আব্বাকে মনে পড়ে…

আব্বাকে মনে পড়ে…

আমার আব্বা- পৃথিবীর সমস্ত মধুরতম সৌন্দর্য আর হ্রদয় উজাড় করা অপার অকৃত্রিম আনন্দ, ছোট্র এই নামটির এমন গভীর মধুরতা আর এতো আকর্ষণ, সমগ্র পৃথিবীর বিশাল সম্পদ আর প্রেম দিয়েও পূরণ হয়না বা হবার নয়। কলিজার ভেতর থেকে যে ডাক প্রতিনিয়ত সুদীর্ঘ ৩৭-৩৮টি বছর ডেকে এসেছি, আজ যেন উপলব্ধি করতে পারলাম, দেখতে পেলাম, পৃথিবীর সব আনন্দ, উচ্ছ্বাস, যেন কোথায় নিমিষে হারিয়ে গেছে, নিজের অজান্তে। জন্মিলে মরতে হয়- পৃথিবীর এই চিরন্তন নিয়মে আমার আব্বা জনাব সৈয়দ জাহাদার মিয়া বিগত ১২-ই সেপ্টেম্বর ২০০৩ সালে দীর্ঘদিন হ্রদরোগ, ডায়াবেটিস, ব্লাডপ্রেসার রোগে ভোগার পর ডাক্তারদের সমস্ত প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে আমাদের ছেড়ে মৃত্যুর কোলে চিরনিদ্রায় চলে গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজেউন)।

আজ থেকে ৯৭ বছর পূর্বে ১৯২৩ সালের ১০ জানুয়ারি সৈয়দ পুরস্থ এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। আমার দাদা মরহুম সৈয়দ হামদুল আলীও ছিলেন একইভাবে আমার আব্বার মতো বন্ধু বাৎসল্য- যা আমার আব্বা নিজ পিতার কাছ থেকে সে শিক্ষা আত্মস্থ করে বাস্তবে প্রয়োগ করেছিলেন।আমার আব্বা ছোট বেলা থেকেই সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় কঠোর অধ্যবসায় আর পরিশ্রমের করে নিজেকে ও বিশাল পারিবারিক ঐতিহ্য সমুন্নত রেখে প্রতিষ্ঠালাভ করেন।ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সদালাপী । হাস্যোজ্জ্বল, অত্যন্ত সহজ-সরল অমায়িক বন্ধুসূলভ প্রখর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক মহান পিতা ।আজীবন নির্লোভ আর সততার হাজারো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এমন সৎ ও আদর্শ চারিত্রিক গুণাবলী সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব- যা আজকের যুগে এক বিরল দৃষ্টান্ত।

সদা হাস্যোজ্জ্বল, বন্ধু সুলভ আচরণ আর শৃঙ্খলা ও নিয়মানুবর্তিতা, পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা বলতে যা বুঝায়- সর্বপ্রথম শৈশব কাল থেকেই আমি ও আমাদের পরিবারের সকলেই এই শিক্ষা আমরা আব্বার কাছ থেকে পেয়েছি। আব্বা যেমন ছিলেন সমাজ সচেতন, বিদ্যুতসাহী, তেমনি খেলাধুলার প্রতিও সমান উৎসাহ-উদ্দীপনা মূলত আমরা আব্বার কাছ থেকেই সমানভাবে পেয়েছি।আমার টেবিল টেনিস,ব্যাডমিন্টন খেলার হাতেখড়ি আব্বার কাছ থেকেই।আমার দেখা এ যাবৎকালের শ্রেষ্ঠ সুন্দর হাতের লেখা আমার আব্বারই।আব্বার চেষ্টাতেই আমিও দীর্ঘ সাধনার পর হাতের লেখা সুন্দর করতে সক্ষম হই, যার ফলশ্রুতিতে ৭৭-৭৮ সালের দিকে সমগ্র থানা ব্যাপী বার্ষিক হাতের লেখা ও শ্রুতলিপি প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করি।শুধু কি তাই হাতের লেখা সুন্দর করার জন্যে আমার নানা ও মামাকে ( যাদের হাতের লেখা তখনকার সময়ে অত্যন্ত সুন্দর হিসেবে খ্যাত ছিলো)বিশেষ সহযোগিতার জন্যে তাগিদ দিয়েছিলেন।

মজার মজার গল্পের বই, দেশ-বিদেশের বড়-বড় লেখকদের জীবনী, বিজ্ঞান, দর্শনের বই আমার জন্য আব্বা কিনে নিয়ে আসতেন।আমার পড়ার উৎসাহ-উদ্দীপনার জন্য আব্বার সেকি অক্লান্ত পরিশ্রম, যা আজও চোখ বুঝলেই আমার মানসপটে ভেসে উঠে। আমার কলিজা তখনি খান-খান করে ছিঁড়ে পড়তে থাকে, হ্রদয়ের অতলান্ত প্রদেশে তখন রক্তক্ষরণ হতে থাকে, অসম্ভব এক কষ্ট বুকের মাঝে চেপে ধরে, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস নিতে তখন খুব কষ্ট হয়।আমি আর আমার আব্বাকে আব্বা বলে ডাকতে পারবোনা।এযে কতো কষ্টের, কতো যন্ত্রণার, কি করে তা বুঝাই বলুন।সমগ্র পৃথিবীর কালি দিয়েও সে যন্ত্রণা, সে ব্যথার কথা ব্যক্ত করা সম্ভব নয়।

নামায পড়িলে আত্মার উন্নতি হয়- এই কথাটি আমার আব্বা আমাকে এতো সুন্দর ও নিখুঁতভাবে গল্পের ছলে অত্যন্ত শ্রুতিমধুর ও সাবলীলভাবে বুঝিয়েছিলেন, বিশ্বাস করুন, প্রিয় পাঠক, আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞান, শ্রেষ্ঠ দর্শন হয়ে আছে- যা আমাকে সঠিক পথ দেখিয়ে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, আমার বাকি জীবনের পথ-প্রদর্শক হয়ে আছে।আমার হ্রদয়ে প্রতিনিয়ত সেই মধুর সুললিত কণ্ঠে, মুচকি হেসে-হেসে জীবন চলার পথের নির্দেশনা দুনিয়া ও আখেরাতের দর্শন-শিক্ষা দেয়ার সেই মহান পথের নির্দেশনা প্রতিনিয়ত টেইপ হয়ে বেজে চলছে।মহান আল্লাহ পাকের দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া সেই জন্য যে এমন মহান পিতার ঔরসজাত সন্তান হিসেবে আমাকে ধন্য করেছেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একনিষ্ঠ ভক্ত ও অনুরাগী আমার আব্বার কাছ থেকে শিখেছিলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবই হলেন বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। মুক্তিকামী নেতা।মরহুম মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা আব্বার মুখ থেকেই শুনা।যেমন করে শুনেছিলাম, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ, জসীম উদ্দিন, শরৎচন্দ্র ,ফররুখ আহমদ, কাজী মোতাহার হোসেন, মীর মোশাররফ হোসেন প্রমুখ জগৎখ্যাত সাহিত্যিক, লেখক, কবি, উপন্যাসিক, রাজনীতিকের নামের সাথে পরিচয়ের পাঠশালা আমার আব্বা।আমার আব্বা, মরহুম রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সরকারের প্রথম গ্রাম সরকার মনোনীত হন, যদিও তাতে উনার তেমন কোন সম্মতি ছিলোনা, তথাপি সময়ের প্রয়োজনে এবং সকলের পীড়াপীড়িতে বলা যায় অনেকটা বাধ্য হয়েই মেনে নিতে হয়।সে রকমই আমাকে বলেছিলেন।তৎকালীন সময়ের তরুণ, যুব-ছাত্র সমাজের কাছে আমার আব্বা ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয় এক ব্যক্তিত্ব। এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা, সহযোগিতা ও সহমর্মিতার অপূর্ব দৃষ্টান্ত, খেলাধুলার উন্নয়নে, স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের অধ্যয়ন ও নিয়মিত উপস্থিতি ও শিক্ষকদের আবাসিক সমস্যার সমাধানে আমার আব্বাকে সদা ব্যাপৃত থাকতে দেখতাম।কারো সাথে ঝগড়া-ফ্যাসাদে লিপ্ত হতে দেখিনি বা কারো সম্পর্কে কুৎসা রটাতে শুনিনি, যা আজকের যুগে অত্যন্ত বিরল।এলাকার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতা সৈয়দ আমীরুল ইসলাম ফখরুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও একজন স্বজন চাচা হিসেবে বটগাছের ছায়ার মতো একে অন্যের পাশে দুজন দেশ ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত ছিলেন।আফসোস জনতার এই দুই ব্যক্তিত্বই আজ মৃত্যুর কোলে চিরনিদ্রায় শায়িত।প্রখর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও আধুনিক চিন্তা ও মননের অধিকারি আমার আব্বাকে আমি দেখেছি লিবারেল রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, সমাজসেবী, হক্কানি আলেম-উলামাদের সাথে আন্তরিক সম্পর্ক ও উঠা-বসা করতে।কুসংস্কার ও অন্ধকারের সর্বপ্রকারের বাতিলতার বিরুদ্ধে ছিলেন সোচ্চার ও কঠোর।

ব্যবসায়িক জীবনে পরিপূর্ণ একজন সফল, সৎ, আধুনিক ব্যবসায়ী হিসেবে ছিলো অশেষ সুনাম ও খ্যাতি। ব্যবসায়ের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রেখে গেছেন সমান দক্ষতা ও সফলতার অপূর্ব সমাহার। তিনি যেমন ছিলেন নিজ পরিবারের প্রতি অত্যন্ত যত্নশীল,একইভাবে নিজ আত্মীয়-স্বজন, পরিচিত বন্ধু মহল এবং প্রতিবেশীদের প্রতিও ছিলেন সমান দরদী ও দায়িত্বশীল। গরীব, অসহায়, এতিম পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি ছিলো গভীর মমতা ও ভালবাসা। কোন কোন দিন এমনও হতো নিজে না খেয়ে, নিজ পরিবারকে না দিয়ে , এমনকি নিজের পরিধানের চাদর পর্যন্ত অসহায়-গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে আনন্দ পেতেন। আমার আব্বা ছিলেন পাঁচ ভাই আর তিন বোনের মধ্যে তৃতীয়।আমার চাচা ও ফুফুরা সকলেই বর্তমানে প্রয়াত। আমার আব্বা আমাদের সকলকে নিয়ে শাপলা হাউসের নিজস্ব বাসভবনে বসবাস করতেন এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এখানেই ছিলেন, যা এখনো কালের সাক্ষী হয়ে আছে।

আমার খালাতো ভাইদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব ডঃ আবুল কাশেম আব্দুল মুবিন ছিলেন আব্বার কাছে অত্যন্ত আদর্শ ও পছন্দের প্রিয় মানুষ।আমাকে শান্ত ভাই( ডঃ মুবিন ) সম্পর্কে এতো গল্প শুনিয়েছিলেন-আমার কাছেতো শান্তভাই রূপকথার গল্পের নায়কের মতোই, একইভাবেই আব্বার কাছে সমানভাবে প্রিয় ছিলেন আজকের বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।আব্বা আমার এই ভাইকে শিশু বলে সম্বোধন করতেন, একসময় ছিলো, সত্যি সত্যিই এই জাঁদরেল অর্থমন্ত্রী শিশুর মতো অমায়িক ব্যবহার আর হাসি মুখের মধ্যে লেগে থাকতো।প্রিয় রাজনীতিবিদ আ স ম আবদুর রব, জাসদ নেতা মরহুম নূর আলম জিকু ভাই ছিলেন আব্বার ভীষণ পছন্দের ও স্নেহের মানুষ, যদিও রব ভাইয়ের অনেক দর্শন ও মতের সাথে আব্বা একমত ছিলেননা।বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রেক্ষিতে তাদের ভূমিকা আব্বা অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে সকল সময় স্মরণ করতেন, ভীষণ শ্রদ্ধার সাথে আওড়াতেন সিরাজুল আলম খান দাদার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকার কথা, আবেগে আপ্লুত হয়ে যেতেন।কিন্তু তাদের রাজনৈতিক দর্শনের সমর্থক ছিলেননা।আব্বা বঙ্গবন্ধু মুজিবের ব্যাপারে ছিলেন আপোষহীন, শেখ মুজিবকে বাঙালির মুক্তির দূত হিসেবেই ভাবতেন সকল সময়। আমার মেঝ মামা মরহুম সৈয়দ শাহ জামাল চৌধুরী ছিলেন আব্বার প্রিয় ব্যক্তিত্বের অন্যতম।১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঊষা লগ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালিন সময়ে মেঝ মামার বর্বর পাকিস্তানী সৈন্য আর দোসর রাজাকারদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হওয়ার সংবাদ ছিলো আমার আব্বার কাছে সবচাইতে বড় ট্র্যাজেডি ও করুণ আর্তনাদের। আমি অসংখ্য নিশীথ রজনী দেখেছি আব্বাকে মেজ মামার জন্য বুক উজাড় করে বিলাপ করতে। কবি, লেখক, অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ রেজাও আমার আব্বার প্রিয় মানুষদের একজন, যেমন করে প্রিয় আওয়ামীলীগ যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আতাউর রহমান, আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট সৈয়দ শায়েখ আহমদ, বিএনপি নেতা এডভোকেট মল্লিক সোহেল আহমদ,সমাজসেবক মরহুম মল্লিক সিদ্দেক আহমদ,যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, সলিসিটর, কবি সৈয়দ শাহিন আহমেদ, সাংবাদিক,লেখক সৈয়দ কামাল কোরেশী, সমাজসেবক, রাজনীতিক মল্লিক শাকুর ওয়াদুদ,আজকের আমেরিকা প্রবাসী সৈয়দ আব্দুল হাই,প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৈয়দ আব্দুল খালিক ও সৈয়দ আব্দুল হান্নান, তেমনি ভাবেই আব্বার কাছে সমানভাবে অত্যন্ত স্নেহ-মমতার ও ভালোবাসার ব্যক্তিত্ব আমার ছোট মামা, আজকের সিলেটের আধুনিক ক্লিনিক ব্যবসায়ের অন্যতম প্রতিকৃত, সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী আলহাজ্জ্ব সৈয়দ শাহ কামাল চৌধুরী।আমার ডাঃ মামা, বিশিষ্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ মরহুম সৈয়দ শাহ আনোয়ারও ছিলেন অসম্ভব মায়ার এক মানুষ, আমার নানুর মতোই আমার আব্বার কাছে যিনি ছিলেন সকল রোগের ডাক্তারির মহৌষধের মতো। সারা পৃথিবীতে এতো বড় বড় ডাক্তার, বিশেষজ্ঞ থাকা সত্যেও আমার মামা ডাঃ সৈয়দ শাহ আনোয়ার যতক্ষণ না এই দুজনের চিকিৎসা করতেন ততক্ষণ সত্যিকার অর্থে ভালো হওয়ার কন লক্ষণই দেখা যেতোনা।কুতবুল আলম মরহুম হযরত মাওলানা লুৎফুর রহমান শায়খে বরুণার সাহেব, পুরান ঢাকার বিখ্যাত কাপড়ের ব্যবসায়ী দাদা ভাইও ছিলেন আমার আব্বার সবচাইতে প্রিয় ও কাছের মানুষদের অন্যতম।একসময়ের জাসদ নেতা, মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সাঈদুর রহমান মাহতাব, সিলেট জেলা জাসদের তাত্ত্বিক নেতা জনাব আব্দুল খালিক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা, আবুজাফর গীফারী কলেজের ভিপি জসীম উদ্দিন জাহেদী ছিলেন আব্বার কাছের মানুষদের অন্যতম।মৃত্যুর আগের দশটি বছর আব্বা ছিলেন শয্যাশায়ী-সারাক্ষণ থাকতেন বিছানায়, চুপচাপ। নামায আর কোরআন তেলাওয়াত ছিলো একমাত্র কাজ। আমি দেখেছি আমার আব্বাকে প্রতি সপ্তাহে দুই খতম কোরআন শরীফ তেলাওয়াত করতে। দীর্ঘ দশটি বৎসর রোগ-ভোগের পর গত ১২ই সেপ্টেম্বর ২০০৩ সকাল বেলা সিলেটের সিটি ক্লিনিকে আব্বা ইন্তেকাল করেন( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)। অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী আমার আব্বাকে সকল আত্মীয়-স্বজন-গুণগ্রাহী সবাই মিলে সৈয়দ পুরস্থ নিজস্ব গোরস্থানে দরগাহ হযরত সৈয়দ শাহ সামসুদ্দিন (র:) মাজারের সন্নিকটে সমাহিত করা হয়েছে।মহান আল্লাহ পাকের দরবারে লাখো-কোটি শুকরিয়া ( এবং বিশেষ কৃতজ্ঞতা আমার স্বজন, শ্রদ্ধেয় যথাক্রমে জনাব আলহাজ্জ্ব সৈয়দ আতাউর রহমান, সৈয়দ আব্দুল হান্নান, সৈয়দ শাহ কামাল, আল্লামা ইসমাঈল খান সাহেব, ক্বারী মাওলানা আহমদ আলী, যাদের অক্লান্ত সহযোগিতায় ত্বরিত গতিতে পূর্ণ শরীয়ত সম্মতভাবে আব্বাকে দাফনের ব্যবস্থা করার জন্যে)-রাব্বুল আলামীন যেন আমার আব্বাজানকে জান্নাতবাসী করেন, সকলের মঙ্গল করেন। আমীন, ছুম্মা আমীন।

Salim932@googlemail.com
8th June 2013.UK

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *