একজন রুপা হক এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাঙালির আশা জাগানিয়া স্বপ্নের সোপান

একজন রুপা হক এবং ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বাঙালির আশা জাগানিয়া স্বপ্নের সোপান

আগামী ২০১৫ সালে ব্রিটেনের পার্লামেন্ট নির্বাচন। কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে নির্বাচনী তোড়জোড়। প্রধান দুই পার্টি লেবার ও ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ এবং মধ্যপন্থী লিবডেম তাদের প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করছে। ব্রিটেনের পার্লামেন্টের প্রার্থী মনোনয়ন পেতে অনেক কাট-খড় পোড়াতে হয়।

প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীকে যেমন তৃনমূলের পার্টির সক্রিয় কর্মীর, ক্যাম্পেইনার, লিফলেট বিতরণ, ডোড় টু ডোর ক্যাম্পেইন, টেলিফোন ক্যাম্পেইন ইত্যাদি নানান কর্মসূচীর সাথে বছরের পর বছর সক্রিয় থাকার প্রমাণ ও তথ্য, যাচাই,বাছাই, সরেজমিনে থাকার প্রমাণ থাকা চাই, তেমনি পার্টির ইলেক্টোরাল ভোটারদের ভোট ছাড়াও পার্টির সিলেকশন বোর্ডের কাছে নানান পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হয়। একজন প্রার্থীর বহুমুখী প্রতিভার ও ক্যালিবারের যোগ্যতা যথাযথভাবে যাচাই এবং ব্রিটেনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পলিটিক্স, ফরেন পলিসি, ইত্যাদি নিয়ে জ্ঞানের পরীক্ষায় যখন উত্তীর্ণ হন কেবলই তিনি মনোনয়নের চূড়ান্ত টিকেট লাভ করতে পারেন। এখানে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য টাকার আর পেশী শক্তির কোন খেলার স্থান নেই।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টে আমাদের রোশনারা অনেক আগেই নাম লিখিয়েছেন এবং বেশ সুনামের সাথেই তিনি কাজ করে চলেছেন। রোশনারার পথ ধরেই এবার আসছেন আরো তিন বাঙালি নারী, যারা ব্রিটিশ-বাংলাদেশী অথচ মূলধারার রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মজার ব্যাপার রোশনারা সহ বাকী তিনজনই সিলেটের অরিজিন থেকে ব্রিটেনে আগত।

 

রূপা – পুরো নাম রূপা আশা হক, পেশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসিওলজির শিক্ষক। শিক্ষকতা করছেন লন্ডনের কিংস্টন ইউনিভার্সিটিতে একজন সিনিয়র লেকচারার হিসেবে। এর আগে তিনি ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করেছেন।পিএইচডি করেছেন কালচারাল স্টাডিজের উপর।

রুপা নিয়মিত গার্ডিয়ান, দ্য স্টেটসম্যান, ট্রাইবুন, সহ নানা পত্রিকা ও জার্নালে কলাম লিখে থাকেন। তার বিখ্যাত বই বিয়ন্ড কালচার ২০০৬ সালে প্রকাশিত হয়, যা ২০০৭ সালে ফিলিপস আব্রাহাম মেমোরিয়াল প্রাইজের জন্য শর্ট লিষ্টেড নির্বাচিত হয়।

রুপা হক ২০০৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে কনজারভেটিভের সেইফ সিট বাকিংহাম শায়ারের চিজহাম-আমেরশাম সিটে শেরিল গিলানের সাথে প্রতিদ্বন্ধিতা করে হেরে যান। ২০১০ সালে তিনি লন্ডন বারা অব ইলিং এর ডেপুটি মেয়রের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মেম্বার পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।

আগামী ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে ইলিং সেন্ট্রাল ও একটন সংসদীয় আসন থেকে লেবার দলের পক্ষে পার্লামেন্টে প্রতিদ্বব্ধিতা করার জন্য পার্টির চূড়ান্ত মনোনয়ন লাভ করেছেন। রুপা এবারের তার মনোনয়ন লাভে ভীষণ খুশী। কেননা এই আসন লেবারের জন্য অনেকটা নিশ্চিত আসন, ভোটার লেবারের পক্ষে। দিন রাত তিনি ক্যাম্পেইন করে চলেছেন।তিনি আশাবাদী তার জয়ের ব্যাপারে। গার্ডিয়ানে তিনি তার এক সাক্ষাৎকারে তার সংসদীয় আসন থেকে জয়ের ব্যাপারে তীব্র আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

 

রুপা হক সহ তারা তিন বোন। সকলেই কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তার বড় বোন নোরা হক একজন আর্কিট্যাক্ট। ছোট বোন কনি হক বিখ্যাত বিবিসি প্রোগ্রাম ব্লু পিটারের একজন জনপ্রিয় এংকর।

রুপার মা বাবা ১৯৬০ সালের দিকে সিলেট থেকে এসে ব্রিটেনে এসে বসবাস শুরু করেন। তার বাবা মসদূল আবেদিল হক ব্রিটেনে আসার পর ইষ্ট লন্ডন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন। একসময় সহোতে তিনি রেস্টুরেন্ট ব্যবসাও খুলেছিলেন।

ইলেকশনের জয়ী হওয়ার আশাবাদ নিয়ে রুপা হকের ভিডিও লিঙ্ক সাথে দেয়া হলো

http://www.youtube.com/watch?v=mWjeRUDNl2s

 

(আগামী পর্বে থাকছে কনজারভেটিভ মিনা হক, লেবার টিউলিপ সিদ্দিকী, রোশনারা আলী এমপি নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক প্রতিবেদন)

Salim932@googlemail.com
01st December 2013, London.

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *