্য। অবশ্য তা জাতি সংঘ কনভেনশন অনুযায়ী।

এ পর্যন্ত নিকট অতীতে জাতি সংঘ আফ্রিকা, রোয়ান্ডা, ইথিওপিয়া, ঘানা, সেনেগাল সহ বহু দেশে পিস কিপিং বাহিনীর কার্যক্রম পরিচালিত করেছে।

মজার ব্যাপার হলো, জাতি সংঘ যে সব স্থানে ইন্টারভেন করেছে, এখনো সে সব স্থানে শান্তির অমিয় বাতাস তেমন প্রবাহিত হয়নি।

বাংলাদেশের বিরাজমান রাজনৈতিক সহিংসতার প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য এখন মূলত অবস্থার প্রেক্ষিতে দ্বৈত নীতি গ্রহণ করে চলেছে। শুরুতেই ভারত-আমেরিকা যেমন ছিলো শুধু মাত্র হাসিনার সরকারের পেছনে, সেখানে ভারত-চীন সম্পর্কের প্রশ্নে এবং দেশের ভিতরে জনমতের প্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন আবার ভারতকে বিএনপি ও আওয়ামীলীগের সাথে সমানতালে নেগোসিয়েশনের টেবিলে নিয়ে এসেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে জাতি সংঘের উদ্যোগে পৃথিবীর যে রাষ্ট্রে ইন্টারভেন করেছে, সেই রাষ্ট্র একেবারে জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে গিয়েছে। তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ইরাক, আফগানিস্তান, প্যালেস্টাইন, লিবিয়া, সিরিয়া ইত্যাদি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এখন চোখ পড়েছে বাংলাদেশের উপর। আমাদের বিশাল বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক যে অঢেল খনিজ সম্পদ, মৎস্য সম্পদ, তেল সম্পদ, তার একচ্ছত্র ও নিরাপদ আহরণ, উত্তোলন আর ভাগীদার নিয়ে শুরু হয়েছে এখানে চীন, আমেরিকা, ভারতের ঠাণ্ডা লড়াই। আর যার নিরাপদ বলি হতে চলেছে বাংলাদেশ নামক বিশ্বের সবচাইতে গরীব এই দেশটি। এখনকার রাজনৈতিক নেতৃত্বে ক্ষমতার লিপ্সা, আর জেদাজাদীর অপরিণামদর্শিতার ফলে বাংলাদেশ হতে যাচ্ছে বলির পাঠা।

এখানে সব কিছু খোলাখুলি বলা যাবেনা, সেই পর্যন্ত বলারও সময় আসেনি। তবে মিডিয়ার মাধ্যমে দেশপ্রেমিক মিডিয়া, সাংবাদিক, দেশপ্রেমিক জনগণ, রাজনীতিবিদদের নলেজে টু দ্য পয়েন্ট এন্ড ডাইরেক্ট ইনফরমেশন পৌঁছানোর জন্যই আজকের এই লেখা বৈ অন্য কোন উদ্দেশ্য নেই।

এই পর্যন্ত জাতি সংঘ তাদের ইন্টারভেনে চ্যাপ্টার সেভেন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করেছে। নতুন কোন দেশ বা বাংলাদেশে যখন জাতি সংঘ পিস কিপিং এ সৈন্য মোতায়েন করবে, তখন তার চ্যাপ্টার এইটের মাধ্যমেই সৈন্য ডিপ্লোয়েট করবে।জাতি সংঘের নিজস্ব ওয়েবে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

জাতি সংঘের পিস কিপিং এ চ্যাপ্টার সেভেন পর্যন্ত সরাসরি জড়িত সেই সেনা জেনারেল আমাকে বলেছেন, আমেরিকা এবং ভারত ও গণচীন সকলেই চায়, বাংলাদেশে একটা ভঙ্গুর সরকার থাকুক। দুর্বল সরকার থাকলে তাদের উদ্দেশ্য সাধনে সুবিধা হয়। আমেরিকা জানে হাসিনার সরকার হবে দুর্বল সরকার। আবার জনগণ হাসিনার বিরুদ্ধে চলে যাওয়াতে আমেরিকা চাচ্ছে, ভারত এখন বিএনপির সাথেও নেগোসিয়েশনের টেবিলে চলে আসুক।এদিকে চীন হলো সবচাইতে ইমার্জিং এক শক্তি। এখানে তার গার্মেন্টস, আইটি, গভীর সমুদ্র বন্দর, অর্থাৎ বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদের উপর নিরবচ্ছিন্ন অধিকার অক্ষুণ্ণ রাখতে চীন বদ্ধ পরিকর। মধ্যপ্রাচ্য থেকে তেল সাপ্লাই বঙ্গোপসাগর কেন্দ্রিক গভীর সমুদ্র বন্দরের আধিপত্য কিংবা অবাধ যাতায়াত চায় চীন। আমেরিকা সেখানে ভাগ বসাতে চায়। ভারত চায় তার আধিপত্য, তবে চীনকে সাথে নিয়ে। যে কারণে সাম্প্রতিক সময়ে মনমোহন সিং বেইজিং সফর করে সে সম্পর্ক চাঙ্গা করে তুলাতে আমেরিকা ভিতরে ভিতরে নাখোশ- সেজন্য আমেরিকা এখন দ্বৈত নীতি বহাল রাখছে, অবশ্যই ভারতের মাধ্যমে।

