সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ-
হাইককোর্ট তাদের এক রুলিং এ জানিয়েছেন, লেবার দলের নতুন রেজিস্টার্ড মেম্বার- যাদের মেম্বারশিপ এনইসির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ছয় মাস পূর্ণ হয়নি, সেই ১ শত ৩০ হাজার সদস্য লেবার দলের নেতা নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। ফলে নতুন সদস্য যারা ১২ জুলাই পর্যন্ত মেম্বার হয়েছেন তাদের ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে আর কোন বাধা রইলোনা।
এর আগে লেবার দলের কেন্দ্রীয় ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটি (এনইসি) সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১২ জুলাই পর্যন্ত যে সব সদস্য মেম্বারশিপ গ্রহণ করেছেন অথচ এই সময়ের ভিতরে ছয় মাস পূর্ণ হয়নি- তারা নেতা নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে পারবেননা।
এনইসির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লেবার দলের পাচ সদস্য হাইকোর্টে আবেদন করলে শুনানী শেষে হাই কোর্ট তাদের এই রুলিং প্রদান করেন। পাচ সদস্য অবশ্য চ্যারিটির মাধ্যমে হাইকোর্টের কিউসি, ব্যারিস্টার ও কোর্টের ফি সংগ্রহ করেছেন।
দিনের শুরুতে যখন হাইকোর্টের এই রায় প্রকাশিত হয় তখন লেবার এনইসি একজন সদস্য টুইট করেছিলেন, লেবার দলের এই রায়ের বিরুদ্ধে এপিলের প্রয়োজনীয়তা তথা কোর্টে মনোনিবেশের চাইতে কনজারভেটিভদের মোকাবেলায় মনোনিবেশ করতে চায়।
কিন্তু সন্ধ্যার দিকে এনইসির একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে জানান, এনইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই রায়ের বিরুদ্ধে লেবার দল আদালতে এপিল করবে।
এদিকে শুরুতেই লেবার দলের শ্যাডো চ্যান্সেলর ম্যাকডোনেল অবশ্য নতুন মেম্বারদের পার্টির নেতা নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে ও নির্বাচনে ভোট দানের অনুমতি প্রদানের পক্ষে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। গ্রাসরুট লেভেলের সদস্য সহ নতুন এই ১,৩০,০০০ মেম্বারদের ভোটাধিকার জেরেমি করবিনের পূণরায় লিডার হওয়ার পক্ষে কাজ করবে বলে স্পষ্ঠত লেবার পার্টি এই প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে।
লেবার পার্টির এপিলের সিদ্ধান্ত এখন পার্টি সদস্যদের ভোটাধিকার প্রশ্নে আদালতের রায় চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে। কেননা আপিল করার মধ্য দিয়ে লেবার দল কার্যত কোর্ট ব্যাটলে জড়িয়ে পড়েছে।
আগামী নির্বাচনে লেবারদল জিরো মেজরিটি পাবে- ইলেক্টোরাল রিপোর্ট প্রকাশ-
এদিকে ইলেক্টোরাল রিপোর্ট যেটা প্রকাশিত হয়েছে, সেই রিপোর্টে প্রতীয়মান হচ্ছে, যেহেতু টেরেজা মে`র নেতৃত্বে কনজারভেটিভ পার্টি বর্তমানে লেবার দলের চাইতে অনেক জনপ্রিয় এবং সম্প্রতি প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, টোরি পার্টি ৯০% এগিয়ে রয়েছে, সেক্ষেত্রে লেবার দল জিরো পার্সেন্ট মেজরিটি – এমন রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। অর্থাৎ আগামি নির্বাচনে জেরেমি করবিনের লেবার দল ক্ষমতায় আসীন হতে পারছেনা, কনজারভেটিভ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবেই আসীন হবে- ইলেক্টোরাল রিপোর্ট সেকথাই বলে দেয়।
রিপোর্ট প্রকাশের পর জেরেমি করবিন পদত্যাগের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন- আগামী নির্বাচনের পর, যদি না ক্ষমতাসীন হতে পারেন। যদিও অধিকাংশ নতুন সদস্যদের করবিনের ক্ষমতায় আসীন হওয়ার ব্যাপারে অনেক আশাবাদী।
রিপোর্টে জানা গেছে, ব্রিটেনের নির্বাচনী বাউন্ডারি কমিশন আগামী ২০২০ সালের নির্বাচনে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৬৫০ সদস্যদের আসন কমিয়ে ৬০০ সদস্যের করার জন্য কাজ করছে। রিপোর্ট ইন্ডিকেট করছে, ২০১৫ সালের নির্বাচনে জনগন যেভাবে ভোট দিয়েছেন, ঠিক সেভাবে যদি ভোট দেন, তাহলে নির্বাচনী আসন বিন্যাস বা বাউন্ডারি পরিবর্তনে কনজারভেটিভ দল কমন্সে ১২ থেকে ৪৮ হয়ে যাবে , যেহেতু লেবার দলের ৩০টি সিট ডিসএপিয়ার্ড হয়ে যাবে , তুলনামূলকভাবে কনজারভেটিভদের ৭টি আর এসএনপির ৬টি হারিয়ে যাবে।
ইলেক্টোরাল রিপোর্ট জুলাইতে ক্যালকুলেট করে দেখেছে, প্রায় ৭,৯৫২ লোকের উপর জরিপ চালিয়ে তথ্য পরীক্ষা নিররীক্ষা করে পেয়েছে, কনজারভেটিভ ৪০ পার্সেন্ট আর লেবার ২৯.৫ পার্সেন্ট রয়েছে তুলনামূলকভাবে।
এই হিসেবে কনজারভেটীভের সিট বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩১ থেকে ৩৪৫ হবে আর লেবারের গ্নাস পেয়ে ২৩২ থেকে ১৮২ হয়ে যাবে- যা দুর্ভাগ্যজনক ( ঠিক ২০১৫ সালের নির্বাচনী হিসেবে)
এই টেকনিক যখন ক্যালকুলাস করা হয় তখন দেখা গেছে, কনজারভেটিভ পার্টি ২০২০ সালে ৭৭ পার্সেন্ট সম্ভাব্য মেজরিটি হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে লেবার পার্টি সর্বনিম্ন পর্যায়ের মেজরিটি মানে সরকার গঠণের মতো সম্ভাবনা ক্ষীন। এক্ষেত্রে কোয়ালিশন হলে ২১ পার্সেন্ট সম্ভাবনা কনজারভেটিভদের আর মাত্র ৩ পার্সেন্ট সম্ভাবনা লেবার দলের।এই মডেলিং এ কোন রূপ বুকিস বা পুন্টার্সদের কোন সম্পর্ক বা লেনদেনের সম্পর্ক নেই বা ব্যবহ্নত হয়নি।
টেরেজা মে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেশ জনপ্রিয় হয়ে আছেন। বুকিসের ঘরেও তাই। বুকিসের ঘরে টেরেজার সাথে অন্যান্যদের জনপ্রিয়তা নিম্নরূপ-
করবিন- ৯-২
জনসন-৭-১
ওয়েন স্মীথ- ১২-১
উল্লেখ্য আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর লেবার দলের কনফারেন্সে পার্টি মেম্বারদের ভোটে দলীয় লিডার নির্বাচনের রেজাল্ট ঘোষণা করা হবে। দলীয় নেতা পদের নির্বাচনে বর্তমান লিডার জেরেমি করবিন এবং ওয়েন স্মীথ প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
(salim932@googlemail.com
9th August 2016, London)
L0ndon Times- Salim Ahmed News: