সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ- লন্ডন থেকে
নাম তার ডঃ আতাউল করিম। পেশায় অধ্যাপক, বিজ্ঞানী। থাকেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানকার ইউনিভার্সিটি অব ম্যসাচুসেটসের ডারমাউথ এর প্রভোষ্ট, এক্সিকিউটিভ ভাইস চ্যান্সেলর। জন্ম সিলেটের মৌলভীবাজারের বড় লেখাতেই। এতোবড় একজন আমেরিকান বাঙালি বিজ্ঞানীর সান্নিধ্য- দেশে বিদেশে সুনামের সাথে কৃতিত্বের স্বাক্ষর যার, সেই বিজ্ঞানী লন্ডনের বিখ্যাত কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির লেকচার থিয়েটারে ‘আইজ্যাক নিউটন এন্ড হিজ আ্যাপেল শীর্ষক সেমিনারে মূল বক্তা হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজ্ঞানের নানা শাখা-প্রশাখা আর জ্ঞানের খুটি নাটি বিষয়গুলো সাবলীলভাবে তুলে ধরেন- ১৭ জুন ২০১৬ শুক্রবারে।
কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির লেকচার থিয়েটার কানায় কানায় পূর্ণ আমেরিকান বাঙালি বিজ্ঞানী ডঃ করিম বলেন, যদি প্রশ্ন এবং উত্তর অন্তর দিয়ে পর্য্যালোচনা করার আগ্রহ না থাকলে, তাহলে আবিষ্কার সম্ভব নয়।আবিস্কার শুধু নেশা নয়- জানার জন্য আগ্রহ থাকতে হবে, পড়ার জন্য অদম্য ইচ্ছা শক্তি অন্তরে জাগরুক থাকতে হবে, তার জন্যে থাকতে হবে এর ভেতরের রহস্য ভেদ করার জন্য প্রশ্নের উত্তর খুজার আগ্রহ।
ডঃ করিম যখন বক্তব্য রাখছিলেন, তখন বিপুল সংখ্যক তরুন-তরুনী উপস্থিত ছিলেন এবং মনযোগসহকারে তার বক্তব্য শুনেন।
তিনি বলেন, গবেষনার শেষ নেই, প্রশ্ন এবং উত্তরকে ভালো ভাবে জানার চেষ্টা করলে আবিষ্কারের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। এসময় ডঃ আতাউল করিম স্মিত হেসে বলেন, যুগ যুগ ধরে আমরা শুনে আসছি কলম্বাস আমেরিকা আবিস্কার করেছিলেন- এখন দেখা যাচ্ছে কলম্বাস কোন দিনই আমেরিকা যাননি।কিন্তু এটা বললেইতো আর সব শেষ হয়ে যায় না। সেজন্যে গবেষণার দরকার। খুজতে হবে, কলম্বাস কি আমেরিকা গিয়েছিলেন, প্রশ্ন করে করে খুজে খুজে উত্তর বের করে নিয়ে আসতে হবে। তবেই না আসবে সাফল্য।
ডঃ করিম বলেন, গবেষণা যেন তেন ভাবে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দাড় করালেই চলবেনা। এর পেছনে থাকতে হবে পর্যাপ্ত সঠিক তথ্য, সেটাকে বিশ্লেষণ করার মতো পর্যাপ্ত উপাত্ত, এভিডেন্স থাকতে হবে উপস্থিতি।আর প্রচলিত ধ্যান ধারণার সাথে নতুন তথ্য উপাত্তের সংঘর্ষ থাকতেই পারে, কিন্তু সেটা হতে হবে বস্তুনিষ্ট এবং সঠিক তথ্য ও গবেষণা নির্ভর।
সেজন্যে জানার আগ্রহ যেমন থাকা প্রয়োজন, চাই ধৈর্য শক্তি, জ্ঞান আহরণের জন্যে।কারণ জানার কোন শেষ নেই।
এময় তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শ্রেষ্ট বিজ্ঞানীদের গবেষনাকর্ম ও তাদের আবিস্কারের ফর্মুলা নিয়েও কথা বলেন। তার এই বক্তব্য শুনতে বৃটেনের বিভিন্ন শহর থেকে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বাঙালি সহ বিভিন্ন দেশের কয়েকশত মানুষ অংশ নেন।
ড. আতাউল করিম ভাসমান ট্রেনের উদ্ভাবক। ডঃ করিম এপ্লাইড অপটিক্সে ৫০ বছরের ইতিহাসে টপ ৫০ জন রিসার্চারের র্যাংকিং এ অবস্থান করছেন।তিনি আরাকানসাস ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেটন, ইউনিভার্সিটি অব টেনেসি, সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক, ওল্ড ডোমিনিয়ন ইউনিভার্সিটিতে রিসার্চ ফেলো ও নানা একাডেমিক পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন অত্যন্ত কৃতিত্বের সাথে।
এছাড়া তার ৩৬৫টি গবেষনা বিষয়ক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।
19th June 2016, London