আমেরিকা বুঝে গেছে, নির্বাচন হয়ে যাবে। বির্বাচন হলেও যেমন সংঘাত, না হলেও সংঘাত- এতে আমেরিকার উভয় ক্ষেত্রেই লাভ। সে এখানে তাই নিজেদের মধ্যে মারামারি লাগিয়ে দিয়ে ফায়দা তুলে নিতে চায়। আর তাই হতে চলেছে। আমেরিকা আরো জানে, নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা দমনে হাসিনা অকার্যকর। এখনই সেই সহিংসতা সামলাতে হাসিনা ব্যর্থ। সে খবর ভারত, আমেরিকা জানে। চীনের ভূমিকা খর্ব করতে আমেরিকার গোপন চাল হলো, বিরাজমান সংঘাত ও ভঙ্গুর দুর্বল সরকারের সুযোগে নয়াদিল্লীর নেতৃত্বে জাতি সংঘের চ্যাপ্টার এইট বাস্তবায়ন। পিস কিপিং এর নামে ভারতের নেতৃত্বে বাংলাদেশে জাতি সংঘের সৈন্য মোতায়েন করা। নিকট অতীতে এই রকম রাজনৈতিক অস্থিরতায় আফ্রিকা, সেনেগাল, রোয়ান্ডা, ইথিওপিয়া, সিকিম, নানান অঞ্চলে জাতি সংঘ রিজিওনাল বাহিনীর নেতৃত্বে পিস কিপিং সৈন্য মোতায়েন করেছে।তাদের সাথে থাকছে শ্রীলংকা, পাকিস্তান।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের দেশপ্রেমিক সৈনিকেরা বাংলাদেশের এই সব অস্থিরতা নিয়ে জাতি সংঘের নেতৃত্বে চ্যাপ্টার এইট বাস্তবায়নের ছক নিয়ে অবগত। ঢাকা, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম সহ সব ইউনিটে ভিতরে ভিতরে ফুঁসছে । কিন্তু সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড মানার বাধ্যবাধকতার জন্য তারা অনেকটাই নিষ্ক্রিয় এবং তারা কমান্ড মানতে বাধ্য বলে জানা গেছে।কিন্তু ম্যাসেজটা জনগণকে পৌছাতে চান যে চ্যাপ্টার এইট বাংলাদেশে আসছে।

সেনাবাহিনীর এই জেনারেল আরো বললেন, অতীতের মতো প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এই প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা (তারেক চৌধুরী) অকর্মন্যতার দায়ভার নিতে হবে। কেননা সাবেক সেনা উপদেষ্টারা কখনোই বাংলাদেশের ক্রান্তিকালে কোন কাজে আসেনি।যেমন আসেননি জেনারেল ওসমানী, শফিউল্লাহ, জেনারেল হারুন, আর এরশাদতো সবচাইতে ব্যর্থ এক সাবেক জেনারেল। সেনাবাহিনীর সাবেক কোন প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা শেখ মুজিবকে রক্ষা করতে পারেননি, জিয়াউর রহমানকে পারেননি। বেঁচে আছেন ভাগ্য গুনে কেবল মাত্র এরশাদ। তিনি বাংলাদেশের সবচাইতে অপদার্থ সেনাবাহিনীর জেনারেল-বাংলাদেশ আর্মির তরুণ দেশপ্রেমিক অফিসারেরা এই তথ্য দিয়েছেন।

জাতি সংঘ পিস কিপিং এর এই সাবেক জেনারেল বললেন, আমেরিকা, ভারত, চীন আর জাতি সংঘের পিস কিপিং ইউনিট যখন বাংলাদেশ বিষয়ে চ্যাপ্টার এইট নিয়ে ঘাটাঘাটি করে, তখন আর বুঝার বাকী থাকেনা, আসলেই কি হতে যাচ্ছে।

এই মুহুর্তে সব চাইতে জরুরী কাজ হলো, বাংলাদেশের দেশ প্রেমিক মিডিয়া, সাংবাদিক, দেশপ্রেমিক সুশীল সমাজ, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, ছাত্র, শ্রমিক, রাজনীতিবিদ- যারা সত্যিকারের বাংলাদেশকে মনে প্রাণে ভালোবাসেন, একাত্তরের ন্যায় ইস্পাত কঠিন দৃঢ় জাতীয় ঐক্য তৈরি করে এই হানাহানির রাজনীতির পথ বন্ধ করে দিয়ে জাতি সংঘের এই চ্যাপ্টার এইট বাস্তবায়নের আমেরিকা, ভারত, চীনের ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে।

প্রিয় বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও সকল অন্যায় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে।

(প্রিয় পাঠক খালেদা জিয়া কেমন করে ঘুরে দাড়াবেন- সেই লেখা থাকছে আগামীকাল, অনিচ্ছাকৃত এই দেরি করার জন্য দু;খিত)

Salim932@googlemail.com
১২ নভেম্বর ২০১৩

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *