দেশে কি পরিবর্তন আসন্ন

দেশে কি পরিবর্তন আসন্ন

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ

২০১৩ সালের লেখা

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর পর বলা যায় অনেকটা বিধির বিধানের সাথে নাটকীয়ভাবে রাজনৈতিক দৃশ্যপট পাল্টে যেতে শুরু করেছে।বাংলাদেশের বিরাজমান সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি নামক এই পদ আলংকারিক ছাড়া আর কিছু নেই। কেননা সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় কেবল মাত্র বিল স্বাক্ষর আর দাপ্তরিক কিছু কাজ ছাড়া রাষ্ট্রপতির খুব একটা কাজ আছে বলে মনে হয়না।

অথচ একজন প্রথিতযশা, প্রাজ্ঞ, নীতিবান, জনদরদী, রাজনৈতিক রাষ্ট্রপতি এখনো বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেষ ভরসার আশ্রয় স্থল হিসেবেই বিবেচিত হয়ে থাকেন, যেমনটি ছিলেন মরহুম রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে শুধু ভৈরব বাসীই নন, সারা বাংলাদেশের আপামর জনতা শোকে ব্যথিত হয়েছেন, আওয়ামীলীগ সহ সকল রাজনৈতিক দল জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক এবং শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।এখানেই রাজনীতিক জিল্লুর রহমানের সার্থকতা, দলীয় গণ্ডীর বাইরে এসে সারা বাংলাদেশের আপামর জনতার প্রাণের জিল্লুর ভাই হয়ে উঠেছিলেন।

জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রপতি কে হবেন, তা নিয়ে এখন সর্বত্র আলোচনা সরব। তার একটা বিশেষ কারণও রয়েছে। স্বাভাবিক বার্ধক্য আর অসুস্থতার প্রেক্ষিতে জিল্লুর রহমানের মৃত্যু হয়েছে, সুতরাং আওয়ামীলীগ দলগত ভাবে ক্ষমতাসীন থাকায় নিজেদের দলীয় লোক রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করবে এটাই স্বাভাবিক, জনগণও এটাকে খুব একটা অন্য চোখে দেখার কোন অবকাশ ছিলোনা।কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, বিধির বিধানেই হউক, আর ভাগ্যলক্ষ্মী সুপ্রসন্ন হয়েই হউক, কিংবাতো আওয়ামীলীগের প্রতি শনির ভাগ্য প্রসন্ন বলেই হউক, অর্থাৎ যে বিচারেই দেখা হউক না কেন, জিল্লুর রহমানের মৃত্যুতে নতুন রাষ্ট্রপতি আগামীতে যিনি হবেন, তার মেয়াদ পাঁচ(৫) বছরের জন্যে হবে, এবং যিনিই নির্বাচিত হবেন, তার অধীনেই আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক তাকে কাজ করতে হবে।আর রাজনৈতিক বোদ্ধা ও বিশ্লেষকদের কাছে মূলত এই বিষয়টি এখন গুরুত্বপূর্ণ। আর গুরুত্বপূর্ণ বলেই আগামী রাষ্ট্রপতি কে নির্বাচিত হচ্ছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা, নানা বিশ্লেষণ। আর এই সব বিশ্লেষণ আর আলোচনার কেন্দ্রে অবস্থান করছেন আওয়ামীলীগ নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই। কেননা, গণতান্ত্রিক সরকারের আদলে আমাদের দেশে এখনো এক ব্যক্তির ইচ্ছার প্রতিফলন সর্বত্রই পরিলক্ষিত হয়ে থাকে এবং এক ব্যক্তির তোষণে সকলেই ব্যতিব্যস্ত থাকেন বলেই এ যাবৎ কালে আমাদের দেশে তাই হয়ে আসছে। অসম্ভব কোন মিরাকল ছাড়া এর ব্যতিক্রম খুব একটা যে হবেনা তা নিশ্চিত করেই বলা যায়।

অনেকেরই ধারণা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হয়তো নয়া মেরু করণ হলেও হয়ে যেতে পারে। কারণ দেশের যে অবস্থা, দম বন্ধ হওয়া যে গুমট পরিবেশ, তা থেকে শেখ হাসিনা হয়তো নিজের প্রজ্ঞা ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতা দিয়ে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করতে আলোচনার দুয়ার খুলে দিতে পারেন।কারণ আওয়ামীলীগ নেত্রী এবং তার পরামর্শদাতারা আরো দুই টার্মের স্বপ্নে বিভোর করে প্রধানমন্ত্রীকে যে অবস্থানে নিয়ে এসেছেন, বা দেশের রাজনৈতিক অবস্থা যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, সেখান থেকে শেখ হাসিনার পেছন ফেরার কিংবা রাজনীতিকে টার্ণিং পয়েন্টের দিকে তথা আলোচনার টেবিলের দিকে নিয়ে যাওয়ার এই একটামাত্র সুযোগ শেখ হাসিনা হয়তো হাত(সুযোগ) ছাড়া করতে চাইবেননা। শেখ হাসিনার নিকট অতীতের সকল পদক্ষেপ সেই দিকের কথা উড়িয়ে দেয়া যায়না। আবার বর্তমানের শেখ হাসিনার অসম্ভব জাতি বিধ্বংসী রাজনৈতিক গেইম কিন্তু সেই সবের ক্ষেত্রে শুভ ইঙ্গিত দান করেনা। আজকের বাস্তবতা কিন্তু রাজনৈতিক অশুভ এক সংকেতের কথাই জানান দেয়।

পাকিস্তানের ঘটনা প্রবাহের দিকে যদি তাকাই ( যদিও সেখানে প্রথমবারের মতো রাষ্ট্রপতি পূর্ণমেয়াদ সম্পন্ন করেছেন), তবে শেখ হাসিনা হয়তো নিজেই ( যেহেতু অতীতে ১টাকার বিনিময়ে বঙ্গভবন খরিদ করে চিরদিনের জন্য বন্দোবস্ত)সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পার্লামেন্টে যৎকিঞ্চিত সংশোধনী এনে নিজেই রাষ্ট্রপতি হয়ে যেতে পারেন, যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মারার পথ তিনি পরিষ্কার করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে ছোট বোন রেহানাকে যেমন রাষ্ট্রীয় অংশীদারিত্বের সুযোগ দিতে পারবেন, একইসাথে নিজের সন্তান জয়ের ক্ষমতাসীন হওয়ার পথ উন্মুক্ত করে দিতে পারেন। নিছক ব্যক্তি স্বার্থ আর পারিবারিক গণ্ডীর বাইরে যদি দেশ ও জাতির বৃহত্তর মঙ্গলের কথা চিন্তা করেন তবে শেখ হাসিনা ভিন্ন চিন্তা করতে পারেন, যাতে জাতিকে আগামী সুন্দরের পথ উন্মুক্ত করে দিতে পারেন।কেননা তার একটিমাত্র ভুল সিদ্ধান্ত জাতিকে অনেক খেসারত দিতে হতে পারে। আবার শেখ হাসিনা দলীয় বিশ্বস্ত মতিয়া চৌধুরী কিংবা সাজেদাকে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনীত করতে পারেন, যেহেতু বিশ্বস্ততা ও সাংগঠনিক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতায় বিগত দিনে এরাই শেখ হাসিনাকে আগলে রেখেছিলেন, এটা প্রমাণিত।এক্ষেত্রে সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসলামিক রাষ্ট্রে দুইজন মহিলা অনেক ধর্মীয় বিধি-নিষেধ পালনে প্রধান বাধা হয়ে যেতে পারে। আবার সৈয়দ আশরাফকে প্রধানমন্ত্রী করে টনি ব্লেয়ার স্টাইলের ক্ষমতার দৃশ্যপট পাল্টানোর রাজনৈতিক খেলাও শেখ হাসিনার জন্য সুখকর হবেনা, যদিও সৈয়দ আশরাফ শেখ হাসিনার বিশ্বস্ত এবং আস্থা ভাজন।তথাপি আগামী টার্মে আওয়ামীলীগকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনার জন্য আপামর জনগণের কাছে সৈয়দ আশরাফ কতটুকু গ্রহণযোগ্য ও নির্ভরতার প্রতীক হবেন- তা নিয়ে রয়েছে সংশয় ও সন্দেহ। এক্ষেত্রে অনেকে আবার শেখ রেহানাকে মন্দের ভালো এবং মুজিব তনয়া হিসেবে জনতার আস্থার প্রতীক হিসেবে সামনে নিয়ে আসার কৌশলী পদক্ষেপে এগিয়ে আসবেন,যা শেখ হাসিনার সম্মতি থাকবে ধরেই নেয়া যায়। কিন্তু এক্ষেত্রেও বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংকট ঘনীভূত বৈ কমবেনা। উপরের দুই এর যেকোন এক পদক্ষেপ বিএনপি সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কিছুতেই গ্রহণযোগ্যতা পাবেনা।আবার শেখ হাসিনার নিজে থেকে রাষ্ট্রপতি বিএনপির আন্দোলনে আগুনে ঘি ঢেলে দিবে।বাকি থাকে আলোচনা ও সমঝোতার পথ- যা জিল্লুর রহমানের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে সকলের অবচেতনে আপনা থেকে আমাদের জন্য তৈরি হয়েছে। এক্ষেত্রে যদি আমরা ব্যর্থ হই বা আওয়ামীলীগ নেত্রী যদি প্রজ্ঞার পরিচয় না দেন, তবে জাতি হিসেবে আমাদেরকে অনেক খেসারত দিতে হবে।এখন দেখা যাক শেখ হাসিনা কি করেন ? কারণ জাগরণ মঞ্চ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, আওয়ামীলীগ নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতি আর লুট-পাট, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, ঘন-ঘন হরতাল সব কিছু মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা এমন এক পর্যায়ে শেখ হাসিনা নিজেই নিয়ে এসেছেন, যেখান থেকে ইচ্ছে করলেও তার ইউটার্ণ-এর সকল পথ তিনি নিজেই বন্ধ করে দিয়েছেন। এরই মাঝে বেগম জিয়া বগুড়ার জনসভায় প্রকাশ্যে বলেছেন, সেনাবাহিনী বসে থাকবেনা, যথাসময়েই সেনাবাহিনী সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে।বগুড়ার জনসভায় বেগম জিয়ার এই বক্তব্য নিছক কোন রাজনৈতিক বক্তব্য কিংবা সেনাবাহিনীকে উস্কে দেয়ার বক্তব্যের মধ্যে দেখার অবকাশ নেই। কেননা বেগম জিয়া সেনাবাহিনীকে যেমন কোন আহবান জানাননি আবার খোলাসা করেও তেমন কোন পদক্ষেপের কথাও বলেননি। শেখ হাসিনা সাধারণত: বেগম জিয়ার যেকোনো বক্তব্যের বিপরীতে অত্যন্ত অশালীন এবং তীর্যকভাবে সমালোচনা করে থাকেন, শুধু কি তাই, চোরের মার বড় গলা বলে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়ে বেগম জিয়াকে পাকিস্তানের, মৌলবাদীদের এজেন্ট,আমীর ইত্যাদি নানা কঠিন ভাষায় সমালোচনা করে থাকেন। আওয়ামীলীগের নেতারাতো আরো এগিয়ে গালিগালাজ করে বক্তব্য দিতে অভ্যস্ত।অথচ বগুড়ার জনসভায় বেগম জিয়ার বক্তব্যের পর শেখ হাসিনা এবং আওয়ামীলীগ যেন চুপসে গেছেন। বেগম জিয়ার বক্তব্য নিয়ে নানা চূল-চেরা বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছেন।শেখ হাসিনা এবং আওয়ামীলীগ বেগম জিয়ার যে বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন, তাতে নেই আগের মতো সেই ঝাঁজালো তিক্ততা, অশ্লীল ভাষা। মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে অনেক মন্ত্রী বেগম জিয়ার বক্তব্যে ক্ষোভে ফেটে পড়লেও প্রধানমন্ত্রী যিনি আগ বাড়িয়ে ঝগড়া করতে অভ্যস্ত, থাকেন একেবারে চুপ। তবে কি দেশে পরিবর্তন আসন্ন ?এমন আশঙ্কা কিন্তু উড়িয়ে দেয়া যায়না। অবস্থার প্রেক্ষিতে মনে হচ্ছে, দেশে একটা কিছু ঘটতে যাচ্ছে।বেগম জিয়ার প্রকাশ্যে এমন বক্তব্য সে আশংকাকে আরো শক্ত করেছে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।

বিদেশী প্রভু আর মেহমানরা যে আর আগের মতো সরকারের সাথে নেই সেটা অনেকটাই এখন স্পষ্ট। সম্প্রতি ব্রিটেনের পার্লামেন্টে লেবার দলীয় এমপি রোশনারা আলী ঘটা করে পার্লামেন্টের আলোচনা সভায় বাংলাদেশের সহিংস ঘটনাবলীতে চাপ প্রয়োগের আহবান- সবই কিছুই কিন্তু অন্য রকম এক ইঙ্গিত বহন করে। মহাজোটের শরীক হোসেন মোহাম্মদের এরশাদ কর্তৃক শেখ হাসিনার দুর্দিনে পাশে থাকার বক্তব্য সেই সব ইঙ্গিতকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বেগম জিয়া কিন্তু সরকারের কোর্টে বল ছেড়ে দিয়েছেন, যাতে আন্তর্জাতিক প্রভুদেরকে বুঝানো হচ্ছে, বেগম জিয়া আলোচনার দরজা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। সরকার যদি আলোচনার টেবিলে না আসে বেগম জিয়া বলতে পারবেন সরকার সেদিকে যায়নি বা ভ্রুক্ষেপ করেনি। বল এখন শেখ হাসিনার কোর্টে, তিনি কি ভাবে খেলবেন সেটা তার বিষয়। এবার যদি প্রজ্ঞার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হন, তাহলে দেশ কিন্তু অনেক অন্ধকারের দিকে ধাবিত হবে সন্দেহ নাই।যদিও পরবর্তীতে সরকারের সমালোচনার জবাবে মীর্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার বক্তব্য ঠিকভাবে সংবাদ পত্রে আসেনি বলে ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বিশ্লেষকরা এবং সিগন্যাল যাদের পাওয়ার, তারা ঠিক মতোই সিগন্যাল পেয়ে গেছেন।প্রশাসনের সর্বত্রই আজ এক অস্থিরতা বিদ্যমান। জনপ্রশাসনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক হয়রানি ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্ধ আজ চরমে, একই অবস্থা পুলিশ ও আনসার, বর্ডার গার্ড, সেনাবাহিনী সহ সকল অংশেই ক্ষোভ বিরাজমান, যেকোন সময় সরকারের জন্য বুমেরাং হতে বাধ্য।

বিদেশী সকল মেহমান এবং পর্দার অন্তরালের শক্তিগুলো সকল পক্ষের সাথেই যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। হাসিনা একথা জানেননা, এমন নয়। মাস-তিনেক আগে থেকেই ব্রিটিশ সরকারের নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ের ঘন-ঘন ঢাকা ও দিল্লী সফর, ভারতের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সমান তালে ঢাকা সফর, সঙ্গে মার্কিন মুল্লুকের কর্মকর্তা আর মজিনার দৌড়ঝাঁপ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবাধিকার ও সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে উষ্মা প্রকাশ আর সম্প্রতি সৌদি আরবের বাংলাদেশী শ্রমিক দেশে ফেরত আসার বিদেশী পত্রিকার ঘোষণা-কোন কিছুই একটি থেকে অপরটি বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা নয়। শাহবাগের জাগরণ মঞ্চে যখন জনতার বাধ-ভাঙ্গা জোয়ার, ঠিক তখনি ডেভিড ক্যামেরুনের হঠাৎ করে ভারত সফর, একই সময় কনজারভেটিভ পার্টির প্রভাবশালী নেত্রী সাঈদা ওয়ার্সীর ঢাকা সফর বেশ তাৎপর্য পূর্ণ ছিলো, যদিও শাহবাগের ঢামাডোলে তাদের সেই হাই-প্রোফাইল সফর অনেকটা ডাকা পড়ে যায়। অথচ রাজনৈতিক বোদ্ধাদের কাছে তখনি সংকেত পৌঁছেছিলো ঢাকায় কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে…।কিন্তু কি সেটা ? তা বুঝতে আমাদের আরো কিছু সময় চলে যায়। পরিস্থিতির দৃশ্যপট এখন বেশ নাটকীয়ভাবে বদলে যাচ্ছে, আর হাসিনার চালে তা যেকোন সময় পজিটিভ কিংবা নেগেটিভ – যেকোন অবস্থার তৈরি সহসাই করে দিতে পারে। শেখ হাসিনা কি সেই সংকেতের গুরুত্ব অনুধাবন করে পজিটিভ চাল চালাবেন, নাকি নিজের চাটুকার আর দলীয় অন্ধ-অহমিকা নিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ফিরে আসার স্বপ্নে বিভোর হয়ে রক্তপাতের দিকে যাবেন, সেটা সময়ই বলে দিবে। কেননা, আজকের বিশ্ব রাজনীতির দৃশ্যপটের দিকে বিশেষ করে আমাদের এই তৃতীয় বিশ্বের এবং মুসলিম শাসকদের সাম্প্রতিক কালের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের দিকে তাকালে কিন্তু আমরা খুব একটা আশার আলো দেখিনা। কেননা আমাদের এই সব অন্ধ অহমিকার অতি ক্ষমতাধর শাসকেরা জনতার দাবির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনিক শক্তি প্রয়োগ করে যেনতেন ভাবে ক্ষমতায় ঠিকে থাকতে চায়। নিকট অতীতের মিশরের হোসনী মোবারক, লিবিয়ার গাদ্দাফি, ইয়েমেনের বাদশা, আর আজকের সিরিয়ার আসাদের দিকে তাকালে আমরা শিউড়ে উঠি, এরা রক্তপাত,খুন-খারাবি, আর দেশের ভিতরে ধ্বংস যজ্ঞ চালিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি বা হচ্ছেনা, তারপরেও এদের কাছ থেকে আমরা কেউ কখনো শিক্ষা নেইনা, নিতে চাইনা।আমাদের নেতা-নেত্রীরা কি একটু ভাববেন? তাহলে জাতি হিসেবে আমরা অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও অবস্থা থেকে রক্ষা পেয়ে যাই।

Salim932@googlemail.com
27th March 2013.

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *