লন্ডনের সেইফ হ্যাভেনে বাড়ি কেনেন যারা:যুগান্তরে আমার রিপোর্ট

লন্ডনের সেইফ হ্যাভেনে বাড়ি কেনেন যারা:যুগান্তরে আমার রিপোর্ট

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ

প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্সিয়াল ইকোনোমিকসের প্রফেসর মি. তরুণ রামাডোরাই এবং বিজনেস স্কুলের পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো মি. ক্রিস্টিয়ান বাদারিনজা যৌথভাবে লন্ডন হাউস প্রাইস বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে এবং এর অর্থনীতি ও সিনিয়র সিটিজেনের জীবন মানের ওপর কি প্রভাব বিস্তার করছে, তার ওপর এক গবেষণা করে। প্রফেসরদ্বয় ৫৫ পৃষ্ঠার তাদের গবেষণা পেপারে লন্ডন হাউস প্রাইস বৃদ্ধির প্রধান কারণ হিসেবে দেখিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্য, চীন, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, জাপান, রাশিয়া এবং বাংলাদেশসহ পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যবসায়ী ও ধনী ইমিগ্র্যান্টরা লন্ডন শহরকে তাদের ভাষায় সেইফ হ্যাভেন মনে করে রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির সময়ে যাতে লন্ডনে এসে নিরাপদে আশ্রয় ও পরিবার-পরিজন নিয়ে এই হ্যাভেনে অনায়াসে থাকতে পারেন, সেজন্য অধিক মূল্য দিয়ে বাড়ি, ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। দুই প্রফেসর তাদের গবেষণায় দেখিয়েছেন লন্ডনের ৬২৪ ওয়ার্ডের মধ্যে এসব ক্রস কান্ট্রির মানুষের লন্ডনে বাড়ির শেয়ারের আনুপাতিক হার হচ্ছে
চায়না : ০.৪ , জাপান ০.৫, পাকিস্তান ৩.২, শ্রীলঙ্কা ২০৭, ভারত ৮.৬, মধ্যপ্রাচ্য ৩.৭, রাশিয়া ০.৬, বাংলাদেশ ৬.৯। প্রভৃতির হিসেবের সারণির তথ্য উল্লিখিত রয়েছে।
প্রফেসর তরুণ রামাডোরাই বলেন, তাদের গবেষণার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, ভারত, চীন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য, স্পেনের রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী সবাই লন্ডনে বাড়ি ক্রয়ে সেইফ হ্যাভেন হিসেবেই মনে করে থাকেন। গবেষণায় দেখা গেছে, লন্ডনের বাড়ির দাম ওঠানামা করে মূলত তিন দেশের ক্রেতাদের মাধ্যমে। বিশেষত যেসব দেশের রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, অস্থিতিশীল এবং হত্যা সন্ত্রাস প্রতিনিয়ত বিষয়, সেসব দেশের ব্যবসায়ী ও রাজনীতিকরা লন্ডনকে তাদের জীবনের নিরাপদ স্বর্গ হিসেবে মনে করে বেছে নিয়েছেন। যাদের মধ্যে অত্যন্ত গোপনে বিভিন্ন নাম ধারণ করে বা পরিবারের আÍীয়স্বজন কিংবা একান্ত ব্যক্তিগত বন্ধুদের নামে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদরা লন্ডনে বাড়ি কিনেছেন। লন্ডনের মূল শহরের ৬২৪ ওয়ার্ডের ধনী প্রদান এবং নিরিবিলি দামি এরিয়ায় ধনী ইমিগ্র্যান্টদের বসবাস এবং বিদেশিরা মূলত সেসব এলাকায় বাড়ি খরিদ করে দখলেই নিয়েছেন। পাকিস্তান, ভারত, বাংলাদেশ, রাশিয়া, মিসরের অনেক ধনী ব্যক্তি লন্ডনে থাকেন। তবে গত ২০ বছরে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যাতে বাংলাদেশিদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষণার মূল পেপারের ফুটনোটে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য রয়েছে। কারও নাম উল্লেখ না করে জানা গেছে, বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ অনেকেই আছেন, যারা দেশে রাজনীতি করলেও লন্ডনে বাড়ি কিনে রেখেছেন এবং বিগত ১৫ বছরের সময়কালীন এই সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। যখনই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির অবনতি হয়, তখন যাতে তারা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে লন্ডনের নিরাপদ স্বর্গে স্থানান্তর হতে পারেন এই আশায়। বাংলাদেশের এমন অনেক রাজনীতিবিদ আছেন যারা মূলত দ্বৈত নাগরিকও বটে। আর এক্ষেত্রে তারা অভিনব এক পন্থা বেছে নিয়েছেন, তাদের সঙ্গে সমান তালে একই পন্থা অবলম্বন করে থাকেন পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভারত, মালয়েশিয়ার রাজনীতিবিদরা।
গবেষণার নাম- Home Away From Home? Safe Haven Effects and London House Prices- Cristian Badarinza and Tarun Ramadoraiy
November 19, 2013, Oxford University.

– See more at: http://www.jugantor.com/abroad/2014/02/01/64043#sthash.kwZWpe29.dpuf

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *