ইরাক যুদ্ধ : চিলকট রিপোর্ট এবং টনি ব্লেয়ার ( সাপ্তাহিকে বিশ্লেষণ )

ইরাক যুদ্ধ : চিলকট রিপোর্ট এবং টনি ব্লেয়ার ( সাপ্তাহিকে বিশ্লেষণ )

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ, লন্ডন থেকে

 

(এই লেখাটি বাংলাদেশের ন্যাশনাল উইকলি সাপ্তাহিকে প্রকাশিত হয়- বর্ষ ৯, সংখ্যা ৯, ৩রা আগস্ট ২০১৬)

 

২০০২-০৩ সালে যখন ইরাক আক্রমণ করা হয় বা পশ্চিমাদের নেতৃত্বে ব্রিটেন যখন যুদ্ধে জড়ায়, তখন প্রাইমমিনিস্টার ছিলেন টনি ব্লেয়ার। ব্লেয়ারের একটা উক্তি তখন বেশ জনপ্রিয় ছিল, আর সেটা হলো- শোল্ডার টু শোল্ডার, উই স্ট্যান্ড টুগেদার। মার্কিনিদের সঙ্গে ব্লেয়ার তার শোল্ডার টু শোল্ডার মিলিয়ে ব্রিটেনকে যেভাবে যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন, তখন পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এবং বলা যায় লেবার দলনেতা হিসেবে নিজের ক্ষমতা ও একগুঁয়েমি এবং জেদের বশবর্তী হয়ে পার্লামেন্টকে মিথ্যা তথ্য, গোয়েন্দা রিপোর্টকে ম্যানিপুলেট করে তিনি বিশ্ববাসীকে এমনভাবে যুদ্ধের দিকে ঝুঁকিয়েছিলেন, ইরাককে ধ্বংস শুধু নয়, একেবারে ম্যাসাকার করেন, সাদ্দামকে উৎখাতের নামে সেদিন তিনি মধ্যপ্রাচ্যকে বশে আনতে প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রের জন্যে মিথ্যা গোয়েবলসীয় জগাখিচুরি সব তথ্য হাজির করে মধ্যপ্রাচ্যকে ভুলিয়েছিলেন। ২০০৩ সালে টনি ব্লেয়ার আর বুশের সেই কারসাজি বিশ্ববাসী চুপ থাকলেও যুদ্ধের এতো বছর পরে আজ সেই ঘটনা টনি ব্লেয়ারের জন্যে বুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে। ব্লেয়ার ক্ষমতায় থাকতে ভাবতেও পারেননি, একদিন তাকে সত্যের মুখোমুখি হতে হবে।


টনি ব্লেয়ারের উত্তরসূরি হিসেবে ক্ষমতায় এসেছিলেন তারই চ্যান্সেলর গর্ডন ব্রাউন। তিনি প্রবল জনমতের চাপে স্যার চিলকোটের নেতৃত্বে ব্রিটেনের ইরাক যুদ্ধে জড়ানো নিয়ে কমিশন গঠন করলেও নানা অজুহাতে চিলকট রিপোর্ট প্রকাশিত হতে বিলম্ব হয়ে যায়। অবশেষে ডেভিড ক্যামেরন যখন ক্ষমতায় আসেন, তখন কোয়ালিশন সরকারের চাপ সত্ত্বেও চিলকট রিপোর্ট প্রকাশে বিলম্ব হতে থাকে। ক্যামেরন দ্বিতীয়বার নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে যখন ক্ষমতায় আসেন তখন চিলকট রিপোর্ট প্রকাশের নির্ধারিত তারিখ ঘোষণা করেন। অবশেষে অনেক নাটকীয়তার পর ক্যামেরনের সময়ে দুইবার তারিখ পরিবর্তিত হয়ে চিলকট রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।

চিলকট রিপোর্ট-

The Iraq Inquiry Logo
ইরাক যুদ্ধের পর  ২০০৯ সালে গঠিত  কমিটি দীর্ঘ সাত বছর পর তাদের ঐতিহাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ইরাকে হামলায় যুক্তরাজ্যের যৌক্তিকতা অনুসন্ধান ও তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার সরকারের ভূমিকা তদন্তে স্যার জন চিলকটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। স্যার জন চিলকটের নাম অনুসারেই এ প্রতিবেদনকে ‘চিলকট রিপোর্ট’  নামে ব্যাপকভাবে পরিচিতি পায়। এ রিপোর্ট প্রকাশের আগে ব্রিটিশ মিডিয়ায়, পার্লামেন্টে ব্যাপক আলোচনা ও প্রশ্নের উদ্রেক করেছিল। অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সেই রিপোর্ট আলোর মুখ দেখলে নতুন করে টনি ব্লেয়ার আলোচনায় চলে আসেন।

 
স্যার জন চিলকট বলেন, বিচার কিংবা রায় দেওয়ার দায়িত্ব তাদের নয়। তারা কেবল ইরাক যুদ্ধের যৌক্তিকতা ও প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনে কাজ করেছেন। তবে যেখানে প্রত্যাশিত মানদণ্ড লঙ্ঘিত হয়েছে, সেখানে কাক্সিক্ষত সমালোচনা করেছেন তারা।

 
২০০৩ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে মিলে যুক্তরাজ্য ইরাকে যে হামলা চালিয়েছে, তা কোনো যৌক্তিক বিবেচনার ভিত্তিতে ছিল না।

The Iraq Inquiry commitee
চিলকট রিপোর্টে বলা হয়, অসত্য তথ্যের ভিত্তিতে এবং বিস্তারিত পরিস্থিতি অনুধাবন ছাড়াই ইরাকে আক্রমণ চালানোর ঘটনা, ব্রিটিশ সৈন্য ও যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করেছেন। সেই সঙ্গে ইরাকসহ ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে দীর্ঘমেয়াদি সংকট তৈরি করেছেন।

 
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসন ইরাকের তৎকালীন স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে যে, সাদ্দাম ইরাকে রাসায়নিক অস্ত্রের মজুত গড়ে তুলেছেন এবং সাদ্দাম হোসেন বিশ্বশান্তির জন্য হুমকি। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ইরাকে হামলার উদ্যোগ নেন বুশ সরকার। যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারও একই দোহাই দিয়ে ইরাকে হামলা চালাতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের অনুমোদন নেন। শুরু থেকেই এই হামলার বিরোধিতায় ফুঁসে ওঠে যুক্তরাজ্যের মানুষ। যার পরিণতিতে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে বিদায় নিতে হয় ব্লেয়ারকে। ইরাকযুদ্ধে ১৭৯ জন ব্রিটিশ সৈন্য নিহত হয়। সরকারের ব্যয় হয় প্রায় ১০ বিলিয়ন পাউন্ড। এই যুদ্ধে প্রায় দেড় লাখ ইরাকি নিহত হয় এবং ১০ লাখের বেশি ইরাকি বাস্তুহারা হয়।

 

চিলকট রিপোর্টের উল্লেখযোগ্য দিক-

 
ক) সাদ্দাম হোসেনকে নিরস্ত্র করতে কিংবা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার শান্তিপূর্ণ উপায়গুলো পাশ কাটিয়ে ইরাকে হামলা চালানো হয়েছে। ওই সময়ে ইরাকে হামলা করা ‘অনিবার্য ছিল না’। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বেশিরভাগ সদস্যই চেয়েছিল হামলা না চালিয়ে সাদ্দাম হোসেনের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখতে।
খ) ইরাকের কাছে থাকা সমরাস্ত্র বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকিÑ এমন ধারণা ও বিবেচনা ছিল ভিত্তিহীন।
গ) সাদ্দাম হোসেন রাসায়নিক অস্ত্রের মজুদ অব্যাহত রেখেছেন বলে যে গোয়েন্দা তথ্য দেওয়া হয়েছিল, সেটা সন্দেহাতীত কি-না তা যাচাই করা হয়নি।
ঘ) ইরাকযুদ্ধের পুরো পরিকল্পনাই একটি গলদপূর্ণ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওইসব তথ্যের চ্যালেঞ্জ করা হয়নি।
ঙ) ব্রিটিশ সৈন্যদের ইরাকে হামলায় অংশ নেয়ার বৈধতা কোনোভাবেই ‘সন্তোষজনক’ ছিল না।
চ) ব্রিটিশ সৈন্যদের ইরাকে হামলার প্রস্তুতি নিতে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। এই হামলার ঝুঁকিও যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয়নি
ছ) বিস্তারিত সতর্ক করা সত্ত্বেও পরিণতিকে খাটো করে দেখা হয়েছে এবং প্রস্তুতিও ছিল অপর্যাপ্ত।
জ) সরকার এই হামলার যে লক্ষ্য অর্জনের ঘোষণা দিয়েছিল, তা অর্জন করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।
ঝ) তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার যুক্তরাষ্ট্রকে প্রভাবিত করতে নিজের সামর্থ্যরে অতিরঞ্জন করেছিলেন।
ঞ) ভবিষ্যতে কোনো দেশে হস্তক্ষেপ কিংবা হামলার বিষয়টি সুনির্দিষ্ট হিসাবের ভিত্তিতে করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বিতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি হামলার চ্যালেঞ্জ ও পরিণতি নিয়ে কঠোর বিশ্লেষণ হতে হবে।

চিলকট ইনকোয়ারিতে ব্লেয়ার-

স্যার চিলকট ফুল ইনকোয়ারিতে টনি ব্লেয়ারকে বক্তব্য দিতে, তার বক্তব্য ক্রস এক্সামিনেশনের জন্য উপস্থিত করা হয়। সেদিনও ব্লেয়ার ইরাকযুদ্ধে তার ভূমিকার জন্য সাফাই গেয়েছিলেন। সেজন্যে কোনো অনুতপ্ত হননি।
কিন্তু রিপোর্ট প্রকাশের পর অনেকটা ঘুরিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন, যদিও যুদ্ধে যাওয়াটা সঠিক হিসেবে উল্লেখ করতেও ভুল করেননি।

যুদ্ধে আহত পরিবারদের ক্ষোভ-

ইরাকযুদ্ধে নিহত সৈনিকদের পরিবার স্বজনরা এবং যুদ্ধবিরোধী মানবতাবাদীরা বরাবরই ইরাকযুদ্ধে ব্রিটেনের জড়ানোর জন্যে টনি ব্লেয়ারের কড়া সমালোচনা করে আসছিলেন শুরু থেকেই। নিহত ১৭৯ জন সৈনিকের কেউ কেউ প্রকাশ্যে টনি ব্লেয়ারকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর দাবি করে আসছিলেন- তখনো চিলকট রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি। অনেকেই ব্লেয়ারকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবেও বিচারের দাবি ক্ষীণকণ্ঠে হলেও করে আসছিলেন। কিন্তু ব্লেয়ার তখনো ইরাকযুদ্ধে ব্রিটেনে যাওয়া সঠিক বলে আসছিলেন। সাদ্দাম তখনকার বিশ্বের জন্য ভয়ানক ছিলেন- দাবি করছিলেন।

 

PA Wire

পার্লামেন্টে মোশন আনার চিন্তা-

২০০৩ সালে ইরাকযুদ্ধে ব্রিটেনকে জড়ানো এবং ইরাক দখলের জন্যে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে এবার ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মোশন আনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
বিবিসি টেলিভিশনের অ্যান্ড্রো মার শোতে বিরোধীদলীয় নেতা জেরেমি করবিন এবং ডেভিড ডেভিস এমপি আলোচনার সময় জোরালোভাবে এমন বক্তব্য উত্থাপন করেন। ডেভিড ডেভিস এমপি মোশন উত্থাপন করবেন, জেরেমি করবিন বলেন, তিনি এই মোশনে সমর্থন করবেন। ডেভিড ডেভিস বলেন, তিনি টনি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে মশন আনবেন- ১. পার্লামেন্টকে মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্যে, ২. মাস ডেস্ট্রাকশন ধ্বংসের জন্যে তিনবারের ভুল তথ্য প্রদান, ৩. ভুল তথ্যের মাধ্যমে জাতিসংঘের রেজুলেশন উপস্থাপন ও পাস ৪. ঝুঁকি এবং শঙ্কার অজুহাতে যুদ্ধে যাওয়া ইত্যাদি কারণে টনি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে ধোঁকা ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্যে মোশন আনা হবে বলে ডেভিড দাবি করেন।
তার মতে, অবমাননা ও প্রতারণার জন্য ধোঁকা দিয়েছেন টনি ব্লেয়ার, সেটা প্রমাণিত।

 

 

Alex Salmond appears on Peston on Sunday.

অ্যালেক্স সালমন্ডের সমর্থন-

এদিকে স্কটল্যান্ডের সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স সালমন্ড রবার্ট প্রেস্টনকে বলেছেন, তিনি মোশনকে সমর্থন করবেন- তার মতে ব্লেয়ারকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।
আর যুদ্ধে আহত ও নিহত সৈনিকদের পরিবারের সদস্যদেরও দাবি ব্লেয়ারকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

ইরাকযুদ্ধ অবৈধ ছিল : প্রেসকট-

John Prescott has turned on his old boss Tony Blair
২০০৩ সালের ইরাক আগ্রাসনের সময়ে জন প্রেসকট ছিলেন টনি ব্লেয়ারের সরকারের ডেপুটি  প্রাইমমিনিস্টার। লন্ডনের ডেইলি মিররে এক নিবন্ধে তিনি ইরাক যুদ্ধে ব্রিটেন ও আমেরিকার অংশগ্রহণ অবৈধ উল্লেখ করে লিখেছেন টনি ব্লেয়ার জোরপূর্বক মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে ব্রিটেনকে ইরাকযুদ্ধে নিয়েছিলেন।
টনি ব্লেয়ার ক্ষমতা থেকে বিদায় নিলে গর্ডন ব্রাউন ক্ষমতায় আসেন। ঐ সময় ইরাকযুদ্ধের যৌক্তিকতা ইত্যাদি নিয়ে তিনি স্যার চিলকোটের নেতৃত্বে কমিশন গঠন করেন এবং সাত বছর পর সম্প্রতি চিলকট রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। চিলকট রিপোর্টে ইরাকযুদ্ধের যৌক্তিকতা এবং ঐ সময় যুদ্ধে যাওয়া অবধারিত ছিল না, এমনকি সাদ্দাম হোসেনের কাছে বিধ্বংসী রাসায়নিক অস্ত্র ছিল, এমন প্রমাণ ছিল না বলেও মন্তব্য করা হয়। ফলশ্র“তিতে প্রবল জনমতের চাপে টনি ব্লেয়ারও রিপোর্ট প্রকাশের পর দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
২.৬ মিলিয়ন শব্দের চিলকট রিপোর্টে ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট যথার্থ ছিল না বলে মন্তব্য করা হয়। এর পর পরই প্রেসকটের এই যুদ্ধকে অবৈধ বলার পরই পার্লামেন্টে মোশন আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ব্লেয়ারকে আইনের মুখোমুখি হতে হবে। ধীরে ধীরে এই দাবি এখন জোরালো হচ্ছে।

 

এবং সর্বশেষ-

 
এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে যুদ্ধে আহত পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীরা টনি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে চ্যারিটি ফান্ডের আয়োজন করতে যাচ্ছেন। চিলকট রিপোর্টে নির্দিষ্ট কোনো সুপারিশ তথা আইনগত কোনো পয়েন্টের দিকে ইঙ্গিত না থাকায় ব্রিটিশ পুলিশ কোনো ব্যবস্থায় বা ইনভেস্টিগেশনে যাচ্ছে না। সাধারণত এরকম কোনো রিপোর্ট প্রকাশিত হলে পুলিশ তদন্তে নামে। যেহেতু চিলকট রিপোর্টে এমন কোনো নির্দেশনা নেই, তাই যুদ্ধাহত পরিবারের সদস্যদের ব্যক্তিগত বা বেসরকারি ব্যবস্থায় ফান্ডের ব্যবস্থা করে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে হবে। এদিকটা কিছুটা জটিল এবং সময়সাপেক্ষ হলেও জানা গেছে, যুদ্ধাহত পরিবারগুলো প্রাইভেট প্রসিকিউশনের দিকেই যাচ্ছে। মানবতাবাদীরাও পেছন থেকে এগিয়ে আসছেন। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে টনি ব্লেয়ারকে ইরাকযুদ্ধের কনসিকোয়েন্সের মুখোমুখি হতে হবে অদূর ভবিষ্যতে। সময় সেদিকেই যাচ্ছে।
স্কটল্যান্ডের সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার অ্যালেক্স সালমন্ড রবার্ট প্রেস্টনকে বলেছেন, তিনি মোশনকে সমর্থন করবেন, তার মতে ব্লেয়ারকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

চিলকট রিপোর্ট : ছয়টি বিষয় দীর্ঘ এই রিপোর্টে যে ছয়টি উল্লেখযোগ্য বিষয় সামনে চলে আসে, তা হলো

Michael Fallon
* বিকল্প থাকা সত্যেও, এবং বিকল্প ব্যবস্থায় না গিয়ে, এমনকি সাদ্দাম হোসেনের কাছে বিধ্বংসী অস্ত্র মজুদ ছিল না- এমন অবস্থায় ইরাক যুদ্ধে যাওয়া হয়।
* ইরাকযুদ্ধের নয় মাস আগে টনি ব্লেয়ার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের কাছে লিখেন, আমি আপনার সঙ্গে আছি- যেকোনোভাবেই।
*  ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট এমনভাবে প্রভাবিত করে উপস্থাপিত হয়েছিল- যা চ্যালেঞ্জ করা উচিত ছিল। কেননা, ব্লেয়ার ডোসিয়ার এমনভাবে উপস্থিত করেছিলেন পার্লামেন্টে- যা জাস্টিফাই করা হয় নাই।
* ইরাকযুদ্ধের লিগ্যাল বেসিস সন্তোষজনক ছিল না
* ব্রিটিশ সৈন্যদের বিপজ্জনক অবস্থায় ফেলা হয়েছিল
* যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্বাসন ব্যবস্থা ও পরিকল্পনা অপর্যাপ্ত ছিল।

 
Salim932@googlemail.com

 

http://www.shaptahik.com/v2/?DetailsId=11472