তুরস্কের ইসলামিক গ্রুপের বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে হেগের আদালতে মামলা দায়ের-আসাদের জন্য নয় কেন ?

তুরস্কের ইসলামিক গ্রুপের বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে হেগের আদালতে মামলা দায়ের-আসাদের জন্য নয় কেন ?

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ, যুক্তরাজ্য থেকে

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে আজ আবার বাংলাদেশ শীর্ষ স্থান দখল করে নিলো- ব্রিটিশ আইনজীবী এবং যুদ্ধাপরাধের মামলায় দণ্ড প্রাপ্ত ফেরারি আসামী মঈনুদ্দিন-আশরাফুজ্জামানের কথিত আইনজীবী, লবিষ্ট এবং আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি কেডম্যান কর্তৃক নেদারল্যান্ডসের হেগ যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ নিয়ে মামলা ফাইল করাকে কেন্দ্র করে। নিউ ইয়র্ক টাইমস, ব্লুমবার্গ টেলিভিশন ও নিউজ চ্যানেল, ফক্স নিউজ, এবিসি নিউজ, হেরাল্ড ট্রাইব্যুন, মার্সিড সান স্টার সহ সব কটা আন্তর্জাতিক মাধ্যমে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি দুপুরের সংবাদের শিরোনাম বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মামলা।

সব কটা বিশ্ব গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করলে একটা তথ্যে অসাধারণ এক মিল লক্ষ্য করা যায়, বিশ্বের তাবৎ সকল প্রভাবশালী গণ মাধ্যমের নিউজ ফুটেজ, ভাষা, শব্দ, ল্যাঙ্গুয়েজ চয়ন, সবই একই রকম। ব্যতিক্রম কেবলমাত্র ফক্স নিউজ-যা তাদের সংবাদে একটু সংক্ষেপে এই সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। ফক্স ব্যতীত বাদ বাকী সকল গণ-মাধ্যমে ঢাকার জুলহাস আলম ও কায়রোর মামুন ইউসুফের পরিবেশিত সংবাদের সূত্রে সকল মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে বলে সংবাদের নীচের দিকে তথ্যের সূত্র উল্লেখিত হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন ফর ফ্রিডম নামের তুরস্কের ইসলামিক একটি সংগঠনের ব্যানারে ব্রিটেনের আইনজীবী টবি কেডম্যান আমস্টারডামের হেগ আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অভিযোগ এনে মামলা নথিভুক্ত করে চালানোর জন্য আবেদন করেছেন।

ব্লুমবার্গ ও এপি পরিবেশিত সংবাদে প্রথমেই জানানো হয় যে, রাজনৈতিকভাবে হয়রানি, বিরোধীদের নির্যাতন করার মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকার মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, ব্যাপক সহিংসতা আর প্রধান বিরোধী দলের বর্জনের মধ্যদিয়ে গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর মূলত ঐ নির্বাচনের ঠিক একমাস পরে হেগের এই আদালতে এই মামলার আর্জি পেশ করা হলো।

খবরে বলা হয়েছে, এই আবেদনের আর্জি জানানোর পর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আবেদন যাচাই বাছাই করবে, মামলা নথিভুক্ত বা চলবে কিনা। এরপরই তদন্ত করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নেবেন আন্তর্জাতিক আদালতের প্রসিকিউটর ফাতৌ বেনসৌদা ।

মঙ্গলবার ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ২০১৪ হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ার গবেষক তেজশ্রী থাপা এপিকে বলেছেন, ৫ জানুয়ারি ২০১৪ অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পর বাংলাদেশের সহিংসতা বৃদ্ধির ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তিনি আরো বলেন, সরকার যে পরিমাণে নির্যাতন চালিয়েছে বা দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের পর্যায়ে ফেলা যায়না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ব্লুমবার্গ রিপোর্টে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের চতুর্থ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। একই কথা নিউ ইয়র্ক টাইমসেও রয়েছে। ১৬ কোটি মানুষের এই দেশ রাজনৈতিক সংঘাতে বিভক্ত। এক পক্ষে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ এবং অপর পক্ষে রয়েছে মধ্যপন্থী বিএনপি।

নিউ ইয়র্ক টাইমস, ব্লুমবার্গ, এপি, ফক্স, হেরাল্ড রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, মঙ্গলবার টবি কেড ম্যান যে আবেদনটি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জমা দিয়েছেন, তাতে টবি সরকারি বাহিনীর হাতে আটক, গুলি, বেসামরিক বিক্ষোভ কারিদের নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে।

হেগে দাখিল করা আর্জিতে বলা হয়েছে, ২০০৯ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসীন হন আওয়ামীলীগ সরকার। ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে আওয়ামীলীগের সরকারের হাতে কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। আবেদনের মতে, বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত না হওয়ায় এবং মিডিয়া এবং সেই সাথে আন্তর্জাতিক এনজিও সংস্থাগুলো সেই সব অপরাধের প্রমাণ করতে বা যথাযথ নজরে আনতে সক্ষম না হওয়ায় এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্টভাবে নিহতের সংখ্যা নিরূপণ এক কঠিন ব্যাপার বলে জানানো হয়েছে।
ব্লুমবার্গ, এপি, নিউইয়র্ক টাইমস, হেরাল্ড একই বক্তব্য উপস্থাপন করে বলছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বক্তব্য পেতে যোগাযোগ করে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সব কটা গণ-মাধ্যমে এপিকে উদ্ধৃতি করে সংবাদ পরিবেশিত হয়।

এই সংবাদ যখন তৈরি করছিলাম, ঠিক তখনি পূর্ব লন্ডনের এক রেস্তোরায় প্রবাসী বাংলাদেশী শাহিন আহমদ নামের এক প্রবাসী যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে এই মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে প্রেস কনফারেন্সের আয়োজন করেন।জানা যায়, প্রবাসী এই শাহিন আহমদ টবি কেডম্যানকে দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের আবেদন জমা করেছেন।

এপি পরিবেশিত সেই অরিজিনাল নিউজ ও অন্যান্য গণ-মাধ্যমের নিউজের লিংক:

Islamic Rights Group: Investigate Bangladesh

AMSTERDAM February 4, 2014 (AP)

By TOBY STERLING Associated Press

An Islamic rights group is urging the International Criminal Court in The Hague, Netherlands, to investigate the government of Bangladesh for alleged crimes against humanity for persecuting its political foes.

British lawyer Toby Cadman said he filed the request on behalf of the International Coalition for Freedoms of Rights a month after Bangladesh Prime Minister Sheikh Hasina’s party won an election marred by violence and a boycott by the main opposition party.

International Criminal Court prosecutor Fatou Bensouda will decide whether to launch an investigation after studying the application.

Tejshree Thapa, Asia researcher for Human Rights Watch, said Tuesday the group is concerned about the potential for escalating violence in Bangladesh, especially after the January elections.

She said it was impossible to know whether violence in Bangladesh has been sufficient to merit an International Criminal Court investigation, and urged the government itself to investigate “abuses by both opposition groups as well as extrajudicial killings and ‘disappearances’ by government security forces.”

In Bangladesh, the world’s fourth largest Muslim country with a population of 160 million, politics are divided between Hasina’s governing Awami League and the center-right Bangladesh Nationalist Party.

In Tuesday’s filing, Cadman’s office identified specific alleged instances of government forces shooting, detaining and torturing civilian protesters.

“It is clear that since the current Awami League government first came to power in 2009 there have been hundreds of deaths” caused by government forces, the filing said. “Numbers are difficult to quantify due to the absence of credible investigations and the inability of the media and international non-governmental organizations to properly document crimes.”

In Bangladesh’s capital on Tuesday, Bangladesh Nationalist Party leader Khaleda Zia told reporters that 242 opposition activists were killed and 60 disappeared in the month surrounding the Jan. 5 elections that Hasina’s party won. Zia called the violence a strategically planned operation, and she presented references from different reports of local and international human rights groups in support of the claim.

Requests for a response from Bangladesh’s foreign ministry and Hasina’s office went unanswered Tuesday.

In the past, Cadman has represented the small Islamist party Jamaat-e-Islami, an ally of the Bangladesh Nationalist Party. In January, the European Parliament adopted a resolution calling on the BNP to break ties with Jamaat and branding it as one of the main instigators of violence in Bangladesh.

The International Coalition for Freedoms of Rights that Cadman is representing was formed in Istanbul, Turkey, last year after the military coup that removed Egypt’s former Islamist President Mohammed Morsi from office. The organization is closely associated with Islamist legal efforts to prosecute the coup leaders.

—————

Julhas Alam in Dhaka, Bangladesh, and Maamoun Youssef in Cairo contributed to this story.

এবিসি নিউজ লিংক-http://abcnews.go.com/International/wireStory/islamic-rights-group-investigate-bangladesh-22357609

ব্লুমবার্গ নিউজ লিংক-http://www.businessweek.com/ap/2014-02-04/islamic-rights-group-investigate-bangladesh

ফক্স নিউজ লিংক-http://www.foxnews.com/world/2014/02/04/islamic-rights-group-calls-on-international-prosecutor-to-investigate/

নিউ ইয়র্ক টাইমস লিংক-http://www.nytimes.com/aponline/2014/02/04/world/europe/ap-eu-international-court-bangladesh.html?partner=rss&emc=rss&_r=0

মার্সেড সাব-স্টার link: http://www.mercedsunstar.com/2014/02/04/3476138/islamic-rights-group-investigate.html

হেরাল্ড ট্রিবিউন লিংক-http://www.heraldtribune.com/article/20140204/API/302049711#gsc.tab=0

আমার বক্তব্যঃআসাদের জন্য নয় কেন-

এই হলো মঙ্গলবারের হেগের আদালতে তুরস্কের ইসলামিক গ্রুপের হয়ে টবি কেডম্যানের বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা।

সারা বিশ্বের মুসলমান অমুসলমান সকলেই জানেন, এই মুহূর্তে বিশ্বে প্যালেস্টাইনের পর সিরিয়ায় সব চাইতে মানবিক বিপর্যয় চলছে। মিলিয়নের উপরে সিরিয়ান নাগরিক শিশু, বৃদ্ধা, মহিলা সহ অগণিত জনগণ মানবেতর জীবন যাপনই শুধু করছেননা, প্রকৃতির এই বৈরি প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আবহাওয়া আর তুষারপাতের মধ্যে এক টুকরো কম্বল বা একটু সোয়াটার আর এক বেলা খাবারের জন্য তীর্থের কাকের ন্যায় এইড বা জাতি সংঘের মানবিক সাহায্যের উপর অপেক্ষায় দিন গুনছে। অথচ ঠিক একই সময়ে সিরিয়ানদের উদ্বাস্তু করেই আসাদের সরকার ক্ষান্ত হয়নি, তাদের উপর রাসায়নিক অস্র প্রয়োগ করে এক ভয়ঙ্কর মানবিক বিপর্যয়ের জন্ম দিয়ে চলেছে, যা বিশ্ব মিডিয়ায় প্রতিদিন সচিত্র প্রতিবেদন আসছে প্রতিনিয়ত।

সেখানকার মিলিয়ন সিরিয়ান উদ্বাস্তু জনগণ এক বেলা পানীয় জলের জন্য কাঙ্গালের মতো বিশ্ব বিবেকের দিকে তাকিয়ে আছে।

আসাদ নিজের ক্ষমতা ঠিকিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত নারকীয় কায়দায় হত্যা, সন্ত্রাস শুধু করছেনা, ইসলামের খলিফা আমীর উল মোমেনীন হযরত আলী রাজিয়াল্লু তায়ালা আনহুকে আল্লাহর সাথে তুলনা করে ( আসতাগফেরুল্লাহ !) নমরুদ ফেরাউন সাদ্দাদদের অন্তর্গত অনেক আগেই হয়ে গেছে। সারা বিশ্বের সকল স্কলার, ইসলামিক চিন্তাবিদ সকলেই একমত তাতে, কেবলমাত্র সুবিধাবাদী আর মার্কিন-ব্রিটিশদের তল্পিবাহক কতিপয় মুখোশদারি আলেম নামের মোনাফেকরা বাদে।

প্রশ্ন হলো, তুরস্কের ইসলামিক গ্রুপ কিংবা তথাকথিত ইসলামিক দলের ঐ পেট্রনদের কাছে আসাদের মত নারকীয় মানবতা বিরোধী অপরাধীর কার্যক্রমও চোখে পড়েনি, অথচ বাংলাদেশের বিরাজমান ক্ষমতার দ্বন্ধ নিয়ে রাজনৈতিক সংঘাত আর রাজনৈতিক সহিংসতাকে নিয়ে টবি কেডম্যান সহ তুরস্কের ইসলামিক গ্রুপ খুবই চিন্তিত। বড় ভালো লাগলো। অবশ্যই বাংলাদেশে যা হচ্ছে তা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিন শক্তিশালী দল ( আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত )যে যেখানে যেমন পারছে, তেমন সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নিজেদের জাল এবং আখের গুছানোর সাথে স্বার্থ হাসিল করছে। আর তা করতে গিয়ে কখনো ক্রস ফায়ার, কখনো পেট্রল বোমা, কখনো আগুন, কখনো বোমাবাজি, কখনো দা-চাপাতি ইত্যাদির ব্যবহার হচ্ছে। কেউ কম কেউ বেশী, কিন্তু সকলেই সমানভাবে দায়ী এবং অপরাধী। কেননা, অপরাধকে আমরা ঘৃণা করি, প্রত্যাখ্যান করি আর তা করতে হবে রাজনীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে।

তুরস্কের ঐ ইসলামিক গ্রুপ তাদের পাশের দেশ সিরিয়ার মানবিক বিপর্যয় এবং আসাদ সরকারের নৃশংস মানবতা বিরোধী অপরাধ সহ আল্লাহর সাথে বেয়াদবি ও শিরক করার জন্যে সুস্পষ্ট অভিযোগ যেখানে দায়ের করাটা তাদের জন্য এবং সকলের জন্য মানান সই হতো, তা না করে তাদের কাছ থেকে অনেক দূরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংঘাত ও দুই দলের ক্ষমতার দ্বন্ধের মাঝখানে নিজেদের ভূমিকা স্পষ্ট করার হীন স্বার্থ নিয়েই যে হেগের আদালতে গিয়েছেন, এটা অন্তত: সহজেই অনুমেয়।

জামায়াতের প্রভাবশালী আইনজীবীর মার্কিন মুল্লুকে অবস্থান আর টবি কেডম্যানের সাথে মার্কিন মুল্লুকে বৈঠক, সেখান থেকে তুরস্কের ইসলামিক গ্রুপের মার্কিন মুল্লুকের প্রতিনিধির মাধ্যমে তুরস্কের ঐ গ্রুপের সাথে যোগাযোগ, সেখান থেকে যুক্তরাজ্যের প্রবাসী ব্যবসায়ীর হেগের আদালতে মামলা করার প্রণোদনা- কোথায় যেন অন্য এক সংবাদের জন্ম দেয়।

কেননা, মানবতা, বিশ্ব বিবেক, আর বাংলাদেশের ইসলাম প্রিয় জনগণের প্রতি মমত্ব তখনি সঠিকভাবে প্রকাশিত হতো, যদি তুরস্কের ঐ ইসলামিক গ্রুপ বিশ্ব সম্প্রদায়ের সাথে মিলে সিরিয়ার আসাদের বর্বরতা ও অমানবিকতার বিরুদ্ধে হতো সোচ্চার, হেগের আদালতে নেয়ার জন্যে বিশ্ব সম্প্রদায়কে উজ্জীবিত করার মতো সামান্যতম উদ্যোগ গ্রহণ করতো, পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের সুবাধে যে বা যারাই ( যে দল বা গোষ্ঠী করুক )পবিত্র কোরআন শরীফের শত শত কপি আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে যে আদিম ও বর্বরোচিত কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে নজীরবিহিন এক ঘটনার জন্ম দিয়েছে, তার জন্য নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থার জোরদার আবেদন ও পক্ষপাতহীন ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি প্রকাশ্যে নিন্দা জ্ঞাপন করতেন- তাহলে আর যাই হউক অন্তত আল্লাহর দরবারে এই আরজ নিয়ে সেদিন জবাব দিতে পারতাম সকলেই, সীমিত সাধ্যের মধ্যে হলেও কোরআনের অবমাননা যারা করেছে, আমরা তার প্রতিবাদ করেছি।

বাংলাদেশে পবিত্র কোরআনের যেভাবে অবমাননা হয়েছে, আমারতো মনে হয়, আজ হউক কাল হউক, বাংলাদেশ এর দায়ভার এড়াতে পারবেনা। কারণ আল্লাহ পাক স্বয়ং কোরআনের হেফাজতের ঘোষণা দিয়েছেন। আর আল্লাহর শাস্তি কখনো অতি তাড়াতাড়ি আসেনা। আল্লাহ বড় মেহেরবান এবং ক্ষমাশীল। তিনি সুযোগ দেন, অপেক্ষা করেন, দেখেন বান্দা যে ভুল করেছে, অনুতপ্ত হয়ে সেই ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আল্লাহর দরবারে ফিরে আসে কিনা ! আল্লাহ পাক ইনসাফ করলে ওয়ালা। দীর্ঘ সময় দিয়ে তিনি দেখেন, ক্ষমতা, প্রতিপত্তি, জয় এমনকি সময় স্রোত সবই অনুকূলে দিতে থাকেন আর অপেক্ষা করেন, কৃত অপরাধের জন্য বান্দা অনুতপ্ত হয় কিনা। এভাবে দেখতে দেখতে যখন দেখেন, তখন কোরআনে ঘোষিত হয়েছে, আল্লাহর পাকড়াও থেকে কেউ রেহাই পাবেনা ( সে ভালো আর মন্দ যেই হউক)। বাংলাদেশ যদি কোরআনের অবমাননা আর অগ্নি সংযোগকারীদের যথাযথ বিচার না করে তাহলে এর আজাব থেকে আমরা রেহাই পাবোনা-এটা নিশ্চিত। সন্দেহ নাই। সকলেরই তাই তওবা-ইস্তেগফার করা উচিত, কায়মনোবাক্যে।

আল্লাহ পাক আপনার আমার সকলের সহায় হউন। আমিন।

 Salim932@googlemail.com

4th February 2014,London

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *