Home » Featured » কেন শিনজো আবেকে হত্যা করা হয়?

কেন শিনজো আবেকে হত্যা করা হয়?

সবাইকে ঈদ মোবারক। আমন্ত্রণ আলোচিত সংবাদ বিশ্লেষণ ভিত্তিক অনুষ্ঠান টিএলটি পডকাষ্টে। আজকের প্রসঙ্গ কেন শান্তির দেশ জাপানে শিনজো আবেকে হত্যা করা হয়?

তার আগে সারা বিশ্বের আজকের সংবাদের টুকিটাকি-

বিক্ষোভের মুখে বাসভবন ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়েছেন। সেখানে গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ চলছে।শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সৈন্যরা গোটাবায়া রাজাপাকসেকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে গেছেন। বিক্ষুদ্ধদের মোকাবিলায় তারা খোলা আকাশে গুলি ছোড়ে।প্রেসিডেন্টের বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের হানার পর শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে ইচ্ছুক বলে দলীয় নেতাদের জানিয়েছেন। তিনি একটি সর্বদলীয় সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পথ তৈরি করতে আগ্রহী।

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে আজ শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্‌যাপন করা হচ্ছে।করোনা মহামারি সামলে এ বছর বিভিন্ন দেশে অনেকটাই বিধিনিষেধের আওতামুক্ত হয়ে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করছেন মুসল্লিরা। খোলা আকাশের নিচে আদায় করা হচ্ছে ঈদের জামাত।ফিলিস্তিনে পবিত্র আল–আকসা মসজিদে পশ্চিম তীরের মুসল্লিরা আদায় করেন পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ। এতে অংশ নিতে দেখা গেছে হাজারো ফিলিস্তিনিকে।মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, কুয়েত, মিসর ও জর্ডানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা মহামারি শুরুর পর এবারই উন্মুক্ত স্থানে খুতবা ও জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াতে আজ পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্‌যাপন করা হচ্ছে।

 

কোরবানির সময়ে ভারতের ত্রিপুরার কোথাও যাতে ‘বেআইনিভাবে’ গরু, বাছুর, উট বা অন্য কোনও প্রাণী হত্যা না করা হয়, তার জন্য জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।ত্রিপুরার প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ভগবান দাস বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা কোরবানি বন্ধ করার কোনও নির্দেশ দেননি, তবে নিয়ম মেনেই পশু জবাই করতে হবে। এছাড়াও, তিনি বলেন, “অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত” যাতে না লাগে, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আরও ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ হাজার ১৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৯৩৯ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে।

অসন্তুষ্টি থেকে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। হামলাকারী আগে থেকেই আবেকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন। জাপানের পুলিশের বরাত দিয়ে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো এমন খবর প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। তবে ঠিক কী কারণে হামলাকারীর অসন্তুষ্টি এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি পুলিশ। বিস্তারিত অডিওতে শুনুন-

……

১৯৯৫ সালে টোকিও পাতালরেলের কয়েকটি স্টেশনে উগ্রপন্থী ওম শিনরিকিওর চালানো সারিন গ্যাস হামলার ঘটনা মনে পড়ে। তবে দেশটির কোনো রাজনৈতিক নেতা বা বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দল সেই হামলার লক্ষ্য ছিল না; বরং কিছুটা বিকারগ্রস্ত সেই উগ্রপন্থীরা নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নিজেদের ত্রাতা হিসেবে তুলে ধরার ভ্রান্ত চিন্তা থেকে এমন হামলা চালিয়েছিল। এর বাইরে তেমন কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড গত কয়েক দশকে জাপানে ঘটেনি।

আবে হত্যাকাণ্ডের পর কোনো কোনো বিশ্লেষক বলছেন, জাপানে গুলি করে ঘটনা শুধু বিরলই নয়, এটি সত্যিকার অর্থে সাংস্কৃতিকভাবে সাদৃশ্যপূর্ণও নয়।

অবশ্য এর আগে দুটি হামলার ঘটনা দেশজুড়ে আলোচনায় ছিল। প্রথমটি ঘটে ১৯৬০ সালের অক্টোবর মাসে টোকিওর কেন্দ্রস্থলের হিবিয়া এলাকার একটি নাগরিক মিলনায়তনে। ছুরি হাতে নিয়ে চরম দক্ষিণপন্থী এক তরুণ সেই সময়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাজনৈতিক দল সমাজতন্ত্রী পার্টির নেতা ইনেজিরো আসানুমার ওপর মঞ্চে উঠে হামলা চালিয়ে তাঁকে খুন করেছিল। আসানুমাকে ছুরিকাঘাত করার সেই ছবি সারা বিশ্বে প্রচারিত হয়। হামলাকারীর চোখে আসানুমার অপরাধ ছিল, জাপান-মার্কিন সামরিক চুক্তির বিরোধিতা করা।

দ্বিতীয় ঘটনাটি এর ঠিক ৩০ বছর পর, ১৯৯০ সালে। সে সময় হামলাকারী ছিল একজন চরম দক্ষিণপন্থী জাতীয়তাবাদী। হামলায় নাগাসাকির সেই সময়ের মেয়র গুলিবিদ্ধ হন। হামলাকারীর দৃষ্টিতে মেয়রের অপরাধ ছিল, জাপানের সম্রাটের যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকা নিয়ে করা তাঁর মন্তব্য।

এর বাইরে জাপানে রাজনৈতিক সহিংসতা সেভাবে ঘটতে দেখা যায়নি।

……

রয়টার্স জানায়, আইনপ্রেণতা হিসেবে সর্বপ্রথম ২০০৬ সালে প্রথমবার জাপানের প্রধানমন্ত্রী হন আবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানে সবচেয়ে কম বয়সী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন তিনি। সেবার মাত্র এক বছর ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। ২০১২ সালে তিনি আবার ক্ষমতায় ফেরেন দ্বিতীয় মেয়াদে। ভঙুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আমলে করা শান্তিবাদী সংবিধান পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। একইসঙ্গে ঐতিহ্যবাহী মূল্যবোধ রক্ষার কথা বলেও মানুষের মন কাড়েন। ওই বছরের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে আবের দল জয়ী হয়ার পর আবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। দুই বছরের মাথায় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তিনি ‘আবেনোমিক্স’ বা ‘আবেতত্ত্ব’ চালু করেন যাতে বলা হয় দেশটির অর্থনীতিকে আরও বেশি চাঙ্গা করবে। এরপর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

কয়েক দশক ধরে সামরিক খাতে ব্যয় বাড়ানোর সাহসী পদক্ষেপ নেন আবে। ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলে সামরিক শক্তি জোরদারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। এই অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলায় কৌশলগত সামরিক জোট কোয়াড গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন জাপানের এই প্রধানমন্ত্রী।

রয়টার্স জানায়, ১৯৫৪ সালের সেপে্‌টম্বরে টোকিওতে জন্ম নেওয়া আবের পরিবার আগে থেকেই জাপানের রাজনীতিতে বেশ প্রভাবশালী। তাঁর বাবা একসময় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন। নানা নবোসুকে কিশি ১৯৫৭ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর পরিবারের আরও একজন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।বাবার মৃত্যুর পর আবে ১৯৯৩ সালে প্রথমবারের মতো এলডিপির টিকিটে এমপি নির্বাচিত হন। কয়েক দশক আগে পিয়ংইয়ংয়ের হাতে জাপানি নাগরিক অপহরণের ঘটনা নিয়ে প্রতিবেশী উত্তর কোরিয়ার বিষয়ে শক্ত অবস্থান তাকে দেশজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি এনে দেয়।

……

অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির স্কুল অব পাবলিক হেলথের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে জাপানে গুলিতে নয়জনের মৃত্যু হয়। আর সে বছর যুক্তরাষ্ট্রে গুলিতে নিহতের সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৭৪০।

ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কাউন্সিলের জাপানবিষয়ক পরিচালক ন্যান্সি স্নো বলেন, আবের এই গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনা জাপানকে অনেকটা পাল্টে দেবে।

স্নো সিএনএনকে বলেন, ‘জাপানে গুলি করে হত্যার ঘটনা শুধু বিরল নয়, এটি সত্যিকার অর্থে সাংস্কৃতিকভাবেও সাদৃশ্যপূর্ণ নয়। আমাদের দেশে অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকের যে সংস্কৃতি আছে, তা জাপানের সাধারণ মানুষ কল্পনাও করতে পারে না। এ সময়টায় বলার মতো কিছু নেই। আমি আসলে ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।’

…….

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ-জাপানের সম্পর্কে যে ব্যক্তিটির ছোঁয়ায় ভালোবাসার প্রগাঢ়তা বেড়েছে, তিনি হলেন শিনজো আবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই (সংকলিত)।

Please follow and like us:
Pin Share

Follow by Email
YouTube
Pinterest
LinkedIn
Share
Instagram
error: Content is protected !!