ব্রিটেনের উপর এতো রাগ থাকলে এদেশে আছেন কেন, চলে যান.. প্রথম ইন্টারভিউয়ে শাকের আমের(ভিডিও)

ব্রিটেনের উপর এতো রাগ থাকলে এদেশে আছেন কেন, চলে যান.. প্রথম ইন্টারভিউয়ে শাকের আমের(ভিডিও)

287
Picture: Craig Hibbert 8-12-15 Shaker Aamer talks with the Mail on Sunday’s David Rose.

এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গুয়ান্তানামো বে কারাগারে আটক ছিলেন এরকম একজন ব্রিটিশ মুসলিম, শাকের আমের, উগ্র-চরমপন্থিদেরকে যুক্তরাজ্য থেকে চলে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন।চৌদ্দ বছর বন্দী থাকার পর গত অক্টোবর মাসে তিনি লন্ডনে তার পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন।

 

ব্রিটিশ সংবাদপত্র মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি ব্রিটিশ সৈন্য লী রিগবির ওপর হামলার মতো ঘটনাকে নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “আপনি কাউকে হত্যা করতে পারেন না।”ক্ষাৎকারে নিজের পরিবারের কাছে ফিরে আসার আবেগঘন বর্ণনাও দিয়েছেন তিনি।শাকের আমের এর এই সাক্ষাতকার এক যোগে টেলিগ্রাফ, গার্ডিয়ান, চ্যানেল ফোর নিউজ সহ ব্রিটেনের সব কটা দৈনিক, সান্ধ্য দৈনিক, টেলিভিশন চ্যানেল- স্কাই নিউজ, বিবিসি তে নিউজ এজেন্সির বরাতে প্রকাশিত হয়।

 

শাকেরের এই বক্তব্য– উগ্রপন্থাদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ভিডিওতে প্রচারিত- তুমি মুসলিম নও ব্র্যাভ র মতোই ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে- ব্রিটেনের উপর এতো রাগ করলে এদেশে আছেন কেন, অন্য দেশে চলে যান বা যেখানে খুশী।

 

আফগানিস্তানে তালেবানের একটি ইউনিটের নেতৃত্ব দেওয়া এবং আল কায়দা নেতা ওসামা বিন লাদেনের সাথে দেখা করার অভিযোগে তাকে আটক করে রাখা হয়েছিলো।কিন্তু তার বিরুদ্ধে কখনো চার্জ গঠন করা হয়নি।

Shaker Aamerআমের বলেছেন, গুয়ান্তানামো কারাগারে মার্কিন সামরিক বাহিনী জিজ্ঞাসাবাদের সময় বারবারই তার কাছে জানতে চেয়েছে লন্ডনে কোনো জিহাদি গ্রুপের সাথে তার সংশ্লিষ্টতা আছে কীনা।  আমের শুরু থেকেই এধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন।তিনি অভিযোগ করেছেন, তাকে প্রায় দুশোবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

 

এছাড়াও তার ওপর নির্যাতন চালানোরও অভিযোগ করেছেন তিনি। বলেছেন, তাকে ঠিকমতো ঘুমাতে দেওয়া হয়নি এবং প্রায় বরফের মতো ঠাণ্ডা জায়গায় শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিলো।

DEPRIVED OF SLEEP IN A FREEZING ROOM FOR 36HRS(মেইল)

যুক্তরাজ্যে চরমপন্থিদের হামলার ব্যাপারে তিনি বলেন, “তাহলে আপনি এদেশে বসবাসের অধিকার চান কিভাবে? লোকজনের সাথে আপনি অভিনয় করছেন যে আপনি একজন সাধারণ মানুষ। তারপর রাস্তায় বের হয়ে তাকে হত্যা করছেন!”তিনি বলেন, ইসলাম এধরনের হত্যাকাণ্ডকে কখনো সমর্থন করে না।“যুদ্ধের মধ্যেও আপনি যে কাউকে হত্যা করতে পারেন না। শিশু হত্যা করতে পারেন না। রাস্তায় গিয়ে লোকজনকে ছুরি মারতে শুরু করতে পারেন না।”

 

তিনি বলেন, “এই দেশের ওপর যদি আপনার এতো রাগ থাকে তাহলে আর এদেশে আছেন কেনো? এখান থেকে অন্য কোথাও চলে যান।”

রিইউনিয়ন (Reunion ‘washed away the pain’)-

Shaker Aamer  with his sons out for a walk. and with David Rose. MAIL ON SUNDAY ONLY Copyright Photo by Les@leswilson.com. - November . 2015 ***Check if sons face's need to be coved*** Allowed to be syndicated BUT all request must go through his lawyers for approval first. His legal representatives are:- Irene Nembhard:- 0207-911-0166 / 07988-399809 And Gareth Pierce:- 0207-911-0166/ 0207-267-9896 / 07774-885130

আটচল্লিশ বছর বয়সী আমের বলেছেন, স্ত্রীর মুখ দেখার সাথে সাথে তার বহুদিনের দুঃখ কষ্ট সব দূর হয়ে গেছে।

চার সন্তানের পিতা শাকের আমের। সবচে ছোট সন্তানের মুখ তিনি দেশে ফেরার পরই প্রথম দেখতে পেলেন।

তিনি বলেন, “স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরার পর ক্লান্তি দুঃখ এসব কিছুই ছিলো না। আমি তাকে বুকে টেনে নেই। সেও আমাকে জাড়িয়ে ধরলো। তারপর আমরা শুধু কাঁদতে থাকলাম।”

“It washed away the tiredness, the agony, the stress. It was like it no longer existed”

Shaker Aamer on being reunited with his wife (টেলিগ্রাফ)

 

যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র- ভালোবাসা ও বিদ্বেষের যাতাকলে – 

guantamoব্রিটেনে মুসলমানদের সাথে অমুসলিমদের সম্পর্ক নিয়েও তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।তবে তিনি বলেছেন, “কিছু করার আগেই যদি কাউকে সন্ত্রাসী বলে মনে করা হয় তাহলে কিন্তু তাকে সেদিকেই ঠেলে দেওয়া হয়।”

যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১১ই সেপ্টেম্বরের হামলার পর আফগানিস্তান থেকে তাকে আটক করা হয় এবং ২০০২ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হলে তাকে গুয়ান্তানামো বে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ২০০৭ সালেই প্রত্যাহার করা হয়েছিলো কিন্তু তারপরেও তার মুক্তি পেতে আরো আট বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।

তিনি জানান, সে সময় তিনি সপরিবারে তালেবান নিয়ন্ত্রিত আফগানিস্তানে বসবাস করতেন।তিনি যে ছাড়া পেয়ে কখনো দেশে ফিরে আসবেন সেটাও তিনি কখনো বিশ্বাস করতে পারেন নি।

আমের বলেছেন, বিমান বন্দরে জানালা দিয়ে যখন তিনি যুক্তরাজ্যের মাটি দেখতে পান তখনই তার বিশ্বাস হয় যে তিনি দেশে ফিরে আসছেন।

আইনি পথে হাটা (Legal action)-

guantamo mail onএনএনপি লিডার ও সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স সালমন্ড বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার ও স্বরাষ্ট্র সেক্রেটারি জ্যাক স্ট্র শাকের আমের উপর যে নির্যাতন করা হচ্ছিলো- সে সম্পর্কে অবহিত ছিলেন। বিবিসির অ্যান্ড্রো মার শোতে সালমন্ড এই দাবী করেছেন।

 

সালমন্ড বলেছেন, এটা অসম্ভব কোন বিষয় নয় যে, শাকের এর উপর অভিযোগ ছাড়াই অত্যাচার করা হচ্ছিলো, তা প্রধানমন্ত্রী এবং হোম সেক্রেটারি জানতেননা- বরং সে সম্পর্কে সহ অন্যান্য বিষয়ে ক্লারিফিকেশনের জন্য, সঠিক তথ্য জানতে সরাসরি ব্লেয়ারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত ।

 

সালমন্ড বলেছেন, আমেরিকান অথরিটি দ্বারা কেন বিনা কারণে ব্রটিশ সিটিজেনকে টর্চার করা হয়েছে, আটক রাখা হয়েছিলো- সেজন্য টনি ব্লেয়ার ও জ্যাক স্ট্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিৎ। সালমন্ডের এই বক্তব্য এখন বিবিসি মেইন নিউজে এবং স্কাই সহ সর্বত্র শাকেরের ইন্টারভিউয়ের সাথে সাপ্লিমেন্টারি নিউজ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে।

মেইলে টর্চারের বর্ণনা-

One of the worst tortures Shaker Aamer endured at American hands while he was being held at Bagram air base in Afghanistan was to be ‘hog-tied’ – left trussed up on the floor face down, bent backwards into the shape of a bow, with ankles and wrists tied together.

Last week, in a lawyer’s office in Camden Town, North London, he demonstrated it for The Mail on Sunday. ‘It is amazing – a lot of people don’t understand this mechanism. It is very horrible, let me show it to you,’ he said, getting up from his chair to lie on the carpeted floor. His legs and wrists would already be tied together, he explained, ‘and they bring your legs up all the way and tie them close to your arms’.

But his torturers added an exquisite refinement: a further, very tight tie threaded around each bicep, used to bind his upper arms closely together. That meant that if he tried to relax, by letting his chest sink to the floor, the blood supply to his arms was cut off, causing excruciating pain: ‘It kills you, man. You cry, the pain is so bad.’

 

নারী/নিউজ/সাক্ষাতকার/সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ/ডিসেম্বর/২০১৫-লন্ডন

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *