সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ– ২০০৩ সালে সাদ্দাম হোসেনের কাছে মাস ডেস্ট্রাকশান ওয়েপনস আছে- এমন দাবী করে তখনকার প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার গোটা জাতিকে ইরাক যুদ্ধে নিয়ে গিয়েছিলেন- সেজন্যে মিথ্যা তথ্যের ও উচ্চ পদস্থ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানের সতর্কতাকে আমলে না নেয়ার জন্য ব্লেয়ারকে লন্ডনের সাবেক মেয়র কেন লিভিংস্টোন ক্রিমিনাল ইরেসপনসিবল হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
গত সপ্তাহে লন্ডনে এসংক্রান্ত আলোচনা প্রসঙ্গে লিভিংস্টোন বলেন, ২০০৫ সালের লন্ডনে ৭/৭ বোম্বিং এ যে ৫২ জন নিহত হয়েছিলেন, সেজন্যে ব্লেয়ারই দায়ী।
কেন লিভিংস্টোন যুক্তি দিয়ে বলেন, ঐ সময়ে গোয়েন্দা প্রধান টনি ব্লেয়ারকে সতর্ক করেছিলেন, ইরাক আক্রমনে ব্রিটেন অংশ নিলে ব্রিটেনে আত্মঘাতি সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। ব্লেয়ার গোয়েন্দা প্রধানের সেই সতর্কতাকে উপেক্ষা করে ব্রিটেনকে ইরাক আক্রমণে নিয়ে যান।
তার এই বক্তব্যের পর পরই সোমবারে লেবার দলের পার্লামেন্টারি বোর্ড তাকে ডিফেন্স কো-কনভেনর রোল থেকে বাদ দিয়েছে।
কিন্তু তা সত্যেও কেন লিভিংস্টোন তার বক্তব্যে অটল থাকেন এবং বিবিসি ওয়ান এর কোয়েশ্চান টাইম-এ বলেন, ৭/৭ এর লন্ডনে বোমার বিস্ফোরনে ৫২ জন লোক নিহত হয়েছেন। টনি ব্লেয়ারকে গোয়েন্দারা সতর্ক করেছিলেন ইরাক যুদ্ধে গেলে আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা হবে। ব্লেয়ার সেই সতর্কতা শুনেননি।ব্লেয়ারই এই ৫২ জনের মৃত্যুর জন্য দায়ী।
আজকে বিবিসি রেডিও ফোর এর সাথে সাক্ষাতকারে লিভিংস্টোন একই বক্তব্য পূণরাবৃত্তি করে বলেন, ৭/৭ বোমাবাজিতে সন্ত্রাসীরা লন্ডনারদের হত্যা করেছে, কারণ লন্ডন ইরাক যুদ্ধে গিয়েছিলো- এখানেই সমস্যা।
টনি ব্লেয়ারকে সিকিউরিটি সার্ভিসের লোকজন বলেছিলো, ইরাক যুদ্ধে গেলে আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা হবে, আমরা এর জন্য আক্রমনের ঝুকিতে রয়েছি, গত চার বছর ধরে আমরা সেজন্য অনেক টেস্ট ও এক্সারসাইজ করছি- সেই সন্ত্রাসী ঝুকির কারণে- যেকোন সময় সন্ত্রাসী আক্রমণ আসবে বলে।
বলা হয়েছিলো সাদ্দাম হোসেনের কাছে নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স রয়েছে- কিন্তু সেটা সত্য হয়নি, তখন বলা হয়েছিলো এটাই সত্য। সেই দায় দায়িত্বটাই ক্রিমিনাল ইরেসপনসিবিলিটি এবং ব্লেয়ার সেটাই করেছেন বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
কোয়েশ্চান টাইমে লিভিংস্টোন দৃঢ়তার সাথে বলেন, আমার মনে আছে, সিকিউরিটি সার্ভিসের লোকজন ব্লেয়ারকে বলেছিলেন, আমরা ঝুকির মধ্যে পড়বো- আমরা টার্গেট হয়ে যাবো- যদি আমরা ইরাক যুদ্ধে যাই।ব্লেয়ার সেই পরামর্শ মানেননি, ফলে আমাদের ৫২ লন্ডনারদের হত্যা করা হয় ৭/৭-এ ।
02nd December 2015, London