এক বাংলাদেশী দম্পতি- স্বামী স্ত্রী মিলে ইতালিয়ান অভিবাসীদের কয়েকশত জনদের নিয়ে একই ঠিকানায় এড্রেস ব্যবহার করে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল থেকে হাউসিং বেনিফিট বাবত ৫৭৮,০০০ পাউন্ড, রেডব্রিজ থেকে ৬০০,০০০ পাউন্ড সহ আরো অধিক সংখ্যক ভূয়াভাবে ক্লেইমের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। এই দম্পতি সেন্টেন্স হয়েছে, প্রায় ১.৬ মিলিয়ন পাউন্ড হাতিয়ে নেয়ার অপরাধে।
জানা যায়, ৫১ বছর বয়সী চৌধুরী মুঈদ পেশায় একজন একাউন্ট্যান্ট। তার স্ত্রী আসমা খানম, বয়স ৪৭। দুজনে মিলে, একে অন্যের যোগসাজসে ইতালি থেকে আগত অভিবাসীদের নিজেদের ইলফোর্ড এসেক্সের ঠিকানায় ভুয়া ব্যবসা সেট আপ, মাইল এন্ডের ঠিকানায় ৩০০ এর অধিক লোকদের এড্রেস ব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে দেন। শুধু তাই নয়, এই অভিবাসীদের চৌধুরী মুঈদ অত্যন্ত সফিস্টিকেটেড এবং উন্নত মানের ডকুম্যান্টস, প্লে স্লীপ, কাজের প্রমাণ পত্র ইত্যাদি সরবরাহ করতেন, আর তাকে সহযোগীতা করতেন তার স্ত্রী। তারা তাদের হাউজিং বেনিফিট, ট্যাক্স ক্রেডিট বেনিফিটের যাবতীয় ফর্ম ফিল আপ সহ সকল কাজ করে জমা করাতেন।
শুরুতেই বৈধ অভিবাসীরা ইতালি ও অন্যান্যদেশ থেকে এসে এই এড্রেস ফ্লাই করে এসে উঠতেন। তারা সকলে ষ্টানষ্ট্যাড এয়ারপোর্ট হয়ে ব্রিটেনে আসতেন সকালের ফ্লাইটে। এসে এই এড্রেসে উঠে জব সেন্টারে ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্সের ইন্টারভিউতে এটেন্ড করে বিকেলের ফ্লাইটে ব্রিটেন ছাড়তেন। ন্যাশনাল ইনস্যুরেন্স নাম্বার পাওয়ার পর জালিয়াতির মাধ্যমে এই দম্পতি ভুয়া এই ঠিকানা দেখিয়ে হাউজিং বেনিফিট সহ অন্যান্য বেনিফিট ক্লেইমের সব ব্যবস্থা করে দিতেন। এভাবে ৩০০ ক্লেইম সন্দেহ হলেও ১৩৯টি ক্লেইম সাকসেস হয়।
তাদেরকে সহযোগীতা করার জন্য হাবিবুর রহমান নামের একজনকেও দোষী সাব্যস্ত ও শাস্তি দেয়া হয়েছে। এই দম্পতি আবার মাইল এন্ডে “হাইবা লাইবা লিমিটেড” এবং“ক্রিস্টাল জবস লিমিটেড” কেও তাদের জালিয়াতিতে ব্যবহার করতেন।
“অপারেশন রাইনো” এই দম্পতির বিরুদ্ধে তদন্তে নামে এবং ডিপার্টম্যান্ট ফর ওয়ার্ক এন্ড পেনশন মুঈদ চৌধুরীর অফিস ও বাসা বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ভুয়া ক্লেইমের কাগজ পত্র উদ্ধার করে। অপারেশন রাইনো টিম চৌধুরীকে এসব কাগজের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি তার বিভিন্ন ডাইরেক্টর ও আগের শেয়ার হোল্ডারদের কাগজ পত্রের কথা বলেন, অথচ তারা তার সাথে থাকার প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়ে বলেন ডাইরেক্টর ও শেয়ার হোল্ডাররা চলে গেছেন।
আদালতে চারজন পুরুষ ও নয়জন মহিলা জুরি নয়ঘন্টা সময় লাগে তাদের মেজর ভার্ডিক্টের সিদ্ধান্তে পৌছতে। জাজ নাইজেল পিটারস কিউসি এই দম্পতি দ্বারা হাউজিং বেনিফিট জালিয়াতিতে সিরিয়াস ক্রাইম ও ফ্রড, একই সাথে স্ত্রী তার স্বামীর সাথে চক্রান্ত ও ফ্রডে সহযোগীতার জন্য দোষী সাব্যস্ত করেন।
প্রসিকিউটর মার্ক হাইমসওয়ার্থ বলেন, ২০১৪ সালে এই দম্পতির এড্রেস এর ব্যাপারে বেনিফিট অফিসারদের সন্দেহ হয়, যখন তারা দেখতে পান অধিক সংখ্যক বেনিফিট আবেদন একটি মাত্র ঠিকানার মাধ্যমে খুবই গোছানো ও উন্নতমানের ডকুম্যান্টস তৈরি করে জমা হচ্ছে।